<p>ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘকে (ইসকন) নিষিদ্ধ করার কথা বলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা চলছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন পরিষদ। কিছু ব্যক্তি দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছেন বলে অভিযোগ করেছে সংস্থাটি।</p> <p>আজ শনিবার ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন কথা বলা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস। এতে ঐক্যবদ্ধ সনাতনি সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে ঘোষিত ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ সব উপদেষ্টার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানানো হয়।</p> <p>রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়ি-ঘর, উপাসনালয় ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট এবং ইসকন সম্পর্কে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচারের প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। </p> <p>সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে ঢালাওভাবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আওয়ামী লীগের ট্যাগ লাগানোর চেষ্টা হচ্ছে। বিভিন্ন অজুহাতে সরকারি চাকরি থেকে সনাতনি সম্প্রদায়কে চাকরিচ্যুতকরণ, নতুন সরকারি নিয়োগে ও সংস্কার কমিটিতে সনাতনি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি না থাকা, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে চাকরিরত সনাতনি সম্প্রদায়ের লোকদের ও সনাতনি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে গণহারে ঢালাওভাবে মিথ্যা মামলা দায়ের এবং সনাতনি শিক্ষকসহ সব শিক্ষকের চাকরিচ্যুত ও লাঞ্ছনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানো হয়। তা ছাড়া অনতিবিলম্বে চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহাল ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান।</p> <p>সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, গত ৫ নভেম্বর চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার হাজারী লেনে ওসমান আলী নামে এক ব্যবসায়ীর ইসকনকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করা আপত্তিকর ও উসকানিমূলক পোস্টকে কেন্দ্র করে হাজারী গলির ঘরে ঘরে তল্লাশির নামে নিরীহ ব্যক্তিদের ওপর অমানবিক অত্যাচার-নির্যাতন ও গণগ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটেছে। চট্টগ্রামের হাজারী গলির ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান ও গ্রেপ্তার করা নিরীহ ব্যক্তিদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানানো হয়। </p> <p>তা ছাড়া ২০০১-২০২৪ সাল পর্যন্ত সনাতনি সম্প্রদায়ের ওপর সংঘটিত সব অত্যাচার, নির্যাতন ও মঠ-মন্দির, জমি দখলের সুষ্ঠু বিচার এবং ৫ আগস্টের পর সংঘটিত সব অত্যাচার ও নির্যাতনের সুষ্ঠু তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করা হয়। এসব ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন, চাকরিচ্যুতদের চাকরিতে পুনর্বহাল, গণহারে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি করা হয়।</p> <p>সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন পরিষদের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট জে কে পাল, অধ্যাপক অশোক তরু, প্রধান সমন্বয়ক শ্যামল রায়, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ আচার্য, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. মৃত্যুঞ্জয় কুমার রায়, মানিক চন্দ্র সরকার, অ্যাডভোকেট প্রহল্লাদ সাহা এবং লায়ন চন্দন কুমার ঘোষ। </p>