<p>গত বছরের মতো ডেঙ্গুর একই ধরন ডেন-২ দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে বেশির ভাগ মানুষ। মৃত্যুও বেশি হচ্ছে শক সিনড্রোমে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আক্রান্ত সংখ্যায় কম হলেও মৃত্যুর অনুপাত গত বছরের মতো রয়ে গেছে। কারণ ডেঙ্গুর একাধিক উপধরন এখনো বিরাজমান।</p> <p>সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট-আইইডিসিআরের সীমিতসংখ্যক নমুনা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৭০ শতাংশ রোগী ডেঙ্গুর ধরন ডেন-২-এ আক্রান্ত হয়েছে। ২০ শতাংশ আক্রান্ত হয়েছে ডেন-৩-এ এবং ১০ শতাংশ আক্রান্ত হয়েছে ডেন-৪-এ। এদিকে ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া রোগীর কারণ বিশ্লেষণ করে মুগদা জেনারেল হাসপাতাল জানিয়েছে, বেশির ভাগের মৃত্যু শক সিনড্রোমে।</p> <p>গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরো তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৪১১ ডেঙ্গু রোগী। এ নিয়ে চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৪৭ হাজার ৪৪১ জন। এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ২৩৭ জনের। এক বছরে মৃত্যুর এই সংখ্যা তৃতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে ২০২৩ সালে এক হাজার ৭০৫ জন এবং ২০২২ সালে ২৮১ জনের প্রাণ নিয়েছিল ডেঙ্গু। অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি বছর প্রতি ২০০ জনে একজন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। গত বছর এই হার ছিল প্রতি ২০৪ জনে একজন।</p> <p>আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ও সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, গত বছরের মতো ডেঙ্গুর ভাইরাস একই উপধরন থাকায় রোগীর সংখ্যা কমেছে। তবে এডিস মশার উপদ্রপ গত বছরের চেয়ে বেশি। একই সঙ্গে মৃত্যুর অনুপাত গত বছরের মতো রয়ে গেছে। কারণ, ডেঙ্গুর একাধিক উপধরন এখনো বিরাজমান।</p> <p>আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন বলেন, আইইডিসিআর ঢাকার একাধিক হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীর নমুনা সংগ্রহ করেছে। এতে দেখা গেছে, ৭০ শতাংশ নমুনায় ডেন-২, ২০ শতাংশ ডেন-৩ এবং ১০ শতাংশ নমুনায় ডেন-৪ শনাক্ত হয়েছে।</p> <p>অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন বলেন, ২০২৩ সালে নমুনা বিশ্লেষণে প্রাধান্য ছিল ডেন-২। ওই বছর ৭০ শতাংশ ছিল ডেন-২, ৩০ শতাংশ ছিল ডেন-৩। ২০২২ সালে ডেন-৩ ছিল ৯০ শতাংশ। বাকি প্রায় ১০ শতাংশ ছিল ডেন-৪। এর আগে ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ডেন-১ ও ডেন-২ বেশি ছিল। প্রায় আট বছর পর ডেন-২ বেশি দেখা যাচ্ছে।</p> <p>মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডা. সত্যজিৎ কুমার সাহা বলেন, শক সিনড্রোমে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর রক্তের অণুচক্রিকা দ্রুত কমে যায়। রোগী নিজে বুঝতে পারে না সে ডেঙ্গু আক্রান্ত। রক্তক্ষরণ হলে কিছুটা বোঝা যায়। হঠাৎ করে অজ্ঞান হয়ে পড়লে তখন বুঝতে পারে।</p> <p> </p>