এ বছর পবিত্র রোজা হতে পারে ২৯টি। সে অনুযায়ী আগামী ৩১ মার্চ হতে পারে ঈদুল ফিতর। গতকাল শুক্রবার এমন ধারণা দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
তবে কবে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে সেই সিদ্ধান্ত জানাবে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি।
এ বছর পবিত্র রোজা হতে পারে ২৯টি। সে অনুযায়ী আগামী ৩১ মার্চ হতে পারে ঈদুল ফিতর। গতকাল শুক্রবার এমন ধারণা দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
তবে কবে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে সেই সিদ্ধান্ত জানাবে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি।
আবহাওয়া দপ্তরের বার্তা অনুযায়ী, আগামী ৩০ মার্চ চাঁদ দেখার নির্ধারিত সময় সন্ধ্যা ৬টা ৩২ মিনিট থেকে ৭টা ২০ মিনিট পর্যন্ত। সে অনুযায়ী ১৩ মার্চ বাংলাদেশের আকাশে ১৪৪৬ হিজরি সনের শাওয়াল মাসের নতুন চাঁদের স্থানাঙ্ক বিবরণী প্রকাশ করা হয়েছে।
এবার রমজান মাস ২৯ দিনে শেষ হলে ঈদুল ফিতর হবে ৩১ মার্চ (সোমবার)।
আবহাওয়াবিদ মোহাম্মদ আব্দুর রহমানের সই করা শাওয়ালের চাঁদের স্থানাঙ্ক বিবরণীতে বলা হয়, ৩০ মার্চ সূর্যাস্তের সময় ৬টা ১৩.৫ মিনিটে চাঁদের বয়স হবে দেড় দিন (১.০৫২৪ দিন)। সান্ধ্যকালীন গোধূলি শেষ হওয়ার ৪৩.৪ মিনিট পর চন্দ্রাস্ত ঘটবে। ৩১ মার্চ সূর্যাস্তের সময় ৬টা ১৪ মিনিটে চাঁদের বয়স হবে ২.০৫২৮ দিন।
আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য মতে, ৩০ মার্চ শাওয়ালের চাঁদের বয়স থাকবে প্রায় দেড় দিন। সে কারণে বাংলাদেশের আকাশে খালি চোখেই চাঁদের দেখা মিলতে পারে।
সম্পর্কিত খবর
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। একই সময় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরো ২২ জন দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
রবিবার (১৬ মার্চ) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এতে বলা হয়, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে শনিবার (১৫ মার্চ) সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশে কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি।
নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮ জন, আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন আরও ১৪ জন রোগী।
চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৭৬ দশমিক ৯ শতাংশ পুরুষ এবং ২৩ দশমিক ১ শতাংশ নারী।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৬ মার্চ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১ হাজার ৭৩৭ জন।
২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে এ বছর কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে না বলে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তা সত্য নয় বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
প্রেস উইং বলেছে, ঢাকায় জাতীয় স্টেডিয়ামের সংস্কারকাজ চলমান থাকায় গত কয়েক বছরের মতো এ বছরও ঢাকায় কুচকাওয়াজ আয়োজন সম্ভব হচ্ছে না।
তবে দেশের বাকি ৬৩ জেলায় যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে কুচকাওয়াজ আয়োজন ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সব জেলা প্রশাসককে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
এর আগে আজ রবিবার সচিবালয়ে স্বাধীনতা দিবস এবং ঈদের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সভা শেষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি বলেন, ‘দেশ এখন আনন্দের মেজাজে নেই। সরকার দেশের অন্তর্বর্তী দায়িত্ব পালন করছে, একটা যুদ্ধ তৎপরতার মধ্য দিয়ে দেশ পরিচালনা করছে। এ বছর মহান স্বাধীনতা দিবসেও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে না।’
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ২৬ মার্চ চার দিনের জন্য চীন সফরে যাচ্ছেন। এই সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার।
প্রধান উপদেষ্টার চীন সফর নিয়ে আজ রবিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অধ্যাপক ইউনূস ও চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বৈঠক করেছেন।
পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম এ কথা জানান।
প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরসূচি তুলে ধরে শফিকুল আলম বলেন, এই সফরের সময় চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের সঙ্গে বেইজিংয়ে ২৮ মার্চ অধ্যাপক ইউনূসের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে। সেখানে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সব বিষয় নিয়ে আলাপ হবে।
তিনি বলেন, ‘অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর এটি হবে তার প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর।’
প্রেসসচিব বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশকে একটা বৈশ্বিক ম্যানুফেকচারিং হাব (উৎপাদনকেন্দ্র) হিসেবে গড়ে তুলতে চায়।
অধ্যাপক ইউনূসের সফরসূচির বিষয়ে শফিকুল আলম বলেন, ২৬ মার্চ চীনে পৌঁছাবেন প্রধান উপদেষ্টা। এরপর ২৭ মার্চ তিনি চীনের হাইনান প্রদেশে অনুষ্ঠেয় বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) সম্মেলনে বক্তব্য দেবেন।
তিনি বলেন, বিএফএকে বলা হয়—প্রাচ্যের ডাভোস।
সফরকালে অধ্যাপক ইউনূস পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা করবেন এবং এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে অনারারি ডক্টরেট ডিগ্রি দেওয়া হবে। এ ছাড়া তিনি চীনের হাইটেক পার্ক পরিদর্শন করবেন বলে জানান প্রেসসচিব।
শীর্ষস্থানীয় কম্পানির প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে বৈঠকের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে ম্যানুফেকচারিং হাব হিসেবে গড়ে তোলার বিষয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা হবে।
প্রেসসচিব বলেন, এই সফরে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে মূল ফোকাস থাকবে চীনের কম্পানিগুলো যেন তাদের কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তর করে।
তিনি বলেন, গত বছর জাতিসংঘ সম্মেলনের সাইডলাইনে অনুষ্ঠিত চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস চীনের নবায়নযোগ্য জ্বালানি কম্পানিকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছিলেন।
তিনি জানান, প্রধান উপদেষ্টার আহ্বানে সাড়া দিয়ে চীনের দুটি কম্পানি ইতিমধ্যে বাংলাদেশে অফিস স্থাপন এবং সোলার এনার্জিতে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
শফিকুল আলম বলেন, চীনের সোলার কম্পানি ট্রেড প্রটেকশনের কারণে অনেক ক্ষেত্রে তাদের বিনিয়োগে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে তারা কোনো বাধার সম্মুখীন হবেন না।
তিনি জানান, চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা কত দ্রুত বাড়ানো যায়—সে বিষয়টিও আলোচনায় স্থান পাবে।
প্রেসসচিব বলেন, ‘আশা করছি, এই সফরের পর আরো চীনা কম্পানি বাংলাদেশে আসবে।’ চীনের হাসপাতাল চেইন যেন বাংলাদেশে যৌথ বিনিয়োগ করে—সে বিষয়ে আলোচনা হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বিশ্বের বৃহত্তম সৌর প্যানেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান লঙ্গি বাংলাদেশে একটি অফিস স্থাপন এবং সৌর প্যানেল উৎপাদনে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ডিসেম্বরে বেশ কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় চীনা সোলার প্যানেল নির্মাতা বিনিয়োগের সুযোগ অনুসন্ধানের জন্য বাংলাদেশ সফর করে।
রবিবার (১৬ মার্চ) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এসব তথ্য জানা চীনের রাষ্ট্রদূত।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস দেশকে একটি অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে চীনা কম্পানিগুলোকে তাদের উৎপাদন কারখানা এখানে স্থানান্তরের আমন্ত্রণ জানানোর পর তারা এ সফর করেন।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, বাংলাদেশ সফরে আসা কম্পানিগুলোর মধ্যে লঙ্গিসহ অন্তত দুটি চীনা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে অফিস ও কারখানা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, তারা শিগগিরই বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবে। তিনি বলেন, চীনের একটি নিবেদিত রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল শিগগিরই কাজ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ইয়াও ওয়েন বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতনের পর চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী।
রাষ্ট্রদূত বলেন, চীনে প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন সরকারি সফর হবে দুই বিশ্বস্ত ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুর মধ্যে ৫০ বছরের দীর্ঘ সম্পর্কের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সফর।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশে আরো চীনা বিনিয়োগকারীদের স্বাগত জানিয়ে বলেন, পশ্চিমা দেশগুলোতে পণ্য রপ্তানি করতে ইচ্ছুক কম্পানিগুলোর জন্য বাংলাদেশ শীর্ষ উৎপাদনকেন্দ্র হতে পারে।
তিনি চীনের হাসপাতাল চেইনগুলোকে এখানে শীর্ষস্থানীয় ক্লিনিক স্থাপন অথবা বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে ব্যাপক বিনিয়োগের প্রয়োজন।
চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, দক্ষিণ চীনের কুনমিং শহরে চারটি হাসপাতাল বাংলাদেশি রোগীদের জন্য ডেডিকেটেড করা হয়েছে। বাংলাদেশিদের একটি দল গত সপ্তাহে চিকিৎসার জন্য কুনমিং গিয়েছিলেন।
রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, সফরকালে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় প্রফেসর ইউনূসকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করবে। প্রধান উপদেষ্টা বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তব্যও রাখবেন।