দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে দেশের বৃহত্তম যমুনা রেল সেতুর উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর প্রান্তে ইব্রাহিমাবাদ স্টেশন থেকে স্পেশাল ট্রেন পশ্চিমে সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদ স্টেশনে পারাপারের মধ্য দিয়ে সেতুটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। সেতুটি উদ্বোধনের ফলে রাজধানীর সঙ্গে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগব্যবস্থায় নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে গেল। ৪.৮ কিলোমিটার মূল সেতু পার হতে উদ্বোধনী ট্রেনটি ১২০ কিলোমিটার গতিতে সময় নেয় ৩ মিনিট ২১ সেকেন্ড।
যমুনা রেল সেতুর দুয়ার খুলল
টাঙ্গাইল ও ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

গতকাল সকালে ইব্রাহিমাবাদ রেলস্টেশন চত্বরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেনের সভপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রেল মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা সিনচি এবং জাইকার দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের মহাপরিচালক ইতো তেরুয়াকি। পরে অতিথিরা পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে রেল সেতুর উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, জাইকার কর্মকর্তা এবং সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
যমুনা রেল সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, জাপান ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে ৪.৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সেতুর এই প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে ২৭.৬০ শতাংশ অর্থায়ন করা হয়েছে দেশীয় উৎস থেকে আর ৭২.৪০ শতাংশ ঋণ দিয়েছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। জাপানি পাঁচটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে।
যমুনা রেল সেতু প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী তানভীরুল ইসলাম জানান, সমান্তরাল ডুয়াল গেজ ডাবল ট্র্যাকের এই সেতুর প্রতিটি স্প্যানের ওপর জাপানি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির রেললাইন বসানো হয়েছে। ফলে সেতুর ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলাচল করতে পারবে।
১৯৯৮ সালের ২৩ জুন যমুনা নদীর ওপর যমুনা বহুমুখী সেতু চালু হওয়ার পরই রাজধানীর সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ শুরু হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুতে ফাটল দেখা দেওয়ায় ট্রেনের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়। এর পর থেকে সেতুর ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করতে থাকে। গতি কমের কারণে সময়ের অপচয়ের পাশাপাশি ঘটছে শিডিউল বিপর্যয়। এসব সমস্যা সমাধানে সরকার যমুনা নদীর ওপর আলাদা রেলওয়ে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের নকশা প্রণয়নসহ সেতুটির নির্মাণ ব্যয় প্রথমে ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি সাত লাখ টাকা ধরা হয়েছিল। পরে প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা করা হয়। ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর রেলওয়ে সেতুর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। জাপানের আইএইচআই, এসএমসিসি, ওবায়শি করপোরেশন, জেএফই ও টিওএ করপোরেশন—এই পাঁচটি প্রতিষ্ঠান তিনটি প্যাকেজে সেতুর নির্মাণকাজ করে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বে আসার পর সেতুটির নাম ‘বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু’ পরিবর্তন করে ‘যমুনা রেল সেতু’ করা হয়।
সম্পর্কিত খবর

মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা
মেঘনা গ্রুপের পণ্য বয়কটের ডাক মাসুদ সাঈদীর
পিরোজপুর সংবাদদাতা

আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানসহ অন্য সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলার প্রতিবাদ জানিয়েছেন পিরোজপুর-১ আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী মাসুদ সাঈদী।
গতকাল শুক্রবার পিরোজপুর টাউন ক্লাবের সামনে আমার দেশ পাঠক মেলা আয়োজিত মানববন্ধনে উপস্থিত হন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পুত্র ও জিয়ানগর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মাসুদ সাঈদী।
মানববন্ধনে তিনি বলেন, ‘যদি মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে করা ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা না হয় তবে দেশপ্রেমিক জনতা মেঘনা গ্রুপের সব পণ্য বয়কট করবে। মেঘনা গ্রুপ খুনি হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করেছে, হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জহিরুল হক, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব লাভলু গাজী, পৌর জামায়াতের আমির মাওলানা ইসহাক আলী, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন কুমার প্রমুখ।

৫৮১ কোটির মধ্যে ৩৫০ কোটি টাকাই আত্মসাৎ
- রাস্তার কাজ না করেই পিরোজপুরে অর্থ লোটেন সেই মহারাজের ভাই মিরাজুল
রফিকুল ইসলাম, বরিশাল

পিরোজপুর জেলায় সড়ক সংস্কার ও প্রশস্ত না করেই এবার ৫৮১ কোটি টাকার মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন শ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনা ধরা পড়েছে। এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলাও করেছে। আর এই অর্থ আত্মসাৎ করেন পিরোজপুর-২ আসনের সাবেক এমপি মহিউদ্দীন মহারাজের ভাই মিরাজুল ইসলাম। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে দায়িত্বরত প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের নির্দেশে এই লুটপাটের ঘটনা ঘটে বলে ঘটনায় জড়িতরা দাবি করছেন।
জানা গেছে, ২০২২ সালে দুই হাজার ৬৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে গ্রামীণ সড়ক প্রশস্ত করার প্রকল্প নিয়েছিল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ওই বছরের ২২ মার্চ প্রকল্প অনুমোদন হয়। প্রকল্পে বরিশাল বিভাগের ৪২ উপজেলা ও ৩৬৩ ইউনিয়নের সড়ক প্রশস্ত করার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত ছিল।
এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, ১১৮টি রাস্তা সংস্কার ও প্রশস্ত করতে মিরাজুল ইসলামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছিল। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুটি হচ্ছে ইফতি ইটিসিএল প্রাইভেট লিমিটেড ও সাউথ বাংলা ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল। দুদকের তদন্তে বের হয়েছে, ১১৮টি রাস্তার কোথাও কোনো সংস্কার বা প্রশস্তকরণের কাজ করা হয়নি। তবে কাজ হয়েছে বলে জাল কাগজপত্র তৈরি করা হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী-হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার যোগসাজশে।
মামলার বাদী পিরোজপুর দুদকের সমন্বিত কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ঠিকাদার মিরাজুল ইসলাম প্রকল্পের ১১৮টি স্কিমের কাজ না করেই আসামিদের যোগসাজশে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। পিরোজপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস সাত্তার হাওলাদার, জ্যেষ্ঠ সহকারী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম এবং একই দপ্তরের হিসাবরক্ষক এ কে এম মোজাম্মেল হক খান ১১৮টি স্কিমের ভুয়া বিলের কাগজ তৈরি করেন। দুদকের অনুসন্ধানকারী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দেখতে পান—এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে পাঠানো সেই বিলের সঙ্গে দরপত্র, স্কিমের নম্বর, কার্যাদেশ, কাজের প্রত্যয়নপত্র, বিল অব কোয়ারি (বিওকিউ), কাজের পরিমাপ বইয়ের মতো অত্যাবশ্যকীয় কাগজপত্র ছিল না। সেই কাগজ ছাড়াই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পিরোজপুর জেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তারা বিল পরিশোধ করেন। গ্রেপ্তারের পর হিসাবরক্ষণ অফিসের একাধিক কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার গ্রামের বাড়ি ভাণ্ডারিয়ায়। তিনি মুখ্য সচিব হিসেবে ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর থেকে গত বছরের ৭ আগস্ট পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ঠিকাদার মিরাজুলের মুঠোফোনের মাধ্যমে মুখ্য সচিব বিল পাসের জন্য প্রায়ই নির্দেশ দিতেন। এ কারণে অসম্পূর্ণভাবে দাখিলকৃত বিল তাঁরা যাচাই-বাছাই না করেই পাস করিয়েছেন। মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ ছাড় করাতে অন্য সরকারি দপ্তরের প্রকৌশলীদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করার বিধান রয়েছে। সেই কমিটির প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় অর্থ ছাড় করে থাকে। এই প্রকল্পের ক্ষেত্রেও পিরোজপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলীর নেতৃত্বে ছয় সদস্যের কমিটি করা হয়েছিল। প্রকল্পের ১২৮টি স্কিমের কোনো কাজ পরিলক্ষিত হয়নি মর্মে সেই কমিটি প্রতিবেদন দিয়েছিল।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কমিটির এক সদস্য কালের কণ্ঠকে বলেন, কমিটির সদস্যরা সরেজমিনে ভাণ্ডারিয়া, পিরোজপুর সদরের নেছারাবাদে দৃশ্যমান কোনো কাজ দেখতে পাননি। এলজিইডি পিরোজপুর সদর উপজেলা প্রকৌশলী হরষিত সরকার বলেন, নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে কার্যাদেশ প্রদানের কপি, পরিমাপ বই, ড্রয়িং, প্ল্যান ও অনুমোদিত প্রাক্কলনের ফটোকপি উপজেলা প্রকৌশলীর দপ্তরে পাঠানোর বিধান রয়েছে। কাজের গুণগত মান পরীক্ষার পাশাপাশি উপজেলা প্রকৌশলী ফাইল নোটের মাধ্যমে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণের পর বিলটি সুপারিশসহ নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে পাঠাতে হয়। সে অনুযায়ী জেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা বিল প্রদান করেন। প্রকল্পের ১১৮টি স্কিমের ক্ষেত্রে এই ধাপগুলোর একটিও অনুসরণ করা হয়নি।

বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের সম্মেলনে গভর্নর
তিন বিলিয়ন ডলার নতুন বাজেট সহায়তা পাচ্ছে বাংলাদেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফের) ঋণ কর্মসূচির আওতায় প্রতিশ্রুত ৪৭০ কোটি ডলারের মধ্যে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত তিন কিস্তিতে ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে। বাকি ২৩৯ কোটি ডলারের পরবর্তী দুটি কিস্তি পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। সেই আশঙ্কা কেটে গেছে। এর বাইরে বাজেট সহায়তা হিসেবে নতুন তিন বিলিয়ন ডলার ঋণ পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে চলমান বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বসন্তকালীন সম্মেলনে সাংবাদিকদের এমন তথ্য দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সকালে এই সম্মেলন শুরু হয়। আজ ২৬ এপ্রিল এই বৈঠকের সমাপ্তি হবে।
বিশ্বব্যাংকের সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত দলিলাদি উপস্থাপন করেছে বাংলাদেশ। এ ছাড়া এবারের সম্মেলনে বিকল্প অন্যান্য ঋণ সুবিধা আদায় ও দেশের সমস্যা জর্জরিত ব্যাংকের একীভূতকরণ বিষয়ে আলোচনা করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া টাকা ফেরাতে ও খেলাপিদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নিতে বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কিছু শর্তসাপেক্ষে বাংলাদেশের সুবিধা দিতে রাজি বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, আইএমএফের প্রতিশ্রুত অর্থ ছাড়ের বিষয়ে তাদের দেওয়া কাঠামোগত সংস্কারের প্রায় সবই বাংলাদেশ পূরণ করেছে। তাই পরবর্তী কিস্তির ঋণ পাওয়া নিয়ে বড় কোনো অনিশ্চয়তা নেই। এ ছাড়া সব কিছু ঠিক থাকলে বাজেট সহায়তার অর্থ চলতি জুনে পাওয়া যাবে। ২০২৬ সালে আমাদের এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন হবে। ফলে স্বল্প সুদে বিশ্বব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়া কঠিন হবে। তাই আমরা বিকল্প চ্যানেল খুঁজছি। আমরা বিভিন্ন দেশ ও বহুজাতিক সংস্থার সঙ্গে বসেছি। জাপান ও ইউএস ব্যাংক কমিউনিটির সঙ্গে বসেছি। বেশ কিছু অগ্রগতি আছে।
সমস্যা জর্জরিত ব্যাংকগুলোকে মার্জার (একীভূত) করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ব্যাংক মার্জারে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ টেকনিক্যাল সাপোর্ট দেওয়ার পাশাপাশি অর্থায়নে সম্মত হয়েছে। ব্যাংকগুলো পুনর্গঠন করা হচ্ছে সুশাসন প্রতিষ্ঠায়। আরো কিছু জায়গায় কাজ করার সুযোগ রয়েছে। ব্যাংক যাতে তাদের নিয়ম-নীতি মেনে চলে সে লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। আমাদের তদারকিতে অনেক ব্যাংক ভালো কাজ করছে। ব্যাংকগুলো যাতে ভালোভাবে চলে দুর্বৃত্তদের হাত থেকে বের হতে পারে, সেই কাজ করা হচ্ছে।’

ইসির সদিচ্ছা ও সক্ষমতা যাচাইয়ে আগে স্থানীয় নির্বাচন চান ডা. শফিক
নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ

নির্বাচন কমিশনের সদিচ্ছা ও সক্ষমতা যাচাইয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিন। জনগণ তখন বুঝবে আপনারা কতটা সক্ষম ও আন্তরিক।’
গতকাল শুক্রবার সকালে ময়মনসিংহ নগরীর সার্কিট হাউস মাঠে জেলা ও মহানগর জামায়াত আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জামায়াতের আমির।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন মহানগর জামায়াতের আমির কামরুল আহসান এমরুল। বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, সাংগঠনিক সেক্রেটারি ড. ছামিউল হক ফারুকী, জেলা আমির আব্দুল করিমসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘নতুন নির্বাচন কমিশন বলছে, তারা নাকি ইতিহাসের সেরা নির্বাচন উপহার দেবে। আমরা তাদের একটি এসিড টেস্ট দিতে বলছি—স্থানীয় সরকার নির্বাচন। এটা সফল হলে জনগণ সমর্থন দেবে, ব্যর্থ হলে জনগণ হলুদ বা লাল কার্ড দেখাবে।’
নারী অধিকার সংস্কারসংক্রান্ত সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনের কঠোর সমালোচনা করে জামায়াত আমির বলেন, ‘কিছু সুপারিশ কোরআন-সুন্নাহর পরিপন্থী।
জামায়াতের আমির বলেন, ‘যদি এমন কোনো কমিশন গঠন করতেই হয়, তাহলে তা সব শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধি নিয়ে করতে হবে। ঈমানদার ও কোরআন-হাদিস জানা নারীদের সেখানে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘অতীতে যা চলেছে, যদি তা-ই চলতে থাকে, তাহলে এত রক্ত কেন ঝরল? শহীদদের আত্মত্যাগকে সম্মান জানাতে হলে জঞ্জালমুক্ত, দুঃশাসনমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হবে।
তরুণদের উদ্দেশে জামায়াতের আমির বলেন, ‘তোমরাই আগামী দিনের নেতা। আমরা হব তোমাদের কর্মী। আমরা তোমাদের দেশ ও জাতির খেদমত করার সুযোগ করে দিতে চাই। যত দিন ন্যায্য দাবি পূরণ না হবে, তত দিন এই লড়াই চলবে। প্রয়োজনে জীবন দিয়েও সেই লড়াই চালিয়ে যেতে আমরা প্রস্তুত।’