<p>চালের বস্তায় ধানের জাত, উৎপাদনের তারিখ ও দাম উল্লেখ করার সরকারি নির্দেশনা থাকলেও তা মানছেন না ঝিনাইদহের চালকল মালিকরা। ফলে খুচরা পর্যায়ের ভোক্তারা নিয়মিত ঠকছেন। এক জাতের চাল কিনে পাচ্ছেন অন্য জাতের। আর এতে খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে চাল ব্যবসায়ীদের বিবাদ নিত্যদিনের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদিকে চালকল মালিক সমিতির দাবি, সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার জন্য সব চালকল মালিককে একাধিকবার জানানো হয়েছে। আর ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা বলছেন, বিষয়টি সমাধানের জন্য জেলা খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে এ ঘটনায় জড়িত চালকলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।</p> <p>সম্প্রতি ঝিনাইদহ সদর ও শৈলকুপা উপজেলার বেশ কয়েকটি খুচরা ও পাইকারি চালের দোকানে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে প্লাস্টিকের বস্তায় চাল বিক্রি করা হচ্ছে। কয়েকটি দোকানে পাটের তৈরি বস্তা ব্যবহার করা হলেও বস্তায় চালের জাত, প্রক্রিয়াজাতকরণের তারিখ, মিলগেটের মূল্য দেওয়া নেই। বিআর ২৮ জাতের চাল কিনে প্রতারিত হচ্ছেন অনেক ক্রেতা। তাঁদের নির্দিষ্ট জাতের বদলে দেওয়া হচ্ছে অন্য জাতের চাল। দামের ব্যাপারেও খুশি হতে পারছেন না তাঁরা। এক দোকানে ২৫ কেজি ওজনের বস্তার দাম এক হাজার ৫০০ টাকা হলেও অন্য দোকানে তা এক হাজার ৬০০ টাকা বা তার চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।</p> <p>শৈলকুপার কবিরপুর এলাকার খুচরা চাল ব্যবসায়ী বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘মিল থেকে আমাদের যেভাবে চাল সরবরাহ করা হয়, আমরা সেভাবেই বিক্রি করি। সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার বিষয় আমাদের হাতে নেই।’</p> <p>ঝিনাইদহ শহরের হামদহ এলাকার চাল ব্যবসায়ী খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘মিল মালিকরা যখন যেভাবে ইচ্ছা তখন সেভাবে দাম বাড়ায়। তাদের সিন্ডিকেট রয়েছে। ফলে সরকারি নির্দেশনা তো দূরের কথা, নিজেদের মতো করে চালের দাম বাড়িয়ে দেয় তারা।’</p> <p>সদরের হাটগোপালপুর এলাকার পদ্মা অটো রাইস মিলের মালিক শিশির সরদার বলেন, ‘আমরা পাটের বস্তার পাশাপাশি প্লাস্টিকের বস্তায় চাল সরবরাহ করে থাকি। অনেক সময় খুচরা ব্যবসায়ীর অনুরোধে চটের বদলে প্লাস্টিকের বস্তায় চাল সরবরাহ করতে হয়। সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক আমাদের সব কিছু করা সম্ভব হয় না।’</p> <p>শুভ-প্রগতি অ্যাগ্রো ফুডের মালিক তপন কুমার কুণ্ডু বলেন, ‘আমরা সব সময় চেষ্টা করি সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার। তবে পাটের বস্তায় ধানের জাত, উৎপাদনের তারিখ ও দাম স্থানীয় প্রেস থেকে প্রিন্ট করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। এ জন্য অনেক সময় বাধ্য হয়ে প্লাস্টিকের বস্তায় চাল বিক্রি করতে হয়।’</p> <p>ঝিনাইদহ জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, ‘সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার ব্যাপারে আমাদের পক্ষ থেকে সভা করে প্রত্যেক চালকল মালিককে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’</p> <p>এ ব্যাপারে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ঝিনাইদহের উপপরিচালক নিশাত মেহের বলেন, ‘চালকলের সার্বিক বিষয় দেখার দায়িত্ব খাদ্য অধিদপ্তরের। এ নিয়ে আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলব। এ ছাড়া এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য জেলা সমন্বয় সভা থেকে একটি কমিটি করে দেওয়া আছে।’</p> <p> </p>