<p>সব সময় পিঠ ছড়ানো, মুখে জড়িয়ে থাকা অবাধ্য চুল নিজের কাছে ভালো নাও লাগতে পারে। মাঝেমধ্যে অবাধ্য চুল বশে আনতে নানা ডিজাইনের বেণি, খোঁপা, ঝুঁটি করে নারীরা। আবার গরমের হাত থেকে স্বস্তি পেতেও অনেকে চুল খোলা না রেখে বেঁধে রাখেন। চুল বাঁধায় সাহায্য করতে ব্যান্ড, ক্লিপ, কাঁটা, পাঞ্চ কত কিছুই না এসেছে বাজারে। হালে কেশ সাজানোর ধরনেও এসেছে পরিবর্তন। তাতেও পিছিয়ে নেই মা-খালাদের কেশ পরিপাটি করার প্রচলন। লম্বা একহারা চুলে বেণি করে তাতে কেশকাঁটা জুড়ে দেওয়ার চল মা-খালাদের সময়ও ছিল, এখনো আছে। হালে লম্বা চুলের নারীদের সংখ্যা কমে গেছে। কিছুটা খাটো চুলের চল চলছে বেশ কয়েক বছর ধরে। এমন চুল সাজিয়ে-গুছিয়ে রাখতে কেশকাঁটা অনেকের প্রিয় অনুষঙ্গ।</p> <p>প্রাচীনকালে মিসরের রানিরা কেশসজ্জায় সোনার কাঁটা ব্যবহার করতেন। আবার রোম ও গ্রিকের নারীরাও কেশচর্চা শেষে পরিপাটি করে চুল সাজাতে রুপা ও তামার কাঁটার ব্যবহার করেছেন। এ তো বিদেশ-বিভুঁইয়ের কথা! শত শত বছর ধরে আমাদের দাদি-নানি ও তাঁদের পূর্ববর্তী নারীরা হাতখোঁপায় রুপার তৈরি কাঁটা জড়িয়ে এসেছেন। ভারী নকশার চমকদার সেসব কাঁটা এখনো বিয়ের অনুষ্ঠানে চুলে জড়ানো হয়। এ ছাড়া রুপায় সোনালি রং জড়ানো, মিনা করা খোঁপার কাঁটাও বেশ অভিজাত।</p> <div style="text-align:center"> <figure class="image" style="display:inline-block"><img alt="হরেক রকম কেশকাঁটা" height="483" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/print/Magazine 2023/30-09-2024/kalerkantho028.jpg" width="800" /> <figcaption>মেটালের এই কেশকাঁটা তৈরি করেছে শৈলী</figcaption> </figure> </div> <p>সময়ের সঙ্গে সঙ্গে খোঁপার সজ্জায় এসেছে পরিবর্তন, এসেছে ভিন্নতা। সোনা, রুপা, তামা, পিতল, বাঁশ, কাঠ, নারকেলের মালা, হাতির দাঁত, মহিষের দাঁত, প্লাস্টিক, ধাতব, মাটির কাঁটা রয়েছে অনলাইনে, অফলাইনে ও বিভিন্ন উদ্যোক্তা মেলায় শোভা ছড়িয়ে। সেসব কাঁটা বাহারি নকশায় নজরকাড়া করতে রয়েছে নানা ধরনের পুঁতি, পাথর, কড়ি, পাতা, প্রজাপতি, ঝুনঝুনি, চেইন, শঙ্খ, বিভিন্ন ফলের বীজ ইত্যাদি দিয়ে সাজানো। ঝোলানো ছাড়া যেসব কাঁটা সেগুলোর কোনোটা কল্কা, কোনোটা শঙ্খ, কোনোটা চন্দ্রাকৃতি, গোলাকৃতি, চৌকো বা পাতার নকশার। চিরনির মতো অনেক কাঁটা, তিন কাঁটা বা এক কাঁটার খোঁপার কাঁটা বেছে নিতে পারেন ইচ্ছামতো। কিছু কাঁটা খোঁপা থেকে শুরু করে কানের দুল পর্যন্ত টানা থাকে।</p> <div style="text-align:center"> <figure class="image" style="display:inline-block"><img alt="হরেক রকম কেশকাঁটা" height="483" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/print/Magazine 2023/30-09-2024/kalerkantho027.jpg" width="800" /> <figcaption>নারকেলের মালা ও মাটির তৈরি এগুলো।</figcaption> </figure> </div> <p>ক্লিপ ধরনের বা কাঁটার কভার ওপরে রেখে কাঠি দিয়ে আটকানো কাঁটাও বেশ নজর কাড়ে। ফেলনা নারকেলের মালা, বাঁশের কঞ্চি, বীজ এবং মাটি দিয়ে চুলের নানা নকশার কাঁটা তৈরি করেন চন্দ্র মানিক পটারি অ্যান্ড ফ্যাশন অ্যাকসেসরিজের স্বত্বাধিকারী চন্দ্র মানিক। তিনি বলেন, ‘শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ ছাড়াও পাশ্চাত্য ঢঙের পোশাকের সঙ্গে কেশকাঁটা দারুণ মানিয়ে যায়। উঠতি বয়সের মেয়ে থেকে শুরু করে মাঝবয়সীরা ফুলেল নকশার কাঁটাও গুঁজছেন কানের পাশে, খোঁপায়।’ </p> <p>কেশকাঁটা নিয়ে কাজ করেন ‘দয়ীতা’র কর্ণধার সাইদা সুলতানা। তিনি বলেন, ‘খোঁপার কাঁটা বা চুলের ক্লিপের আবেদন চিরন্তন। ছোট থেকে বৃদ্ধ প্রায় সবার চুল সাজাতে কাঁটার ব্যবহার বেশ নান্দনিক ছাপ আনে। সবাই পছন্দ করেন। সেই ভাবনা থেকেই বিডস বুননের, আর্টিফিশিয়াল ফুলের, ক্লে দিয়ে, সুতা, কড়ি ও দেশীয় মোটিফকে যুক্ত করে নানা ক্যাটাগরিতে এসব তৈরি করছি।’</p> <p> </p> <p> </p> <p> </p> <p> </p> <p> </p> <p> </p> <p> </p> <p> </p> <p> </p> <p> </p> <p> </p>