রাজশাহী দুর্গাপুরে নিজের পছন্দ করা ছেলের সাথে বিয়ে না দেওয়ায় বিয়ের ৫ মাস পরে বাবা-মায়ের ওপর অভিমান করে গলায় রশি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে এক কলেজছাত্রী। ওই কলেজছাত্রীর নাম প্রিয়া আক্তার (১৭)। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার বাজুখলসী গ্রামে। সে ওই গ্রামের আনা মিয়ার কন্যা।
পছন্দের ছেলের সাথে বিয়ে না দেওয়ায় অভিমান, বেছে নিল আত্মহননের পথ
দুর্গাপুর (রাজশাহী) প্রতিনিধি

স্থানীয়রা জানান, গত ৫ মাস আগে প্রতিবেশী এক ছেলের সাথে বিয়ে হয় প্রিয়া আক্তারের। কিন্তু এই বিয়েতে মত ছিল না প্রিয়ার। তার প্রেম সম্পর্ক চলছিল অন্য এক ছেলের সাথে। বিষয়টি বুঝতে পেরে প্রিয়ার বাবা-মা তড়িঘড়ি করে প্রিয়ার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরকরে বিয়ে দেন।
এ বিষয়ে দুর্গাপুর থানার ওসি হাশমত আলী জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়েছে। পরিবারের লোকজনের মতামত নিয়ে মরদেহ দাফনের অনুমতি দেয়া হবে।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খুলনায় অপরাধীরা বেপরোয়া
এইচ এম আলাউদ্দিন, খুলনা

এক সময়ের সন্ত্রাসের জনপথখ্যাত খুলনায় নানাভাবে জড়ো হতে শুরু করেছিল সন্ত্রাসীরা। বেপরোয়া হয়ে উঠে চরমপন্থী গ্রুপগুলো। এক সময় যারা ছিল আতংকের নাম সেইসব সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধানরা কেউ আত্মগোপন থেকে আবার কেউ কারামুক্ত হয়ে শুরু করেছিল নানান অপকর্ম। কখনো হত্যা, কখনো ছুরিকাহত আবার কখনো বিভিন্ন অপকর্ম করে নিজেদেরকে জানান দেওয়া শুরু করেছিল এসব সন্ত্রাসী বাহিনীগুলো।
পুলিশও ঈদের একদিন আগে অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে আড়াই ঘণ্টা বন্দুকযুদ্ধের পর একটি বাহিনী প্রধানসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে অস্ত্রসহ। যেটি খুলনার আন্ডার ওয়ার্ল্ডকে বড় ধরনের ধাক্কা বলেও মনে করছেন অনেকে। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে পাল্লা দিয়েই বেপরোয়া হয়ে উঠছে অপরাধীরা।
নগরীর সোনাডাঙ্গার আরামবাগে গত ২৯ মার্চ দিবাগত রাতে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যৌথবাহিনীর আড়াই ঘণ্টাব্যাপী বন্দুকযুদ্ধের পর অস্ত্রসহ অন্তত ১০ জনকে গ্রেপ্তারের পর আবারো জেলার রূপসা থেকে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির রক্তমাখা লাশ উদ্ধার করেছে হাইওয়ে পুলিশ।
এভাবে একের পর এক অপরাধের ঘটনা প্রমাণ করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে অনেকটা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বুধবার (৯ এপ্রিল) দিবাগত মধ্যরাতে নগরীর খালিশপুর থানাধীন জোড়াগেট সংলগ্ন ছুরিকাঘাতে আহত করা হয়েছে মো. হাসান তালুকদার (১৯) নামের একজনকে।
এ ঘটনার কিছু সময় আগে জেলার রূপসা সেতু টোলপ্লাজা থেকে কুদির বটতলার দিকে যেতে একজনের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে খুমেক হাসপাতালে পাঠায় হাইওয়ে থানা পুলিশ। তার মাথায় আঘাত রয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেলেও কিভাবে তিনি আঘাতপ্রাপ্ত হন তা জানা যায়নি। লাশটি খুমেক হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
একই রাতে নগরীর সোনাডাঙ্গা মডেল থানা এলাকায় দুটি কোপাকুপির ঘটনা ঘটে। এতে মোট চারজন আহত হন। তাদেরকেও খুমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সোনাডাঙ্গা আল আমিন মহল্লা এলাকা প্রতিপক্ষের ধারাল অস্ত্রের আঘাতে আহত হন, খুলনা থানাধীন বাগমারা এলাকার মোহাম্মদ কিসমত গাজীর ছেলে পলাশ (২০) ও একই এলাকার বেল্লালের ছেলে মো. হাসান (২৪)।
এ ছাড়া সোনাডাঙ্গা তৃতীয় আবাসিকের মধ্যেও প্রতিপক্ষের ধারাল অস্ত্রের আঘাতে আহত হন, আল ফারুক সোসাইটির সামনে মো. রবিউলের ছেলে মো. আল আমিন (১৮) ও করিমনগরের মো. বাবুলের ছেলে অভি মৃধা (২৪)।
এর আগের রাতে (মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টায়) নগরীর নিউমার্কেট এলাকায় মোটরসাইকেলে যাওয়ার সময় ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন মো. ভুট্টো সরদার (৪৬) ও তার শ্যালক দিপু (২৭)। তারা দুজনে মোটরসাইকেলযোগে বৈকালী থেকে জরুরি কাজে ডাকবাংলার দিকে যাওয়ার সময় ছিনতাইয়ের কবলে পড়েন। এসময় ছিনতাইকারীরা ভুট্টোকে ধারাল অস্ত্রের আঘাত করে নগদ ৬৫ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু ওই রাতে কেন তারা বৈকালী থেকে ডাকবাংলার দিকে যাচ্ছিলেন তার সঠিক কোনো কারণও জানা যায়নি। আহত ভুট্টোকেও খুমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এমনকি ছিনতাইকারীরা তাদের মোটরসাইকেলটিও ভাঙচুর করে। এভাবেই একের পর এক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে নগরবাসী।
সম্প্রতি নগরীর জাতিসংঘ পার্কের চলমান ঈদ আনন্দ মেলা মাঠে একজনকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। এ ছাড়াও বিগত কয়েক মাস ধরে নগরী ও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় হত্যাসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। যা নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অনেকটা বিব্রত।

সিংগাইরে বাবা-ছেলের ধর্ষণে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী তরুণী
সিংগাইর, হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি

মানিকগঞ্জের সিংগাইরে বাবা ও ছেলের বিরুদ্ধে এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় বুধবার (৯ এপ্রিল) থানায় পৃথক দুটি মামলা করেছেন ভুক্তভোগী তরুণীর মা। মামলার আসামিরা হলেন- উপজেলার জামির্ত্তা ইউনিয়নের বিন্নাডাঙ্গী গ্রামের তারা মিয়া (৫৮) ও তার ছেলে আলামিন (৩৫)।
মামলার এজাহার ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২৮ বছর বয়সী ভুক্তভোগী বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী তরুণীকে নিয়ে তার মা উপজেলার জামির্ত্তা ইউনিয়নের বিন্নাডাঙ্গী গ্রামে ভাড়া বাড়িতে থাকেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত তারা মিয়া ও তার ছেলে আলামিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু না পাওয়ায় তাদের মতামত জানা যায়নি।
সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জেওএম তৌফিক আজম বলেন, এ ঘটনায় অভিযুক্ত তারা মিয়া ও ছেলে আলামীনকে আসামি করে থানায় পৃথক দুটি মামলা করেছেন ভুক্তভোগী তরুণীর মা। মামলা নথিভুক্ত হওয়ার পর ২২ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য ভুক্তভোগী তরুণীকে আদালতে প্রেরণ করা হয়।

বরিশালে বিএনপির কর্মিসভায় চেয়ারে বসা নিয়ে মারামারি
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বরিশাল মহানগর বিএনপির কর্মিসভায় দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। একইসঙ্গে দুই পক্ষের মধ্যে চেয়ার ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটেছে। ওই কর্মিসভায় চেয়ারে বসা নিয়ে এই মারামারিতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
বুধবার (৯ এপ্রিল) বিকেলে নগরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের একটি রেস্তোরাঁয় মহানগর বিএনপি এই কর্মিসভার আয়োজন করে।
দলের জ্যেষ্ঠ নেতা ও অতিথিদের সামনে মারামারি ও হট্টগোলে সভার কার্যক্রম ব্যাহত হয়। এ সময় কর্মিসভায় আসা নারীসহ অনেক কর্মী বেরিয়ে যান।
প্রত্যক্ষদশীরা বলছেন, বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ১০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল ইসলামের অনুসারীরা মিছিল নিয়ে সভাস্থলে প্রবেশ করে স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় একটি পক্ষ তাদের বাধা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়।
তারা অতিথিদের উপস্থিতিতেই একে অপরকে কিল-ঘুষি মারেন এবং চেয়ার ছোড়াছুড়ি করেন। এতে সভা কার্যক্রম থমকে যায়।
ওয়ার্ড বিএনপির সদ্য সাবেক সদস্য সচিব দুলাল হোসেন বলেন, মিছিল নিয়ে এসে আমরা সভাস্থলে বসে অতিথিদের কথা শুনছিলাম। হঠাৎ চেয়ারে বসা নিয়ে কেডিসি ও ভাটার খাল এলাকার যুবকদের মধ্যে বিরোধ বাধে।
এ সময় মারামারিতে আমার সমর্থক মিজানসহ কয়েকজন আহত হন। মারামারির কারণে অনেকে সভাস্থল থেকে বেরিয়ে যান। বিশেষ করে, নারী কর্মীরা সভায় ছিলেন না।
একই ওয়ার্ড বিএনপির সদ্যসাবেক আহ্বায়ক তোতা মিয়া বলেন, চেয়ারে বসা নিয়ে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ঝামেলা হয়। কর্মীরা একে অপরকে কিল-ঘুষি দিতে থাকেন। কারা করেছেন, তা শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। তাদের এই কাণ্ডে আমাদের সারা দিনের কষ্ট ব্যর্থ হয়ে যায়।
বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জসিম উদ্দিন বলেন, কর্মিসভায় আসা একজনকে তাদের প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দেয়। এ নিয়ে হট্টগোল বাধে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে সভা শেষ করেছি। এ ঘটনায় কারা জড়িত, তা খতিয়ে দেখে দায়ীদের বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মহানগর বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন বলেন, আমাদের টিমপ্রধান বলেছেন, ১১ এপ্রিল বসে ওয়ার্ড কমিটি গঠনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। তারপরও আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব সভা করে যাচ্ছেন। এতে বিভিন্ন স্থানে বিশৃঙ্খলা ঘটছে। হাতাহাতি ও মারামারি ঘটেই যাচ্ছে। তবুও তাঁরা পকেট কমিটি করতে চাচ্ছেন।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুকের মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে তিনি তা ধরেননি।

সাভারে চাঁদা না দেওয়ায় গুলি ও মাঝিদের মারধর, দুই নৌকা লুট
সাভার (ঢাকা) সংবাদদাতা

সাভারে দাবিকৃত ৫ লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় প্রকাশ্যে গুলি করে দুটি ইঞ্জিন চালিত নৌকা লুট করে নিয়ে গেছে একদল দুর্বৃত্ত। বুধবার (৯ এপ্রিল) বিকেলে সাভারের কাতলাপুর বংশী নদীর মিলনঘাট এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।
এ ঘটনায় ঘাটের ইজারাদার কামরুল ইসলাম বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী হেদায়েত উল্লাহ জানান, কয়েকদিন আগে একদল সন্ত্রাসী ঘাট ব্যবসায়ী কামরুল ইসলামের কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
লিখিত অভিযোগের বাদী ঘাট ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম জানান, বেশকিছুদিন ধরে পার্শ্ববর্তী ফুডনগর মোল্লাপাড়া এলাকায় অন্তর খান (২৬), মাহাবুল্লাহ খানের ছেলে মোর্শেদ খান (২৫), মোশারফ খান (২৮), হৃদয় (২৫) ও রনি খান (৪২) আমার কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। তাদের দাবিকৃত চাঁদা না দেওয়ায় বিকেলে আরো ১০-১২ জন অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসী পিস্তল, ধারাল চাপাতি, রামদা, ছোরা, চাকু, লোহার রড, লোহার পাইপ নিয়ে হামলা চালিয়ে কাতলাপুর কর্ণপাড়া মিলনঘাটে এসে আমাকে এলোপাতাড়িভাবে মারধর করে।
জানতে চাইলে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুয়েল মিঞা জানান, গুলি করে ট্রলার লুটের ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় সাভার মডেল থানা হতে লুট হওয়া ১২টি অস্ত্র এখনো উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।