ডিপিএলের উদ্বোধনী দিনে ছোট তামিমের কাছে হারল বড় তামিমের দল। বলা যায় তামিম ইকবালের দল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব উড়ে গেছে গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের কাছে। ১০৭ রানের বড় হার তা-ই বলে। সাবেক অধিনায়কের মালিকানাধীন এ দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিম।
বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে প্রথমে ব্যাটিং করে ২৯৮ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় গুলশান। দলের হয়ে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি হাঁকান ইফতেখার হোসেন ইফতি। তার ৯ চার ও ৩ ছক্কায় সাজানো ১০৮ রানের ইনিংসটি এবারে টুর্নামেন্টে প্রথম সেঞ্চুরি। তবে শুরুতেই ২ উইকেট হারালেও গুলশানকে বড় রানের ভিত গড়ে দেন ওপেনার জাওয়াদ আবরার।
৪ চারের সঙ্গে ৫ ছক্কায় ৭৫ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। মোহামেডানের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন পেসার আবু হায়দার রনি।
তিন শ ছুঁই ছুঁই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাত্র ১৯১ রানে অলআউট হয় মোহামেডান। জাতীয় দলের আদলে গড়া দলটি শুরু থেকেই নিয়মিত উইকেট হারাতে থাকে।
যার ফল বড় ব্যবধানের হার। পরাজয়টা আরো বড় হতে পারত যদি না এক প্রান্ত আগলে রেখে আরিফুল ইসলাম ৭৩ রানের ইনিংস না খেলতেন।
অধিনায়ক তামিম খেলেছেন ২২ রানের ইনিংস। আর দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুর রহিম জাতীয় দলের মতো ঘরোয়া টুর্নামেন্টেও ব্যর্থ হয়েছেন। মাহমুদ উল্লাহর ১০ রানের বিপরীতে ৭ রানে আউট হয়েছেন মুশফিক।
সেঞ্চুরিয়ান ইফতি নিয়েছেন সর্বোচ্চ ৩ উইকেট।
শামীমের বিধ্বংসী ইনিংসে রুদ্ধশ্বাস জয় প্রাইম ব্যাংকের
লক্ষ্যটা খুব বড় ছিল না। কিন্তু বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠে রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাবের দেওয়া ২১৭ রান তাড়া করতে নেমে ধ্বংসস্তূপে দাঁড়ায় প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। সেখান থেকে কী দুর্দান্ত এক ইনিংসই না খেললেন শামীম হোসেন পাটোয়ারি।
অবশ্য ২ রানের আক্ষেপ থেকে যাবে শামীমের। তবে নিশ্চিতভাবেই ম্যাচের ফল তার কষ্ট লাগব করেছে। কেননা তার ৯৮ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংসেই তো রুদ্ধশ্বাস এক জয় পেয়েছে প্রাইম ব্যাংক। ১০৪ বল হাতে রেখে ৩ উইকেটের জয় এনে দিয়েছেন বাঁহাতি ব্যাটার।
বিপিএলের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংটাই বিকেএসপির মাঠে আরেকবার দেখালেন শামীম। দলীয় ৭৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ হারার শঙ্কায় ভুগতে থাকে প্রাইম ব্যাংক। সেখান থেকে শাহাদাত হোসেন দীপুকে নিয়ে শুরুর ধাক্কা সামলান শামীম। ব্যক্তিগত ৫৪ রানে দীপু ফিরলে আবারও বিপদে পড়ে প্রাইম ব্যাংক। কেননা দলীয় ১১৩ রানের সময়ই ফিরে যান নতুন ব্যাটার নাহিদুল ইসলামও।
পেসার খালেদ আহমেদকে সঙ্গী করে পরে বন্ধুর পথটা পাড়ি দেন শামীম। অষ্টম উইকেটে ১০৭ রানের জুটি গড়ে অবিশ্বাস্য এক জয় এনে দেন তিনি। তাতে খালেদের অবদান ২৮ রান। অন্যদিকে শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ শেষ করা শামীম অপরাজিত থাকেন ৯৮ রানে। প্রতিপক্ষের দেওয়া লক্ষ্যটা আরেকটু বড় হলে নিশ্চিতভাবেই তার সেঞ্চুরিটা হয়ে যেতো। ৮৩ বলের ঝোড়ো ইনিংসটি সাজিয়েছেন ১০ চার ও ৪ ছক্কায়।
এর আগে রূপগঞ্জকে অল্পতে অলআউট করতে খালেদ ২ উইকেটও নেন। অবশ্য ২১৬ রানে প্রতিপক্ষকে অলআউট করার ম্যাচে সর্বোচ্চ ৩ টি করে উইকেট নিয়েছেন দুই স্পিনার আরাফাত সানি ও নাহিদুল ইসলাম। রূপগঞ্জের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৩ রান করেছেন ওপেনার আব্দুল মজিদ।
ইমরুলের কাছে ধরাশায়ী ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন আবাহনী
হার দিয়ে এবারের ডিপিএল শুরু করেছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন আবাহনী লিমিটেড। ইমরুল কায়েসের দুর্দান্ত এক ইনিংসের কাছে ধরাশায়ী হয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। অগ্রনী ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবকে ৬ উইকেটের জয় এনে দিলেও আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন ইমরুল।
মিরপুরে ৬ রানের কারণে যে সেঞ্চুরি মিস হয়েছে ইমরুলের। আবাহনীর দেওয়া ২৩৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১০০ স্ট্রাইকরেটে ৯৪ রানের ইনিংস খেলেছেন সাবেক বাঁহাতি ওপেনার। ইনিংসটি সাজিয়েছেন ৭ ছক্কার বিপরীতে ৩ চারে। দলের জয় যখন ৬ রান দূরে তখনই আউট হন ইমরুল। দলের আউট হওয়া বাকি তিন ব্যাটারও ত্রিশোর্ধ্ব ইনিংস খেলেছেন। তারা হলেন- ইমরানুজ্জামান (৩৫), সাদমান ইসলাম (৪৬) ও অমিত হাসান (৪৪)।
এর আগে প্রথম ব্যাট করে পারভেজ হোসেন ইমন ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের ফিফটিতে ২৩৪ রানে অলআউট হয় আবাহনী। ওপেনার ইমনের কাঁটায় কাঁটায় ৫০ রানের বিপরীতে সৈকত খেলেছেন ৭৩ রানের ইনিংস। অধিনায়ক শান্ত করেছেন ২০ রান। অগ্রণী ব্যাংকের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়েছেন পেসার শহিদুল ইসলাম।