পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে পুত্রবধূ হত্যা মামলায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থেকেও ফিরোজা বেগম (৪৫) নামের এক শাশুড়িকে আসামি করার অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিট নাগাদ মোসা. জান্নাতুল ফেরদৌসকে (২২) তার স্বামী এবং শাশুড়ি যৌতুকের দাবিতে মারধর করে হত্যা করেন। প্রাথমিকভাবে ভিকটিমের স্বামী বিষয়টি আত্মহত্যা মর্মে প্রচার করে এবং তাৎক্ষণিক ভিকটিমকে মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। মির্জাগঞ্জ থানা পুলিশ সংবাদ পেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপস্থিত হয়ে ভিকটিমের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে এবং মৃতদেহ ময়নাতদন্তের উদ্দেশ্যে প্রেরণ করে।
আরো পড়ুন
জাসদ কেন অন্য দলের জন্য শাস্তি ভোগ করবে, প্রশ্ন ফারাহ খানের
যে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মৃতের পিতা উপজেলার দেউলী সুবিদখালী ইউনিয়নের চত্রা গ্রামের মো. হাবিবুর রহমান (৫২) মির্জাগঞ্জ থানায় এজাহার দায়ের করেন।
যাতে তার জামাই মো. ফিরোজ সিকদারকে ১ নং এবং ফিরোজের মাতা মোসা. ফিরোজা বেগমকে ২ নং আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে যৌতুকের দাবিতে মারধর করে হত্যা করা হয়েছে এই মর্মে মামলা করেন। স্ত্রীকে নিয়ে আসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ফিরোজ সিকদারকে প্রথমে জিজ্ঞাসা করার জন্য থানায় আনা হয়। মামলা করা হলে এক দিন পরে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
মামলাটি তদন্তাধীন।
তবে স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ফিরোজ সিকদার ও তার স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস দুজন বাড়িতে ছিলেন। ফিরোজা বেগম ঘটনার আগের দিন সকাল থেকে বাড়ি ছিলেন না। সুবিদখালীতে তার বাবার বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ছিলেন।
সাতবাড়িয়া হাজীখালী গ্রামের প্রতিবেশী সুজন সিকদার জানান, ঘটনা সংঘটিত হয় ১৩ মার্চ সন্ধ্যায়। ওই সময় ফিরোজা বেগম বাড়িই ছিলেন না। তিনি তার বাবার বাড়িতে গিয়েছেন ইফতার ও দোয়ায় অংশগ্রহণের জন্য।
আসামি ফিরোজা বেগমের পিতা উপজেলার পূর্ব সুবিদখালী গ্রামের মো. আব্দুল হাই হাওলাদার বলেন, ‘আমার বাড়িতে ইফতার করাইছি বৃহস্পতিবার। আমার মেয়ে আগের দিন বুধবার সকালে আমার বাড়িতে বেড়াইতে আসছে।
আপনারা আশপাশের সবার কাছে জাইন্না দেখেন ফিরোজাসহ আমার তিন মেয়ে আমার এখানেই ছিল।’
ফিরোজা বেগমের বাবার বাড়ির প্রতিবেশী নিজাম রাঢ়ীর স্ত্রী সোনিয়া বেগম (৩০), সুবিদখালী গ্রামের দফাদার বাড়ির জানে আলমের স্ত্রী মোসা. নুপুর বেগম (৪২)সহ কয়েকজন ঘটনার আগের দিন, অর্থাৎ বুধবার ফিরোজা বেগম বাবার বাড়িতে বেড়াতে এসেছেন এবং ঘটনার সময় এখানে ছিলেন বলে নিশ্চয়তা দেন।
মির্জাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম হাওলাদার বলেন, ‘মেয়ের বাবার অভিযোগ, যৌতুকের জন্য ছেলের সাথে পুত্রবধূকে নির্যাতন করতেন শাশুড়ি। মামলার তদন্ত চলছে। শাশুড়ি তদন্তে নিরপরাধ প্রমাণিত হলে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে।’