টাকা বা বন্ড কিছু একটা পাবেন দুর্বল ব্যাংকের গ্রাহকরা : গভর্নর

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
টাকা বা বন্ড কিছু একটা পাবেন দুর্বল ব্যাংকের গ্রাহকরা : গভর্নর
আহসান এইচ মনসুর

দুর্বল ব্যাংকের গ্রাহকদের উদ্দেশে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, আপনাদের আমরা উদ্ধার করব। একটু সময় দিতে হবে। এখনই পারা যাবে না। আমরা ধাপে ধাপে করব, রেজল্যুশন অ্যাক্টে যাচ্ছি।

অনেক কিছুই করা হবে, এ বছরের মধ্যেই। টাকা পান বা বন্ড পান, একটা কিছু তো পাবেন।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর তোপখানা রোডের সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির (এমআরএ) বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে দুর্বল ব্যাংকের গ্রাহকদের টাকার বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছেএমন এক প্রশ্নের জবাবে আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে ১০ বছর আগে থেকেই বলছি, আপনারা এস আলমের ব্যাংকে টাকা রাখবেন না।

আপনারা রেখেছেন। ২ শতাংশ সুদ বেশি দিয়েছে, তাই রেখেছেন। এখন ধরা খেয়েছেন।

তিনি বলেন, সরকারের ২২টি মন্ত্রণালয়ে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম চালু আছে।

মন্ত্রণালয় থেকে এটা করার দরকার আছে কি না, এগুলোর যৌক্তিকতা আছে কি না, সেটা দেখা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে গভর্নর বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক বিশেষভাবে হয়েছে। এটা আমি বলব হিস্টোরিক্যাল ইনসিডেন্স। একটা আইন দিয়ে এই ব্যাংক দেখা হয়। কিন্তু একটা আইন দিয়ে একটা প্রতিষ্ঠান দেখা হয় না, অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান দেখা হয়।

এটা ইউনিক কেস।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারক বলেন, বড় বড় বিনিয়োগকারী ব্যাংক থেকে ঋণ নিচ্ছে এবং তাদের মধ্য থেকে খেলাপি হচ্ছে। তাদের জন্য আমরা হয়রান হচ্ছি। সে তুলনায় ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতারা অনেক ভালো।

পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. ফজলুল কাদের বলেন, বর্তমানে দাবি করা হয়, ছয় কোটি ৪০ লাখ ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতা আছেন। তবে একজনের একাধিক হিসাব সমন্বয় করলে এই সংখ্যা কমে যাবে, যা তিন কোটির বেশি হবে না। সে ক্ষেত্রে আনসাসটেইনেবল ঋণ বাড়ছে কি না, তা দেখতে হবে।

অনুষ্ঠানে এমআরএ প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গ্রাহকদের মাঝে তিন লাখ কোটি টাকার ক্ষুদ্রঋণ বিতরণ করা হয়েছে, যা তার আগের অর্থবছরের তুলনায় ৫.২৬ শতাংশ বেশি।

এর মধ্যে এমআরএ সনদপ্রাপ্ত ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানে বিতরণ করা ঋণ দুই লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকা। ক্ষুদ্রঋণ বিতরণের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহক থেকে ৯৭ হাজার কোটি টাকার আমানত সংগ্রহ করে। এর মধ্যে এমআরএ সনদপ্রাপ্ত ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান সংগ্রহ করে ৬৮ হাজার কোটি টাকার আমানত।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ২০২৪ সালে এমআরএ সনদপ্রাপ্ত ৭২৪টি প্রতিষ্ঠানের ২৬ হাজারের বেশি শাখা রয়েছে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এমআরএর এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান আর নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা ও চট্টগ্রাম
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা ও চট্টগ্রাম
শেয়ার
বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান আর নেই
আবদুল্লাহ আল নোমান

বর্ষীয়ান রাজনীতিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান গতকাল মঙ্গলবার ভোরে ইন্তেকাল করেছেন। দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী জানান, ভোর ৬টার দিকে তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া

ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছিলেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।

আবদুল্লাহ আল নোমানের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমাবেদনা জানান। পৃথক বার্তায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

পরিবারের সদস্যরা জানান, ভোরে ধানমণ্ডির ৮ নম্বর সড়কের বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়েন আবদুল্লাহ আল নোমান।

দ্রুত তাঁকে স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিত্সকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি সহধর্মিণী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।

গতকাল বাদ জোহর সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বাদ আসর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

সেখানে নেতাকর্মীরা প্রবীণ এই নেতাকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা জানাজায় অংশ নেন।

আবদুল্লাহ আল নোমানের ব্যক্তিগত সহকারী নুরুল আমিন জানান, আগামী শুক্রবার বাদ জুমা চট্টগ্রাম মহানগরের জমিয়তুল ফালাহ জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে এবং বাদ আসর রাউজান গহিরা মাঠে আরেকটি জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে।

আবদুল্লাহ আল নোমানের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে।

ধানমণ্ডির বাসায়
নেতাকর্মীরা গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান। মৃত্যুর খবর শোনার পর দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহকর্মী বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা বাসায় যান।

এক শোকবার্তায় মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন আইন উপদেষ্টা। গভীর শোক প্রকাশ করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীরপ্রতীক।

বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও সদস্যসচিব কাদের গনি চৌধুরী এক শোকবার্তায় আবদুল্লাহ আল নোমানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন।

বাম ঘরানার রাজনীতি থেকে আসা আবদুল্লাহ আল নোমান ১৯৮১ সালে সাবেক রাষ্ট্রপতি মরহুম জিয়াউর রহমানের হাত ধরে বিএনপিতে যোগ দেন। রাজনৈতিক জীবনের দীর্ঘ সময় কাটিয়েছেন শ্রমজীবীদের জীবন-জীবিকার সংগ্রামে। বিএনপির রাজনীতিতে পথ চলায় তিনি চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ও বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পরে তিনি দলের যুগ্ম মহাসচিব হন। এরপর আমৃত্য তিনি দলের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে সক্রিয় ছিলেন।

১৯৯১, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ও ২০০১ সালে চট্টগ্রাম-৯ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে আবদুল্লাহ আল নোমান সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর মধ্যে ১৯৯১ সালে তিনি মত্স্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে জোট সরকার গঠনের পর বিভিন্ন মেয়াদে তিনি খাদ্যমন্ত্রী, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী এবং বন ও পরিবেশ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে আবদুল্লাহ আল নোমান সরাসরি যুক্ত ছিলেন।

চট্টগ্রামে সর্বত্র শোকের ছায়া : বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ আল নোমানের মৃত্যুর খবরে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সকালে এক শোকবার্তায় বলেন, ‘আবদুল্লাহ আল নোমানের মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। দেশ ও জাতীয়তাবাদী দল এক ত্যাগী, সাহসী, সংগ্রামী, সজ্জন বর্ষীয়ান রাজনীতিককে হারাল।’ তিনি মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের শোক : বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ আল নোমানের মৃত্যুতে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের নেতারা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। গতকাল এক বিবৃতিতে অন্তর্বর্তী কমিটির সদস্যসচিব জাহিদুল করিম কচি বলেন, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের পর ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণের পর আবদুল্লাহ আল নোমানের হাত ধরে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড, নব্বইয়ের গণ-আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে বাকলিয়ায় এনএমজে মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা পায়। এ ছাড়া চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবসহ চট্টগ্রামের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বিবৃতিদাতারা হলেন, সিনিয়র সাংবাদিক শামসুল হক হায়দরী, অন্তর্বর্তী কমিটির সদস্য মুস্তফা নঈম, গোলাম মাওলা মুরাদ, সাংবাদিক মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম, মিয়া মোহাম্মদ আরিফ প্রমুখ।

দলীয় সভায় আর যাওয়া হলো না : চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির গতকাল বিকেলে জনসভা ছিল। নগরের কাজীর দেউড়ি নুর আহমদ সড়ক চত্বরে দুপুর আড়াইটায় এই সভা শুরু হওয়ার কথা ছিল। এতে প্রধান বক্তা ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমান। কিন্তু ওই সভা শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে তিনি ইন্তেকাল করেন। ফলে ওই জনসভা স্থগিত করা হয়।

মন্তব্য

ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে টানাপড়েন, বাংলাদেশকে কাছে টানছে চীন

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে টানাপড়েন, বাংলাদেশকে কাছে টানছে চীন

বাংলাদেশের ২২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ১০ দিনের সফরে চীন গেছে। ওই দলে রাজনৈতিক নেতা, সুধীসমাজের কর্মী, বুদ্ধিজীবী ও সাংবাদিকরা রয়েছেন। সফরকালে তারা চীনের সরকারি কর্মকর্তা ও ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে প্রতিনিধিদলের এক নেতা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে নিশ্চিত করেছেন। ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক টানাপড়েনের মধ্যে বাংলাদেশকে চীন কাছে টানতে সক্রিয় হয়েছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা বাড়ায় চীন ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের চেষ্টা করছে। এর মধ্যে রয়েছে ভারতে নির্বাসিত বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ। ঢাকা হাসিনাকে প্রত্যর্পণের অনুরোধ করলেও ভারত এই ব্যাপারে অফিশিয়ালি কিছু বলেনি।

বেইজিংয়ে প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বদানকারী বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা ড. আব্দুল মঈন খান বিবিসিকে বলেন, এটি মূলত সৌজন্যমূলক সফর।

সফরটি বেইজিংয়ের উদ্যোগে হয়েছে। এবার বাংলাদেশের বিভিন্ন গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্বকারী দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে চীন।

প্রতিনিধিদলে বিএনপি ও তাদের মিত্রদের নেতা ছাড়াও ছাত্র-আন্দোলনের বেশ কয়েকজন সদস্যও রয়েছেন। এটি ছিল সাম্প্রতিক মাসগুলোতে  দ্বিতীয়বারের মতো বিএনপি নেতাদের চীন সফর।

শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশ ভারতবান্ধব নীতি অনুসরণ করলেও চীনের সঙ্গেও সম্পর্ক বজায় রেখেছিল। কিন্তু তার পতনের পর চীন বাংলাদেশে নিজেদের প্রভাব আরো বিস্তৃত করার চেষ্টা করছে।

সেই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে জানুয়ারিতে বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বেইজিং সফর করে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর সঙ্গে বৈঠক করেন। এমনিতেই চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার এবং দুই দেশের বার্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশের সামরিক সরঞ্জামের ৭০ শতাংশ আসে চীন থেকে।

বেইজিংয়ের সদিচ্ছার তুলনায় গত ছয় মাসে বরং ভারত ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে যোগাযোগ কমে এসেছে। বিএনপি ও সরকারের উপদেষ্টারা ভারতের সমালোচনা করেছে শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য। গত ডিসেম্বরে বিএনপি ভারতবিরোধী বিক্ষোভও করেছে।

ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কের এই টানাপড়েন বাংলাদেশকে আরো বেশি চীনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এই বিষয়টি নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপের মতো দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর ক্ষেত্রে এরই মধ্যে দেখা গেছে।

এ ব্যাপারে বেইজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র ফেলো চীনা বিশ্লেষক ঝো বো বলেন, ভারত যদি মনে করে পুরো উপমহাদেশ তার একচ্ছত্র প্রভাবাধীন, তবে সেটি ভারতের জন্যই ক্ষতির কারণ হতে পারে।

সূত্র : বিবিসি

 

মন্তব্য
তারেক রহমান

নির্বাচন বিলম্বিত হলে কারা সুবিধাপ্রাপ্ত হবে এটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

কুমিল্লা প্রতিনিধি (দক্ষিণ)
কুমিল্লা প্রতিনিধি (দক্ষিণ)
শেয়ার
নির্বাচন বিলম্বিত হলে কারা সুবিধাপ্রাপ্ত হবে এটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘আজ কিছুসংখ্যক লোক বা সংগঠন কথায় কথায় বলে, বিএনপি নির্বাচন ছাড়া কিছুই বোঝে না। আমরা যেহেতু জনগণের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি, ভোটের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি, স্বাভাবিকভাবেই আমরা জনগণের কাছে ভোট বা নির্বাচন চাইব। একটি স্বাভাবিক ব্যাপারকে কেন কিছুসংখ্যক লোক অস্বাভাবিক ব্যাপারে পরিণত করতে চাইছে, সেটি আমাদের চিন্তা করে দেখতে হবে। এখানে কারো কোনো লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য আছে কি না, সেটি আমাদের ভেবে দেখতে হবে।

বাংলাদেশে এই মুহূর্তে নির্বাচন যদি বিলম্বিত হয়, কারা সুবিধাপ্রাপ্ত হবে—এটি আজকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে কুমিল্লা টাউন হল মাঠে মহানগর বিএনপি আয়োজিত দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশে যদি আমরা গণতন্ত্রের ভিত্তি রচনা করতে পারি, গণতন্ত্রের চর্চা অব্যাহত রাখতে পারি, তাহলে এই দেশকে এবং দেশের মানুষকে ষড়যন্ত্রের হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে। আমরা যত বেশি দেশে গণতন্ত্রের চর্চা অব্যাহত রাখতে পারব, যত বেশি মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে পারব, তত বেশি দেশ ও দেশের মানুষকে ষড়যন্ত্রের হাত থেকে নিরাপদে রাখতে পারব।

তিনি বলেন, দেশে যদি গণতন্ত্রের চর্চা অব্যাহত থাকে, মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত থাকে, তাহলে বিএনপি সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী হবে। দেশে গণতন্ত্রের ভিত্তি যত মজবুত হবে, ভোটের অধিকার যত নিশ্চিত হবে, বিএনপির রাজনৈতিক ভিত্তি তত শক্তিশালী হবে।

এ সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু, কেন্দ্রীয় বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. সেলিম ভূঁইয়া, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক জাকারিয়া তাহের সুমন, কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক হাজি আমিন উর রশিদ ইয়াছিন, কেন্দ্রীয় বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক হাজি মোস্তাক মিয়াসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

 

তিন জেলায় বিএনপির আরো কর্মসূচি :

দিনাজপুর : দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেছেন, বিএনপি স্থানীয় সরকার নয়, জাতীয় নির্বাচন চায়।

আর সেই নির্বাচনে যদি বিএনপি ক্ষমতায় আসে, তাহলে আওয়ামী লীগ ছাড়া সব দলকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করবে। গতকাল বিকেল ৫টায় দিনাজপুর ইনস্টিটিউট মাঠে দিনাজপুর জেলা বিএনপি আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।

পটুয়াখালী : পটুয়াখালী প্রতিনিধি জানান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেল আলাল বলেছেন, ‘ছাত্রদের নতুন দলকে আমরা স্বাগত জানাই। আপনারা মানুষের কাছে যাবেন, মানুষ আপনাদের বিবেচনায়  নেবে, এর পরবর্তী ফলাফলের অপেক্ষায় থাকতে হবে। তার আগে দয়া করে বিএনপিকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন না।

গতকাল বিকেলে পটুয়াখালী শহীদ আলাউদ্দিন শিশুপার্কে পটুয়াখালী জেলা বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল এ কথা বলেন।

খাগড়াছড়ি : খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখা, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি এবং দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে খাগড়াছড়িতে জেলা বিএনপির সমাবেশ হয়েছে।

গতকাল বিকেলে শহরের প্রাণকেন্দ্র মুক্তমঞ্চে এই সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মনিরুল হক চৌধুরী। জেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সহকর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক ওয়াদুদ ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে এই সমাবেশে জেলা বিএনপির অন্য নেতারাও বক্তব্য দেন।

মন্তব্য
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

কারো গাফিলতি পেলে ব্যবস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
কারো গাফিলতি পেলে ব্যবস্থা

দায়িত্ব পালনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের গাফিলতি পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

জাতীয় শহীদ সেনা দিবস উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর বনানী সামরিক কবরস্থানে বিডিআর হত্যাকাণ্ডে শহীদ সেনা কর্মকর্তা ও সদস্যদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে গত সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। এই অভিযানে আমাদের কোনো কর্মচারী বা বাহিনীর কেউ যদি গাফিলতি করে, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।

কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তা সে পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব, আনসার বা কারা অধিদপ্তরের হোক। যারা ঠিকমতো কাজ করবে না, তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ডে শহীদ পরিবারগুলোর দুটি মূল দাবি ছিল।

একটি বিচারের দাবি, আরেকটি শহীদ সেনা দিবস ঘোষণা। সরকার এরই মধ্যে ২৫ ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় শহীদ সেনা দিবস ঘোষণা করেছে এবং এবারই প্রথমবারের মতো জাতীয় শহীদ সেনা দিবস পালিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, বিডিআর বিদ্রোহে জড়িত দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র ও প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন এবং অপরাধীদের চিহ্নিত করতে জাতীয় স্বাধীন পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিশন ৯০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী যারা দোষী সাব্যস্ত হবে, তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে।

এর আগে ২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ডে শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার প্রতিনিধি, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, তিন বাহিনীর প্রধান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, বিজিবি মহাপরিচালক এবং শহীদ পরিবারের স্বজনরা।

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ