গাজীপুরে ট্রাকচাপায় গার্মেন্ট শ্রমিক নিহত হওয়ার জেরে গতকাল বুধবার ৪ ঘণ্টা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন গোল্ডেন রিফিট গার্মেন্টসের শ্রমিকরা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়ে যাত্রীরা।
এ ছাড়া ৭৮ শ্রমিককে ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেন নগরীর বোর্ডবাজারের ইউনিক ডিজাইনের শ্রমিকরা।
শ্রমিকদের কাছ থেকে জানা গেছে, গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘের বাজার এলাকার গোল্ডেন রিফিট গার্মেন্টস কারখানার নারী শ্রমিক জান্নাতুল ফেরদৌস তামান্নার (৩২) শিশুসন্তান অসুস্থ থাকায় গত মঙ্গলবার রাতে ৯টার দিকে তিনি এপিএম মতিউর রহমানের কাছে ছুটি চেয়েছিলেন।
কিন্তু ছুটি না দিয়ে পরিচয়পত্র রেখে তাঁকে কারখানা থেকে বের করে দেওয়া হয়। গতকাল কারখানায় আসার পথে সকাল পৌনে ৬টার দিকে ট্রাকচাপায় মারা যান তামান্না। প্রতিবাদে সকাল ৮টার দিকে কারখানার সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন ওই কারখানার অন্য শ্রমিকরা। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ শ্রমিকদের ধাওয়া করে সড়ক থেকে সরিয়ে দিলে দুপুর ১২টার দিকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এদিকে বোর্ডবাজার এলাকায় গাছা সড়কের ইউনিক ডিজাইন কারখানার ৭৮ শ্রমিককে মঙ্গলবার ছাঁটাই করা হয়। তাঁদের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়ে আরো ৫২ শ্রমিক কাজে যোগদান করা থেকে বিরত থাকেন। ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে এবং বকেয়া পাওনার দাবিতে গতকাল সকালে শ্রমিকরা কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে অন্য শ্রমিকদের ভেতরে প্রবেশে বাধা দেন।
পুলিশ সুপার এ কে এম জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘শিল্প পুলিশের মধ্যস্থতায় ইউনিক ডিজাইন কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনায় রাজি হয়।
আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়, ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করা হলে অন্য শ্রমিকরা কাজে যোগ দেবেন।’
আশুলিয়ায় মহাসড়ক অবরোধ
সাভার (ঢাকা) সংবাদদাতা জানান, গতকাল দুপুরে আশুলিয়ার বাড়ইপাড়া এলাকার মাহমুদ ফ্যাশন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শ্রমিকরা সড়কে অবস্থান করছিলেন।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বলেন, জানুয়ারি মাস থেকে মালিকপক্ষ ঠিকমতো বেতন পরিশোধ করছে না। দুই মাসের বেতন বকেয়া থাকায় শ্রমিকরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
কিন্তু মালিকপক্ষ বেতন কবে নাগাদ পরিশোধ করবে, সে বিষয়ে কিছু বলছে না।
আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন বলেন, ‘দুই মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে মাহমুদ ফ্যাশন কারখানার শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন। আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’