সঞ্চয়পত্র নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন ও উত্তর

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
সঞ্চয়পত্র নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন ও উত্তর
ফাইল ছবি

সঞ্চয়পত্র কী?

সঞ্চয়পত্র, যা সেভিংস সার্টিফিকেট বা সেভিংস ইন্সট্রুমেন্ট নামেও পরিচিত, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার পরিচালিত একটি বিনিয়োগ প্রকল্প। এই প্রকল্প থেকে নির্দিষ্ট সময় অন্তর (মাসিক/ত্রৈমাসিক/মেয়াদান্তে) মুনাফা এবং মেয়াদান্তে আসল ফেরত প্রদান করা হয়। 

সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে দেশের জনগণের ক্ষুদ্র সঞ্চয় একত্রিত করে সরকারের ঘাটতি বাজেট অর্থায়নে সহায়তা করা হয়। পাশাপাশি, এটি স্বল্প আয়ের জনগোষ্ঠীর মধ্যে সঞ্চয়ের প্রবণতা বৃদ্ধি, নারীদের, বয়স্ক নাগরিকদের, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মীদের, শারীরিক প্রতিবন্ধীদের এবং অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর সামাজিক নিরাপত্তায় সহায়ক হিসেবে কাজ করে।

সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ ঝুঁকিমুক্ত হিসেবে বিবেচিত হয়।

বর্তমানে কয়টি সঞ্চয়পত্র প্রকল্প চালু রয়েছে?

বর্তমানে চারটি সঞ্চয়পত্র প্রকল্প চালু আছে:  পাঁচ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র (মেয়াদ: পাঁচ বছর); পরিবার সঞ্চয়পত্র (মেয়াদ: পাঁচ বছর); তিন মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র (মেয়াদ: তিন বছর) ও পেনশনার সঞ্চয়পত্র (মেয়াদ: পাঁচ বছর)

কোথায় সঞ্চয়পত্র কিনতে পাওয়া যায়?

সঞ্চয়পত্র চারটি প্রতিষ্ঠানে পাওয়া যায়: বাংলাদেশ ব্যাংকের সকল অফিস (সদরঘাট ও ময়মনসিংহ অফিস ব্যতীত); শরীয়াহ ভিত্তিক ব্যাংক ব্যতীত অন্যান্য তফসিলি ব্যাংক; জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের অধীনস্থ সকল সঞ্চয় ব্যুরো অফিস ও ডাকঘরসমূহ। তবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ সম্পর্কিত কার্যক্রম শুধুমাত্র জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের অধীনস্থ সঞ্চয় ব্যুরো দ্বারা পরিচালিত হয়।

সঞ্চয়পত্রের মুনাফা ও মেয়াদান্তে আসল কিভাবে প্রদান করা হয়?

বাংলাদেশ ব্যাংকের সকল অফিস, তফসিলি ব্যাংকের শাখা, জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরো এবং ডাকঘরে বিক্রিত সঞ্চয়পত্রের আসল (মেয়াদান্তে) এবং মুনাফা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ক্রেতার ব্যাংক হিসাবে জমা করা হয়।

মেয়াদপূর্তির পূর্বে ভাঙালেও প্রাপ্য আসল ও মুনাফা ক্রেতার ব্যাংক হিসাবে জমা হয়।

সঞ্চয়পত্র কখন ভাঙ্গালে মুনাফা পাওয়া যাবে না?

এক বছরের আগে কোনো সঞ্চয়পত্র নগদায়ন বা ভাঙানো হলে মুনাফা প্রদান করা হয় না।

সবাই কি সব ধরনের সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন?

না, সবাই সব ধরনের সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন না। এ ব্যাপারে সরকার কিছু শর্ত নির্ধারণ করেছে।

উদাহরণস্বরূপ, ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সের যেকোনো বাংলাদেশি নারী, শারীরিক প্রতিবন্ধী নারী ও পুরুষ এবং ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী বাংলাদেশি নারী ও পুরুষেরা একক নামে পরিবার সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন।

পেনশনার সঞ্চয়পত্রও সবার জন্য উন্মুক্ত নয়। এই সঞ্চয়পত্রটি কেবলমাত্র অবসরপ্রাপ্ত সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারী, সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য এবং মৃত সরকারি চাকরিজীবীর পারিবারিক পেনশন সুবিধাভোগী স্বামী, স্ত্রী ও সন্তানেরা কিনতে পারেন।

তবে পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র এবং তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র সবার জন্য উন্মুক্ত। ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সের যেকোনো শ্রেণি-পেশার মানুষ একক বা যুগ্ম নামে এই দুই ধরনের সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন।

নাবালকের পক্ষে সঞ্চয়পত্র কেনার সুযোগ পূর্বে থাকলেও এখন আর নেই।

গ্রাহক মারা গেলে টাকা কে পাবেন?

সঞ্চয়পত্রের গ্রাহক মারা গেলে তার মনোনীত ব্যক্তি বা নমিনি টাকা পাবেন। সঞ্চয়পত্রে একজন বা একাধিক নমিনি মনোনয়নের সুযোগ রয়েছে, যদিও এটি বাধ্যতামূলক নয়। তবে ভবিষ্যতে নগদায়নের ঝামেলা এড়াতে গ্রাহকেরা সাধারণত নমিনি মনোনয়ন করে থাকেন। নাবালকও নমিনি হতে পারে। গ্রাহকের মৃত্যুর তিন মাসের মধ্যে আদালত থেকে উত্তরাধিকার সনদ নিয়ে সঞ্চয়পত্রের নগদায়ন করতে হয়। গ্রাহক এবং নমিনি উভয়ই মারা গেলে আইনানুগ উত্তরাধিকারীরা সঞ্চয়পত্র ভাঙাতে পারেন।

সঞ্চয়পত্র পুনরায় চালুর পদ্ধতি কীভাবে সম্পন্ন হয়?

নতুন স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে সঞ্চয়পত্র পুনরায় চালু করার জন্য নথিপত্র সংক্রান্ত জটিলতা দূর হয়েছে। পুনঃবিনিয়োগের পরিবর্তনগুলো হলো- পরিবার সঞ্চয়পত্র, তিন মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র এবং পেনশনার সঞ্চয়পত্রে শুধুমাত্র আসল অর্থ স্বয়ংক্রিয়ভাবে পুনরায় বিনিয়োগ হবে। পাঁচ বছর মেয়াদি এবং ডাকঘর সঞ্চয়পত্রে আসল ও মুনাফা একত্রে পুনরায় বিনিয়োগ হবে। পেনশনার সঞ্চয়পত্রে মুনাফা ত্রৈমাসিকের পরিবর্তে মাসিক প্রদান করা হবে। এই নবায়নের ক্ষেত্রে বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা পুনঃবিনিয়োগের তারিখ থেকে নির্ধারিত হবে।

মন্তব্য

অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন

বিবিসি
বিবিসি
শেয়ার
অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন
সংগৃহীত ছবি

বিশ্বব্যাপী মার্কিন পাল্টা শুল্ক কার্যকর হওয়ার প্রথম দিনে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে।

বুধবার ব্রেন্টের অপরিশোধিত তেলের দাম কমে ব্যারেলপ্রতি ৬০ ডলারে বিক্রি হচ্ছে, যা করোনাকালে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের পর সর্বনিম্ন।

বিশ্লেষক অ্যাশলে কেলি বলছেন, হোয়াইট হাউস চায় তেলের দাম আরো কমে যাক। কারণ এটাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য লাভজনক হবে।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

ব্যাংকের টাকা লোপাট করে কেউ পালাতে পারবে না : গভর্নর

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ব্যাংকের টাকা লোপাট করে কেউ পালাতে পারবে না : গভর্নর
সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, ‘ব্যাংকের টাকা লোপাট করে কাউকে পালিয়ে যেতে দেওয়া হবে না।’ তিনি বলেন, ‘ব্যাংকগুলোতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করা হবে, যাতে কেউ লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করতে না পারে। অনিয়ম, কেলেঙ্কারি ও সুশাসনের ব্যর্থতার কারণে ব্যাংক ও ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান উভয়ের জন্য প্রয়োজন সংস্কার।’

বুধবার (৯ এপ্রিল) রাজধানীর বিআইবিএম কার্যালয়ে দশম বার্ষিক ব্যাংকিং সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

গভর্নর বলেন, সংস্কারের জন্য গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর টাস্কফোর্স গঠন, নতুন আইন প্রবর্তন ও ব্যাংক কম্পানি আইনের মতো বিদ্যমান আইন সংশোধনসহ ব্যাংকিং খাতের একগুচ্ছ সংস্কারের উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলস্বরূপ লুটপাট করা কিছু ব্যাংক ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করলেও কোমর ভেঙে আছে বেশ কিছু ব্যাংকের।
 
আর সব ব্যাংকের অবস্থা খারাপ নয়, তবে যেগুলো খারাপ সেগুলোর অবস্থা খুব খারাপ উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘ব্যাংকের টাকা লোপাট করে আর কাউকে পালিয়ে যেতে দেওয়া হবে না এবং ব্যাংকগুলোতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করা হবে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আরো বলেন, ‘গ্রাহকের স্বার্থে ব্যাংকের বোর্ডে হস্তক্ষেপ করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আরো একটি ব্যাংকের বোর্ড ভেঙে দেওয়া হবে।

এ সময় বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) চেয়ারম্যান আব্দুল হাই সরকার বলেন, ‘ব্যাংকের প্রকৃত মালিক গ্রাহকরাই। তাই তাদের আস্থার দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। না হলে ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবে না এই খাত।’

মন্তব্য

বসুন্ধরা গ্রুপে বিনিয়োগে আগ্রহী ফিনল্যান্ড

অনলাইন প্রতিবেদক
অনলাইন প্রতিবেদক
শেয়ার
বসুন্ধরা গ্রুপে বিনিয়োগে আগ্রহী ফিনল্যান্ড
ছবি: কালের কণ্ঠ

ফিনল্যান্ডের কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে, বিশেষ করে বসুন্ধরা গ্রুপের সঙ্গে ইঞ্জিনিয়ারিং, প্রযুক্তি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, স্বাস্থ্য ও টেকসই উন্নয়ন খাতে ব্যবসা সম্প্রসারণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আজ বুধবার (৯ এপ্রিল) বসুন্ধরা ইন্ডাস্ট্রিয়াল হেডকোয়ার্টারে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে ফিনল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত কিমো লাহদেভির্তা এ আগ্রহের কথা জানান।

তিনি বলেন, “বসুন্ধরা গ্রুপের সঙ্গে ইতোমধ্যেই কিছু ফিনিশ কোম্পানির সহযোগিতামূলক ব্যবসায়িক সম্পর্ক আছে, আমরা সেটি আরো সম্প্রসারিত করতে আগ্রহী।”

রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন বিজনেস ফিনল্যান্ড-এর প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন প্রযুক্তি ও শিল্প খাতের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা।

বসুন্ধরা গ্রুপের সেক্টর-সি-এর চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) শাহেদ জাহিদ প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানান।

প্রতিনিধি দলে ছিলেন কুলব্রুক প্রজেক্ট ডিরেক্টর শ্রীনিবাসন শ্রীরামুলু, এলেম্যাটিক-এর সন্দীপ কুমার, কোনক্রেইনস-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর রতন বিশ্বাস, মিরাসিস -এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর অরিন্দম দাস সরকার, রাউটা ডিজিটাল-এর সিইও কুমার অভিজিৎ, ওয়ার্টসিলা বাংলাদেশের সাইফুল ইসলাম, ওয়্যারপাস-এর মারুতি মাল্লেপল্লি এবং ফিনল্যান্ড দূতাবাস ও বিজনেস ফিনল্যান্ড-এর অন্যান্য প্রতিনিধিরা।

মিডিয়ার সঙ্গে আলাপকালে রাষ্ট্রদূত জানান, প্রতিনিধি দল আগের দিন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করেছে। আজ আমরা বসুন্ধরা গ্রুপের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছি।

আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল প্রযুক্তি, টেকসই নির্মাণ, প্রকৌশল, স্বাস্থ্য খাত এবং টেকসই উন্নয়ন।

বিনিয়োগ পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এখনই কিছু নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।”

বৈঠক শেষে বসুন্ধরা গ্রুপের সিওও শাহেদ জাহিদ জানান, ফিনল্যান্ডের প্রতিনিধি দল সিমেন্ট, পেপার এবং প্রি-কাস্ট বিল্ডিংসহ বেশ কিছু খাতে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছে। সিমেন্ট খাতে ফসিল ফুয়েলের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি প্রক্রিয়া চালুর বিষয়ে প্রযুক্তি স্থানান্তরের প্রস্তাব তারা দিয়েছেন, যা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক।

তিনি আরো বলেন, “বর্তমানে বাংলাদেশে স্বল্পসুদে অর্থায়নের অভাব রয়েছে। ১৫ শতাংশ সুদে ঋণ নিয়ে ব্যবসা দাঁড় করানো কঠিন। ফিনল্যান্ড সরকার দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ কাঠামোর মাধ্যমে এ বিষয়ে সহায়তা করতে পারে। প্রতিনিধি দলটি আমাদের আশ্বস্ত করেছে যে, তারা স্বল্প সুদে ঋণ ও যৌথ বিনিয়োগের সুযোগ অনুসন্ধান করবে। 

সভায় বসুন্ধরা গ্রুপের সিনিয়র ডিএমডি মোস্তাফিজুর রহমান, ডিএমডি কে এম জাহিদ উদ্দিনসহ গ্রুপের অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

 

মন্তব্য

জিডিপির প্রবৃদ্ধি কমবে, মূল্যস্ফীতি দাঁড়াবে ১০.২ শতাংশে : এডিবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
জিডিপির প্রবৃদ্ধি কমবে, মূল্যস্ফীতি দাঁড়াবে ১০.২ শতাংশে : এডিবি
ছবি: কালের কণ্ঠ

চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি কমে ৩.৯ শতাংশে নেমে আসবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। তবে আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি বাড়বে ৫.১ শতাংশে। বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এডিবির ঢাকা অফিসে প্রকাশিত ‘এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও) এপ্রিল ২০২৫’ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, তৈরি পোশাক খাতে রপ্তানি বাড়লেও রাজনৈতিক উত্তরণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি, শিল্প খাতে অস্থিরতা এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে অভ্যন্তরীণ চাহিদা দুর্বল হয়ে পড়েছে, যা প্রবৃদ্ধির গতি কমিয়েছে।

২০২৪ অর্থবছরে দেশের প্রবৃদ্ধি ছিল ৪.২ শতাংশ।

বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জেয়ং বলেন, বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনীতি সহনশীল রয়েছে। এই সহনশীলতা আরও শক্তিশালী করা সম্ভব কাঠামোগত সংস্কার বাস্তবায়নের মাধ্যমে।

তিনি আরো বলেন, তৈরি পোশাকের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে বেসরকারি খাতের উন্নয়ন, টেকসই অবকাঠামো নির্মাণ, জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, আর্থিক খাতের সুশাসন এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি জোরদার করা যেতে পারে।

এডিবির পূর্বাভাস অনুযায়ী, মূল্যস্ফীতি ২০২৪ অর্থবছরের ৯.৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২৫ অর্থবছরে ১০.২ শতাংশে পৌঁছাবে। পাইকারি বাজারে প্রতিযোগিতার অভাব, বাজার সংক্রান্ত তথ্যের ঘাটতি, সরবরাহ ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা এবং টাকার অবমূল্যায়নের কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। তবে বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পাওয়ায় চলতি হিসাবের ঘাটতি জিডিপির ১.৪ শতাংশ থেকে কমে ০.৯ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এডিবি বলছে, রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধির কারণে ভোগ ও বিনিয়োগে কিছুটা গতি আসবে।

তবে সংকোচনমূলক আর্থিক ও রাজস্বনীতি এবং বিনিয়োগকারীদের সতর্কতার কারণে এ গতি সীমিত থাকবে। বিশ্ববাজারে শুল্ক বৃদ্ধির প্রভাবও বাংলাদেশের রপ্তানি ও প্রবৃদ্ধিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে। সরবরাহপক্ষে, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, আর্থিক খাতের ঝুঁকি এবং ক্রয়ক্ষমতার হ্রাসের কারণে সেবাখাতের প্রবৃদ্ধি মন্থর হবে। বারবার বন্যার কারণে কৃষি খাতেও প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেতে পারে। তবে রপ্তানি খাতের সহায়তায় শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধি সামান্য বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রতিবেদনটি ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক ঘোষণার আগে তৈরি হওয়ায় সেসব শুল্কের প্রভাব এতে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। তবে এডিও এপ্রিল ২০২৫-এ নতুন শুল্ক নীতির ফলে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রবৃদ্ধিতে সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে আলাদা বিশ্লেষণ রয়েছে।

উল্লেখ্য, ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বর্তমানে ৬৯টি সদস্য দেশের মালিকানাধীন। প্রতিষ্ঠানটি এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই এবং সহনশীল প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে।


 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ