ঢাকা, শুক্রবার ২৫ এপ্রিল ২০২৫
১২ বৈশাখ ১৪৩২, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, শুক্রবার ২৫ এপ্রিল ২০২৫
১২ বৈশাখ ১৪৩২, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৬

নাইজেরিয়ায় বন্দুকধারীদের হামলায় নিহত প্রায় ৫০

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
নাইজেরিয়ায় বন্দুকধারীদের হামলায় নিহত প্রায় ৫০
নাইজেরিয়ার মানচিত্রে মালভূমি রাজ্য। ফাইল ছবি : আলজাজিরা

নাইজেরিয়ার মালভূমি রাজ্যে অজ্ঞাতপরিচয় হামলাকারীদের হাতে প্রায় ৫০ জন নিহত হয়েছে। রেড ক্রসের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে এএফপি সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। দেশটির মধ্যাঞ্চলের এই রাজ্যটি ধর্মীয়ভাবে মিশ্র একটি অঞ্চল হিসেবে পরিচিত, যেখানে সম্প্রদায়গত সংঘাত ও জমিসংক্রান্ত প্রাণঘাতী বিরোধ দীর্ঘদিনের সমস্যা।

রাজ্যের স্থানীয় সরকার এলাকা বাসার জিকে ও কিমাকপা গ্রামে স্থানীয় সময় রবিবার রাতে এই হামলা হয়।

মাত্র দুই সপ্তাহ আগে একই রাজ্যের বোক্কোস এলাকায় সশস্ত্র ব্যক্তিরা একাধিক গ্রামে হামলা চালিয়ে ৪৮ জনকে হত্যা করেছিল।

নতুন হামলাস্থল রাজ্যের রাজধানী জস শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে। এএফপি বলছে, এই অঞ্চলে মুসলিম ফুলানি রাখাল ও প্রধানত খ্রিস্টান কৃষকদের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ প্রায়ই সহিংসতায় পরিণত হয়, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকাগুলোতে, যেখানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর উপস্থিতি প্রায় নেই এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।

রেড ক্রসের এক কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, ‘আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, ৪৭ জন নিহত হয়েছে, ২২ জন আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি এবং পাঁচটি বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া জিকে গ্রামের বাসিন্দা ডরকাস জন বলেন, ‘আমরা জানতাম না তারা কারা ছিল। হঠাৎ আমাদের গ্রামে ঢুকে যেদিকে পেরেছে, সেদিকেই গুলি করতে শুরু করে। তারা আটজনকে হত্যা করেছে।’

অন্যদিকে কিমাকপার জন আদামু জানান, তার গ্রামে হামলাকারীরা ৩৯ জনকে হত্যা করেছে।

সোমবার পর্যন্ত এই হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য বা হামলাকারীদের পরিচয় জানা যায়নি। পুলিশ কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের কোনো মন্তব্য দেননি।

সম্প্রদায়গত সহিংসতা
যদিও নাইজেরিয়ার নানা জাতিগোষ্ঠী ও ধর্মাবলম্বীরা সাধারণত পাশাপাশি বসবাস করে। তবু মালভূমি রাজ্যে সম্প্রদায়ভিত্তিক সহিংসতা প্রায়ই ছড়িয়ে পড়ে। গবেষকরা বলেন, এই সংঘাতের পেছনের কারণগুলো জটিল।

আফ্রিকার সবচেয়ে জনবহুল দেশ নাইজেরিয়ায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কৃষিজমির পরিমাণ বেড়েছে। অন্যদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে চারণপথগুলো সংকুচিত হয়ে পড়েছে।

জমি দখল, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দ্বন্দ্ব, স্থানীয় ‘মূল বাসিন্দা’ ও বহিরাগতদের মধ্যে বৈরিতা, পাশাপাশি কট্টরপন্থী মুসলিম ও খ্রিস্টান প্রচারকদের ক্রমবর্ধমান প্রভাব—এসব কারণ গত কয়েক দশকে বিভাজন আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যখন সহিংসতা শুরু হয়, তখন দুর্বল পুলিশি ব্যবস্থার কারণে পাল্টা হামলার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।

রাজ্যের তথ্য ও যোগাযোগ কমিশনার জয়েস র‌্যামনাপ বলেন, ‘এই ধারাবাহিক হামলা রাজ্যের শান্তিকামী মানুষের জীবন ও জীবিকাকে অস্তিত্বের হুমকির মুখে ফেলছে।’

মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা টিনুবুকে আহ্বান জানিয়েছে, তিনি যেন একটি স্বাধীন কমিশন গঠন করে ‘নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যর্থতা খতিয়ে দেখেন’।

সংস্থাটির নাইজেরিয়া পরিচালক ইসা সানুসি এএফপিকে বলেন, ‘এই রক্তপাত এখনই থামাতে হবে এবং সন্দেহভাজন অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।’

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

কাশ্মীর হামলা : ২০ মিনিট পরে পৌঁছায় নিরাপত্তা বাহিনী

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
কাশ্মীর হামলা : ২০ মিনিট পরে পৌঁছায় নিরাপত্তা বাহিনী
ছবিসূত্র : এএফপি

কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বন্দুকধারীদের হামলায় ভারতের নানা প্রান্তের মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের তালিকায় কাশ্মীর থেকে কেরালা, গুজরাট থেকে পশ্চিমবঙ্গ এবং আসাম—বিভিন্ন রাজ্যের মানুষের নাম রয়েছে। এই হামলায় কেবল দেশজুড়ে নয়, কাশ্মীরের মানুষের মধ্যেও ক্ষোভ ছড়িয়েছে। কারণ, পর্যটকরা কাশ্মীরের মানুষের জীবিকা নির্বাহের বড় উৎস।

হামলার পর সামাজিক মাধ্যমে দেশজুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। তবে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—এই হামলার সময় নিরাপত্তা বাহিনী কোথায় ছিল? দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় ২০ মিনিট হামলা চলার পর নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়, কিন্তু ততক্ষণে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।

‘কেউ সাহায্য করতে আসেনি’

পুণের বাসিন্দা আশাবরী জানান, তিনি তার বাবা-মা ও আত্মীয়দের সঙ্গে পেহেলগাম ছিলেন। হামলায় তার বাবা ও এক আত্মীয় নিহত হন।

তিনি জানান, ‘হামলার সময় আমাদের পাশে কেউ ছিল না। কেবল খচ্চরচালকরাই আমাদের সাহায্য করেছেন।’
তিনি দাবি করেন, ২০ মিনিট পর নিরাপত্তা বাহিনী এলেও তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে।

‘নিরাপত্তা আরো কড়া হওয়া উচিত ছিল’

সেনাবাহিনীর শ্রীনগরভিত্তিক ১৫ কোরের সাবেক কমান্ডার অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল কে জে এস ধিলোঁ বলেন, ‘বৈসরন উপত্যকার মতো পর্যটক-ভরা জায়গায় নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি থাকা উচিত ছিল।

নিরাপত্তাব্যবস্থা গতিশীল হলেও এটি নিয়মিত পর্যালোচনা দরকার।’

অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসার যশোবর্ধন আজাদ বলেন, ‘এই হামলার পেছনে স্পষ্ট পরিকল্পনা ছিল। পেহেলগাম দীর্ঘদিন শান্তিপূর্ণ ছিল, পর্যটকনির্ভর এই এলাকায় সাধারণ মানুষ এমন হামলার বিরুদ্ধে। হামলাকারীরা কৌশলে এই জায়গাটি বেছে নিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা জানতে পারছি হামলাকারীদের সম্পর্কে আগে থেকেই গোয়েন্দা তথ্য ছিল।

তবুও তারা সফল হয়েছে। এর বিশ্লেষণ দরকার, এবং এটিকে বড়সড় শিক্ষা হিসেবেও নেওয়া উচিত।’

সহিংসতা কি কমেছে?

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে কাশ্মীরে ৩৪ লাখ পর্যটক গিয়েছিলেন। ২০২৩ সালে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় দুই কোটি ১১ লাখে। ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত তা এক কোটি আট লাখ ছাড়ায়। পর্যটনের ওপর নির্ভর করে কাশ্মীরের অর্থনীতি—২০১৯-২০ সালে পর্যটনের অবদান ছিল জিডিপির ৭.৮৪ শতাংশ, যা ২০২২-২৩ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ৮.৪৭ শতাংশে। তবে সহিংসতা পুরোপুরি থেমে যায়নি। 

সাউথ এশিয়া টেররিজম পোর্টাল বলছে, ২০২৩ সালে ১২ জন বেসামরিক, ৩৩ জন নিরাপত্তাকর্মী এবং ৮৭ জন চরমপন্থী নিহত হয়। আর ২০২৪ সালে (এখন পর্যন্ত) ৩১ জন বেসামরিক, ২৬ জন নিরাপত্তাকর্মী এবং ৬৯ জন চরমপন্থী নিহত হন। এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই বলছেন, বড় ঘোষণা দেওয়ার আগে আরও ভালো করে পরিস্থিতি সামলানো উচিত ছিল।

‘পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে’

এক অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা বলেন,  ‘পর্যটকরা সফট টার্গেট, তাই তাদের ওপর হামলা অনেক সহজ। অমরনাথ যাত্রার মতো বড় আয়োজনের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা থাকে। তেমনভাবেই পর্যটনকেও সামলাতে হবে। পর্যটকদের নির্দিষ্ট নিরাপদ এলাকায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।’

অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল ধিলোঁ বলেন, ‘পর্যটকদের সংখ্যা এত বেশি, যে প্রতিটি মানুষকে পর্যবেক্ষণ করা কঠিন। স্থানীয় গাইড, হকার, চালকসহ অনেকেই ভিড়ে থাকেন। এর মধ্যেই চরমপন্থীরা লুকিয়ে থাকতে পারে।’

ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট ম্যানেজমেন্ট-এর পরিচালক অজয় সাহনি বলেন, ‘এই ধরনের হামলার ফলে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। সরকারের উচিত সাময়িক হলেও কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া, না হলে কাশ্মীরের পর্যটন ধ্বংস হয়ে যাবে।’ ২০১৯ সালে ৩৭০ ধারা বাতিলের পর সরকার পর্যটনসহ নানা ক্ষেত্রে বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। কিন্তু এ ঘটনার পর কি সেই নীতি বদলাবে?

এরপর কী হবে?

প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং জানিয়েছেন, হামলার জবাব শিগগিরই দেওয়া হবে। তবে কবে এবং কিভাবে, তা জানা যায়নি।
যশোবর্ধন আজাদের মতে, ‘এই হামলার পেছনে পাকিস্তানের হাত রয়েছে। তারা চায় আন্তর্জাতিকভাবে ভারতের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে। হামলাকারীদের জীবিত ধরে পাকিস্তানের ভূমিকা প্রমাণ করতে হবে এবং তারপর উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমি সংলাপের পক্ষে, কিন্তু এখন যুদ্ধবিরতির বাস্তবতা নিয়েও ভাবার সময় এসেছে। পাকিস্তান এতে বেশি লাভবান হচ্ছে।’

অজয় সাহনি মনে করেন, ‘কাশ্মীরে দীর্ঘ ৩০ বছরের সন্ত্রাসবাদ এখন শেষ পর্যায়ে। ভারত সফল হয়েছে অনেকটা। তবে স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে একাত্মতা না গড়ে তুললে সন্ত্রাসের মূল টেনে তোলা সম্ভব নয়।’ তার কথায়, ‘রাজনীতিবিদদের উসকানিমূলক বক্তব্য বন্ধ করতে হবে। গোয়েন্দা তথ্য জোগাড় ও পুলিশের দক্ষতা বাড়াতে হবে। স্থানীয়দের পাশে না থাকলে কোনো অভিযান সফল হবে না।’

সূত্র : বিবিসি
 

মন্তব্য

সন্ত্রাসীরা আমাদের পেটে লাথি মারল : পেহেলগামবাসী

ডয়চে ভেলে
ডয়চে ভেলে
শেয়ার
সন্ত্রাসীরা আমাদের পেটে লাথি মারল : পেহেলগামবাসী
ছবিসূত্র : ডয়চে ভেলে

সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার পেহেলগামের সাধারণ মানুষ। পর্যটকদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তারা। তাদের চিন্তা, পর্যটকরা না এলে তাদের আয়ের পথও বন্ধ হয়ে যাবে। ডয়চে ভেলের দিল্লি প্রতিনিধি পেহেল ঘুরে এসে তার এ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন।

 

রবিবারের পর থেকে পরিস্থিতি আলাদা হয়ে গেছে। রাস্তায় সেনা, পুলিশ, চেকিং আগের থেকে অন্তত দশ গুণ বেশি। পুলিশের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সেনা সদস্যরা তল্লাশি করছেন। বিমানবন্দর থেকেই পেহেলগাম যাওয়ার জন্য হাইওয়ে ধরি।

পেহেলগাম, অনন্তনাগ যেতে হলে সঙ্গম থেকে বাঁ দিকে যেতে হয়। সেই সঙ্গমেই গাড়ি আটকে দেওয়া হয়। তাদের বলা হয়েছিল, যেতে পারবেন না। সাংবাদিক হলেও নয়।

এরপর সাহায্যে এগিয়ে এলেন স্থানীয় মানুষরা। তারা বললেন, আপনারা মেহমান। আপনারা যান। দেখে আসুন বলে ঘুরপথে কিভাবে যেতে হবে সেই রাস্তা দেখিয়ে দিলেন। এরপর অনন্তনাগ হয়ে পেহেলগাম।

রাস্তায় শুধু নিরাপত্তা বাহিনী, সাঁজোয়া গাড়ি, দশ গজ দূরে দূরে নিরাপত্তাকর্মী দাঁড়িয়ে। সামান্য জমায়েত দেখলেই পুলিশের গাড়ি সেখানে চলে আসছে।

পেহেলগামের অবস্থা দেখলে প্রথমে একটা কথাই মনে পড়বে, পুরো শহর স্তব্ধ। কোথাও কেউ নেই। হোটেল বন্ধ। ট্যাক্সিস্ট্যান্ডে শুধু ট্যাক্সি দাঁড়িয়ে আছে। কোনো মানুষ নেই। 

হোটেল মালিক মহম্মদ আলী বেগ জানালেন, ‘পেহেলগামের সব হোটেল আগামী তিন মাসের জন্য বুকড ছিল। সব বুকিং ক্যানসেল হয়ে গেছে। জানি না, কিভাবে আমাদের দিন চলবে। আমরা তো এই তিন মাসের আয়ে সারা বছর চালাতাম।’

একই চিন্তা রেস্তোরাঁ মালিক, ট্যাক্সিচালকদের। তারাও বলছেন, চিন্তা হচ্ছে, আয় বন্ধ হয়ে গেলে চালাব কী করে? ট্যাক্সিচালক ফারুখ বলছিলেন, ‘কিছু ভাবতে পারছি না। এটা আমাদের চিন্তার বাইরে ছিল। এই তিন মাসই তো আমাদের আয়। সবে সিজন শুরু হয়েছিল। আমাদেরও সব কিছু শেষ হয়ে গেল।’

পেহেলগামের রেস্তোরাঁগুলো প্রচুর খাবার জিনিস, মশলার স্টক করে রেখেছিল। পুরো টাকাটাই জলে গেল বলে তারা মনে করছেন। কিভাবে তারা ক্ষতিপূরণ করবেন, ঘুরে দাঁড়াবেন ভেবে পাচ্ছেন না।

তারপরেও ট্যাক্সিচালকরা পর্যটকদের বলেছেন, ‘আপনারা মেহমান। এই সংকটের সময়ে আপনারা যেখানে বলবেন, ছেড়ে দেব। একটা পয়সাও নেব না।’ পর্যটকদের জন্য তারা ফ্রি সার্ভিস দিচ্ছেন। যেমন স্থানীয় মানুষরা পর্যটকদের জন্য লঙ্গর শুরু করেছিলেন।
আমরা একটা রেস্তোরাঁয় খাওয়ার পর মালিক টাকা নিতে চাননি। বলেছেন, মেহমান আপনারা। টাকা লাগবে না। দুটো ছবি মেলাতে পারা যাচ্ছে না, যাবেও না। একদিকে বৈসরনে গত মঙ্গলবার অমানবিক, নৃশংস, বর্বরোচিত আক্রমণ, পর্যটকদের রক্তে ভেজা উপত্যকা, অন্যদিকে স্থানীয় মানুষদের এত কষ্টের মধ্যেও মানবিকতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া।

শ্রীনগর থেকে পেহেলগাম পর্যন্ত একজনও স্থানীয় মানুষ পাওয়া যায়নি, যারা এই ঘটনার নিন্দায় মুখর হননি, যিনি ক্ষুব্ধ নন। ডাল লেকের বোটচালক থেকে শুরু করে, সহিস, সাধারণ মানুষ সবাই প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন। 

মহম্মদ আলি বেগ বলছিলেন, ‘কয়েকজন সন্ত্রাসবাদী শুধু পর্যটকদের আক্রমণ করেনি, আমাদের ওপরও হামলা করেছে, আমাদের পেটে লাথি মেরেছে, আমাদের রুটি-রুজি বন্ধ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করেছে।’

ফারুখ বলছিলেন, ‘আমরাও চাই, দোষীদের কড়া শাস্তি হোক। নিরাপত্তা আরো বাড়ানো হোক। এটা শুধু পর্যটক নয়, কাশ্মীরিদের জন্যও জরুরি। বিশ্বাস করুন , আমরা চাই এ রকম ঘটনা যেন আর না হয়। আবার পর্যটকে ভরে যাক পেহেলগাম। আমাদের ঠিকভাবে বেঁচে থাকার জন্যও এটা জরুরি।’

সাধারণ মানুষের এই ভাবনার কথা পেহেলগামে পা না রাখলে, তাদের সঙ্গে কথা না বললে বুঝতে পারতাম না, বোঝা সম্ভব ছিল না। 


 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

পাকিস্তান আকাশসীমা বন্ধ করায় যেসব সমস্যায় পড়বে ভারতীয় বিমান

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
পাকিস্তান আকাশসীমা বন্ধ করায় যেসব সমস্যায় পড়বে ভারতীয় বিমান
সংগৃহীত ছবি

জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছিল ভারত। বৃহস্পতিবার তার পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে আকাশসীমা বন্ধসহ আটটি পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। 

আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়ায় এখন থেকে ভারতের মালিকানাধীন বা ভারত নিয়ন্ত্রিত কোনো বিমান পাকিস্তানের ওপর দিয়ে যেতে পারবে না। বিমান চলাচলের জন্য পাকিস্তানের আকাশ ভারতকে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।

এর ফলে ভারতের বিমান চলাচলে বেশ কিছু সমস্যা হতে পারে। বাড়তে পারে বিমানভাড়া।

ভারতীয় একাধিক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, দিল্লিসহ উত্তর ভারতের যেকোনো শহর থেকে পশ্চিমের কোনো দেশে যেতে পাকিস্তানের আকাশ ব্যবহার করা হয়। ওই পথে আন্তর্জাতিক বিমান চালায় এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো, এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস এবং স্পাইস জেটের মতো সংস্থা।

 

পাকিস্তান বৃহস্পতিবার আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করতেই এই সংস্থাগুলো ভবিষ্যতের সমস্যার কথা জানিয়েছে। তাদের বক্তব্য, পাকিস্তানের আকাশপথ ব্যবহার করতে না পারলে উত্তর আমেরিকা, ব্রিটেনসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এবং পশ্চিম এশিয়ার দিকে বিমান চালাতে সমস্যা হবে। বিকল্প পথে যাত্রার সময়ও হবে দীর্ঘ।

পাকিস্তানের ওপর দিয়ে না গেলে উত্তর ভারত থেকে পশ্চিমের দিকে বিমানগুলোকে যেতে হবে আরব সাগরের ওপর দিয়ে।

এটিই প্রধান বিকল্প পথ। তবে এ ছাড়া কয়েকটি বিকল্প খোলা থাকবে ভারতীয় সংস্থাগুলোর সামনে। 

এক সিনিয়র পাইলট সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, আমেরিকা এবং ইউরোপের বিমানগুলো বিকল্প পথ ধরলে গন্তব্যে পৌঁছতে স্বাভাবিকের চেয়ে অন্তত দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা বেশি সময় লাগবে। তবে বিভিন্ন সংস্থা বিভিন্ন রকম বিকল্প পথ খুঁজে নিতে পারে। এসংক্রান্ত তালিকা প্রকাশ করা হলেই যাত্রার সময় সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়া যাবে।

আরব সাগর দিয়ে ঘুরে যেতে হলে বাড়তি জ্বালানি খরচ হবে বিমানগুলোর। এর ফলে যাত্রার খরচও আগের চেয়ে বেড়ে যাবে। মনে করা হচ্ছে, পাকিস্তানের সিদ্ধান্তের ফলে ভারতে বিমানভাড়া ৮ থেকে ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে চলেছে। এই পরিস্থিতি যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে আগামী দিনে ভাড়া আরো বাড়তে পারে।

তবে সমস্যা এখানেই শেষ নয়। বেশি দূরত্ব অতিক্রম করতে হলে বিমানগুলোতে আরো বেশি জ্বালানি রাখতে হবে। তার ফলে সার্বিকভাবে বিমানের ভারসাম্য বজায় রাখতে যাত্রীসংখ্যা, নয়তো জিনিসপত্রের ওজন কমাতে হবে। যাত্রীসংখ্যা কমিয়ে দিতে হলে বিমানসংস্থাগুলোর আয় কমবে। ফলে সেগুলো অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারে।

আরো পড়ুন
প্রাথমিক শিক্ষকদের জরুরি বার্তা দিল অধিদপ্তর

প্রাথমিক শিক্ষকদের জরুরি বার্তা দিল অধিদপ্তর

 

এর আগে ২০১৯ সালেও বালাকোটে ভারতের বিমান হামলার পর পাকিস্তান কয়েক মাসের জন্য আকাশসীমা বন্ধ রেখেছিল। পরে আবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছিল। 

মন্তব্য

থাইল্যান্ডে বিমান বিধ্বস্ত, ৫ পুলিশ সদস্য নিহত

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
থাইল্যান্ডে বিমান বিধ্বস্ত, ৫ পুলিশ সদস্য নিহত
ছবিসূত্র : সিনহুয়া নিউজ

থাইল্যান্ডের এক জনপ্রিয় সৈকত শহরের কাছে একটি ছোট পুলিশ বিমান সাগরে বিধ্বস্ত হয়ে কমপক্ষে পাঁচজন মারা গেছেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

রয়্যাল থাই পুলিশের মুখপাত্র আর্চায়োন ক্রাইথং জানান, হুয়া হিন জেলায় প্যারাসুট প্রশিক্ষণের প্রস্তুতির জন্য বিমানটি পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন করেছিল। তখনই স্থানীয় সময় সকাল ৮টার দিকে বিমানটি দুর্ঘটনার শিকার হয়। তাৎক্ষণিকভাবে বিমানের মডেল শেয়ার করা না হলেও ঘটনাস্থল থেকে যে ছবি পাওয়া গেছে, তাতে একটি ভাইকিং ডিএইচসি-৬ টুইন অটার দেখা গেছে।

 

প্রাচুয়াপ খিরি খান প্রদেশের জনসংযোগ বিভাগ জানায়, বিমানটি হুয়া হিন বিমানবন্দরের কাছে সাগরে বিধ্বস্ত হয়। ছবিতে দেখা যায়, বিমানটি উপকূল থেকে প্রায় ১০০ মিটার দূরে সাগরের পানিতে পড়ে আছে এবং বিমানটি দুইটুকরো হয়ে গেছে।

বিমানে ছয়জন পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন বলে নিশ্চিত করেন মুখপাত্র আর্চায়োন। তিনি প্রাথমিকভাবে জানান, ঘটনাস্থলেই পাঁচজনের মৃত্যু হয় এবং একজন হাসপাতালে মারা যান।

পরে তিনি আরো জানান, হাসপাতালে পাঠানো কর্মকর্তা এখনও বেঁচে আছেন তবে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

বিমান দুর্ঘটনার কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। আর্চায়োন জানান, তদন্তকারীরা এখন বিমানের ব্ল্যাক বক্সসহ অন্যান্য তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করছেন।

সূত্র : আরব নিউজ

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ