পবিপ্রবিতে সাবেক উপাচার্যের ছেলেসহ ৬ কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত

রফিকুল ইসলাম, বরিশাল
রফিকুল ইসলাম, বরিশাল
শেয়ার
পবিপ্রবিতে সাবেক উপাচার্যের ছেলেসহ ৬ কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত
ফাইল ছবি

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) সা‌বেক উপাচার্য অধ্যাপক স্বদেশ চন্দ্র সামন্তের ছেলে শাওন চন্দ্র সামন্ত তনুসহ ৬ কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে চাকরিচ্যুত (বরখাস্ত) করা হয়েছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশে তাদের বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া আরো ২৬ কর্মচারীকে সাময়িকভাবে চাকরীচ্যুতের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। 

পবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদন না নিয়েই কর্মকর্তা-কর্মচারী পদে নিয়োগ প্রকাশ করা হয়েছিল।

উচ্চ আদালতের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত করে অনিয়মের সত্যতা পেয়েছে। সে অনুযায়ী ৬ কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। ইউজিসির অনুমোদন না থাকায় ওই কর্মকর্তারা সাময়িক বরখাস্তকালীন সময় খোরপোষও পাবেন না। 

উপাচার্য আরো বলেন, শুধু কর্মকর্তা নন, কর্মচারী নিয়োগে অনিয়মের বিষয়টি তদন্তে উঠে এসেছে।

অনেকেরই ফাইলে প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। যাদের কাগজ পাওয়া যাচ্ছে, তাদের মধ্যে অন্তত ২৬ জন কর্মচারীর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা (সাময়িক বরখাস্ত) গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। চাকরিচ্যুতির বিষয়টি উচ্চ আদালতকে লিখিতভাবে জানানো হবে। আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
 

উপাচার্যের ছেলে ছাড়া চাকুরিচ্যুতরা বাকি কর্মকর্তারা হলেন— পবিপ্রবি কর্মকর্তা সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উপ-রেজিস্ট্রার জসিম উদ্দিন বাদলের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা, পবিপ্রবি কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি সাইদুর রহমান জুয়েলের ভাই মো. আরিফুর রহমান পিয়েল, পবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সম্পাদক মেহেদী হাসান তারেকের ভাই মো. হাফিজুর রহমান, দুমকি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদের ছেলে তানভীর হাসান স্বাধীন এবং জেলা যুবলীগের সম্পাদকের সৈয়দ সোহেলের স্ত্রী তাকছিনা নাজনীন। 

দুমকি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদের ছেলে তানভীর হাসান স্বাধীন সেকশন অফিসার পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি মুঠোফোনে কালের কণ্ঠকে বলেন, ২৭ ফেব্রুয়ারি তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার অফিস আদেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সেইসঙ্গে কেন তাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে না মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেওয়া হয়েছে। বুধবার তিনি জবাব দিয়েছেন।

 

জানা গেছে, ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর এবং এর আগের কয়েকটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে মোট ৩৯টি পদের বিপরীতে ২০২৩ সালের ২ ডিসেম্বর রিজেন্ট বোর্ডে ৫৮ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০২২ সালের ১৭ অক্টোবরের বিজ্ঞপ্তিতে সেকশন অফিসার পদে তিনজনকে নিয়োগের কথা উল্লেখ ছিল। সেকশন অফিসার পদে ২০২৩ সালের ২ ডিসেম্বর  রিজেন্ট বোর্ডের ৫২তম সভায় তাদের চূড়ান্ত নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ৩ জন নিয়োগ দেওয়ার কথা থাকলেও বাছাই বোর্ড ৬ জনকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করে। ওইদিন সবাই তড়িঘড়ি করে যোগদান করেন। কিন্তু ২০০৮ সালে ইউজিসির অনুমোদিত অর্গানোগ্রামে বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকশন অফিসারের পদ রয়েছে ৩০টি, কিন্তু বিভিন্ন সময়ে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ৪৮ জনকে।

পবিপ্রবির সেকশন অফিসারসহ বিভিন্ন পদের নিয়োগ কেন অবৈধ হবেনা তার কারণ জানতে সাবেক উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারসহ চারজনের বিরুদ্ধে গতবছরের ২৮ আগস্ট হাইকোর্ট রুল জারি করে। শামসুল হুদা রিফাত নামের এক চাকরি প্রত্যাশীর দায়েরকৃত রিট পিটিশনের শুনানি শেষে উচ্চ আদালত ওই রুল দেন। সে অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। সে অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২৭ ফেব্রুয়ারি ৬ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে। 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে জবিতে বিক্ষোভ মিছিল

জবি প্রতিনিধি
জবি প্রতিনিধি
শেয়ার
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে জবিতে বিক্ষোভ মিছিল
জবিতে বিক্ষোভ মিছিল

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার (২১ মার্চ) জুমার নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে ক্যাম্পাস ঘুরে ভিক্টোরিয়া পার্ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে অবস্থা নেন তারা। 

এসময় শিক্ষার্থীরা ‘আওয়ামী লীগের রাজনীতি, বন্ধ করো করতে হবে’ , ‘ছাত্রলীগ বাংলাদেশ, একসাথে চলে না’ ; ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ ; ‘গড়িমশি বন্ধ করো, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করো’ ;  ‘চব্বিশের হাতিয়ার, গর্জে ওঠো আরেকবার’ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রায়হান রাব্বি বলেন, ‘কথা ছিলো আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হবে।

কিন্তু এখন বলা হচ্ছে হবে না। কেন করা হবে না। আমরা বিপ্লবীরা কি মরে গেছি? জুলাই বিপ্লবে যারা আমাদের ভাইদের পাখির মতো হত্যা করেছে তাদেরকে আমরা বেচে থাকতে এই বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করতে দেবো না। আমরা এখানে জড়ো হয়েছি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে।
যতদিন না আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হয়, আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো ‘

শাখা ছাত্র শিবিরের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল বলেন, ‘হাজার মায়ের বুক খালি হওয়ার মধ্য দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশে বসবাস করছি। শত সহস্র ভাইয়ের রক্তে যাদের হাত রঞ্জিত, তাদের আমরা বাংলাদেশের রাজনীতি করতে দিতে চাই না। গুম, খুন সন্ত্রাসের রাজনীতি আমরা ফিরে আসতে দিতে চাই না। ইন্টেরিম সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলে দিতে চাই আপনারা ভুলে যাবেন না, আপনার ওই ক্ষমতার চেয়ার আমার ভাইয়ের রক্তের ওপর বসে আছে।

রক্তের সাথে বেইমানি করবেন না। 

তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ আমাদের শত্রু, দেশের শত্রু। সুতরাং যারা আওয়ামী লীগের গোলামী করতে চাইবে তারাও আমাদের শত্রু হিসেবে গণ্য হবে।

মন্তব্য

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগরে বিক্ষোভ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
শেয়ার
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগরে বিক্ষোভ
ছবি: কালের কণ্ঠ

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।

আজ শুক্রবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তাঁরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গিয়ে শেষ হয়।

এরপর সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।

সমাবেশে সাভার-আশুলিয়ার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েকজন শিক্ষার্থীও অংশ নেন।

সমাবেশের সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী জিয়া উদ্দিন আয়ান। এ সময় বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক তৌহিদ সিয়াম বলেন, ‘যে ফ্যাসিস্ট দল বাংলাদেশে একাধিক গণহত্যা চালিয়েছে তাদের নিষিদ্ধ করার জন্য নতুন কোনো কারণ দরকার নেই। আমরা মনে করি, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা শেখ হাসিনাকে বিদায় করার মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে প্রত্যাখান করেছে।

আওয়ামী লীগকে এই বাংলায় কোনো নির্বাচনী কার্যক্রম, রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাতে দেওয়া যাবে না।’

ইসলামী ছাত্রশিবিরের জাবি শাখার সেক্রেটারি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতি চলা মানে আমাদের শহীদদের রক্তের সাথে বেইমানি করা। আমাদের শরীরে এক ফোঁটা রক্ত থাকা পর্যন্ত আমরা বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করতে দেব না। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করা পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না।

আমরা রক্ত দিতে চাই না, আমরা প্রচুর রক্ত দিয়েছি। এই রক্তের বদলা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের মাধ্যমেই দিতে হবে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে গণহত্যাকারী দল হিসেবে চিহ্নিত করে অতিদ্রুত নিষিদ্ধ করতে হবে। বাংলাদেশে কারা রাজনীতি করবে সেটা ঠিক করবে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা। পার্শ্ববর্তী কোনো দেশের প্রেসক্রিপশনে আর বাংলাদেশ চলবে না।

মন্তব্য

জীবন দেব, জুলাই দেব না

রংপুর অফিস
রংপুর অফিস
শেয়ার
জীবন দেব, জুলাই দেব না
সংগৃহীত ছবি

আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ ও গণহত্যাকারী এবং ফ্যাসিবাদীদের ফিরিয়ে আনার ষড়যন্ত্রকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার (২১ মার্চ) বেলা আড়াইটায় ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনে অংশ নেন।

এসময় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহানগর সদস্য সচিব রহমত আলী, রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক শামসুর রহমান সুমন, জাহিদ হাসান জয়, জাকের হোসেন পাশা, আশিক মিয়া প্রমুখ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক শাসমুর রহমান সুমন বলেন, ‘আওয়ামী লীগের গণহত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত যে বা যারাই আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত করার চেষ্টা করবে, তাদেরকে ছাত্র জনতা প্রতিহত করবে।

আওয়ামী লীগ যে গণহত্যা চালিয়েছে বিশ্বে এর আর কোন নজির নেই। তারা শিশু, কিশোর, যুবক , তরুণ, ছাত্র, জনতা, কৃষক মজুরসহ ২ হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। ৩০ হাজার মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করিয়েছে। সেই আওয়ামী লীগকে কোনভাবেই বাংলার মাটিতেক পুনর্বাসন করা হবে না।
সেনাবাহিনী আমাদের সার্বভৌমত্বের প্রতীক। তাদের যারা কলুষিত করার চেষ্টা করছে। তাদেরকেও আমরা প্রতিহত করবো।’

আরো পড়ুন
প্রেমের দায়ে কারাগারে ইয়াশ, পাগলা গারদে নিহা!

প্রেমের দায়ে কারাগারে ইয়াশ, পাগলা গারদে নিহা!

 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহানগর সদস্য সচিব  রহমত আলী বলেন, ‘প্রয়োজনে বাংলাদেশের ৪ কোটি তরুণ জীবন দেব।

তবু আর জুলাই ফিরতে দেব না। বাংলাদেশ চলবে জনগণের ইচ্ছানুযায়ী। যারা অপতৎপরতায় লিপ্ত তাদের বিরুদ্ধে আবারও ছাত্র-জনতা মাঠে দাড়াবে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতেই হবে। রক্তের দাগ এখনও শুকায়নি তাতেই আওয়ামী লীগকে ফেরাতে যারা কলকাঠি নাড়ছেন তাদের বিরুদ্ধে রাজপথে থাকবো আমরা।
গণহত্যাকারীদের বিচার ছাড়া বাংলার জমিনে আর কিছুই মানি না আমরা।

মন্তব্য

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
শেয়ার
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ
সংগৃহীত ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ইনকিলাব মঞ্চ ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ। শুক্রবার (২১ মার্চ) জুমার নামাজের পরেই পৃথকভাবে এই কর্মসূচি পালন করেন সংগঠন দুটির নেতাকর্মীরা। 

জুমার নামাজের পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা প্রদক্ষিণ করে বিক্ষোভ মিছিল করে ইনকিলাব মঞ্চ। বিক্ষোভ মিছিল শেষে দুপুর দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে প্রতিবাদ সমাবেশ করে ইনকিলাব মঞ্চ।

 

আরো পড়ুন
নাটোরে প্রতিপক্ষের হামলায় এক ভাই নিহত, অপর দুই ভাই আহত

নাটোরে প্রতিপক্ষের হামলায় এক ভাই নিহত, অপর দুই ভাই আহত

 

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্যকালে শরীফ ওসমান হাদি বলেন, আওয়ামী লীগকে নিয়ে যদি নির্বাচন করে তবে বাংলাদেশে রক্তের যমুনা বয়ে যাবে। দুই হাজারেরও বেশি শহীদ, ৫০ হাজারেরও বেশি অঙ্গহারা আহত ও তাদের মা-বাবার কসম, ওয়াসিম, মুগ্ধসহ শহীদদের রক্তের কসম- শরীরে রক্ত বিন্দু থাকতে আওয়ামী লীগকে নির্বাচন করতে দিব না। 

আওয়ামী লীগের সাবের হোসেন, সোহেল তাজদের মতো মানুষকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ সামনের নির্বাচনে কিছু আসন নিয়ে কোনো না কোনোভাবে বিরোধী দলে থাকবে, সেখানে থেকে যত বদমাইশি রাজনীতি আছে সব করবে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, নির্বাচন হলে আড়াই থেকে তিন বছর বিএনপি ক্ষমতায় থাকবে, বিরোধী দলে থেকে আওয়ামী লীগ ভারত ও ইসরায়েলকে সাথে নিয়ে এমন ষড়যন্ত্র করবে তিন বছরের মাথায় বিএনপিকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেবে। এরপর যারা শহীদ ও আহত হয়েছেন তাদের পরিবারকে কচুকাটা করবে।

সুতরাং, শরীরে রক্ত থাকতে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে দেব না৷ 

এদিকে বেলা সোয়া দুইটার দিকে গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ। মিছিলটি রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে শুরু হয়ে রাজু ভাস্কর্য প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে দিয়ে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে এসে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। 

বিক্ষোভ সমাবেশে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের মুখপাত্র আশরেফা খাতুন বলেন, ‘এখনও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আমাদের রাস্তায় নামতে হয় যেখানে পাঁচ আগস্ট নির্ধারণ হয়ে গিয়েছে আওয়ামী লীগ থাকবে কী থাকবে না। দিল্লির প্রেসক্রিপশনে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রেসক্রিপশনে আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য পায়তারা চলছে।

যতদিন পর্যন্ত আমাদের শরীরে এক বিন্দু রক্ত আছে ততদিন পর্যন্ত আমরা বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে ফিরতে দেব না। যতদিন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হয়, আওয়ামী লীগের বিচার না হয় ততদিন পর্যন্ত আমরা রাস্তায় থাকব।’
 

আরো পড়ুন
গাজা ও ইয়েমেনে হামলা: মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান আলী খামেনির

গাজা ও ইয়েমেনে হামলা: মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান আলী খামেনির

 

গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের মুখ্য সংগঠক তাহমীদ আল মুদ্দাসিসর চৌধুরী বলেন,  ৫ আগস্টের পরে যে মাইনাস টু ফর্মুলা সে মাইনাস টু ফর্মুলা হচ্ছে সাউথ এশিয়ান মাইনাস টু। এখানে আমাদের ভারত এবং পাকিস্তানের আধিপত্য থেকে বের হতে হবে। আমাদের নতুন বাংলাদেশের জন্য নতুন ডিপ্লোম্যাটিক জোন নির্ধারণ করতে হবে।

নতুন ডিপ্লোম্যাটিক জোনের মাধ্যমে আমার দেশের ভাগ্য নির্ধারিত হবে। আমরা ভারত পাকিস্তানমুখী রাজনীতির শেষ করে ফেলেছি। আমরা আর ভারত পাকিস্তানমুখী রাজনীতি করতে চাই না। ভারতের প্রেসক্রিপশনে নতুন করে বাংলাদেশের রাজনীতি কি হবে, বাংলাদেশের ভাগ্য কি হবে সেটি আমরা কখনোই মেনে নেব না।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ