কোরআনে বর্ণিত নবীজির নামসমূহ

  • সাআদ তাশফিন
অন্যান্য
অন্যান্য
শেয়ার
কোরআনে বর্ণিত নবীজির নামসমূহ

কখনো মহান আল্লাহ তার প্রিয় বন্ধুকে ‘রহমত’ বলে সম্বোধন করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, আমি তোমাকে (রাহমাতান লিল আলামিন) বিশ্ববাসীর জন্য রহমত হিসেবেই প্রেরণ করেছি। (সুরা আম্বিয়া, আয়াত : ১০৭)

মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় বন্ধুকে আমাদের জন্য পাঠিয়েছেন নিয়ামতস্বরূপ। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘ওয়াজকুরু নিমাতাল্লাহি আলাইকুম’ তোমরা তোমাদের ওপর আল্লাহর নিয়ামতকে স্মরণ করো।

(সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১০৩)

কিছু কিছু তাফসিরবিদের মতে, এখানে ‘নিয়ামত’ দ্বারা রাসুল (সা.)-এর কথা বলা হয়েছে। 

অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, হে নবী, আমি আপনাকে পাঠিয়েছি, ‘শাহেদ’ সাক্ষ্যদাতা, ‘মুবাশশির’ সুসংবাদদাতা ও ‘নাজির’ সতর্ককারীরূপে। (সুরা আহজাব, আয়াত : ৪৫)

ওই আয়াতে মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় বন্ধুকে তিনটি নামে সম্বোধন করেছেন। শাহেদ, মুবাশশির ও নাজির।

এর পরের আয়াতেই মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় বন্ধুকে আরো দুটি নামে সম্বোধন করেন। ১. ‘দায়ি ইলাল্লাহ’। ২. ‘সিরাজাম মুনিরা’। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আল্লাহর অনুমতিক্রমে (দায়ি ইলাল্লাহ) তাঁর দিকে আহ্বানকারী ও (সিরাজাম মুনিরা) উজ্জ্বল প্রদীপরূপে।

(সুরা আহজাব, আয়াত : ৪৬)

আন নাবিয়্যুল উম্মি : ইরশাদ হয়েছে, যারা অনুসরণ করে রাসুলের। যিনি উম্মি নবী। (সুরা আরাফ, আয়াত : ১৫৭) এই আয়াতে মহান নবী (সা.)-কে ‘আন নাবিয়্যুল উম্মি’ বলে সম্বোধন করেছেন।

কখনো মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় বন্ধুকে মুজ্জাম্মিল বলে সম্বোধন করেছেন। ‘মুজ্জাম্মিল’ মানে হলো, চাদরে আবৃত ব্যক্তি।

একবার রাসুল (সা.) চাদরে আবৃত ছিলেন। সেই সময় আয়াত নাজিল হলো, ‘ইয়া আইয়ুহাল মুজ্জাম্মিল’ হে বস্ত্রাবৃত, (সুরা মুজ্জাম্মিল, আয়াত : ১)

আবার কখনো সম্বোধন করেছেন ‘মুদ্দাসসির’ বলে। যার অর্থ হলো বস্ত্রাবৃত। ইরশাদ হয়েছে, ‘ইয়া আইয়ুহাল মুদ্দাসসির’ হে বস্ত্রাবৃত, (সুরা মুদ্দাসসির, আয়াত : ১)

কখনো সম্বোধন করেছেন, ‘আমিন’ বলে, যার অর্থ : বিশ্বস্ত। ইরশাদ হয়েছে। নিশ্চয়ই কোরআন সম্মানিত রাসুলের আনিত বাণী। যে শক্তিশালী আরশের মালিক, আল্লাহর নিকট মর্যাদাসম্পন্ন। মান্যবর ও বিশ্বাসভাজন। (সুরা তাকভির, আয়াত : ১৯-২১)

এ ছাড়া মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় নবীকে ‘হাদি’, ‘খাতামুন নাবিয়্যিন’ প্রভৃতি নামে সম্বোধন করেছেন।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

কোরআন থেকে শিক্ষা

    পর্ব : ৬৯৫
শেয়ার
কোরআন থেকে শিক্ষা

আয়াতের অর্থ : অবশ্যই সফলকাম হয়েছে মুমিনগণ, যারা বিনয়-নম্র নিজেদের নামাজে। (সুরা : মুমিনুন, আয়াত : ১-২)

পবিত্র কোরআনের ২৩তম সুরা মুমিনুন মক্কায় অবতীর্ণ। সুরায় মুমিনের বৈশিষ্ট্য বর্ণিত হওয়ায় এই নাম রাখা হয়েছে। আয়েশা (রা.)-কে মহানবী (সা.)-এর চরিত্র সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি সুরা মুমিনুনের প্রথম ৯ আয়াত তিলাওয়াত করেন।

 

শিক্ষা ও বিধান

১. আল্লাহ আদন বেহেশত সৃষ্টি করার পর সেখানে তাঁর কুদরতি হাতে একটি বৃক্ষ রোপণ করেন। অতঃপর বৃক্ষকে কথা বলতে বললে বৃক্ষ সুরা মুমিনুনের প্রথম আয়াতগুলো পাঠ করে।

২. আয়াতে বর্ণিত গুণাবলি অর্জনের সঙ্গে মুমিনের সাফল্য ও সৌভাগ্য লাভের প্রশ্ন জড়িত। যে এসব গুণ ধারণ করবে সেই সফল হবে।

৩. আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, নামাজে বিনম্র হওয়ার অর্থ হলো অন্তরে আল্লাহর ভয় ধারণ করে ধীরস্থির ও একাগ্রতার সঙ্গে নামাজ আদায় করা।

৪. রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজে প্রশান্তি খুঁজে পেতেন। তিনি বলতেন, নামাজে আমার চোখের শীতলতা রাখা হয়েছে।

৫. মুহাম্মদ বিন সিরিন (রহ.) বলেন, ব্যক্তি নামাজের সময় নামাজের (সিজদার) স্থানে চোখ স্থির রাখবে।

যদি সে চোখ স্থির রাখতে সক্ষম না হয়, তবে সে চোখ বন্ধ করে রাখবে। (তাফসিরে ইবনে কাসির : ৭/৫১১)

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

প্রশ্ন-উত্তর

    সমাধান : ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশ, বসুন্ধরা, ঢাকা
শেয়ার
প্রশ্ন-উত্তর

সময়মতো বিয়ে না করালে অভিভাবকের গুনাহ হবে?

প্রশ্ন : আমাকে রেখে আমার মা ইন্তিকাল করেন, তার পর থেকে আমার সত্মায়ের সঙ্গে আমার প্রায় মারামারি হয়। এই কারণে আমি পিতা থেকে কিছু জমি নিয়ে পৃথক হয়ে যাই। এখন আমার বিয়ের বয়স হয়েছে, আমি বিবাহ করতে চাই। আমার পিতার এই পরিমাণ সম্পদ আছে, আমাকে বিবাহ করিয়ে দেওয়ার দ্বারা কোনো ক্ষতি হবে না।

তাহলে এখন আমাকে কে বিবাহ করাবে? যদি পিতার দায়িত্ব হয়, আর তিনি তা পালন না করেন, তাহলে গুনাহ হবে কি না?

রিয়াজ, উত্তরা

 

উত্তর : ছেলে বড় হলে বিবাহ করানো পিতার দায়িত্ব। পিতা এ দায়িত্ব পালনে অবহেলা করলে ছেলের গুনাহের পিতাও ভাগী হবেন। (শুআবুল ঈমান : ৬/৪০১, ফাতাওয়ায়ে দারুল উলুম  : ৭/৪৩)

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

যাবতীয় অনিষ্ট থেকে বাঁচার দোয়া

শেয়ার
যাবতীয় অনিষ্ট থেকে বাঁচার দোয়া

উচ্চারণ : বিসমিল্লাহিল্লাজি লা ইয়াদুররু মাআসমিহি শাইউন ফিল আরদি ওয়ালা ফিস সামা-ই ওয়া হুয়াস সামিউল আলিম।

অর্থ : আল্লাহ তাআলার নামে, যাঁর নামের বরকতে আকাশ ও মাটির কোনো কিছুই কোনো অনিষ্ট করতে পারে না। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী।

উপকার : ওসমান বিন আফফান (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যা তিনবার এই দোয়া পড়বে, আল্লাহ তাআলা তাকে সব ধরনের বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করবেন।

অন্য বর্ণনায় আছে, আল্লাহ তাআলা তাকে সব ধরনের রোগব্যাধি থেকে হেফাজত করবেন।

(তিরমিজি, হাদিস : ৩৩৮৮)

মন্তব্য

চরপাথালিয়া মাদরাসায় এক বছরে হাফেজ হয়েছে ৫৬ জন

নূর আহমাদ
নূর আহমাদ
শেয়ার
চরপাথালিয়া মাদরাসায় এক বছরে হাফেজ হয়েছে ৫৬ জন
মুন্সীগঞ্জের চরপাথালিয়া সালমান ফারসি (রা.) মাদরাসা থেকে হেফজ সম্পন্নকারী শিক্ষার্থীরা

মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানার চরপাথালিয়া সালমান ফারসি (রা.) মাদরাসা থেকে এক বছরে ৫৬ জন শিক্ষার্থী কোরআনের হেফজ সম্পন্ন করেছে। গত বুধবার মাদরাসার উদ্যোগে আয়োজিত মাহফিলে হাফেজ ছাত্রদের পাগড়ি এবং তাদের পিতাকে গর্বিত বাবা অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়।

মাদরাসার মুতাওয়াল্লি মো. শিকদার শিহাবুদ্দিনের সভাপতিত্বে পাগড়ি প্রদান মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন হুফফাজুল কোরআন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান উস্তাজুল হুফফাজ হাফেজ আবদুল হক, প্রধান মেহমান ছিলেন জামেয়া শারইয়্যাহ মালিবাগের প্রিন্সিপাল মাওলানা আবু সাঈদ এবং প্রধান আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক মাওলানা যাইনুল আবেদীন। এ ছাড়া গজারিয়ার স্থানীয় মাদরাসার পরিচালক ও আলেম-উলামা এবং হাফেজ ছাত্রদের অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হাফেজ আল আমিন সরকার।

সভাপতির বক্তব্যে মো. শিকদার শিহাবুদ্দিন বলেন, হাফেজরা আল্লাহর কাছে সবচেয়ে দামি মানুষ। তাদের কদর বোঝাও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আজকে যারা হাফেজ হলো তারা হয়তো বড় হয়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে মিশে যাবে।

কিন্তু সবার সঙ্গে থাকার পরও তাদের আলাদা একটা পরিচয় থাকবে, তারা হাফেজে  কোরআন। তারা কোরআনের মতো দামি গ্রন্থ সিনায় ধারণ করেছে। তাই হাফেজের মর্যাদা আমাদের বুঝতে হবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাফেজ আবদুল হক বলেন, হাফেজদের পাগড়ি প্রদান অনুষ্ঠান আসলে একটা ছায়া অনুষ্ঠান মাত্র।

এসব হাফেজকে সম্মানিত করা হবে জান্নাতে। এখানে মাদরাসা পরিচালকরা হাফেজ ছাত্রদের বাবাকে গর্বিত পিতা অ্যাওয়ার্ড দিয়েছেন, এটাও একটা নমুনা। কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা হাফেজ ছাত্রদের মা-বাবাদের নূরের টুপি পরাবেন। হাফেজদের সম্মান দুনিয়া-আখিরাত সব জায়গাতেই সবার ওপরে।

প্রধান মেহমানের বক্তব্যে প্রিন্সিপাল মাওলানা আবু সাঈদ বলেন, দুনিয়ার অনেক বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় আছে।

অক্সফোর্ড, ক্যামব্রিজসহ নামকরা অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা আমরা শুনি। কিন্তু আজ যে শিশুটি কোরআন বুকে ধারণ করল, তার মর্যাদা আর কোনো বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সঙ্গে মিলবে না। ধর্মীয় বিবেচনায় একজন হাফেজ সব মানুষের চেয়ে শ্রেষ্ঠ মানুষ। তাই হাফেজের স্থানও হবে জান্নাতে সবার ওপরে।

প্রধান আলোচকের বক্তব্যে মাওলানা যাইনুল আবেদীন বলেন, হাফেজরা শুধু যে ধর্মীয় দৃষ্টিতে শ্রেষ্ঠ তা নয়, তারা এখন দেশে-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ খাতেও অবদান রাখছে। একজন হাফেজ যখন ব্যবসায়ী হবে সে সবার মন জয় করবে তার সততা ও কোরআনি আচরণ দিয়ে। একজন হাফেজ যখন কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করবে সে সবার সেরা হবে তীক্ষ মেধা ও দক্ষতার কারণে। হাফেজরা দেশ ও জাতির সম্পদ। তাদের সঠিক পরিচর্যা করা আমাদের সবার দায়িত্ব।

মাদরাসার পরিচালক হাফেজ আল আমিন সরকার বলেন, এক বছরে ৫৬ জন ছাত্র  হাফেজ হওয়া একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য বড় অর্জন কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু মুমিনের আসল সফলতা হলো মাওলাকে রাজি-খুশি করা। মাওলা যদি আমাদের ইখলাস ও খেদমতে খুশি হন, তাহলে হাফেজ বেশি হলো না কম হলো সেটা বড় কথা নয়। আমাদের মাদরাসার বয়সও বেশি না। আমরা ২০১৬ সালে শুরু করেছি। আমরা শুরু থেকেই শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিতের বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছি। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশ ও শারীরিক সুস্থতা ও পরিচ্ছন্নতার বিষয়েও জোর দিয়েছি। বর্তমান-সাবেক শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবক যাঁরাই মাদরাসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং আছেনসবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন। মাদরাসার জন্য দোয়া করবেন। আমরা আপনাদের সবার কাছে কৃতজ্ঞ। আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসায় চরপাথালিয়া সালমান ফারসি (রা.) মাদরাসা আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ