নিম্নমুখী অর্থনীতি ও ধারাবাহিক প্রাণঘাতী হামলার কারণে উদ্বেগের মুখে আগাম নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন জার্মানির নাগরিকরা। জোরালো প্রচারণার পর গতকাল রবিবার শুরু হওয়া এই নির্বাচনের দিকে কেবল জার্মানরাই নয়, গভীর নজর রাখছে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রও।
নির্বাচনে চারজন প্রার্থী বর্তমান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ, বিরোধীদলীয় নেতা ফ্রেডরিখ মার্জ, বর্তমান ভাইস চ্যান্সেলর রবার্ট হাবেক ও কট্টর ডানপন্থী দলের নেতা অ্যালিস ভাইডেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এবারের নির্বাচনের অন্যতম প্রধান ইস্যু হচ্ছে অভিবাসী নিয়ন্ত্রণ এবং জার্মানির অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত করা।
জরিপে পরবর্তী চ্যান্সেলর হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন ক্রিস্টিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন পার্টির (সিডিইউ) ফ্রেডরিখ মার্জ। ৬৯ বছর বয়সী এই রক্ষণশীল নেতা জার্মানিকে ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা থেকে শুরু করে একটি ক্রমবর্ধমান অবকাঠামো নির্মাণসহ চার বছরের মধ্যে দেশের বেশির ভাগ সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
তবে সিডিইউ জিতে গেলেও সরকার গঠন করতে মার্জকে অন্তত একটি দলের সঙ্গে জোট করতে হবে। বর্তমান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজের মধ্য-বামপন্থী সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক দলের সঙ্গেই জোট করতে পারেন মার্জ।
নির্বাচনের প্রাক্কালে মার্জ দৃঢ়ভাবে জানিয়েছিলেন, তিনি কোনো অবস্থায়ই কট্টর ডানপন্থী অলটারনেটিভ ফর জার্মানির (এএফডি) সঙ্গে জোট করবেন না।
জার্মানির জন্য এবারের নির্বাচনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। সামনে তাদের দেশের অভ্যন্তরে তো বটেই, বিশ্ব মঞ্চেও বড় বড় সব সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
ইউক্রেনকে সামরিক সাহায্য দেওয়া দ্বিতীয় বৃহত্তম এ দেশের নতুন সরকারকে তাল মেলাতে হবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে, যিনি ভোলোদিমির জেলেনস্কিকে বলছেন, স্বৈরাচার আর রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান এরই মধ্য টলিয়ে দিয়েছেন।
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স চ্যান্সেলর পদে এএফডির প্রার্থী এলিস ভাইডেলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করায় জার্মান রাজনীতিকরা সম্প্রতি আরো একটি ধাক্কা খেয়েছেন। এএফডি ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে জার্মানিকে প্রত্যাহার, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক পদক্ষেপ বাতিল, পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন, রুশ গ্যাস সংযোগ মেরামত ও মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
জার্মান পার্লামেন্টে আসনসংখ্যা ৬৩০, এএফডি এবার দেড় শর বেশি আসন পেতে পারে বলে জনমত জরিপগুলোতে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে কট্টর বাম লেফট পার্টির পুনরুত্থানের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। সূত্র : বিবিসি