<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ছাদকৃষি ছড়িয়ে পড়ছে শহর থেকে গ্রামে। বাসার ছাদটি ব্যবহার করে অনেকে হয়ে উঠছেন উদ্যোক্তা, খুঁজে নিচ্ছেন আয়ের পথ। এমন এক নবীনের দেখা পেলাম শরীয়তপুর শহরে। শখ থেকে শুরু তার ছাদকৃষি। এখন প্রতি মাসে মোটা অঙ্কের টাকা আসছে। নিজের পাশাপাশি অন্যের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থার কথাও ভাবছেন তিনি। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বলছিলাম উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী ইমরান আহমেদের কথা। শরীয়তপুর শহরের উত্তরপালং এলাকায় ইমরানদের চার-পাঁচ শতাংশ জমির ওপর একতলা বাড়ি। বাড়ির পাশের ছোট্ট জায়গা এবং ছাদটিকে ব্যবহার করে নিয়েছেন কৃষি বাণিজ্যের উদ্যোগ। শুরুটা ২০২০ সালে, করোনার সময়। স্কুল-কলেজ বন্ধ ছিল তখন। টেলিভিশনে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ছাদকৃষি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> দেখে উদ্বুদ্ধ হলেন এমন উদ্যোগে। সবজি আর ফুল দিয়ে শুরু করে দেখলেন ফুলেই বেশি লাভ। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সপ্তাহ দুয়েক আগে ইমরানের বাসার ছাদে দাঁড়িয়ে কথা হচ্ছিল তার সঙ্গে। উদ্যমী ইমরান কথা বলেন বেশ গুছিয়ে। বললেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সময় কাটানোর জন্য ভাবলাম ছাদে কিছু একটা করি। আপনার অনুষ্ঠানগুলো দেখতাম নিয়মিত। ভাবলাম নিজেও তো করতে পারি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাদকৃষিবিষয়ক গ্রুপগুলোতে যুক্ত হলাম। দেখলাম প্রচুর মানুষ নিজেদের মধ্যে তথ্যের আদান-প্রদান করে, গাছের চারাও বেচাকেনা হয়। বুঝলাম লেগে থাকলে এখান থেকেই বাণিজ্য সম্ভব।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ইমরানদের বাড়ির আঙিনা আর ছাদ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সবখানেই শত রকমের ফুলের গাছ। আয়োজনটিকে গত তিন বছরে উদ্যোক্তা ইমরান বাণিজ্যে রূপ দিয়েছেন। বিস্মিত হলাম জবা ফুলের সংগ্রহ দেখে। দেশ-বিদেশের প্রায় তিন শ প্রজাতির জবা ফুলের গাছ রয়েছে এখানে। নানা আকারের বিভিন্ন রঙের জবা ফুল চারপাশে। আছে গোলাপ, বাগানবিলাস, রাধাচূড়া, কাঠগোলাপ, অ্যাডেনিয়ামসহ আরো নানা প্রজাতির ফুলের সংগ্রহ। আয়োজনটিকে শুধু ছাদকৃষি বলা যাবে না, এটি রীতিমতো এক ঘরোয়া নার্সারি। ছাদে পলিশেড করে সেখানে প্রতিটি ফুলগাছ থেকে গ্রাফটিং করে তৈরি করা হচ্ছে চারা, যা অনলাইন প্ল্যাটফরম ব্যবহার করে বিক্রি হচ্ছে দেশের ৬৪ জেলায়ই। এভাবে তিনি প্রতি মাসে গড়ে লাভ করছেন ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উচ্ছ্বসিত ইমরান বললেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমি প্রথম বিক্রি করি একটি জবাফুলের চারা। ঢাকার উত্তরা থেকে এক আপু কিনলেন ১৫০ টাকায়। কুরিয়ারে ডেলিভারি দিই। আমার কাছে সেই ১৫০ টাকা ১৫ কোটি টাকা মনে হলো। নিজের প্রথম আয়! এই আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। এরপর বিক্রি বাড়তে থাকে। গত মাসে লাখ টাকার মতো চারা বিক্রি হয়েছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নিজেকে উদ্যোক্তা দাবি করে তরুণ এই শিক্ষার্থী বলেন, পড়া শেষে চাকরির পেছনে ছোটার ভাবনা আর নেই। বরং নিজেই অন্যের কর্মসংস্থানের পরিকল্পনা করছেন। তার এই উদ্যোগটি এরই মধ্যে সাড়া ফেলেছে এলাকার তরুণদের মাঝে। প্রতিদিন অনেকে বাড়তি আয়ের পথ খুঁজতে ছুটে আসেন তার কাছে। ইমরানও নিজের বাণিজ্যের প্রসারে তাদের নানাভাবে পরামর্শ ও সহযোগিতা করছেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তরুণদের হাত ধরে আজকের কৃষি বাণিজ্যের পথ দীর্ঘ হচ্ছে। এ কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। নিজের মোবাইল ফোনটি এখন সবচেয়ে বড় তথ্য ভাণ্ডার। যারা এটিকে ইতিবাচকভাবে ব্যবহার করতে পারছেন, তারা নিজেদের সাফল্য ঠিকই ছিনিয়ে আনছেন নানা কৌশলে। ইমরান এরই উজ্জ্বল উদাহরণ।</span></span></span></span></span></p>