<p>রক্তের প্রধান উপাদান দুটি—রক্তরস ও রক্তকোষ। রক্তের বিভিন্ন কোষীয় উপাদানের একটি হলো লিম্ফোসাইট, যা মূলত এক প্রকার শ্বেত রক্তকণিকা। এর প্রধান কাজ হচ্ছে রোগ প্রতিরোধ করা। বিভিন্ন কারণে এই লিম্ফোসাইটের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি হলে দেখা দেয় ‘লিম্ফোমা ক্যান্সার’।<br />  <br /> লিম্ফোসাইট যেসব অঙ্গে তৈরি ও বৃদ্ধি হয়, এসব অঙ্গের মধ্যে রয়েছে লিম্ফনোড, স্প্লিন (প্লিহা), টনসিল ইত্যাদি। লিম্ফনোড শরীরের বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে। তবে গলার দুই দিকে, বগলে, কুঁচকিতে, ফুসফুসের দুই পাশে ও পেটের অভ্যন্তরে এর উপস্থিতি বেশি বোঝা যায়।</p> <p><strong>প্রকার : </strong><br /> লিম্ফোমা সাধারণত দুই প্রকার—হজকিনস লিম্ফোমা ও নন-হজকিনস লিম্ফোমা। এগুলোর উভয়ের ধরন ও চিকিৎসায় বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে।<br />  <br /> <strong>লক্ষণ :</strong><br /> শরীরের কোনো এলাকায় লিম্ফনোড বা অন্য কোনো লিম্ফেটিক অঙ্গ অস্বাভাবিক বড় হতে থাকে। ফুলে যাওয়া লিম্ফনোডগুলো রাবারের মতো নরম ও ব্যথাহীন হয়। এর সঙ্গে দীর্ঘদিনের জ্বর, ওজন কমে যাওয়া ও রাতে প্রচুর ঘাম হয়। লিম্ফোমার জ্বর হয় সাধারণত অনিয়মিত ধরনের। মানে আসে আবার চলে যায়। জ্বরের মাত্রা কখনো খুব বেশি হয়, কখনো সামান্য। এই লক্ষণগুলোর বেশির ভাগই যক্ষ্মার সঙ্গে মিলে যায়, যা বিশেষ পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হতে হয়।</p> <p><strong>কারণ :</strong><br /> অন্যান্য ক্যান্সারের মতো লিম্ফোমার কারণও নানা রকম। অনেকটাই অজ্ঞাত। তবে কিছু জীবাণু, যেমন—হেলিকোব্যাক্টার পাইলোরি নামক ব্যাকটেরিয়া, হেপাটাইটিস-সি ভাইরাস, এইডস, ইবস্টেইন বার ভাইরাস ইত্যাদি এরই মধ্যে কারণ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।</p> <p><strong>চিকিৎসা :</strong><br /> লিম্ফোমার মূল চিকিৎসা কেমোথেরাপি। স্টেজিংয়ের ওপর নির্ভর করে এবং আক্রান্ত লিম্ফনোডের আকার ও অবস্থান বিবেচনা করে রেডিওথেরাপিও দেওয়া হয়। সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় করা গেলে চিকিৎসার মাধ্যমে ৭০ থেকে ৯০ শতাংশ লিম্ফোমা পুরোপুরি ভালো করে ফেলা সম্ভব।</p> <p>পরামর্শ দিয়েছেন -<br /> <span style="font-size:16px;"><sub>ডা. গুলজার হোসেন</sub></span><br /> <span style="font-size:16px;"><sub>সহকারী অধ্যাপক, রক্তরোগ বিভাগ<br /> বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা</sub></span></p>