<p> নানা অনিয়মের মধ্যে নিয়োগ বাণিজ্য দেশে নতুন কিছু নয়। কিন্তু পরীক্ষা নিয়ে মেধা অনুযায়ী তালিকা করার পর সেখানে অতিরিক্ত এক হাজার ২০০ জনকে নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করাটা নিঃসন্দেহে নতুন। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ওয়েম্যান নিয়োগ চার বছর ঝুলে থাকার পর এখন পুলিশি তদন্ত ও মেডিক্যাল রিপোর্ট ছাড়াই প্রার্থীদের নিয়োগ দিতে শুরু করেছে।</p> <p> রেলওয়ের ওয়েম্যান নিয়োগের জন্য ২০১০ সালে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে নিয়োগ কমিটি দুই হাজার ৬৪৯ জনের নিয়োগ চূড়ান্ত করে। সেটা অনুমোদনের জন্য জিএমের কাছে সুপারিশ করা হয়। পরে সেই তালিকা বদলে আবারও নতুন করে দুই হাজার ৬৬০ জনের তালিকা করা হয়। এ তালিকায় ব্যাপক নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। গত ৩০ আগস্ট কালের কণ্ঠে এ নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পর তড়িঘড়ি করে তালিকার ব্যক্তিদের হাতে যোগদানপত্র তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু আগের তালিকাভুক্তদের কেন নিয়োগ দেওয়া হলো না, উচ্চ আদালতের কাছে এর জবাব জানতে চেয়েছেন ভুক্তভোগীরা। নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে চার থেকে সাত লাখ টাকা আদায় করেছে একটি চক্র। অভিযোগ উঠেছে, রেলওয়ে শ্রমিক লীগ নিয়োগপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে নতুন তালিকা করেছে এবং এখন তড়িঘড়ি করে তাঁদের যোগদানপত্র দেওয়া হচ্ছে। যোগদানপত্র দেওয়ার নিয়মও সেখানে মানা হচ্ছে না। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নিয়োগ বাণিজ্য এবং যোগদানের তাড়াহুড়া বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে কোনো সদুত্তর মেলেনি।</p> <p> এটা স্বাভাবিকভাবেই বলা যায়, যাঁদের নিয়োগ এমন অনিয়ম ও উৎকোচ দিয়ে, তাঁরা কাজে কতটা সততার পরিচয় দেবেন? ওয়েম্যান (ইঞ্জিনিয়ার), যাঁরা রেলের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করবেন, সেখানে এমন নিয়োগ কতটা গ্রহণযোগ্য? রেলওয়ে একটি সেবা খাত হিসেবে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় সব সময় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। এর আগেও দেখা গেছে, সেখানে একটি সংঘবদ্ধ চক্র নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। সরকার বিভিন্ন সময়ে এর বিরুদ্ধে তৎপরতা চালালেও তারা তাদের মতোই থেকে যায়। কোনো পরিবর্তন ঘটে না। সরকারের এসবের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়া ছাড়া বিকল্প নেই। কারণ নিয়োগের ক্ষেত্রে এমন বাণিজ্য ঘটতে থাকলে যেমন কোনো প্রতিষ্ঠান তার প্রাতিষ্ঠান কার্যক্রম ঠিকমতো চালাতে পারবে না, তেমনি কোনো যোগ্য মেধাসম্পন্ন ব্যক্তিকেও নিয়োগ দিতে পারবে না। সরকার দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে- এটাই প্রত্যাশা।</p> <p>  </p> <p>  </p>