২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে দুই হাজার ৫১০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। শিল্প খাতের উন্নয়নে বাজেট বরাদ্দ কমানো হয়েছে ৫১৪ কোটি টাকা। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে এ প্রস্তাব পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। সংসদ অধিবেশনে অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের শিল্পায়নে বেসরকারি খাত হচ্ছে মূল চালিকাশক্তি।
শিল্প খাত
বরাদ্দ কমানো হয়েছে ৫১৪ কোটি টাকা
নিজস্ব প্রতিবেদক

কর-শুল্ক ছাড় ও বৃদ্ধি : কিছু শিল্পের কয়েকটি উপখাতে কর কমানো হয়েছে, আবার কিছু খাতে বাড়ানো হয়েছে, যা দেশীয় শিল্পের প্রসারের জন্য করা হয়েছে। যার লক্ষ্য বিনিয়োগ বৃদ্ধি, যথাযথ প্রতিরক্ষণের মাধ্যমে বিদ্যমান শিল্পের উৎপাদন ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহার। একই সঙ্গে রপ্তানিমুখী শিল্পের বহুমুখী প্রসার।
পুনর্মোড়কজাতকরণ শিল্প : আড়াই কেজি পর্যন্ত প্যাকেটজাত গুঁড়া দুধের ওপর বিদ্যমান ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে।
তাঁতশিল্প : শুল্কায়ন জটিলতা দূর করতে গ্লুবার সল্টের পরিবর্তে ডাইসোডিয়াম সালফেট উল্লেখ করে প্রজ্ঞাপন সংশোধন করার সুপারিশ করা হয়েছে। দেশীয় শিল্পের সুরক্ষার্থে টেক্সটাইলে ব্যবহৃত কাঁচামাল পিটিএ এবং এমইজির ওপর আমদানি শুল্ক ১ শতাংশ নির্ধারণ করে অন্য সব শুল্ককর মওকুফের প্রস্তাব করা হয়েছে।
কার্পেট উৎপাদনকারী শিল্প : দেশে বর্তমানে কার্পেট তৈরির শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। এর মূল কাঁচামাল হচ্ছে পলিপ্রপেলিন সুতা। নতুন গড়ে ওঠা এই শিল্পের বিকাশে পলিপ্রপেলিন সুতার আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করার সুপারিশ করা হয়েছে।
ফেরো অ্যালয় : রড, বার, অ্যাংগেল ইত্যাদি পণ্য উৎপাদনের সময় পরিশোধন কাজে এই পণ্য ব্যবহার করা হয়। ফেরো অ্যালয় উৎপাদনে কাঁচামাল হচ্ছে ম্যাংগানিজ।
এয়ারকন্ডিশনার ও রেফ্রিজারেটর : রেফ্রিজারেটর উৎপাদনে ব্যবহৃত কম্প্রেসার আমদানিতে বিদ্যমান রেয়াতি হার প্রত্যাহার করার সুপারিশ করা হয়েছে। এয়ারকন্ডিশনারের (এসি) বিভিন্ন প্রকার স্টিল শিটের আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ১০ শতাংশ নির্ধারণ এবং এসি সংশ্লিষ্ট সব পণ্যে আমদানি শুল্ক ১০ থেকে ১৫ শতাংশ করা হবে।
মোটরসাইকেল : ২৫০ সিসির ঊর্ধ্বসীমার ইঞ্জিন ক্ষমতাসম্পন্ন মোটরসাইকেলের যন্ত্রাংশ আমদানিতে ১০ শতাংশ শুল্ক ধার্য করার সুপারিশ করা হয়েছে। ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশের ওপর বিদ্যমান আমদানি শুল্ক ৫ থেকে বৃদ্ধি করে ১৫ শতাংশ করা হবে।
অন্যান্য ইলেকট্রিক পণ্য : পানি পরিশোধন যন্ত্রের আমদানি শুল্ক ১০ থেকে বৃদ্ধি করে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। সুইচ, সম্পূর্ণ সকেট এবং এগুলোর পার্টসের ন্যূনতম মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
সম্পর্কিত খবর

সংক্ষেপে বাজেট
তামাকবিরোধী সংগঠনগুলো হতাশ
নিজস্ব প্রতিবেদক

সিগারেটে কার্যকর করারোপের মাধ্যমে দেশে ধূমপানের হার কমিয়ে আনা এবং সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধির যে সুযোগ ছিল তা বাজেটে কাজে লাগানো হয়নি। এই বাজেটে সিগারেটের ওপর কার্যকর করারোপের প্রস্তাব দিয়েছিল দেশের তামাকবিরোধী নাগরিক সংগঠনগুলো। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের গবেষকদের সঙ্গে একযোগে কাজ করে অর্থ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে তারা যে প্রস্তাব দিয়েছিল তা এই বাজেটে পুরোপুরি প্রতিফলিত হয়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বাজেট-পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা জানায় উন্নয়ন সমন্বয় নামের একটি সংগঠন।

সংক্ষেপে বাজেট
তিন বছর করমুক্ত সুবিধা আইসিটি খাতে
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতে কর অব্যাহতির মেয়াদ তিন বছর বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে বর্তমানে এই খাতের ২৭টি উপখাতে কর অব্যাহতির সুবিধা থাকলেও সেই সুবিধা কিছুটা কমে ২০টি খাতে নেমে আসতে পারে। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে এই বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। সংসদে অর্থমন্ত্রী প্রস্তাবনায় বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিম্নবর্ণিত আইটি সেবাগুলোসহ অন্য কিছু খাতে ১ জুলাই ২০২৪ থেকে ৩০ জুন ২০২৭ সাল পর্যন্ত অর্জিত আয়কে করমুক্ত রাখার প্রস্তাব করছি।

সংক্ষেপে বাজেট
বরাদ্দ কমল পর্যটন খাতে
নিজস্ব প্রতিবেদক

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন খাতে পাঁচ হাজার ৬৯৫ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৬৫৪ কোটি টাকা কম। চলতি অর্থবছরে (২০২৩-২৪) বরাদ্দ ছিল ছয় হাজার ৩৪৯ কোটি টাকা। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, বিগত ১৫ বছরে অর্থনীতির আকার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়ায় বহির্বিশ্বে বিমানে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের পরিমাণও বেড়েছে। অভ্যন্তরীণ চলাচলের ক্ষেত্রেও বিমানের ব্যবহার বেড়েছে।

সংক্ষেপে বাজেট
চাপ বাড়ছে ভর্তুকি ও সুদের
নিজস্ব প্রতিবেদক

ভর্তুকির জাল থেকে বের হতে চাইলেও উল্টো সেই জালেই জড়িয়ে যাচ্ছে সরকার। এদিকে বাজারভিত্তিক সুদহার বাড়ায় আগামী অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি ও সুদাসল পরিশোধে দুই লাখ এক হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যার মধ্যে সুদ পরিশোধে খরচ ধরা হয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং ভর্তুকির পেছনে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৮৮ হাজার ২৮৫ কোটি টাকা। গতকাল বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জাতীয় সংসদে আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট পেশের সময় এই বরাদ্দের কথা জানান।
আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে মোট ভর্তুকি ও প্রণোদনার বড় অংশই বরাদ্দ রাখা হতে পারে বিদ্যুৎ ও কৃষি খাতে।