খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) আবারও অস্থিরতার আভাস দেখা পাওয়া যাচ্ছে। একাডেমিক কার্যক্রমসহ বিশ্বদ্যিালয়ের সব দপ্তর বন্ধ থাকলেও আগামী রবিবার (১৩ এপ্রিল) ক্যাম্পাসে প্রত্যাবর্তনের ঘোষণা দিয়ে ইতোমধ্যেই ফেসবুকে বার্তা দেওয়া হয়েছে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে।
অন্যদিকে কুয়েট প্রশাসনের পক্ষে রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আনিছুর রহমান ভুঞা স্বাক্ষরিত মঙ্গলবারের (৮ এপ্রিল) এক বিজ্ঞপ্তিতে আগামী মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) শুধু দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরুর পর অতিদ্রুত শিক্ষা কার্যক্রম শুরু ও হল খোলা হবে বলে জানানো হয়েছে। সেই পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের অপেক্ষার আহ্বান জানানো হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আরো পড়ুন
নাসার সঙ্গে চুক্তির সুফল ২০-২৫ বছর পর : বিডার চেয়ারম্যান
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদল ও বহিরাগতদের মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনার পর দুই দফায় সিন্ডিকেট মিটিং করে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধসহ শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি রমজান ও ঈদুল ফিতরের ছুটি থাকায় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস ছাড়লেও পহেলা বৈশাখের আগের দিন ১৩ এপ্রিল ক্যাম্পাসে ফেরার ঘোষণা দিয়েছে তারা। এই ঘোষণা কর্তৃপক্ষের নজরে আসার পরই আজ মঙ্গলবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে এমন বিজ্ঞপ্তি বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
কুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সাম্প্রতিক একটি ফেসবুক গ্রুপে দেওয়া নোটিশে বলা হয়, ‘১৩ এপ্রিল, ২০২৫ সেন্ট্রাল সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ক্যাম্পাস প্রত্যাবর্তন।
’ এই গ্রুপকে কুয়েটের ১৯ ব্যাচের অফিশিয়াল পেজ হিসেবেও ঘোষণা দেওয়া হয়।
আরো পড়ুন
এফডিসি পরিদর্শনে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ, পূর্ণাঙ্গ ফিল্ম সিটির আশ্বাস
কুয়েটের একটি সূত্র বলছে, শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের বিষয়টি দীর্ঘ হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। কেননা স্বাভাবিক নিয়মে এখন ওই ব্যাচের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম চালুর এখনো কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
এটা তাদের জন্য সবচেয়ে বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে। এ জন্যই তারা ক্যাম্পাসে ফিরতে এবং শিক্ষা কার্যক্রমের সাথে যুক্ত হতে উদগ্রীব।
এ ব্যাপারে কুয়েটের ভিসি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাছুদ বলেন, একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করতে হলে সিন্ডিকেট মিটিং ডাকতে হবে। আর সিন্ডিকেট মিটিং ডাকতে দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু করতে হবে। এ জন্য আগামী ১৫ এপ্রিল শুধু দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু হবে।
পরে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পরই সিন্ডিকেট মিটিং আহ্বান করে ১৮ ফেব্রুয়ারির জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর পরই একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হবে।
আরো পড়ুন
পিরোজপুরে ‘জয় বাংলা ক্যাম্পেইন’ করা সেই নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকর্মী আটক
নাম প্রকাশ না করে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা এখন মূলত ১ দফার দাবিতেই আছেন। সেটা হচ্ছে ভিসির পদত্যাগ। যেহেতু তারা ভিসির পদত্যাগের দাবিতে এখনো অনড় রয়েছেন, সেহেতু এই ভিসির আওতায় গঠিত তদন্ত কমিটি এবং তাদের প্রতিবেদন কিছুই তারা মানবেন না।
কুয়েটের রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত মঙ্গলবারের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘আগামী ১৫ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শুধু দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু হবে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ সাপেক্ষে অতিদ্রুত শিক্ষা কার্যক্রম শুরু ও হলসমূহ খোলার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ আশাবাদী। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিধি মেনে চলার জন্য অনুরোধ করা হলো।’