সংসারের অভাব-অনটন ঘোচাতে স্বামীকে কিডনি বিক্রি করার পরামর্শ দিয়েছিলেন স্ত্রী। স্ত্রীর পরামর্শে সেই কাজই করেন যুবক। পরে সেই টাকাই হাতিয়ে নিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে গেছেন ওই যুবকের স্ত্রী।খবর ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের।
এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ার সাঁকরাইলের ধুলাগড়ির হাটতলা এলাকায়। স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন পিন্টু বেজ নামে ৩৯ বছরের যুবক।
তার অভিযোগ, ভবিষ্যতে নিজেদের নাবালিকা মেয়ের পড়াশুনা ও বিয়ের জন্য বারবার বলে স্বামীকে একটা কিডনি বেচতে অনুরোধ করেন স্ত্রী সুপর্ণা বেজ। স্ত্রীর এমন অনুরোধের পর স্বামী কিডনি বিক্রি করতে রাজি হয়।
এক বছরের চেষ্টার পর তিন মাস আগে একজন ‘ক্রেতা’ খুঁজে পান তারা। ১০ লাখ রুপির বিনিময়ে নিজের একটি কিডনি বিক্রি করেন স্বামী।
তিনি আশা করেছিলেন, এতে পরিবারের দারিদ্র্য কিছুটা হলেও কমবে এবং মেয়ের বিয়ের ব্যবস্থা সহজ হবে। কিন্তু স্বামীর কিডনি বিক্রির পর ফেসবুকে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া এক ব্যক্তির সঙ্গে ১০ লাখ রুপি নিয়ে পালিয়ে যান ওই স্ত্রী।
তবে পিন্টু বেজ তার স্ত্রীর নিখোঁজ হওয়ার ডায়েরি করেন এবং তারপর স্ত্রীকে খুঁজে পেতে হাইকোর্টে মামলা করেন। তবে তদন্তকারীদের কাছে ওই নারী লিখিতভাবে জানিয়েছেন যে, তিনি স্বেচ্ছায় ঘর ছেড়েছেন। তার প্রেমিক এবং তিনি এখন স্বামী–স্ত্রীর মতো থাকছেন, কেউ তাকে জোর করে কিছু করায়নি।
এরপর স্ত্রীর কাছ থেকে নিজের টাকা পয়সা আদায় করতে স্ত্রী ও তার প্রেমিকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন ওই ব্যক্তি। তবে এই ঘটনায় আইনজীবীদের বক্তব্য, গোটা ঘটনায় কিডনি বেচে টাকা পাওয়ার বিষয়টি সামনে এসেছে, যা আইনত দণ্ডনীয় এবং সে ক্ষেত্রে ৩৯ বছরের ওই ব্যক্তি বেআইনি কাজের অভিযোগে অভিযুক্ত হবেন।
তবে আইনজীবীদের অন্য একটি অংশের অভিমত, মামলাকারীকে প্রথম থেকে ভুল বুঝিয়েছিলেন তার স্ত্রী। সুতরাং এখানে স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করা ওই ব্যক্তিকে ঘটনার শিকার বলে ধরে নেওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
তবে ১৬ বছরের দাম্পত্য জীবনে স্ত্রী এইভাবে বিশ্বাসঘাতকতা করায় যথারীতি পিন্টু মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। দুজনে প্রেম করেই বিয়ে করেছিলেন। পিন্টু বাবু একটি কারখানায় কাজ করতেন। সেই টাকায় কোনোমতে সংসার চলছিল । এই মধ্যেই স্ত্রী সুপর্ণা ফেসবুকের মাধ্যমে প্রেমে পড়েন ব্যারাকপুরের সুভাষ কলোনির বাসিন্দা এক যুবকের। পেশায় রং মিস্ত্রি ।
আরো পড়ুন
এলাকা ছেড়ে পালিয়েও রক্ষা পেলেন না জাকির
গত শুক্রবার পিন্টু বাবু তার মা কল্পনা বেজ ১২ বছরের মেয়ে কে নিয়ে ব্যারাকপুরের সুভাষ কলোনিতে স্ত্রীকে আনতে যান। স্ত্রী আসবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন। টাকা প্রসঙ্গ তোলায় তার প্রেমিক জানান, আইনের মাধ্যমে যা হওয়ার হবে। পরে খালি হাতেই ফিরতে হয় পিন্টু বেজকে। এখন তিনি বুঝতে পারেন কিডনি বিক্রির জন্য তার স্ত্রী প্রেমিকের সঙ্গে পরিকল্পনা করেই এই কাজ করেছেন।