ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল নিয়ে যা বলছেন ছাত্রদল-শিবিরসহ অন্যান্যরা

তৌফিক হাসান ও মানজুর হোছাঈন মাহি
তৌফিক হাসান ও মানজুর হোছাঈন মাহি
শেয়ার
ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল নিয়ে যা বলছেন ছাত্রদল-শিবিরসহ অন্যান্যরা
সংগৃহীত ছবি

জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে তৈরি হচ্ছে নতুন রাজনৈতিক দল। নতুন এই রাজনৈতিক দলের বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশের অন্যান্য ছাত্রসংগঠন। সংগঠনগুলোর নেতাদের ভাষ্য মতে, নতুন এই দলের সঙ্গে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সংযোগ থাকতে পারে।

নতুন এই দলকে স্বাগত জানিয়ে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নাহিদ ইসলাম সরকার থেকে পদত্যাগ করে নতুন দলের দায়িত্ব নেবেন।

নতুন পথচলায় তাকে অভিনন্দন। তবে নাহিদ ইসলামের সরকার থেকে পদত্যাগ করার পরই দলের দায়িত্ব নেওয়ার ঘটনায় এটা সুস্পষ্ট যে দল গঠনের জন্য বিগত দিনগুলোতে যে প্রক্রিয়া চলেছে, সে প্রক্রিয়ার সঙ্গে নাহিদ ইসলাম সরকারে থেকেও যুক্ত ছিলেন। তার ফলে নাহিদ ইসলাম পদত্যাগ করলেও সরকার নিরপেক্ষ থাকবে না।’

ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে উপদেষ্টাতে যাওয়া আবার পদত্যাগ করে এখন নতুন দল গঠন করে তারা মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন।

ওনারা কী আসলে সরকার পরিচালনা করবেন, না সুন্দর নির্বাচন করবেন, না রাষ্ট্রের সংস্কার করবেন, নাকি দল গঠন করে সামনে ক্ষমতায় যাবেন—এ বিষয়গুলো নিয়ে ওনাদের থেকে স্পষ্ট বার্তা জনগণ পাচ্ছে না।’

ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান রিচার্ড কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ছাত্রদের একাংশের নেতৃত্বে যে নতুন দল গঠন করা হচ্ছে তাকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে ক্ষমতার ছায়ায় থেকে দল গঠনকে মানুষ ভালো চোখে দেখে না।’

আরো পড়ুন
পল্টনের জামান টাওয়ারের আগুন নিয়ন্ত্রণে

পল্টনের জামান টাওয়ারের আগুন নিয়ন্ত্রণে

 

এদিকে নতুন দলের ভূমিকা ইতিবাচক হবে কি না তা বলা মুশকিল জানিয়ে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি দিলীপ রায় কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘রাজনীতি করা বা পার্টি গঠনের অধিকার সবার আছে।

এটাকে আমরা সাধুবাদ জানাই। কিন্তু যে উপদেষ্টাদের নেতৃত্বে হাসিনা পতন-পরবর্তী বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পরিবর্তে অরাজকতা ও মবতন্ত্র কায়েম হলো, ঠিক তাঁদেরই নেতৃত্বাধীন একটি পার্টি আগামী বাংলাদেশের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য কী ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে, তা বলা মুশকিল।’

নতুন দলটি কিংস পার্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে জানিয়ে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মাহিন শাহরিয়ার রেজা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নতুন রাজনৈতিক দলকে আমরা স্বাগত জানাই। আমরা প্রত্যাশা করব নতুন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধসহ এ দেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনের চেতনাকে ধারণ করে তাদের রাজনৈতিক পথপরিক্রমা নির্ধারণ করবে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম উপদেষ্টা পদ থেকে অব্যাহতি নিয়েই নতুন রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব নেওয়ায় এটি পরিষ্কার যে সরকারের দায়িত্বশীল জায়গায় থেকেই তিনি দল গঠনের প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিলেন।

আবার ড. মুহাম্মদ ইউনূসও বিগত দিনে তার বক্তব্যে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনে গুরুত্বারোপ করেছেন। সব কিছু মিলিয়ে এটিকে একটি কিংস পার্টি বললে ভুল হবে না।’

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার জরুরি হয়ে পড়তে পারে

শেয়ার
নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার জরুরি হয়ে পড়তে পারে
ফাইল ছবি

শামসুজ্জামান দুদু, ৮০ দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের রাজনীতি দিয়ে যাত্রা শুরু, এরপর কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপির কৃষি বিষয়ক সম্পাদক হয়েছিলেন। সেখান থেকে হন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা। এখন তিনি দলটির ভাইস-চেয়ারম্যান। পরিচ্ছন্ন রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত দুদু, দুই বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, নিজ দল-দলের বাইরে বিভিন্ন আলোচনা-সমালোচনা ও আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছেন কালের কণ্ঠের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন, কালের কণ্ঠের নিজস্ব প্রতিবেদক শিহাবুল ইসলাম।

কালের কণ্ঠ: প্রায় ৭ মাস দেশে নতুন সরকার, সামগ্রিক অবস্থা কেমন দেখছেন?

ইদানীং বাজারে কিছু পণ্যের দাম কমেছে। এই না যে সব পণ্যের দাম কমছে।

অর্থাৎ কিছু সম্ভাবনা দেখা দিলেও, কিছু-কিছু দ্রব্যের দাম আগের মতই। এই রোজার মধ্যে ভোজ্য তেলে অনিশ্চয়তা ছিল। কিছু পণ্যের দাম কমেছে, কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। কিছু সবজির দাম ও কমেছে।
শিক্ষা ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবনতি হয়েছে। শিক্ষাঙ্গনে এখনো সবাই স্বাভাবিকভাবে ফিরতে পারে নাই। আগে ছাত্রলীগের নামে হলগুলোতে দখলবাজি ছিল। এখন অন্যরা দখলবাজি করছে। যারা করছে তারা আবার সততার ধবজাধারী।
শিল্প ক্ষেত্রে দেখবেন ঈদে সকল শ্রমিককে সেভাবে বেতন দেওয়া সম্ভব হয়নি। ঈদ উপলক্ষে তড়িৎ ব্যবস্থায় তাদের বেতন ভাতা দিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত ছিল। এই সরকারের নিয়ন্ত্রণে সবকিছু নাই। শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, শিক্ষা বাদেও গণতন্ত্র সংকটে আছে। হাসিনা কেড়ে নিয়েছে ভোটাধিকার, এখন সেই অবস্থায়ই আছে। সামগ্রিক সংকটের মধ্যে দেশ নিমজ্জিত।

কালের কণ্ঠ: আপনারা দ্রুত নির্বাচন চাচ্ছেন। বর্তমান সরকার দেশ পরিচালনায় তো ভালো করছে

বাড়ির কর্তা যেভাবে সংসার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, বাড়ির দারোয়ান সেটা করতে পারবে না। কখনো-কখনো বাড়ির কর্তাকে দারোয়ানের উপর নির্ভর করতে হয়, যখন সে বাইরে যায়। যা অল্প সময়ের জন্য। কিন্তু উপযুক্ত হচ্ছে কর্তা। এটি মনে রাখতে হবে। তারা (সরকার) রাজনীতিবিদ না, রাজনৈতিক সংগঠকও না। এই কাজটি রাজনীতিবিদদের। রাজনীতিবিদদের আসার ব্যাপারে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। 

কালের কণ্ঠ: দেশ পরিচালনায় অভিজ্ঞতা আছে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের। এখন আওয়ামী লীগ মাঠে নেই। তাহলে যদি নির্বাচন দ্রুত হয় তাহলে, আপনারা কি কিছুটা সুবিধা পাবেন না?

রাষ্ট্র পরিচালনা করে দৃশ্য একটি রাজনৈতিক দল, কিন্তু অদৃশ্যত জনগণ। নির্বাচিত হয়ে আসার পাঁচ বছর পরে, ওই জনগণের কাছে তাদেরকে ফিরে যেতে হয়। অতীতে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছে, জনগণ কর্তৃক রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে। এখন যে সরকার আছে সেটি তো জনগণের সরকার নয়। এখন আওয়ামী লীগ তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে। তার কৃতকর্মের জন্য ধ্বংস হয়ে গেছে। বিএনপির সঙ্গে যখন জামায়াতে ইসলাম থাকে, তখন তারা ১৮-১৯ টি আসন পায়। আর তারা (জামায়াত) বিএনপি ছাড়া নির্বাচন করলে পায় ২-৩ টি। এর বাইরে কিছু দলের একটা দুইটা আসল পাওয়ার নজির আছে। তাহলে বিএনপির সঙ্গে রাজনৈতিক ক্ষমতা, দেশ পরিচালনা করা, এগুলোর সম্পর্ক আছে। তাই বিএনপিকে কেউ যদি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে সেটা ভুল হবে।

কালের কণ্ঠ: এনসিপি ও জামায়াত চাচ্ছে সংস্কারের পরে নির্বাচন। তাদের চাওয়াটা আপনি কীভাবে দেখছেন?

নির্বাচন সম্পর্কে কেউ যদি আস্থাশীল হয়, তাহলে সে যেকোনো সময় নির্বাচনকে স্বাগত জানাবে। আর আস্থাশীল না হয় তাহলে, একটি ভিন্ন পথ খোঁজার চেষ্টা করবে। কীভাবে অন্যভাবে ক্ষমতার ওই জায়গায় পৌঁছানো যায়। সে তো জানে নির্বাচন হলে, তিনটা সিট পাবে। আর না হলে হয়তো একটাও পাবে না। আর যারা নতুন তারাও যদি নির্বাচন না চায় তাহলে তাদেরকেও ওই দলভুক্ত করা যায়। মানে তারা নির্বাচনের উপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে পারছে না। এখন জনগণের ডিমান্ড নির্বাচন ও গণতন্ত্র। আমরা যদি সঠিক সময়ে সঠিক কাজটা না করে ফেলে পারি, তাহলে সংকট ঘনীভূত হবে। এই জায়গাটিতে যদি শূন্যতা রাখি, তাহলে মানুষ একসময় ক্ষুব্ধ হবে।

কালের কণ্ঠ: এনসিপি গণপরিষদ নির্বাচন চাচ্ছে, আর বিএনপি নির্বাচিত সংসদে সংবিধান সংশোধন চাচ্ছে। নতুন গঠিত দলসহ অন্যান্যদের সঙ্গে আপনাদের চাওয়ার পার্থক্য হয়ে যাচ্ছে না?

না, এখানে পার্থক্য নাই। আমি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি। ছাত্রদের পড়াতেও পারতাম, কিন্তু আমার মনে হয়েছে যে, রাজনীতি করাটা আমার জন্য ঠিক। এ জন্য রাজনীতিতে এসেছি। আমার বুঝে আসেনা সেকেন্ড রিপাবলিক কেনো লাগবে। আমাদের স্বাধীন এবং সার্বভৌম দেশ। স্বাধীন সার্বভৌম দেশে গণপরিষদ নির্বাচন লাগবে কেনো। 

কালের কণ্ঠ: তারা তো বর্তমান সংবিধান বাদ দিয়ে নতুন সংবিধান চায়।

সংবিধান বাদ দেয়া যায় না, সংবিধান সংস্কার করা যায়। এমনকি নতুন সংবিধান করতে হলে সংসদে যেতে হবে। পার্লামেন্টে যেতে হলে পার্লামেন্ট বানাতে হবে। আর এটা বানাতে হলে নির্বাচনের দরকার। তো ইলেকশনে না গিয়ে আমি এসব সংবিধানে হাত দেবো? আমাদের দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের বিবেচনায় এটা এক ধরনের পাগলামি। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা করেছে, যুদ্ধ করেছে। একটি ক্ষুদ্র অংশ পাকিস্তানের পক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছে। তাদের কাছে ৭১ মানে স্বাধীনতা মনে হয় না। তারা স্বাধীনতার বিপক্ষে। তারা এজন্যই ২৪ কে দ্বিতীয় স্বাধীনতা মনে করে। সে কারণেই সেকেন্ড রিপাবলিক, সে কারণেই গণপরিষদ চায়। যারা স্বাধীনতাকে মানতে না পারবে, তাদেরই আরেকটি স্বাধীনতার কথা তাদের বলতে হয়, হবে। 

কালের কণ্ঠ:  ছাত্র আন্দোলনকারীদের দুইজন এখন সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে আছেন, অন্যদিকে ছাত্ররা নতুন দল গঠন করেছে। এমন প্রেক্ষাপটে আপনি কি মনে করেন আগামী নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে?

গত সাত আট বছরে মানুষের মধ্যে যে ধারণা সৃষ্টি হয়েছে, সেই প্রেক্ষাপটে সরকারের পক্ষে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা সম্ভব কিনা? কারণ এই বর্তমান সরকার প্রধান শিক্ষার্থীদের দল গঠনে উৎসাহিত করেছে প্রকাশ্যে। সরকারে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের রেখেছে। যে সরকার আলাদা একটি দল গঠনে ও ঐ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকে, তাদের প্রতিনিধি সরকারে থাকে, সে স্বাভাবিক কারণে ওই সরকারে ক্ষমতায় আসুক, সেই প্রক্রিয়া, সেই ইঞ্জিনিয়ারিং, সেই ব্যবস্থাপনা করবে না এটা বিশ্বাসযোগ্য না। সরকার প্রধান হিসেবে বড় উদাহরণ গত সাত মাস ধরে তিনি বলে আসছেন, ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। হঠাত্ করে কয়দিন আগে তিনি বলেছেন, নির্বাচন জুনে হবে। হয়তো আবার কোনো এক মাসে আমরা শুনব জুনের সম্ভব হচ্ছে না, পরবর্তী বছরের (২০২৬) জুনে হয়তো সম্ভব হবে। তাই আমার মনে হয়, তিনি প্রমাণ করছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার জরুরি হয়ে পড়তে পারে। যেটা সরকারের কার্যক্রমে ওপর নির্ভর করছে।

কালের কণ্ঠ: তাহলে কি আপনারা সন্দেহ করছেন নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না?

সরকার গঠনে দুই উপদেষ্টা ও তাদের সহযোগীরা যে কাজগুলো করছে তাতে সন্দেহ না, বাস্তবতায় মনে হচ্ছে ওই দিকেই সরকার যাচ্ছে।

কালের কণ্ঠ: এনসিপিসহ আরো কিছু দল আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চায়। গত ১৫-১৬ বছরে আওয়ামী লীগের মাধ্যমে নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন বলে আপনারা দাবি করেন। তাহলে তাদের সঙ্গে আপনারা কেনো একমত হতে পারছেন না?

এগুলো রাজনৈতিক স্ট্যান্ডবাজি, যা বাদ দিতে হবে। আমরা ইলেকশন চাইলে, ইলেকশন দেয় না সরকার। অন্যদিকে আমরা কেনো সরাসরি আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ চাচ্ছি না সেটা আবার বলে তারা। এগুলো ফাইজলামি। এসব বাদ দিতে হবে। আগে সরকারকে (আওয়ামীলীগকে) বাতিল করতে হবে। প্রেস নোট দিতে হবে। কিন্তু সরকার প্রধান বলছে, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পরিস্থিতি দেশে নেই। এনসিপি তো কিছু বলে না। না বলার আগে আমাদের প্রশ্ন আসছে কেনো। আমরা চাই, নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাক। যারা নির্বাচিত হয়ে আসার সমার্থ রাখে না, কিন্তু এমপি হওয়ার ইচ্ছা জাগে, তারাই নির্বাচন নিয়ে সময় ক্ষেপণ করতে চায়। বাহানা করতে চায়। সেজন্য বলি আগে কারা কি চায় সেটা ঠিক করুক। আর একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে বুঝা যাবে কত ধানে কত চাল।

কালের কণ্ঠ: অনেক ক্ষেত্রে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ আসছে, দল থেকেও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে, তারপরেও কেনো নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না?

যারা চাঁদাবাজি করে তারা বিএনপি করে না। ছাত্রদল করে না। স্বেচ্ছাসেবক দল করে না। আমি অন্তত বিশ্বাস করতে চাই না, কোনো ছাত্রদলের নেতা-কর্মী চাঁদাবাজি করবে। এটা অসম্ভব হতেই পারে না। যখন কোনো মুসলিম কুরআন হাদিস অস্বীকার করবে, আল্লাহকে অস্বীকার করবে, সে সময় থেকে সে আর মুসলিম থাকে না। ছাত্রদলের কিছু নির্দিষ্ট নির্দেশনা আছে, রাজনীতি আছে, নেতৃত্ব আছে। ওইটা যে অস্বীকার করবে, অস্বীকার করে চাঁদাবাজি করবে, সে তখন ছাত্রদলের কেউ না। স্পষ্ট করেই দল থেকে বলা হয়েছে। সে একটা দুষ্কৃতকারী। তাকে একটা সাধারণ লোক ধরে পুলিশে দিতে পারে। পুলিশও ধরে নিয়ে আইনসম্মত ব্যবস্থা নিতে পারে। সে তো আমার দলের না। বরঞ্চ এদের কাউকে কাউকে ব্যবহার করে এদের নাম ব্যবহার করে, দলকে কলুষিত করছে একটি বিশেষ একটি মহল। যারা চক্রান্ত করছে। এ ধরনের কাজ যারা করে তারা তার পদে থাকে না। আমি ইসলামের কোনো কিছু মানি না, তাহলে কী মুসলিম দাবি করতে পারি?

কালের কণ্ঠ: জামাতের সঙ্গে বিএনপির কী গভীর দূরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে?

জামায়াতসহ অন্যান্য ছোট রাজনৈতিক দল আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। কমিউনিস্ট পার্টিও আমাদের কাছে আসে, জামায়াতও আমাদের কাছে আসে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সময় জামাতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক হয়েছে। কিন্তু যখন কেউ ফ্যাসিবাদের দোসর হবে; শুধু জামায়াত না, অন্য যেকোনো সংগঠন, তখন সে আর আমার বন্ধু না। এখানে দূরের, কাছের বলে কোনো কিছু নাই। জামাত একটি আলাদা সংগঠন। বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক সংগঠন। জামায়াতের সিদ্ধান্ত অতীত থেকে একদম ২৪ সাল পর্যন্ত ভুলে ভরা। বিএনপি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত ভুল করেনি তা বলবো না, কিছু ভুল থাকতে পারে। কিন্তু জামাতের সঙ্গে তুলনীয় নয়। এটা দূরে আর কাছের ব্যাপার নয়।

মন্তব্য

‘অচিরেই জি এম কাদের তার কৃতকর্মের প্রায়শ্চিত্ত করবেন’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
‘অচিরেই জি এম কাদের তার কৃতকর্মের প্রায়শ্চিত্ত করবেন’
জি এম কাদের। সংগৃহীত ছবি

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের অচিরেই তার কৃতকর্মের প্রায়শ্চিত্ত করবেন বলে মন্তব্য করেছেন দলটির আরেকাংশের মহাসচিব কাজী মো. মামুনুর রশিদ। শনিবার রাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন তিনি।

বিবৃতিতে দেশব্যাপী দলীয় সব নেতাকর্মীকে আস্থার সঙ্গে এরশাদের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান কাজী মো. মামুনুর রশিদ। 

আরো পড়ুন
বাংলাদেশ বিশ্বমানচিত্রে ন্যায়ের পক্ষে শক্তিশালী মডেল হতে পারে : শিবির সভাপতি

বাংলাদেশ বিশ্বমানচিত্রে ন্যায়ের পক্ষে শক্তিশালী মডেল হতে পারে : শিবির সভাপতি

 

তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন থেকে নেতৃত্বের দুর্বলতার কারণে দলীয় নেতাকর্মীদের মনোবলে চিড় ধরেছে।

স্বঘোষিত চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের স্বজনপ্রীতি, অর্থলিপ্সা, সংগঠন ও দেশবিরোধী সিদ্ধান্তে সবাই বিক্ষুব্ধ। এ অবস্থায় কেন্দ্রীয়সহ বিভিন্ন জেলা-উপজেলার নেতৃবৃন্দ দল থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন।’ 

তিনি আরো বলেন, ‘দলের দায়িত্ব গ্রহণের পরবর্তীতে জি এম কাদের নেতৃবৃন্দকে অবমূল্যায়নের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছেন। সবার সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে ২৪-এর জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ কেউ মেনে নিতে পারেনি।

বিবৃতিতে সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে কাজী মামুন বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ অচিরেই জি এম কাদের তার কৃতকর্মের প্রায়শ্চিত্ত করবেন। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে সারা দেশে দলকে সংগঠিত করে পল্লীবন্ধু এরশাদের নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলব।’

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে গণমিছিলের ঘোষণা খেলাফত মজলিসের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে গণমিছিলের ঘোষণা খেলাফত মজলিসের
সংগৃহীত ছবি

ভারতের সংসদে পাস হওয়া ওয়াকফ সংশোধনী বিল বাতিল ও ভারতজুড়ে অব্যাহত মুসলিম নিধন হচ্ছে দাবি করে—এর প্রতিবাদে ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে গণমিছিল ও স্মারকলিপি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস।

শনিবার (১২ এপ্রিল) রাজধানীর পল্টনে দলের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের এক বৈঠকে এ কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়।

আগামী ২৩ এপ্রিল ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে এ কর্মসূচি পালন করবে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস।

বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে দলটির আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার দীর্ঘদিন ভারতজুড়ে মুসলিম নিধন চালিয়ে আসছে।

তারা দলীয় উগ্রবাদী হিন্দু জঙ্গিদের মুসলমানদের ওপর লেলিয়ে দিয়েছে। যখন-তখন মুসলিমদের ভিটামাটি দখল করে নিচ্ছে। মুসলমানদের ব্যক্তিগত ও ওয়াকফ করা সম্পত্তি দখল করে, বা অবৈধ অধিগ্রহণ করে সেখানে মন্দিরসহ বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করছে। তাতেও তাদের লোভী মনের তৃষ্ণা মেটেনি।
এবার এসব দখল ও অধিগ্রহণকে আইনি কাঠামো দিতে ওয়াকফ সংশোধনী বিল-২০২৫ পাস করেছে। আমরা ইতোমধ্যে এসব পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আমাদের ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছি। ভারতজুড়ে মুসলমানরা এই বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে। এই বিল মূলত মুসলিমদের ধর্মীয় আইন ও অধিকারে হস্তক্ষেপ।
মুসলিমবিশ্বের উচিত, ভারত রাষ্ট্র কর্তৃক মুসলিম নিধন ও মুসলমানদের ধর্মীয় বিষয়ে হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া।’

তিনি বলেন, ‘ভারত সরকার ও তার নিম্নরুচির মিডিয়াগুলো বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের মিথ্যা প্রপাগান্ডা ধারাবাহিকভাবে বিশ্বব্যাপী প্রচার করে আসছে। মূলত ভারতে মুসলিম নির্যাতনের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের নির্লিপ্ততা তাদেরকে অপপ্রচারে আশকারা দিচ্ছে। অবিলম্বে বাংলাদেশ সরকারের উচিত ভারতের মুসলিম নিধনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও উদ্বেগ জানানো, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে এ বিষয়ে সোচ্চার হওয়া।’

সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন দলটির মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, মাওলানা রেজাউল করীম জালালী, মাওলানা আফজালুর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মাওলানা শাহিনুর পাশা চৌধুরী, মাওলানা কুরবান আলী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন প্রমুখ।

মন্তব্য

বাংলাদেশ বিশ্বমানচিত্রে ন্যায়ের পক্ষে শক্তিশালী মডেল হতে পারে : শিবির সভাপতি

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
বাংলাদেশ বিশ্বমানচিত্রে ন্যায়ের পক্ষে শক্তিশালী মডেল হতে পারে : শিবির সভাপতি
সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, ‘আগামীতে বাংলাদেশ বিশ্বমানচিত্রে ন্যায়ের পক্ষে একটি শক্তিশালী মডেল হতে পারে। প্রয়োজন অটুট ঐক্য, উদার নেতৃত্ব, ধৈর্য, প্রজ্ঞা ও সাহসিকতা।’ 

শনিবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে ‘৩৬ জুলাই থেকে ১২ এপ্রিল’ শিরোনামে দেওয়া এক পোস্টে এসব কথা বলেন তিনি।

আরো পড়ুন
রোটেশনাল পদ্ধতি অনুসরণ না হলে গুচ্ছতে থাকবে না শেকৃবি

রোটেশনাল পদ্ধতি অনুসরণ না হলে গুচ্ছতে থাকবে না শেকৃবি

 

শিবির সভাপতি বলেন, ‘এভাবে ঐক্যের ইতিহাস রচিত হোক বারবার।

প্রিয় মাতৃভূমির জন্য, মুসলিম উম্মাহর জন্য, বিশ্বমানবতার জন্য আমরা এক হয়ে যাই। ফ্যাসিবাদ, আধিপত্যবাদ, কিংবা সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে এই ঐক্য একটি লাল কার্ড।’

তিনি বলেন, ‘মার্চ ফর গাজা’ বাস্তবায়নে যারা প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে, দৃশ্যপটে কিংবা অদৃশ্য থেকেই অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, সবাইকে আল্লাহ উত্তম প্রতিদান দান করুন।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ