ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১৭ এপ্রিল ২০২৫
৩ বৈশাখ ১৪৩২, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১৭ এপ্রিল ২০২৫
৩ বৈশাখ ১৪৩২, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৬

মেঘনার চেয়ারম্যান-পরিচালকের বিরুদ্ধে আইসিটিতে অভিযোগ

  • হেফাজতের সমাবেশে হামলা, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে উসকানির অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
মেঘনার চেয়ারম্যান-পরিচালকের বিরুদ্ধে আইসিটিতে অভিযোগ
মোস্তফা কামাল

মেঘনা গ্রুপ ও বেসরকারি টিভি চ্যানেল একাত্তর টেলিভিশনের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল ও পরিচালক তানভির আহমেদ মোস্তফার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-আইসিটিতে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ তদন্তের আবেদন করা হয়েছে। প্রায় এক যুগ আগে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে তাঁদের প্ররোচনা, উসকানি, পরিকল্পনা ও অর্থায়নে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে আবেদনে।

হেফাজতে ইসলামের নেতা জুনায়েদ আল হাবিবের পক্ষে গত ১১ এপ্রিল তদন্ত সংস্থার সমন্বয়কের কাছে এই অভিযোগ দেন রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকার বাসিন্দা মুশফিকুর রহমান। অভিযোগটি কমপ্লেইন্ট রেজিস্টারভুক্ত করে আইসিটি আইন, ১৯৭৩ এর ৮ ধারা অনুযায়ী আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।

আবেদনে বলা হয়েছে, শাহবাগের আন্দোলনের বিপরীতে ব্লগারদের শাস্তির দাবিতে ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলে সমাবেশ ডাকে হেফাজতে ইসলাম। সেই সমাবেশ ঘিরে পুরো মতিঝিল এলাকায় ব্যাপক সহিংসতা ও তাণ্ডব চলে। পরে সেই রাতে যৌথ অভিযান চালিয়ে সমাবেশকারীদের মতিঝিল থেকে সরানো হয়। শাপলা চত্বরের সেই অভিযানে ৬১ জন নিহত হন বলে সে সময় এক প্রতিবেদনে দাবি করে মানবাধিকার সংগঠন অধিকার

যদিও পুলিশ দাবি করে রাতের অভিযানে কেউ মারা যায়নি। আর দিনভর সংঘাতে নিহতের সংখ্যা ১১ জন। অধিকারের প্রতিবেদনে প্রকাশিত সংখ্যাটি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হলে ওই বছরের ১০ আগস্ট গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে জিডিটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়।

একাত্তর টেলিভিশনকে ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর উল্লেখ করে আবেদনে বলা হয়েছে, একাত্তর টেলিভিশনও ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগিতা এবং সমর্থন করে এই হত্যাকাণ্ডের পক্ষে প্রচারণা চালায়। এসংক্রান্ত ঘটনায় গত বছরের ২৬ নভেম্বর আইসিটির চিফ প্রসিকিউটর বরাবর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদ, সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ, তারিক আহমেদ সিদ্দিকীসহ ৪৪ জনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন জুনায়েদ আল হাবিব।

ওই অভিযোগটি দায়ের করলেও ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার অর্থদাতা, সুবিধাভোগী এবং গণহত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ত মেঘনা গ্রুপ ও একাত্তর টেলিভিশনের চেয়ারম্যান/পরিচালক মোস্তফা কামাল এবং অন্যতম পরিচালক তানভির মোস্তফাকে বিবাদী করা হয়নি।

হেফাজতের সমাবেশে অভিযানের নামে গণহত্যা চালানো হয়েছিল উল্লেখ করে আবেদনে আরো বলা হয়েছে, আন্দোলনরত তৌহিদি জনতাকে নির্মূল করতে র‌্যাব-পুলিশ সদস্যরা নির্বিচারে গুলিবর্ষণ ও বোমা নিক্ষেপ করে গণহত্যা চালায়। আসামিরা (মোস্তফা কামাল ও তানভির আহমেদ মোস্তফা) সরকারের স্বার্থে একাত্তর টেলিভিশনের সরাসরি সম্প্রচার বন্ধ রাখেন।

যাতে হত্যার সঠিক চিত্র প্রকাশ না পায়, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের তথ্য গোপন রাখা যায় এবং গুজব ছড়ানো যায়।

তাঁদের আর্থিক সহযোগিতা ও পরিকল্পনায় সেই সময় ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকার সারা দেশে ২৮৬টি মিথ্যা মামলায় সাড়ে চার লাখ আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে আসামি করে। এর মধ্যে ১২ হাজার আন্দোলনকারীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে নিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়।

এমন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আসামিরা আইসিটি আইন ১৯৭৩ এর ৩(২), ৪(১)/৪ (২) ধারা অনুযায়ী গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন করেছেন, যা দেশ-বিদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে। অতএব এই অভিযোগ কমপ্লেইন্ট রেজিস্টারভুক্ত করার পাশাপাশি তদন্ত করে আসামিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে আবেদনে উল্লেখ করা ফোন নাম্বারে কল করলে আবেদনকারী মুশফিকুর রহমানের ফোন নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

লালমনিরহাট সীমান্ত

বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
লালমনিরহাট প্রতিনিধি
শেয়ার
বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সিংগীমারী সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে হাসিবুল ইসলাম (২২) নামের এক বাংলাদেশি কৃষক নিহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার এ ঘটনা ঘটে। হাসিবুল সিংগীমারী গ্রামের জাহিদুল ইসলামের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে হাসিবুলকে গুলি করে বিএসএফ।

পরে তাঁকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ভারতে নিয়ে যায় তারা।

ভুক্তভোগীর পরিবার জানায়, সীমান্ত এলাকায় নিজেদের জমিতে দুপুরে কাটতে যান হাসিবুল। এক পর্যায়ে কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে বিএসএফের একটি টহলদল বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে কোনো কারণ ছাড়াই হাসিবুলকে গুলি করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন হাসিবুল।

এরপর রাইফেলের বাঁট দিয়ে তাঁকে আঘাত করে বিএসএফ। পরে তাঁকে টেনে-হিঁচড়ে ভারতে নিয়ে যায়।

ভুক্তভোগীর পরিবার ও ভারতীয় সূত্র জানিয়েছে, গতকাল বিকেলে কোচবিহারের এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসিবুলের মৃত্যু হয়েছে।

বিজিবি সূত্র জানায়, বাংলাদেশিকে গুলি করার ঘটনায় বিজিবির আহ্বানে গতকাল বিকেলে ওই সীমান্তে পতাকা বৈঠকে অংশ নেয় বিএসএফ।

এ ঘটনার প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।

হাতীবান্ধা থানার ওসি মাহামুদুন-নবী জানান, বাংলাদেশি এক যুবককে গুলি করে বিএসএফ ভারতে নিয়ে গেছে বলে খবর মিলেছে।

 

মন্তব্য
বিএনপির সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ আজ

রাষ্ট্রের নাম বদলে বেশির ভাগ দলের আপত্তি

নিখিল ভদ্র
নিখিল ভদ্র
শেয়ার
রাষ্ট্রের নাম বদলে বেশির ভাগ দলের আপত্তি

রাষ্ট্র সংস্কারে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর করা সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ১৬৬টির মধ্যে শতাধিক প্রস্তাবে একমত প্রকাশ করেছে এযাবৎ মতামত প্রদানকারী সব রাজনৈতিক দল। তবে রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কিছু সংস্কার প্রস্তাবে বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল আপত্তি জানিয়েছে।

ঐকমত্য কমিশনে এ পর্যন্ত ৩৫টি রাজনৈতিক দল লিখিত মতামত দিয়েছে। এর মধ্য থেকে ১১টি রাজনৈতিক দল কমিশনের সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার দেশের অন্যতম বৃহৎ দল বিএনপির অনুষ্ঠিত হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি অনলাইনে সাধারণ নাগরিকদের মতামত নেওয়া হবে। সংলাপ ও অনলাইনে পাওয়া মতামতের ভিত্তিতে যেসব বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছা সম্ভব হবে, তা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতিতে জুলাই সনদ-এ সই হবে। এইসব প্রক্রিয়া মধ্য জুলাইয়ে শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর গঠিত ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করে। এরপর সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ চূড়ান্ত করতে গঠন করা হয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি কাজ শুরু করেছে এই কমিশন। প্রথম পর্যায়ে গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিশনের মধ্যে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬ সুপারিশ বিষয়ে ঐকমত্য কমিশন ১৬৬টি প্রস্তাব তৈরি করে ৩৮টি রাজনৈতিক দল ও জোটের মতামত আহবান করে।

এ পর্যন্ত ৩২টি দল লিখিত মতামত জানিয়েছে। অন্যদিকে লিখিত মতামত প্রদানকারী দলগুলোর সঙ্গে সংস্কার প্রশ্নে সমঝোতায় পৌঁছতে গত ২০ মার্চ থেকে সংলাপ শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত ১১টি রাজনৈতিক দল এই সংলাপে গিয়ে তাদের মতামত তুলে ধরার পাশাপাশি আলোচনায় অংশ নিয়েছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। তিনি কালের কণ্ঠকে জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সুপারিশগুলো চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ চলছে।

অনেক ক্ষেত্রে লিখিত মতামতে আপত্তি থাকলেও সংলাপে আলোচনার মাধ্যমে অনেক বিষয়ে দলগুলো একমত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (আজ) সকাল সাড়ে ১০টায় বিএনপি সংলাপে অংশ নেবে। আগামী সপ্তাহে জামায়াত, এনসিপিসহ অন্য দলগুলোর সংলাপে বসার কথা রয়েছে। তিনি আরো বলেন, সংলাপের পর যেসব সুপারিশের বিষয়ে সবাই একমত, সেগুলো আলাদা করা হবে। এ ছাড়া যেসব গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলের ভিন্নমত রয়েছে, সেগুলো নিয়ে আগামী মাসের মাঝামাঝি দ্বিতীয় দফায় চূড়ান্ত সংলাপ করা হবে। সেই সংলাপে রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি সুধীসমাজের প্রতিনিধিসহ অংশীজনের সঙ্গে চূড়ান্ত আলোচনা করবে ঐকমত্য কমিশন। এরপর সুপারিশমালা চূড়ান্ত করে সরকারের কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

কমিশন সূত্র জানায়, এরই মধ্যে মতামত জানানো রাজনৈতিক দলগুলো শতাধিক প্রস্তাবে একমত প্রকাশ করেছে। তবে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু ইস্যুতে দলগুলো পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়েছে। আবার কয়েকটি বিষয়ে বেশির ভাগ দল জোর আপত্তি জানিয়েছে। বিশেষ করে রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে আপত্তি এসেছে। কমিশনের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সংবিধানের প্রযোজ্য সব ক্ষেত্রে প্রজাতন্ত্রগণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ শব্দগুলোর পরিবর্তে নাগরিকতন্ত্রজনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ শব্দগুলো ব্যবহার করা হবে। এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বাম গণতান্ত্রিক জোট, গণতন্ত্র মঞ্চ এবং ১২ দলীয় জোটভুক্ত রাজনৈতিক দলগুলো। এমনকি জাতীয় নাগরিক পার্টিও (এনসিপি) প্রজাতন্ত্রগণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ বহাল রাখার পক্ষে মত দিয়েছে।

সূত্র জানায়, এনসিপিসহ কয়েকটি দল সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি থেকে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দিয়ে কমিশন প্রস্তাবিত সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, বহুত্ববাদ ও গণতন্ত্র অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশের সঙ্গে একমত পোষণ করেছে। এ ক্ষেত্রে জামায়াত শুধু বহুত্ববাদ শব্দটি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে। দলটি এর পরিবর্তে সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস, ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ’—এই শব্দগুলো যোগ করার প্রস্তাব দিয়েছে। তবে বেশির ভাগ দল চার মূলনীতি বাদ দেওয়ার প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছে। তারা গণপরিষদ ও গণভোটের বিষয়ে আপত্তি জানানোর পাশাপাশি সংসদের মেয়াদ পাঁচ বছর বহাল রাখার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। একাত্তর আর চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানকে একসঙ্গে মিলিয়ে ফেলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিএনপিসহ বেশির ভাগ দল। কেউ কেউ এর সঙ্গে নব্বইকে যুক্ত করার দাবি জানিয়েছে। বিএনপি আপত্তি জানালেও অনেকেই সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থার সুপারিশ করেছে।

জানা গেছে, লিখিত মতামতে কোনো কোনো রাজনৈতিক দল কমিশন প্রদত্ত স্প্রেডশিট (ফরম) ব্যবহার করেনি। তারা আলাদাভাবে লিখিত মতামত দিয়েছে। শুধু নির্বাচনকেন্দ্রিক সংস্কার ছাড়া বাকি সংস্কার নির্বাচিত সংসদ দ্বারা বাস্তবায়নের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বেশির ভাগ দলের পক্ষে বলা হয়েছে, বর্তমানে দেশে যে অস্থিরতা ও সংকট বিরাজ করছে, তা উত্তরণের একমাত্র উপায় দ্রুত সংসদ নির্বাচন। তবে এনসিপি, গণ অধিকার পরিষদসহ কয়েকটি দল সামগ্রিক সংস্কার শেষ করার পর নির্বাচনের কথা বলছে। ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহে রাজনৈতিক দল ও জোটগতভাবে প্রথম পর্যায়ের সংলাপ শেষ হবে। এরপর আমরা দ্বিতীয় ধাপে প্রবেশ করতে পারব। সে ক্ষেত্রে যেসব বিষয়ে ভিন্নমত আছে বা কোনো ক্ষেত্রে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের প্রয়োজন আছে, সেগুলো নিয়ে আগামী মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে আলোচনা করতে পারব।

 

মন্তব্য
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক

মৌলিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে আপত্তি এনসিপির

    ঢাকা সফররত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নিকোল চুলিক গতকাল বৈঠক করেছেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির সঙ্গে
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
মৌলিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে আপত্তি এনসিপির
মো. নাহিদ ইসলাম

আমরা ন্যূনতম সংস্কার নয় বরং মৌলিক সংস্কার ও রাষ্ট্রের গুণগত পরিবর্তনের জন্যই কাজ করছি। মৌলিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচনের দিকে গেলে সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। সেই নির্বাচনে জাতীয় নাগরিক পার্টি অংশগ্রহণ করবে কি না সেটাও বিবেচনাধীন থাকবে। গতকাল বুধবার রাজধানীর গুলশানে মার্কিন ডেপুটি অব মিশনের বাসভবনে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি নিকোল চুলিকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

তিনি বলেন, মূলত বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সংস্কার কার্যক্রম ও নির্বাচন বিষয়ে নিকোল চুলিকের প্রধান ফোকাস ছিল। এ ছাড়া দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাসহ বাংলাদেশের সামনের রাজনীতি কোনদিকে যাবে এবং আমাদের রাজনৈতিক দলের গঠনপ্রক্রিয়া, সাংগঠনিক কার্যক্রম ও আদর্শিকতার বিষয়ে তাঁদের আগ্রহ ছিল। আমরা আমাদের জায়গা থেকে ব্যাখ্যা করেছি। আমাদের রাজনৈতিক দল কোন প্রেক্ষিতে কেন এবং কোন লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, তা জানিয়েছি।

সংস্কার বিষয়ে আমরা যে প্রস্তাবনা সংস্কার কমিশনে দিয়েছি সেটি আমরা বলেছি। আমাদের যে তিনটি দাবি বিচার, সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচনসেটি আমরা সুস্পষ্টভাবে বলেছি। আমরা বলেছি, আমরা আমাদের তিনটি এজেন্ডা নিয়েই সারা দেশে কাজ করছি।

বর্তমান সময় নিরপেক্ষ আচরণ করছে না অভিযোগ করে তিনি আরো বলেন, বর্তমান সময় মাঠ পর্যায়ে যে প্রশাসন রয়েছে সেই প্রশাসন আমাদের কাছে মনে হয়েছে নিরপেক্ষ আচরণ করছে না।

বিভিন্ন জায়গায় জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চলছে। সেই জায়গায় প্রশাসনকে আমরা নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করতে দেখছি। সে জায়গাগুলো আমরা বলেছি।

নিরপেক্ষ না বলতে বা প্রশাসন কার পক্ষে ভূমিকা পালন করছে বলতে আপনারা কী মনে করছেন জানতে চাইলে এনসিপির এই আহ্বায়ক বলেন, প্রশাসন আমরা দেখছি অনেক জায়গায় প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির পক্ষ অবলম্বন করছে। মাঠ পর্যায়ে যে ধরনের চাঁদাবাজি চলছে সে জায়গায়ও প্রশাসন আসলে নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করছে।

আমরা বলেছি, এ ধরনের একটি প্রশাসন যদি থাকে তাহলে এর অধীনে নির্বাচন করাটাও আসলে সম্ভব নয়। ফলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের জন্য একটি নিরপেক্ষ প্রশাসন, আমলাতন্ত্র ও পুলিশ আসলে আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনের টাইমফ্রেমের বিষয়ে জানতে চাইলে নাহিদ ইসলাম বলেন, টাইমফ্রেমের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার ডিসেম্বর থেকে জুনকে আমরা প্রাথমিকভাবে সমর্থন করছি। কিন্তু দৃশ্যমান বিচার, বিচারের রোডম্যাপ দেওয়া ও সংস্কার অর্থাৎ জুলাই সনদ কার্যকর করা ইত্যাদি ছাড়া আসলে নির্বাচনের সময় নিয়ে কথা বলে কোনো লাভ নেই।

মন্তব্য
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক

আগামী রমজানের আগেই জাতীয় নির্বাচন চায় জামায়াত

    ঢাকা সফররত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নিকোল চুলিক গতকাল বৈঠক করেছেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির সঙ্গে
বিশেষ প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
শেয়ার
আগামী রমজানের আগেই জাতীয় নির্বাচন চায় জামায়াত
শফিকুর রহমান

আগামী রমজানের আগেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোকবাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এমনটাই চায় বলে জানিয়েছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান।

গতকাল বুধবার রাজধানীর গুলশানে মার্কিন ডেপুটি হেড অব মিশনের বাসভবনে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ডেপুটি   অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নিকোল চুলিকের সঙ্গে বৈঠক করেন জামায়াতের আমির। এ সময় জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, তারা (যুক্তরাষ্ট্র) জানতে চেয়েছে আমরা কবে নির্বাচন চাই।

আমরা বলেছি, প্রধান উপদেষ্টা এ বছরের ডিসেম্বর অথবা আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে নির্বাচন দিতে চেয়েছেন। আমরা জানতে চেয়েছি, তিনি তাঁর সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবেন কি না। তবে আমরা চাই, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং বর্ষার আশঙ্কা মাথায় রেখে আগামী রমজানের আগেই নির্বাচন সম্পন্ন হোক। আর আমরা চাই, নির্বাচনটি যেন অবশ্যই আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে হয়।

বৈঠক নিয়ে জামায়াতের আমির আরো জানান, তাঁদের সঙ্গে আমাদের খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। যদি ভবিষ্যতে আমরা দেশের দায়িত্ব গ্রহণ করি, তাহলে আমাদের অর্থনৈতিক ও বৈদেশিক নীতিমালা কী হবে তা জানতে চেয়েছেন তাঁরা। অঞ্চলভিত্তিক বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। আমরা সংখ্যালঘু, নারী অধিকার ও শ্রম অধিকার নিয়েও কথা বলেছি।

তিনি আরো বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করেছি, আমাদের দেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় পার করছে। এই সময় যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত ৩৭ শতাংশ শুল্ক যেন তারা পুনর্বিবেচনা করে। আমরা আশা করি, তারা সহযোগিতা করবে। বৈঠকে আওয়ামী লীগের বিচার নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান ডা. শফিকুর রহমান। তিনি উল্লেখ করেন, আমরা ন্যায়বিচারের ভিত্তিতেই আওয়ামী লীগের বিচার চেয়েছি।

উল্লেখ্য, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর এই প্রথমবারের মতো ঢাকা সফরে এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি চুলিক, পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অ্যান্ড্রু  হেরাপ এবং মায়ানমারে ভারপ্রাপ্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত সুসান স্টিভেনসন।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ