পোশাকশিল্পে বাড়তি করের বোঝা

মো. জাহিদুল ইসলাম
মো. জাহিদুল ইসলাম
শেয়ার
পোশাকশিল্পে বাড়তি করের বোঝা

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক নিয়ে উদ্বেগের মধ্যেই করপোরেট করহার বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এতে সংকটের মধ্যে থাকা পোশাক খাতের রপ্তানিতে বাধা সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন এই খাতের উদ্যোক্তারা।

বর্তমানে তৈরি পোশাক খাতের করপোরেট করহার ১২ শতাংশ। সবুজ কারখানার জন্য এই হার ১০ শতাংশ।

তবে দেশের বিভিন্ন খাতের জন্য করপোরেট করহার ২৭.৫০ শতাংশ। তাই ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে তৈরি পোশাক খাতে করহার বাড়িয়ে ১৮ থেকে ২০ শতাংশ করতে চায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

বর্তমানে অর্থ আইন ও এসআরওর মাধ্যমে বিভিন্ন খাতের জন্য বিভিন্ন রকমের করপোরেট করহার নির্ধারণ করেছে এনবিআর। ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার আইপিওর মাধ্যমে হস্তান্তর হওয়া পাবলিক ট্রেডেড কম্পানির ক্ষেত্রে ২২.৫০ শতাংশ, ১০ শতাংশের কম শেয়ার আইপিওর মাধ্যমে হস্তান্তর হওয়া পাবলিক ট্রেডেড কম্পানির ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ, কম্পানি আইনের অধীন এক ব্যক্তি কম্পানির ক্ষেত্রে ২২.৫০ শতাংশ, প্রাইভেট লিমিটেড কম্পানির ক্ষেত্রে ২৭.৫০ শতাংশ, পাবলিক ট্রেডেড ব্যাংক, বীমা, ফিন্যান্স প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ৩৭.৫০ শতাংশ, নন-পাবলিক ট্রেডেড ব্যাংক, বীমা, ফিন্যান্স প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ, মার্চেন্ট ব্যাংকের ক্ষেত্রে ৩৭.৫০ শতাংশ, সিগারেট-বিড়ি-জর্দা-গুলসহ তামাকজাত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ৪৫ শতাংশ, পাবলিক ট্রেডেড মোবাইল অপারেটরের ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ, নন-পাবলিক ট্রেডেড মোবাইল অপারেটরের ক্ষেত্রে ৪৫ শতাংশ, ট্রাস্টের ক্ষেত্রে ২৭.৫০ শতাংশ, স্বীকৃত ভবিষ্য তহবিলের ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ, অস্বীকৃত ভবিষ্য তহবিলের ক্ষেত্রে ২৭.৫০ শতাংশ, ব্যাক্তিসংঘের ক্ষেত্রে ২৭.৫০ শতাংশ, সমবায়ের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ, বস্ত্র উৎপাদন প্রক্রিয়ায় যুক্ত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ, পাটজাত শিল্পের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ, শাখা-লিয়াজোঁ অফিস ও অন্যান্য করযোগ্য সত্তার ক্ষেত্রে এই হার ২৭.৫০ শতাংশ।

তবে শর্ত পূরণ করলে কিছু ক্ষেত্রে করহার ২.৫০ পর্যন্ত কমতে পারে।

এনবিআরের সদস্য (করনীতি) এ কে এম বদিউল আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, পোশাক খাত দীর্ঘদিন ধরেই একটা কর সুবিধা ভোগ করে আসছে। আইএমএফের চাপ, রাজস্ব আদায় বাড়ানোর চাপ এবং অন্যান্য খাতের সঙ্গে করপোরেট করহারে বৈষম্য দূর করতে এনবিআর এ বিষয়ে ভাবছে। তবে এখনই কোনো কিছু চূড়ান্ত হয়নি।

এনবিআরের পক্ষ থেকে প্রস্তাব অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টাকে দেওয়া হবে। সেখান থেকে সবুজ সংকেত পেলে তা কার্যকর হবে।

বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানিতে এককভাবে ৮০ শতাংশেরও বেশি অবদান রাখে তৈরি পোশাক খাত। বাংলাদেশ ব্যাংক ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্য বলছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছিল ৪২.৬১ বিলিয়ন ডলারের। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ৩৮.১৭ বিলিয়ন ডলার।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৩৬.১৩ বিলিয়ন ডলারের। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে রপ্তানি বিশ্বব্যাপী ১০.৬৪ শতাংশ বেড়ে ২৬.৭৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।

এই খাতের রপ্তানি আয় যখন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তখন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কযুদ্ধ, ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের পর এখন করপোরেট করহার বৃদ্ধি করা অযৌক্তিক হবে বলে মনে করছেন এই খাতের উদ্যোক্তারা। তাঁরা বলছেন, এতে ব্যবসায়ের খরচ বৃদ্ধি পাবে, কর্মসংস্থানে জটিলতা তৈরি হবে এবং রপ্তানির ক্ষেত্রে যে শক্ত অবস্থান তা নষ্ট হতে পারে।

নিট পোশাক খাতের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম কালের কণ্ঠকে বলেন, তৈরি পোশাক খাত এমনিতেই আছে নানা সংকটে। এখন করপোরেট করহার বাড়ানো এই খাতের জন্য অবিচার হবে। এ ছাড়া ১২ শতাংশ বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে করপোরেট করহার আরো অনেক বেশি। সরকার উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে অগ্রিম কর আদায় করে। সেই টাকা আর ফেরত পাওয়া যায় না। পাঁচ বছরের জন্য সংসদ এই করহার নির্ধারণ করে দিয়েছে। ফলে নতুন সংসদ ছাড়া করপোরেট করহার বাড়ানো সম্ভব নয়। আর এই মুহূর্তে করহার বাড়ানোও হবে অযৌক্তিক।

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, বিগত সব সরকার দেশের রপ্তানি বাড়াতে অনেক চেষ্টা করেছে। অন্যান্য খাতকেও অনেক সুবিধা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তৈরি পোশাক খাতই রপ্তানি বাড়াতে পেরেছে এবং ধরে রেখেছে। এই খাত বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, নারীর কর্মসংস্থান ও ক্ষমতায়ন এবং ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ তৈরি করেছে। সুদের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় এমনিতেই আমাদের ব্যবসায়ের খরচ বেড়ে গেছে। ফলে উৎপাদন খরচও বেড়েছে। ঘুষ-দুর্নীতি থাকায় ব্যবসা সহজীকরণও হচ্ছে না।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কহার বৃদ্ধির উদ্যোগ বড় একটা সমস্যা। আজকে আবার ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট বন্ধ করে দিয়েছে। এতে সময় বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি জাহাজীকরণের খরচও বেড়ে যাবে।  সেই সঙ্গে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, কর্মসংস্থানে জটিলতা ও রপ্তানিতে বাধা সৃষ্টি করবে।

উদ্যোক্তারা করপোরেট করহার বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা দিয়েছেন ভিন্ন মত। তাঁরা বলছেন, করনীতির সংস্কার করার এখনই উপযুক্ত সময়। এই সংস্কার উদ্যোগ থেকে পিছিয়ে যাওয়া উচিত নয়। এ ছাড়া করপোরেট করহার কম হলেই দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাওয়ার কোনো নিশ্চয়তা নেই। তবে বৈশ্বিক এই সংকটের মধ্যে এই খাতের ওপর আরেকটা ধাক্কা দেওয়া ঠিক হবে না বলেও মনে করেন বিশ্লেষকরা।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. তৌফিকুল ইসলাম খান কালের কণ্ঠকে বলেন, আয়করের হিসাবটা মুনাফার ওপর নির্ভর করে। এটা (করপোরেট করহার বৃদ্ধি) থেকে এনবিআরের সরে যাওয়া উচিত হবে না। কারণ আমাদের কর খাতের সংস্কার লাগবে। সামনের দিনে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের বিভিন্ন ধরনের নগদ সহায়তা থেকেও বের হয়ে আসতে হবে।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সব দেশের ওপরই ট্যারিফ বসিয়েছে, শুধু বাংলাদেশের ওপর না। এর আপেক্ষিক প্রভাব এখনো নিশ্চিত নয়। এখন চলমান সংস্কার থেকে পিছিয়ে গেলে তো হবে না। সংস্কারে না গেলে উনাদের জন্যই যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি লাগবে, সেই জায়গায় সাপোর্ট করার ক্ষমতা সরকারের থাকবে না।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, করপোরেট করহার কম থাকলেই যে দেশে বিনিয়োগ আসবে, তেমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। সুশাসন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান, সরকারি দপ্তরের ছাড়পত্র পাওয়ার সহজলভ্যতা বিনিয়োগ বাড়ার প্রধান শর্ত। শুধু করপোরেট করহার কম থাকলেই দেশে বিনিয়োগ বাড়বে না।

জানতে চাইলে এনবিআরের সাবেক সদস্য (করনীতি) ড. সৈয়দ আমিনুল করিম কালের কণ্ঠকে বলেন, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্র আমাদের চেয়ে বেশি শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিলে ক্রয়াদেশ বেড়ে যেতে পারে। চীনের যে বিনিয়োগ এ দুই দেশে গিয়েছিল, সেটা আমাদের দেশে চলে আসতে পারে। অর্ডার বাড়লে আমাদের লোকসান কমে আসবে। আইএমএফের চাপ, রাজস্ব আদায়ের চাপসহ যেকোনো ধরনের চাপই থাকুক না কেন, বৈশ্বিক এই সংকটের মধ্যে এই খাতের ওপর আরেকটা ধাক্কা দেওয়া ঠিক হবে না।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

শুল্কঝড়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আঞ্চলিক-দ্বিপক্ষীয় চুক্তিতে জোর

    ছায়া সংসদে ফাহমিদা খাতুন
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
শুল্কঝড়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আঞ্চলিক-দ্বিপক্ষীয় চুক্তিতে জোর

সারা বিশ্বে এখন শুল্কঝড় বইছে। মার্কিন প্রশাসন শুল্কহার বৃদ্ধিতে কোনো নিয়ম-কানুনের ধার ধারেনি। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে শুল্ক আরোপ নিয়ে পরস্পরবিরোধী অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশও এই চ্যালেঞ্জের বাইরে নয়।

যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্কের চাপ এবং ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণ বাংলাদেশের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। এটি মোকাবেলায় আঞ্চলিক কয়েকটি দেশের জোট এবং দ্বিপক্ষীয় চুক্তির ওপর জোর দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। 

গতকাল শনিবার রাজধানীর এফডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্কহারের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ সভাপতিত্ব করেন।

 

ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, বাংলাদেশের ওপর ৩৭ শতাংশ কর আরোপের প্রক্রিয়া ত্রুটিপূর্ণ। তবে ট্রাম্পের উচ্চ শুল্কনীতি আমাদের জন্য ওয়েক-আপ কল। ব্যক্তি সমালোচনা না করে প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বাড়াতে হবে। দেশের করকাঠামো শক্তিশালী করতে আয়কর আদায়ে জোর দিতে হবে।

কারণ মার্কিন শুল্কারোপ ৯০ দিনের জন্য স্থগিত হলেও কাটেনি অনিশ্চয়তা।

তিনি বলেন, শুল্ক ও অশুল্ক বাধা কাটিয়ে বাণিজ্যের সম্প্রসারণে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) গঠিত হয়েছিল। কিন্তু প্রভাবশালী দেশগুলো ডব্লিউটিওর নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করেনি। তাই সংস্থাটি এ ক্ষেত্রে সেভাবে প্রভাব রাখতে পারেনি। এর পর থেকেই নিজেদের মধ্যে সমমনা ১৫ থেকে ২০টি দেশ মিলে একাধিক জোট করে সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতের মধ্য দিয়ে বাণিজ্য করছে।

আরো আগে আমাদের এই পথে যাওয়া দরকার ছিল।

ড. ফাহমিদা খাতুন আরো বলেন, বাণিজ্য সক্ষমতা বাড়াতে আমরা অনেক দিন ধরেই বেশ কিছু দেশের সঙ্গে এফটিএ করার কথা বলে আসছি। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনামে যেখানে ৫০ দেশের সঙ্গে এফটি রয়েছে সেখানে আমাদের রয়েছে শুধু ভুটানের সঙ্গে। যত দ্রুত সম্ভব আরো কিছু দেশের সঙ্গে এফটি করতে হবে। একই সঙ্গে নতুন বাজার, পণ্য বহুমুখীকরণ ও উৎপাদনশীলতার ওপর জোর দিতে হবে।

হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানিতে ঘোষিত নতুন শুল্ক আরোপ তিন মাসের জন্য স্থগিত করায় বাংলাদেশের রপ্তানি খাতে সাময়িক স্বস্তি মিললেও অনিশ্চয়তা কাটেনি। এই ৯০ দিনের মধ্যে নতুন করে এলসি খোলা হলে তার জাহাজীকরণ যদি ৯০ দিনের পরে হয়, তাহলে সে ক্ষেত্রে ওই রপ্তানির বিপরীতে স্থগিত কর সুবিধা প্রযোজ্য হবে কি না, তা স্পষ্ট নয়। যদি এই স্থগিতাদেশের ৯০ দিন পর মার্কিন শুল্ক বিভাগ পণ্য খালাসীকরণের লক্ষ্যে শুল্ক অ্যাসেসমেন্ট করে তাহলে কত শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে, তা নিশ্চিত করা না গেলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে শঙ্কা থেকেই যাবে।

 

চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ১০ সুপারিশ

বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্কহারের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি ১০ দফা সুপারিশ করে। এগুলো হচ্ছে এক. শুধু পোশাক খাতকেন্দ্রিক রপ্তানিনির্ভরতা না রেখে রপ্তানি পণ্যের বহুমুখিতা ও বৈচিত্র্য বাড়ানো এবং বিকল্প বাজার খুঁজে বের করা, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য কূটনীতি জোরদার করে সে দেশের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানি অব্যাহত রাখা, ৯০ দিনের স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষে রপ্তানি পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছালে বা জাহাজীকরণ হলে রপ্তানির বিপরীতে স্থগিতকৃত শুল্ক সুবিধা প্রযোজ্য হবে কি না তা স্পষ্ট করা অন্যতম।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্কহারের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশ সক্ষম হবে শীর্ষক ছায়া সংসদে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকদের পরাজিত করে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির বিতার্কিকরা বিজয়ী হন। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, সুলতান আহমেদ ভূঁইয়া এফসিএ, সাংবাদিক দৌলত আক্তার মালা, ড. এস এম মোর্শেদ এবং টিভি অনুষ্ঠান নির্মাতা কে এম মাহমুদ হাসান।

মন্তব্য
ঢা‌বি সাদা দল

ফ্যাসিবাদের মুখোশে আগুন পরিকল্পিত

ঢাকা বিশ্ব‌বিদ‌্যা‌লয় প্রতিনিধি
ঢাকা বিশ্ব‌বিদ‌্যা‌লয় প্রতিনিধি
শেয়ার
ফ্যাসিবাদের মুখোশে আগুন পরিকল্পিত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদে ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি ও শান্তির পায়রা মোটিফে আগুন দেওয়ার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল।

একই সঙ্গে অবিলম্বে অগ্নিকাণ্ডে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের মাধ্যমে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানায় সংগঠনটি।

গতকাল শনিবার ঢাবি সাদা দলের আহবায়ক অধ্যাপক মো. মোর্শেদ হাসান খান, যুগ্ম আহবায়ক অধ্যাপক আব্দুস সালাম ও অধ্যাপক মো. আবুল কালাম সরকার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, বাঙালি জাতির ঐতিহ্যের স্মরক পহেলা বৈশাখ।

এ উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রা উদযাপনের আর মাত্র দুই দিন বাকি। আনন্দ শোভাযাত্রা উদযাপনের জন্য ফ্যাসিস্টদের প্রতিকৃতি তৈরিসহ অন্যান্য প্রস্তুতি যখন প্রায় শেষ দিকে তখন শনিবার ভোরে চারুকলা অনুষদের চার দেয়ালের ভেতরে তৈরি করা এসব প্রতিকৃতিতে আগুন দেওয়া নিছক কোনো রহস্যজনক নয়। এটি একটি পরিকল্পিত অগ্নিকাণ্ড। এ ঘটনায় ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার সরকারের দোসর কিংবা ঘাপটি মেরে থাকা স্বৈরাচারের দোসরদের হাত থাকার সম্ভাবনা বেশি।

নেতারা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ঢাবি ক্যাম্পাসের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, পহেলা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রা পালনের লক্ষ্যে তৈরি প্রতিকৃতিসহ অন্যান্য জিনিসের নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা ছিল না। ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর চারুকলার শোভাযাত্রা নিয়ে আগে থেকেই সতর্ক থাকা অত্যাবশ্যক ছিল। অতএব পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা দরকার বলে মনে করি।

ঢাবি সাদা দলের নেতারা অবিলম্বে চারুকলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

সেই সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যম্পাসে নিরাপত্তাব্যবস্থা আরো জোরদার করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আহবান জানান।

মন্তব্য

আদানির বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি ইউনিট ১৭ ঘণ্টা পর চালু

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
আদানির বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি ইউনিট ১৭ ঘণ্টা পর চালু

ভারতের আদানি গ্রুপের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় গত শুক্রবার রাতে। এর ১৭ ঘণ্টা পর গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে পুনরায় একটি ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়। সন্ধ্যা ৭টার দিকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিমাণ ছিল ৪৬ মেগাওয়াট। ক্রমান্বয়ে এক ইউনিট থেকে বিদ্যুতের পরিমাণ বাড়বে।

জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সঞ্চালনে দায়িত্বে থাকা একমাত্র রাষ্ট্রীয় সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা গতকাল রাতে কালের কণ্ঠকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, কেন্দ্রটির দুটি ইউনিট থেকে গড়ে এক হাজার ৪০০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ পাওয়া যেত। কারিগরি ত্রুটির কারণে প্রথম ইউনিট থেকে উৎপাদন বন্ধ হয়েছে গত মঙ্গলবার। আর দ্বিতীয় ইউনিট বন্ধ হয় গত শুক্রবার রাত ১টার দিকে।

এতে দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহে বড় ঘাটতি তৈরি হয়। পরে গতকাল সন্ধ্যায় একটি ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করে আদানি। 

জানতে চাইলে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য (উৎপাদন) মো. জহুরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ত্রুটি দেখা দেওয়ায় আদানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিট থেকেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।  ঘাটতি পূরণে গ্যাস ও তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বাড়ানো হয়।

জ্বালানির সরবরাহ পেলে চাহিদা মতো উৎপাদন করা যাবে। শনিবার রাতে বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট পুনরায় চালু হয়, আরেকটি ইউনিট ত্রুটি মেরামতের চেষ্টা করছে বলেও তিনি জানান। 

আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত কয়লার দাম নিয়ে বিরোধ আছে। এটি নিয়ে আদানি ও বিপিডিবির মধ্যে আলোচনা চলছে। বকেয়া শোধ নিয়েও বিভিন্ন সময় তাগাদা দিয়েছে আদানি।

গত বছর একবার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করেছিল আদানি। এরপর নিয়মিত চলতি বিল পরিশোধ করায় তারা একটি ইউনিটের উৎপাদন চালু করে। গত ফেব্রুয়ারিতে পুরো বিদ্যুৎ সরবরাহের অনুরোধ জানায় বিপিডিবি। গত মার্চে শুরু থেকেই দুটি ইউনিটের বিদ্যুৎ সরবরাহ করে তারা।

পিজিসিবি ও বিপিডিবি সূত্র বলছে, গতকাল শনিবার ছুটির দিন থাকায় বিদ্যুতের চাহিদা অন্য দিনের চেয়ে কিছুটা কম। গতকাল বিকেল ৩টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ চাহিদা উঠেছে ১৩ হাজার ৫৫২ মেগাওয়াট। এ সময় ৪২৮ মেগাওয়াট লোডশেডিং করা হয়েছে। আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সরবরাহ শুরু না হলে আজ রবিবার লোডশেডিং আরো বৃদ্ধি পেত। ঘাটতি মেটাতে পেট্রোবাংলার কাছে বাড়তি গ্যাস সরবরাহও চেয়েছিল বিপিডিবি।

আদানির কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার। ৮০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার দুটি ইউনিট আছে এই কেন্দ্রে। এতে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ২৫ বছর ধরে কিনবে বাংলাদেশ। প্রথম ইউনিট থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয় ২০২৩ সালের এপ্রিলে। দ্বিতীয় ইউনিট থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয় একই বছরের জুনে। ২০১৭ সালে আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি করে বিপিডিবি। আদানির সঙ্গে বিপিডিবির চুক্তি পর্যালোচনায় অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত একটি কমিটি কাজ করছে।

মন্তব্য

ইসরায়েল গাজায় এবার পানি-অস্ত্র প্রয়োগ করছে

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
ইসরায়েল গাজায় এবার পানি-অস্ত্র প্রয়োগ করছে

ধরার বুকে নির্মিত জাহান্নাম হিসেবে পরিচিত গাজার মানবিক পরিস্থিতির অবনতি বিশ্বসম্প্রদায়কে ভাবতে বাধ্য করছে। দখলদার ইসরায়েলের বেপরোয়া বিমান হামলা ও ভয়াবহ স্থল হামলায় অবরুদ্ধ গাজাবাসী এখন শুধু খাবারের অভাবে ধুঁকে ধুঁকে মরছে না; অনাহারি গাজাবাসী এক ঢোক সুপেয় জলও এখন পাচ্ছে না।

গাজায় বিশুদ্ধ পানির সবচেয়ে বড় উৎসটি ছিল ইসরায়েলি একটি কম্পানির। গত শুক্রবার কম্পানিটি পানির পাইপলাইন বন্ধ করে দিয়েছে।

ইসরায়েলি নির্বিচার বিমান হামলা ও নির্মম স্থল অভিযানের পর যেসব হতভাগা গাজাবাসী বেঁচে ছিল, তারা এখন এক ফোঁটা সুপেয় পানির জন্য মাইলের পর মাইল চষে বেড়ায়। গাজার এক অবরুদ্ধ নগরীর পৌঢ়া নারী ফাতিন নাসের (৪২) বড়ই আক্ষেপের সঙ্গে বলেন, সকাল থেকে আমি পানির অপেক্ষায় আছি। কিন্তু সুপের পানির কোনো উৎস বা স্টেশন আর অক্ষত নেই। পানির ট্রাকও চোখে পড়ে না।
কোথাও পানি নেই। এলাকা ত্যাগ করে যে কোথাও যাব, তারও সুযোগ নেই। আল্লাহ যদি যুদ্ধটা থামিয়ে দিতেন। 

ইসরায়েল গত সপ্তাহেই গাজার শিজাইয়া এলাকার সব অধিবাসীকে এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

কিন্তু তারা কোথায় যাবে, কেমন করে যাবে, সে ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা দেয়নি। বাস্তবতা হচ্ছে, এমন কোনো ভূমি বাকি নেই, যেখানে এখন বোমা পড়ছে না। তবে ইসরায়েল বারবার দাবি করছে, তারা কোনো বেসামরিক এলাকায় বোমা ফেলছে না। তারা শুধু সন্ত্রাসীদের অবকাঠামো লক্ষ্য করে বোমা ফেলছে। দখলদার বাহিনী বেছে বেছে উত্তর গাজার সব পানির কূপও ধ্বংস করে ফেলছে।

মিউনিসিপ্যালিটির একজন কর্মকর্তা বলেন, গাজার পরিস্থিতি অত্যন্ত কঠিন এবং দিন দিন তা অবনতির দিকেই যাচ্ছে। পানি তো দৈনন্দিন নানা কাজে লাগে। কিন্তু পানি কোথাও মিলছে না। গাজা এখন বিশ্বের এক তৃষ্ণার্ত নগরী। আগামী দিনগুলোতে কী ঘটতে যাচ্ছে, তা আমরা কেউ জানি না।

গাজার লোকসংখ্যা ২৩ লাখ। কিন্তু যুদ্ধের কারণে বেশির ভাগ অধিবাসী এখন বাস্তুচ্যুত। প্রত্যন্ত এলাকায় এখনো দু-একটি কূপে পানি রয়েছে। কিন্তু সেই কূপে পানির বিশুদ্ধতার কোনোই গ্যারান্টি নেই।

গত শুক্রবার রেড ক্রসের প্রেসিডেন্ট মিরজানা স্পোলজারিক বলেন, গাজার মানবিক পরিস্থিতি পৃথিবীর দোজখে পরিণত হয়েছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে অস্থায়ী হাসপাতালগুলো বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবে। কারণ এরপর গাজাবাসীর রসদ ফুরিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সাহায্যকারী সংস্থা রেড ক্রস।

তিনি বলেন, আমরা গাজায় এখন নিজেদের এমন পরিস্থিতিতে দেখছি। যেটিকে আমাকে বলতে হবে পৃথিবীর দোজখ। মানুষ বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুৎ, পানি, খাবার পায় না।

গত ২ মার্চ গাজায় পূর্ণ অবরোধ আরোপ করে দখলদার ইসরায়েল। ওই সময় দখলদারদের সঙ্গে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের যুদ্ধবিরতি ভেস্তে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে। ওই দিন থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ইসরাইল চুক্তি ভঙ্গ করে। এর কয়েক দিন পর ১৮ মার্চ রাতে গাজায় হঠাৎ তীব্র বিমান হামলা চালায় তারা। এতে এক রাতে চার শরও বেশি ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়।

জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এ ছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ভোরে গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাসের নেতৃত্বাধীন হামলায় ইসরায়েলে অন্তত এক হাজার ১৩৯ জন নিহত হয় এবং দুই শর বেশি মানুষকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে গাজায় ভয়াবহ হামলা শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। সূত্র : এএফপি, রয়টার্স

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ