রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে বাগেরহাটের শরণখোলার একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র বলেশ্বর রিভারভিউ ইকো পার্ক। গত বছরের ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় পার্কের স্থাপনা ও বিনোদনের বিভিন্ন উপকরণ। তছনছ হওয়ার প্রায় ১০ মাস পার হলেও এটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে সৌন্দর্য হারিয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে উপজেলা প্রশাসন পরিচালিত বিনোদন কেন্দ্রটি।
উপকূলীয় শরণখোলার মানুষের চিত্ত বিনোদনের জন্য ছিল না কোনো ব্যবস্থা। সেই শূন্যতা পূরণ এবং স্থানীয়দের মানসিক বিকাশ ও প্রশান্তির কথা উপলব্ধি করে উপজেলা প্রশাসনের অর্থায়নে এবং শরণখোলা প্রেস ক্লাবের সহযোগিতায় ২০২২ সালে বলেশ্বর নদের তীরে নির্মাণ করা হয় পার্কটি।
উপজেলা শহরের রায়েন্দা ফেরিঘাট থেকে মাত্র আধা কিলোমিটার দক্ষিণে বলেশ্বর নদের পারের মনোমুগ্ধকর বড়ইতলা এলাকায় ইকো পার্কটির অবস্থান। বলেশ্বর নদের তীররক্ষা বাঁধের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কংক্রিটের (সিসি) ব্লকে নানা রঙে রাঙিয়ে শোভাবর্ধন করা হয়।
এর পর সেই ব্লকের ওপর সারিবদ্ধভাবে বসানো হয় বিচ খাট, দোলনা, বেঞ্চি। বিকেল হলেই সেখানে ঢল নামত মানুষের।
কিন্তু হঠাৎ সব কিছুই যেন ফিকে হয়ে গেছে। সবখানেই ঘূর্ণিঝড় রিমালের ক্ষতচিহ্ন।
জৌলুস নেই পার্কটির। দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে আশা নিয়ে আসার পর ধ্বংসস্তূপ দেখে হতাশ হয়ে ফিরে যায়। কোটি টাকা বিনিয়োগ করে গড়ে তোলা সেই অত্যাধুনিক ইকো প্যারাডাইস রেস্তোরাঁও বন্ধের উপক্রম। কর্মসংস্থান হারিয়েছে দরিদ্র মানুষেরা।
সম্প্রতি ইন্ডিয়া থেকে আসা এক আত্মীয়কে নিয়ে রিভারভিউ পার্কে ঘুরতে গিয়ে হতাশ হন শরণখোলা সরকারি ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক বাবুল দাস।
তিনি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রিমালে বিধ্বস্ত হওয়ার পর তা সংস্কার না করায় উদ্যোক্তারা আগ্রহ হারিয়েছেন। পার্কটি দ্রুত সংস্কার করে সম্ভাবনাময় এই শিল্পটি বাঁচিয়ে রাখার দাবি জানাই উপজেলা প্রশাসনের কাছে।’
শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুদীপ্ত কুমার সিংহ বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ে বেড়িবাঁধের সিসি ব্লক ও পার্কের বিভিন্ন স্থাপনার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সংস্কারের দায়িত্ব পানি উন্নয়ন বোর্ডের। পার্কের স্থাপনা সংস্কারেও অনেক টাকার প্রয়োজন। তার পরও সম্ভাবনাময় এই শিল্পটি রক্ষার চেষ্টা করা হবে।’