আছিয়ার মৃত্যুতে হেফাজতে ইসলামের শোক, দ্রুত বিচার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
আছিয়ার মৃত্যুতে হেফাজতে ইসলামের শোক, দ্রুত বিচার দাবি
সংগৃহীত ছবি

মাগুরায় যৌন নির্যাতনের শিকার শিশু আছিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান।

আজ বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় শোক প্রকাশ করেন এবং আছিয়ার খুনি ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক প্রকাশ্য বিচারও দাবি করেন। 

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কয়েক দিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করে পাশবিক যৌন নির্যাতনের শিকার শিশু আছিয়া আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়েছে। তার মৃত্যুতে আমরা গভীর শোক জানাচ্ছি এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতিও আমরা সমবেদনা জানাচ্ছি।

’ 

আরো পড়ুন
বাগেরহাটে বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ৮

বাগেরহাটে বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ৮

 

নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আছিয়ার খুনি ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক প্রকাশ্য বিচার দাবি করছি এবং প্রচলিত নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ আইন সংশোধন করে বিচারপ্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার দাবি জানাচ্ছি। যাতে এমন পাশবিক অপরাধ করার সাহস আর কেউ না করে। প্রকাশ্যে ধর্ষকদের শাস্তি দেওয়া হলে এমন অনেক অপরাধ রোধ করা সম্ভব বলে আমরা মনে করি। ইসলাম এ জন্যই এসব অপরাধের শাস্তি প্রকাশ্যে দেওয়ার বিধান রেখেছে।

’ 

বিবৃতিতে তারা বলেন, আট বছরের শিশুকন্যা আছিয়ার নৃশংস ধর্ষণের শিকার হওয়ার ঘটনা জাহেলি যুগের বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে।
ইসলামে ধর্ষণকারীকে জনসমক্ষে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘তাদের শাস্তি দিতে যেন তোমাদের মনে দয়ার উদ্রেক না হয় এবং মুসলমানদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে।’ (সুরা নুর, আয়াত : ২)।

 

নেতৃবৃন্দ বলেন, রাসুল (সা.)-এর যুগে এক নারীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হলে বিশ্বনবী (সা.) ধর্ষককে হত্যার শাস্তি দেন। অর্থাৎ ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

তারা বলেন, ইসলাম নারীর অধিকারের সুস্পষ্ট ঘোষণায় নারীর যথাযথ মর্যাদার স্বীকৃতি দিয়েছে এবং মানবতার নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) সর্বপ্রথম নারী জাতির পূর্ণ মানবিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন। ইসলামের আগে জাহেলি আরব সমাজে নারীর মর্যাদাপূর্ণ কোনো অবস্থান ছিল না। নারীরা হলো আমাদের মায়ের জাতি।

দেশের ওলামায়ে কেরাম নারী সমাজের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষায় সব সময় সোচ্চার রয়েছে।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ধর্ষকের শাস্তির দাবিতে বায়তুল মোকাররম এলাকায় বিক্ষোভ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ধর্ষকের শাস্তির দাবিতে বায়তুল মোকাররম এলাকায় বিক্ষোভ

প্রকাশ্যে ধর্ষকের শাস্তির দাবি এবং শাহবাগে পুলিশের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) নামাজ শেষে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটের সামনে প্রথম সংক্ষিপ্ত বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।

এ সময় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব আতাউল্লাহ আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল, আবুল হাসনাত জালালী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মিজানুর রহমান, সহ সভাপতি শামসুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশে বক্তব্যরা বলেন, আমার বোন আছিয়ার মৃত্যু হয়েছে, আর কোনো আছিয়ার যেন মৃত্যু না হয়।

স্বাধীনতা ৫৫ বছর হয়ে গেছে অথচ কোরআনের একটা আইন করতে পারলাম না। শাহবাগীদের মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না। ধর্ষণকারীদের ফাঁসি দিতে হবে। আছিয়ার হত্যাকারীকে প্রকাশ্যে পাথর নিক্ষেপ করে বিচার করতে হবে।

 

মন্তব্য

প্রশাসনের ঢিলেমিতে অপরাধীরা পার পেয়ে যাচ্ছে : রিজভী

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
প্রশাসনের ঢিলেমিতে অপরাধীরা পার পেয়ে যাচ্ছে : রিজভী
সংগৃহীত ছবি

আওয়ামী লীগের শাসনামলে বিচারহীনতার সংস্কৃতির রেশে দেশে এখনো নারী নির্যাতনের মতো অপরাধ ঘটছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। রিজভী বলেন, তৎকালীন ক্ষমতাশীলরা অনাচারগুলোকে প্রতিষ্ঠিত করেছে বলে নারীরা-শিশুরা কেউ রেহাই পায়নি।

প্রশাসনের ঢিলেমিতে নারী নির্যাতনসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িতরা পার পেয়ে যাচ্ছে বলেও এসব মন্তব্য করেন তিনি।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বর্তমান শাসনকালে মানুষের প্রত্যাশা ছিল, সারা জাতিতে, তৃণমূলে দ্রুত আইনের শাসন বলবত। কিন্তু প্রশাসনের স্লথ ও ঢিলেঢালা আচরণের কারণে সমাজে দুষ্কৃতকারীরা নানাভাবে আশকারা পাচ্ছে। 

এসবের বিচার না হলে অন্তর্বর্তী সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে বলেও মন্তব্য করেন রুহুল কবির রিজভী।

নারী নির্যাতনকারী ও হত্যাকারীদের অবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ন্যায়বিচার নিশ্চিত না হলে অন্তর্বর্তী সরকারের সক্ষমতা হ্রাস পেতে থাকবে।

এ সময় দেশজুড়ে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে জেলায় জেলায় বিএনপির আইনি ও স্বাস্থ্য পরামর্শ সেল গঠন করার ঘোষণা দেন রুহুল কবির রিজভী।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

এই গালির স্বাধীনতার জন্যই আন্দোলন করেছিলাম : হাসনাত আব্দুল্লাহ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
এই গালির স্বাধীনতার জন্যই আন্দোলন করেছিলাম : হাসনাত আব্দুল্লাহ
সংগৃহীত ছবি

জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমকে গালি দেওয়ার ঘটনায় সংবাদ উপস্থাপিকাসহ তিনজনকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে মর্মে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়ে। একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের লাইভ অনুষ্ঠানে গালি দেওয়ার এ ঘটনা ঘটে। 

এবার সেই সংবাদ উপস্থাপিকার চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার অহ্বান জানিয়েছেন হাসনাত আব্দুল্লাহ নিজেই। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) মধ্যরাতে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া পোস্টে তিনি এ আহ্বান জানান।

আরো পড়ুন

আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস আজ : অস্তিত্ব সংকটে নদী, সব চেয়ে দূষিত বুড়িগঙ্গা

আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস আজ : অস্তিত্ব সংকটে নদী, সবচেয়ে দূষিত বুড়িগঙ্গা

 

পোস্টে হাসনাত আব্দুল্লাহ লেখেন, ‘এখন’ টিভির সাংবাদিকদের চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে। আমরা এই দ্বিমত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্যই আন্দোলন করেছিলাম। আমরা এই গালির স্বাধীনতার জন্যই আন্দোলন করেছিলাম। শুধু মতপ্রকাশ নয়, দ্বিমত প্রকাশও অব্যাহত থাকুক।

এর আগে, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ধর্ষণের শিকার হয়ে মারা যাওয়া শিশুটির জানাজায় অংশ নিতে মাগুরায় যান হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলম।

আরো পড়ুন
ট্রেনের অগ্রিম ঈদ টিকিট বিক্রি শুরু, কাটবেন যেভাবে

ট্রেনের অগ্রিম ঈদ টিকিট বিক্রি শুরু, কাটবেন যেভাবে

 

এ সময় টেলিভিশনটির লাইভ প্রচারণায় হাসনাত ও সারজিসকে নিয়ে দুই উপস্থাপকের মধ্যে কথা বলার সময় ওই নারী উপস্থাপিকা গালি দেন। এরই একটি অংশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ তাকে চাকরিচ্যুত করে বলে খবর ছড়ায়।

মন্তব্য

আর কেউ যেন ধর্ষণের মতো অপরাধের সাহস না পায় : তারেক রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
আর কেউ যেন ধর্ষণের মতো অপরাধের সাহস না পায় : তারেক রহমান
তারেক রহমান। ফাইল ছবি

মাগুরায় নির্মম যৌন নির্যাতনের শিকার আট বছর বয়সী শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ, গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

এক বিবৃতিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘নির্মম পাশবিকতায় আছিয়ার মৃত্যুর ঘটনা দেশবাসীর মতো আমাকেও ব্যথিত করেছে। তার মৃত্যুর সংবাদে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে গোটা দেশ। এই মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

তিনি বলেন, ‘এ ঘটনা সারা দেশের মানুষকে লজ্জিত করেছে। আছিয়ার ওপর ঘটে যাওয়া নির্মম পাশবিক ঘটনার প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে শহর থেকে গ্রামে। রাজপথ উত্তপ্ত হয়েছে মিছিল আর স্লোগানে। একই সঙ্গে তার ফিরে আসার জন্য প্রার্থনা ছিল প্রতিটি মানুষের।

বিবৃতিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দুপুরের পর সিএমএইচ থেকে আসা খবরে শোক আর ক্ষোভে একাকার মানুষ ধিক্কার জানাচ্ছে মানুষরূপী কুলাঙ্গারদের। আমি শুরুতে এ ঘটনা জানার পর তার চিকিৎসা ও আইনি সহায়তার ঘোষণা দিয়েছিলাম। অতীতের ফ্যাসিবাদ সরকারের আমলে ধর্ষণকারীদেরকে বিচারের আওতায় না এনে বিভিন্নভাবে পুরস্কৃত করার ফলে দেশে ধারাবহিকভাবে একই ঘটনার পূনরাবৃত্তি ঘটছে। বিচারের দীর্ঘসূত্রিতার ফলে আইনের ফাঁক দিয়ে ধর্ষণকারীরা বারবার রক্ষা পেয়ে যাচ্ছে।

যার ফলে ধর্ষণের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলছে। আধুনিক এই যুগে মানবজাতি এরূপ অমানবিক, পৈশাচিক এবং বর্বরোচিত কাজে লিপ্ত হতে পারে তা কল্পানাতীত। ধর্ষণ শুধু অপরাধই নয়, মানবতার বিরুদ্ধে চরম আঘাত এবং সমাজের নৈতিক অবক্ষয়ের ভয়াবহ চিত্র। আমাদের সমাজে যে নিমর্ম ও বর্বরোচিত ঘটনাগুলো ঘটে চলছে, তা মানবতা ও নৈতিকতার মৌলিক ভিত্তিকেই প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। আমরা দেখছি পবিত্র মাহে রমজান মাসেও ধর্ষণের ঘটনা থামছে না।
দেশের বিভিন্ন স্থানে নারী ও শিশুদের ওপর চলমান নিপীড়ন, হেনস্তাকরণ ও ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য কাজ রোধে সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।’

তারেক রহমান বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট গণ-অভ্যূত্থানের পর থেকে নারী হেনস্থা, হয়রানি, ধর্ষণ বা ধর্ষণের হুমকির মতো ঘটনা মানুষ আর প্রত্যাশা করে না। তারপরেও এই ঘটনাগুলো ঘটেই চলেছে। নারী, কিশোরী ও শিশুদের প্রতি যে কোনো ধরনের সহিংসতা বা হয়রানি মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন, তাই সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা এবং মর্যাদা নিশ্চিতে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাচ্ছি। এ ছাড়াও একটি বিস্তৃত শিশু সুরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করে নারী ও শিশুদের জন্য নিরাপদ চলাচল, নাগরিক স্বাধীনতা এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিতে ভূমিকা রাখতে হবে। ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের সর্বোচ্চ সুরক্ষা দিতে হবে আইনিভাবে। এই ধরনের অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা সমাজে শান্তি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ। এই ঘটনা শুধু বর্তমান সমাজকে কলুষিত করছে না, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও এক ভয়ংকর দৃষ্টান্ত তৈরি করছে। এমন ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কেউ যেন এ ধরনের অপরাধ করার সাহস না পায়।’

তারেক রহমান আছিয়ার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্য, আত্মীয়স্বজন, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ