দেশের মোবাইল ফোন অপারেটরদের সংগঠন ‘এমটব’ প্রতিনিধিরা টেলিকমসংক্রান্ত আয়কর, মূল্য সংযোজন কর, আমদানি শুল্ক ও সম্পূরক শুল্ক বিষয়ে ১৬ দফা প্রস্তাব দিয়েছেন। গতকাল রবিবার এনবিআর সঙ্গে বাজেটপূর্ব সভায় মিলিত হয়ে এসব প্রস্তাব দেন তাঁরা।
সভায় এমটব প্রতিনিধিরা বলেন, মোবাইল অপারেটরদের বার্ষিক সর্বমোট রাজস্ব প্রাপ্তির ২ শতাংশ ন্যূনতম কর হিসেবে দিতে হয়, যা আয়কর আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ব্যবসায় লোকসান সত্ত্বেও ন্যূনতম কর প্রদান করার অর্থ হলো মূলধন থেকে কর পরিশোধ করা।
এটি ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য বাধা। যেখানে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর সিগারেট বা তামাকশিল্পের ক্ষেত্রে ন্যূনতম কর ১ শতাংশ সেখানে মোবাইলের মতো জরুরি খাতের জন্য ২ শতাংশ ন্যূনতম কর ধার্য যৌক্তিক নয়। এই শিল্প টিকিয়ে রাখার পক্ষে ও সরকারঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণ করার লক্ষ্যে ন্যূনতম কর অপসারণ/হ্রাসের বিকল্প নেই।
প্রতিনিধিরা আরো জানান, দেশে সাধারণ করপোরেট ট্যাক্স হার অতালিকাভুক্ত কম্পানির জন্য ২৭.৫ শতাংশ এবং তালিকাভুক্ত কম্পানির জন্য ২০ শতাংশ থেকে ২২.৫ শতাংশ।
অথচ জরুরি সেবা হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ মোবাইল খাতের জন্য উচ্চহারে করপোরেট কর দিতে হয়। স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত মোবাইল অপারেটরদের ক্ষেত্রে এই করের হার ৪০ শতাংশ ও অতালিকাভুক্ত কম্পানির জন্য ৪৫ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে মোবাইল অপারেটরদের পৃথক শ্রেণিভুক্ত না করে বরং অন্যান্য কম্পানির সারিতে পুনর্বিন্যস্ত করা এবং সেই হারে কর হ্রাস করতে হবে।
ক্যাপিটাল অ্যালাউন্স বা অবচয় ভাতা সম্পর্কে বলা হয়, এই ভাতা কার্যকর করার নিয়ম করা হলেও এর সুফল পাওয়া যায় না।
এর ব্যবহারবিধি কম্পানির কোনো প্রকার উপকারে আসছে না। এ ছাড়া যেসব বিদেশি সরবরাহকারীর বাংলাদেশে স্থায়ী কার্যালয় নেই, তাদের পক্ষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে নন-ডিডাকশন সার্টিফিকেট সংগ্রহ করাটা কষ্টসাধ্য। এই নন-ডিডাকশন সার্টিফিকেট ব্যবস্থা বাতিল করা দরকার।
সভায় ই-সিমসহ সব সিম সরবরাহের ওপর ভ্যাট অপসারণের দাবি জানিয়ে বলা হয়, এটি হলে তা দেশে ডিজিটাইজেশন লক্ষ্য অর্জনের সহায়ক হবে, সরকারের রাজস্ব বাড়বে এবং শিল্প খাতের উন্নয়ন নিশ্চিত হবে।