সাবেক মার্কিন কূটনীতিক জন এফ ড্যানিলোভিচ বলেছেন, ‘১৯৭১ সাল থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ নীতির ধারাবাহিকতা রয়েছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে একটি হলো শাসক দলের জবাবদিহির অভাব। গণতন্ত্রকে বিকশিত করতে হলে একটি শক্তিশালী সামরিক-বেসামরিক সম্পর্ক অপরিহার্য। স্বৈরাচারী শাসন কখনোই গণতন্ত্রের জন্য সহায়ক নয়।
’ তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশে ওয়ান-ইলেভেনের সময় যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে ভুল ছিল। সে সময় মার্কিন সরকার প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারে যথেষ্ট মনোযোগ দেয়নি।’
গতকাল শনিবার সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত ‘গণ-আন্দোলনের পর বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্কের বর্তমান গতিশীলতা’ নিয়ে আলোচনায় এসব কথা বলেন সাবেক মার্কিন কূটনীতিক। অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়।
সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে ছিলেন সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম মাইলাম এবং সাবেক মার্কিন কূটনীতিক জন ড্যানিলোভিচ।
ড্যানিলোভিচ বলেন, ‘বাংলাদেশ বর্তমানে একটি তথ্যযুদ্ধের সম্মুখীন, এবং মার্কিন সরকার মিডিয়াভিত্তিক বিভ্রান্তিমূলক তথ্য মোকাবেলায় কাজ করছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বাংলাদেশে নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের জন্য মার্কিন তহবিল সম্পর্কে দেওয়া বিবৃতিও বিভ্রান্তিকর, যা মূলত কিছু ব্যক্তি দ্বারা প্রচারিত; যারা দুই দেশের সম্পর্ক অস্থিতিশীল করতে চায়। সেন্ট মার্টিন দ্বীপে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কার্যক্রম সম্পর্কিত বিভ্রান্তিমূলক তথ্য নিছক মিথ্যা প্রচারণা, যা কিছু গোষ্ঠী উদ্দেশ্যমূলকভাবে ছড়াচ্ছে।
সাবেক সরকার বিদেশি দেশগুলোর বিরুদ্ধে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে, যাতে তারা নিজেদের দুর্নীতি ও অনিয়ম আড়াল করতে পারে।’ ড্যানিলোভিচ বলেন, ‘বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের ক্ষেত্রে আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে পারে। স্বৈরাচারী শাসন কখনোই মার্কিন স্বার্থের অনুকূলে নয়।’ তিনি ২০০৭-০৮ সালে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির কিছু ভুলের কথা স্বীকার করেন। ড্যানিলোভিচ বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের সমর্থন নিয়ে আগের ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করছে। তবে নাগরিক সমাজকে আরো সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে এবং গত ১৭ বছরে বিদেশে পাচার হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধার করে সুশাসন সংস্কারের জন্য ব্যবহার করা উচিত।’