কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ান

  • পাল্টা শুল্ক ৩ মাস স্থগিত
শেয়ার
কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ান

শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা পৃথিবীতেই এখন সবচেয়ে আলোচিত বিষয় শুল্কযুদ্ধ। যুক্তরাষ্ট্রের ঘাটতি বাণিজ্য আছে এমন দেশগুলোর ওপর ট্রাম্প প্রশাসন নানা মাত্রায় শুল্ক আরোপ করেছে। অনেক অর্থনীতিবিদ আশঙ্কা করছেন, এভাবে চলতে থাকলে বিশ্বব্যাপী বড় ধরনের অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিতে পারে। এরই মধ্যে একটি সুখবর এসেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীন ছাড়া বিশ্বের অন্য সব দেশের ওপর আরোপিত পাল্টা শুল্ক ৯০ দিন অর্থাত্ তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন। বলা হয়েছে, এ সময় দেশগুলোর পণ্যে ন্যূনতম ১০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হবে। অন্যদিকে চীনের পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে এ ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প।

বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠিয়েছিলেন বাংলাদেশের পণ্যের ওপর আরোপিত ৩৭ শতাংশ শুল্ক অন্তত তিন মাসের বিরতির জন্য। ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর প্রধান উপদেষ্টা এক্সে বলেছেন, ধন্যবাদ, মিস্টার প্রেসিডেন্ট, আমাদের শুল্কসংক্রান্ত ৯০ দিনের বিরতির অনুরোধে ইতিবাচক সাড়া দেওয়ার জন্য। আমরা আপনার বাণিজ্যিক এজেন্ডাকে সমর্থন জানাতে আপনার প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ট্রাম্পের নতুন সিদ্ধান্ত নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ট্রাম্প অসাধারণ সাহস দেখিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমরা বিশ্বের সব দেশকে জানিয়েছিলাম পাল্টা ব্যবস্থা না নিলে তোমরা পুরস্কৃত হবে। সুতরাং যারা আলোচনায় আসতে চায়, আমরা তাদের কথা শুনতে প্রস্তুত। এই পদক্ষেপ ইঙ্গিত দেয় যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বাণিজ্যকে গুরুত্ব দেন এবং আমরা সত্ভাবে আলোচনা করতে চাই।

কালের কণ্ঠে প্রকাশিত অপর এক প্রতিবেদনে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে উত্পাদন ফেরাতে ওষুধে শুল্ক বসাতে চান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য পলিটিকো জানিয়েছে, শিগগিরই ওষুধশিল্পে শুল্ক আরোপ করতে যাচ্ছেন ট্রাম্প।

তৈরি পোশাকের পাশাপাশি বাংলাদেশের ওষুধশিল্পও আমাদের রপ্তানি খাতে বড় ভূমিকা রাখছে। অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হলে ওষুধ রপ্তানিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

সরকার এরই মধ্যে শুল্কারোপের বিষয়টি নিয়ে মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরাও মনে করি, আলোচনাই একমাত্র পথ এবং তা আরো বাড়াতে হবে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

হজযাত্রীদের দুর্ভোগ কমবে

    হজ ব্যবস্থাপনায় নানা উদ্যোগ
শেয়ার
হজযাত্রীদের দুর্ভোগ কমবে

পবিত্র হজ পালন ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ধর্মীয় বিশ্বাস এবং আবেগ-অনুভূতির সঙ্গে জড়িত। তা সত্ত্বেও প্রতিবছরই হজ ব্যবস্থাপনার নানাবিধ দুর্বলতা উঠে আসে গণমাধ্যমে। প্রতারণাসহ নানা ধরনের বিড়ম্বনায় পড়তে হয় হজযাত্রীদের। ঢাকার বিমানবন্দর থেকেই শুরু হয় বিড়ম্বনা।

সৌদি আরবের জেদ্দা-মক্কা-মদিনায় তা অব্যাহত থাকে। লাগেজসহ মূল্যবান জিনিসপত্র হারিয়ে যায়। অনেক সময় হজযাত্রী নিজেই পথ ভুলে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন নিজ নিজ দল থেকে। এমনকি হাত খরচের টাকাও অনেকে হারিয়ে ফেলেন।
এমন সব জটিলতা এড়াতে এবার উদ্যোগ নিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, হজযাত্রীদের লাগেজ হারানো ও অসুস্থ হওয়াসহ সব ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি নজরদারি করতে ঢাকা ও সৌদি আরবের মক্কা ও মদিনায় খোলা হবে হজ ম্যানেজমেন্ট সেন্টার। নির্দিষ্ট অ্যাপের মাধ্যমে ঢাকায় বসে সৌদি আরবে বাংলাদেশি হাজিদের মনিটর করা হবে। প্রত্যেক হজযাত্রীকে সেই অ্যাপের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক দেখভাল করা হবে।
কোনো হজযাত্রী বিপদে পড়লে নিজেও অ্যাপসের মাধ্যমে কল করে জানাতে পারবেন এই সেন্টারে। তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, হজ ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত জাতীয় কমিটির সভায় বেসরকারি এজেন্সিগুলোর দায়িত্ব কী হবে, সেটি সুস্পষ্টভাবে লিপিবদ্ধ করে বুকলেট আকারে অনলাইনে প্রকাশের নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, সরকারের দায়িত্ব হলো এজেন্সিগুলো ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করছে কি না তা মনিটর করা এবং কোনো ব্যত্যয় দেখা গেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া। জানা যায়, এ ছাড়া সব হজযাত্রীর মোবাইল ফোনের সিম রোমিং করে দেবে সরকার।

এর খরচ সাশ্রয়ী করা হবে। হজযাত্রীদের নতুন করে সৌদি কম্পানির মোবাইল সিম কিনতে হবে না। এতে হাজিদের সঙ্গে তাঁদের পরিবার-পরিজনের যোগাযোগের সমস্যা দূর হবে। এ ছাড়া সৌদি আরবে নগদ টাকা বহনের ঝুঁকি কমাতে সব হজযাত্রীকে ইসলামী ব্যাংকের ডেবিট কার্ড দেওয়া হবে, যাতে সৌদি আরবে গিয়ে হজযাত্রীরা এটিএম বুথ থেকে প্রয়োজনীয় রিয়াল তুলে খরচ করতে পারেন।

এ বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় পাঁচ হাজার ২০০ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮১ হাজার ৯০০ জন হজে যাচ্ছেন। আমরা আশা করি, হজযাত্রীদের যাতে কোনো দুর্ভোগ না হয় সে জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট এজেন্সিগুলো যার যার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবে। হজযাত্রীদের সমস্যা সমাধানে সরকার যেসব উদ্যোগ নিয়েছে সেসবের সর্বাঙ্গীণ সাফল্য কামনা করি।

মন্তব্য

অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করুন

    গভীর সংকটে শিল্প-কারখানা
শেয়ার
অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করুন

নানা প্রতিকূল পরিস্থিতিতে দেশের শিল্প খাত আজ এক গভীর সংকটে নিমজ্জিত। গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট ক্রমেই প্রবল হচ্ছে। ঢাকার সাভার, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও নরসিংদী এলাকার শিল্প-কারখানাগুলোতে চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস না পাওয়ায় উৎপাদন ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। এর ফলে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে।

এমন পরিস্থিতিতে আবারও বাড়ানো হয়েছে গ্যাসের দাম, যার কারণে শিল্পে রীতিমতো বিপর্যয় নেমে আসবে বলে জানান খাতসংশ্লিষ্টরা। গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, শিল্প গ্রাহকদের প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের বিল ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪০ টাকা এবং ক্যাপটিভ পাওয়ারে (শিল্পে উৎপাদিত নিজস্ব বিদ্যুৎকেন্দ্র) গ্যাসের দাম ৩১.৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪২ টাকা করা হয়েছে। পুরনো শিল্প-কারখানায় অনুমোদিত লোডের বাইরে অতিরিক্ত ব্যবহারে দিতে হবে বাড়তি দাম।

খাতসংশ্লিষ্টদের মতে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক অস্থিরতা, বাজার অস্থিতিশীলতা, ব্যাংকঋণের উচ্চ সুদহার, ঋণপত্র খোলার অভাবে কাঁচামালের অপর্যাপ্ততা, শ্রমিক অসন্তোষ ও উৎপাদন অপ্রতুলতায় দুই শতাধিক কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে।

যেগুলো টিকে আছে সেগুলোও অস্তিত্বের সংকটে ধুঁকছে। এ অবস্থায় নতুন করে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধিতে শিল্প খাতকে আরো ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার গ্যাসের দাম বাড়ালেও সরবরাহ তেমন বাড়াতে পারবে না। কারণ ধারাবাহিকভাবে দেশীয় কূপগুলো থেকে গ্যাসের উৎপাদন কমে আসছে।
আর তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) থেকে সর্বোচ্চ আমদানির সক্ষমতা ১১০০ মিলিয়ন ঘনফুট। নতুন এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ না হলে আমদানি আর বাড়ানো যাবে না। আগামী দুই বছরেও নতুন টার্মিনাল চালুর তেমন সম্ভাবনা নেই। কারণ টার্মিনাল নির্মাণে কোনো চুক্তি হয়নি। আওয়ামী লীগ আমলে হওয়া দুটি চুক্তিই বাতিল করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

বাংলাদেশ নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম কালের কণ্ঠকে বলেন, আমার ধারণা, নতুন শিল্পের জন্য এত উচ্চমূল্যের গ্যাস বিল দিয়ে কেউ এই খাতে বিনিয়োগ করবে না। পাশাপাশি আমরা যারা কারখানা চালাচ্ছি, তারাও সক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে উদ্যোগী হব না। তিনি আরো বলেন, গ্যাসের দাম বাড়ানো হলেও গ্যাসের সরবরাহ কিন্তু বাড়ানো হচ্ছে না। পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে দেশে গ্যাসের চাহিদা রয়েছে প্রায় চার হাজার ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট। গত রবিবার গ্যাস সরবরাহ করা হয় দুই হাজার ৬৯৬ মিলিয়ন ঘনফুট, ঘাটতি ছিল প্রায় দেড় হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। মোট দুই হাজার ৬৯৬ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহের মধ্যে দেশীয় গ্যাসক্ষেত্র থেকে এক হাজার ৮৭৩ মিলিয়ন ঘনফুট এবং আমদানী তরা তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) থেকে ৮২২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয়।

দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার কর্মসংস্থানের জন্য দেশে দ্রুত শিল্পায়ন প্রয়োজন, কিন্তু হচ্ছে উল্টোটা। বিদ্যমান শিল্পগুলোও ধুঁকতে ধুঁকতে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাহলে এ দেশের দ্রুত বর্ধিষ্ণু জনসংখ্যার কর্মসংস্থান হবে কিভাবে? আমরা মনে করি, অন্তর্বর্তী সরকার দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির স্বার্থে শিল্প সুরক্ষায় গুরুত্ব দেবে। গ্যাসের দাম বাস্তবতার নিরিখে বিবেচনা করতে হবে। পাশাপাশি শিল্প-কারখানার জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে হবে।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে

    কমছে না মানবপাচার
শেয়ার
কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে

মানবপাচার আমাদের বড় সমস্যাগুলোর একটি। বেকারত্বের অভিশাপ ঘোচাতে কিংবা কিছুটা উন্নত জীবন পেতে প্রতিবছর বহু তরুণ অবৈধভাবে বিদেশে যেতে চায় এবং পাচারকারীদের শিকারে পরিণত হয়। এসব তরুণ বা তাদের পরিবার শুধু আর্থিক ক্ষতিরই মুখোমুখি হয় না, অনেককে বেঘোরে প্রাণও দিতে হয়। রবিবার কালের কণ্ঠে উপকূলীয় এলাকায় মানবপাচার সংক্রান্ত তিনটি আলাদা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

প্রতিবেদনগুলোতে পাচারকারীচক্রের বেপরোয়া কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি উঠে এসেছে তাদের খপ্পরে পড়া অসহায় মানুষের আর্তি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, টেকনাফ সীমান্তেই মানবপাচারে জড়িত আছে ১৫টি চক্র। এসব চক্রের তিন শতাধিক সদস্য রয়েছে। তারা শুধু রোহিঙ্গা নয়, বাংলাদেশিদেরও নানা কৌশলে পাচার করছে।

নৌবাহিনী গত মঙ্গলবার বঙ্গোপসাগর থেকে এফভি কুলসুমা নামের মাছ ধরার একটি নৌকা জব্দ করেছে। মালয়েশিয়াগামী ওই নৌকা থেকে মোট ২২১ জনকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ১৬৭ জনই ছিল রোহিঙ্গা, বাংলাদেশি ছিল ৪২ জন, ১২ জন ছিল দালাল। সূত্র জানায়, পাচারকারীচক্রে যেমন বাংলাদেশিরা জড়িত আছে, তেমনি আছে রোহিঙ্গারাও।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন পাঁচটি স্থান মানবপাচারের অন্যতম পয়েন্ট। উদ্ধারকৃত অনেকে পুলিশকে জানিয়েছে, বাহারছড়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কচ্ছপিয়া গ্রামে পাচারকারীচক্রের বিশাল আস্তানা আছে। আছে কমপক্ষে ছয়টি বন্দিশালা। বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজনকে এনে এখানে আটক করে রাখা হয়। টেকনাফ থানার পুলিশ গত জানুয়ারিতে অভিযান চালিয়ে বন্দিশালা থেকে পাচারের জন্য আটকে রাখা কয়েকজন রোহিঙ্গাসহ ১৬ জনকে উদ্ধারও করেছিল।

জানা যায়, কচ্ছপিয়া গ্রামের সংঘবদ্ধ পাচারকারীদের হাতে গত তিন মাসে দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

মানবপাচার প্রতিরোধে আমাদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো খুব একটা সফল নয়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, মানবপাচার নির্মূলে বাংলাদেশ ন্যূনতম মানও অর্জন করতে পারেনি, তবে কিছু ক্ষেত্রে অপর্যাপ্ত পদক্ষেপ রয়েছে। কক্সবাজারের পুলিশ সুপার জানান, গত দুই বছর তিন মাসে ১৫৫ জন পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং উদ্ধার করা হয়েছে পাচারের শিকার ৫০০ জনকে। অভিযোগ রয়েছে, ছোটখাটো মানবপাচারকারী গ্রেপ্তার হলেও রাঘব বোয়ালরা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যায়। আবার বিচারকাজে দীর্ঘসূত্রতাও রয়েছে। জামিনে বেরিয়ে এসে অনেকে আবার একই কাজ করে।

মানবপাচার একটি গুরুতর অপরাধ। এর সঙ্গে রাষ্ট্রের মর্যাদার প্রশ্নও জড়িত আছে। তাই মানবপাচারের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। জড়িতদের দ্রুত বিচারের মাধ্যমে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি অবৈধ পথে বিদেশে না যাওয়ার জন্য ব্যাপক সচেতনতামূলক প্রচারণাও চালাতে হবে।

মন্তব্য

আনন্দ উৎসবে মেতে উঠুক দেশ

    স্বাগত ১৪৩২ সাল
শেয়ার
আনন্দ উৎসবে মেতে উঠুক দেশ

স্বাগত ১৪৩২ সাল। আজ পহেলা বৈশাখ, বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন। আবির রাঙানো উষার আলোতে অবগাহন করে বাঙালি মেতে উঠবে প্রাণের উৎসবে। ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় মিলিত হবে বর্ষবরণের আনন্দ-হিল্লোলে।

গানে, কবিতায়, শিল্পকলা ও চিত্রকলায়, আচারে-অনুষ্ঠানে, প্রথায়নানাভাবে দেশব্যাপী বরণ করা হবে নতুন বছরকে। সব মানুষের কল্যাণ কামনায় বেরোবে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা। শহর-নগর-গ্রামেগঞ্জে বসবে বৈশাখী মেলা। প্রভাতের প্রথম কিরণে কোটি বাঙালির কণ্ঠ থেকে নিঃসৃত হবে সেই উজ্জীবনী আবাহন, এসো হে বৈশাখ, এসো এসো
কামনা করা হবে, জীর্ণ-পুরাতনকে দূরে সরিয়ে আনন্দের ডালি নিয়ে আসুক নতুন বছর।

নববর্ষ বরণের সংস্কৃতি চিরন্তন, সর্বব্যাপী। সব দেশ, সব জনগোষ্ঠী নিজ নিজ নতুন বছরে এভাবেই মেতে ওঠে বর্ষবরণের নানা আয়োজনে। বাংলা নববর্ষেও একই রীতি চলে আসছে হাজার বছর ধরে।

মেলা-উৎসবের আয়োজন, হালখাতা তৈরি, মিষ্টান্ন বিতরণ, ভালো ভালো খাবার পরিবেশনএসব বাংলার লোকায়ত ঐতিহ্যেরই অংশ। এই একটি দিনে বাংলার মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানে কোনো ভেদাভেদ থাকে না। গত তিন বছর করোনা মহামারির কারণে বাঙালির প্রাণের এই উৎসবে কিছুটা ভাটা পড়েছিল। এবার করোনার প্রকোপ কমে যাওয়ায় পুরো জাতি ভাসবে নববর্ষের আনন্দ উৎসবে, উৎসব হয়ে উঠবে সর্বজনীন।

আজ কিছু মানুষ বাঙালির সুপ্রাচীন এই ঐতিহ্য অস্বীকার করতে চাইছে।

সাম্প্রদায়িক বিভেদের দেয়াল তুলে দিতে চাইছে বর্ষবরণের উৎসবে। বাংলার মানুষ, বাঙালি জাতি এই সর্বজনীন উৎসবের ঐতিহ্যকে অক্ষুণ্ন রাখবে। তাই প্রাণের টানেই বাংলার প্রতিটি প্রান্তে প্রতিটি ঘরে উদযাপিত হবে নববর্ষের উৎসব। একইভাবে পৃথিবীর যেখানেই বাঙালির বসবাস রয়েছে, সেখানেই দৃশ্যমান হবে এমন আয়োজন। প্রকাশ ঘটবে নিজের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতি এক অকৃত্রিম ভালোবাসার।

বাঙালির সংস্কৃতি ধ্বংসের যে অপচেষ্টা তদানীন্তন পাকিস্তানে শুরু হয়েছিল, তার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে ১৯৬৭ সালে রমনার বটমূলে যে আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেছিল ছায়ানট, তা আজও বাঙালির এক অমলিন ঐতিহ্য হয়ে টিকে আছে। রাজধানীতে দিন শুরু হবে রমনায় ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। জঙ্গিবাদী অপশক্তির বোমা হামলাও ছায়ানটের এই যাত্রাকে থামাতে পারেনি। অন্যদিকে বাঙালির যে ঐতিহ্য আজ বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হয়ে গেছে, সেই শোভাযাত্রাও রয়েছে আরো বেশি বর্ণাঢ্য আয়োজনে। রমনায় ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে যেমন লাখো মানুষের ঢল নামবে, একই চিত্র দেখা যাবে চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে আয়োজিত শোভাযাত্রায়ও। রাজধানীজুড়েই থাকবে উৎসবের আমেজ। থাকবে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, খুলনাসহ দেশের বড় শহরগুলোতে। থাকবে গ্রামবাংলায়ও। বর্ষবরণ উৎসবের ক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীগুলোকে সর্বোচ্চ পেশাদারির পরিচয় দিতে হবে। প্রাণের উৎসবের স্বতঃস্ফূর্ততায় কোনো শঙ্কা যেন না থাকে।

আজকের এই বিশেষ দিনে সবার একটাই চাওয়া, মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা/অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা। নববর্ষে আমাদের অগণিত পাঠক, বিজ্ঞাপনদাতা ও শুভানুধ্যায়ীকে জানাই নতুন বছরের আন্তরিক শুভেচ্ছা। শুভ নববর্ষ।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ