বগুড়ার আদমদীঘিতে রক্তদহ বিলের উপড় নির্মিত বেইলি ব্রিজের পাটাতন (লোহার পাত) খুলে যাওয়ায় বড় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে এবং ছোট যানবাহনগুলো চলছে ঝুঁকি নিয়ে। আজ শুক্রবার সকালে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, স্থানিয়রা ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজের উপর গাছের ডাল রেখে যানবাহন চালকদের বিপদ সংকেত বুঝানোর চেষ্টা করছেন। ফলে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করা বড় যানবহনগুলো ফিরে যাচ্ছে। এখানে স্থায়ীভাবে সিসি ঢালাই ব্রিজ নির্মানের দাবি এলাকাবাসীর।
রক্তদহ বিলের বেইলি সেতু
বড় যান চলাচল বন্ধ, ছোটগুলো চলছে ঝুঁকি নিয়ে
আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি
_PIC_29-07-2022_(2).jpg)
জানাযায়, উপজেলার কদমা মৎস্য খামারের নিকট ঐতিহাসিক রক্তদহ বিলের মূল খালের ওপড় ২০০৬ সালে সড়ক ও জনপদ বিভাগের তত্বাবধানে ৬০.৯৬ মিটার দৈর্ঘ্য স্ট্রিল ব্রীজ নির্মাণ করা হয়। এতে বিলপাড়ের ১০ গ্রামের মানুষের প্রায় ১০কিলোমিটার পথ কমে যায়। কৃষিপণ্য ও শষ্য পরিবহন করা ও স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের যাতায়াত সহজ হয়।
কিন্তু উদ্বোধনের পর ১৬ বছর অতিবাহিত হলেও ঝুঁকিপূর্ণ এ ব্রিজটিতে উল্লেখযোগ্য কোনো সংস্কার কাজ করেননি কর্তৃপক্ষ। আর একারণেই বুধবার দুপুরের দিকে বেইলি ব্রিজের পাটাতন (লোহার পাত) খুলে যাওয়ায় বড় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে জীবিকার ত্যাগিদে ছোট যানবাহন যেমন- সিএনজি ও চার্জার চালিত অটোরিকশা, রিকশা, ভ্যান অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।
উপজেলার দমদমা গ্রামের অটোরিকশা চালক রফিকুল ইসলাম চাঁন ও করজবাড়ী গ্রামের জাহিদুল ইসলাম বলেন, গাড়ি নিয়ে ব্রিজে ওঠার পর পুরো ব্রিজের পাটাতন নড়ে ওঠে। প্রচন্ড শব্দ হয়। যাত্রী নিয়ে ভয়ে ভয়ে ব্রিজ পারাপার হতে হয়। আর এখন যে অবস্থা তাতে যাত্রী নিয়ে তো দূরের কথা ফাঁকা গাড়ী নিয়েও পার হতে ভয় লাগে।
আদমদীঘি সদর ইউপির সদস্য ও করজবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা শহীদুল ইসলাম বলেন, পৌর শহর ও জংশন থাকায় উপজেলার সান্তাহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গা।
বগুড়া সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী আমানুল্লাহ আমান জানান, সেতুর পরিস্থিতি দেখে আমারা মন্ত্রনালয়ে একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম। সে অনুযায়ী অনুমোদন হয়েছে। এই সেতুটির পরিবর্তে এখানে ঢালাই সেতু নির্মান করা হবে। এখন দরপত্র আহ্বান করে ঠিকাদারের মাধ্যমে বেইলী ব্রিজের স্থলে শিগগিরই ঢালাই সেতু নির্মাণ করা হবে।

যুবলীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিতে থানা ঘেরাও, অতঃপর...
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে মারপিট ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া স্থানীয় যুবলীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতিকে থানা থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে তার সমর্থকরা।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে তার সমর্থকরা রাণীশংকৈল থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ লাঠিচার্জ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
রাণীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আরশেদুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, হোসেনগাঁও ইউনিয়নের উত্তরগাঁওয়ের বাসিন্দা মমতাজ আলী বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মামলার পরপরই অভিযান চালিয়ে বুধবার ভোররাতে প্রধান অভিযুক্ত মতিউর রহমান মতিকে গ্রেপ্তার করে থানায় আনা হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাফিউল মাজলুবিন রহমান। তিনি মাইকে বিক্ষোভকারীদের শান্ত থাকার এবং অবরোধ তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানান।
ইউএনও শাফিউল মাজলুবিন রহমান বলেন, ‘থানা ঘেরাওয়ের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমি সেখানে যাই। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে তাদের বুঝিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করি। কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত পুলিশ লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে বাধ্য হয়।’
ওসি আরশেদুল হক জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মৃদু লাঠিচার্জ করা হয়েছে।

কসবায় বিদ্যুৎস্পর্শে চাচা-ভাজিতার মৃত্যু
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় বৈদ্যুতিক মটর বন্ধ করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পর্শে চাচা-ভাতিজার মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের গোপীনাথপুর গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন—গোপীনাথপুর গ্রামের আতিকুর রহমান মোল্লার ছেলে আবুল খায়ের মোল্লা (৫২) ও তার ছোট ভাই আবু তাহের মোল্লার ছেলে জাকারিয়া মোল্লা (২২)।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বুধবার সকাল থেকে বাড়ির পাশের একটি ডোবায় মাছ ধরার কাজ করছিলেন চাচা-ভাতিজা।
কসবা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল কাদের জানান, খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়।

চরভদ্রাসন সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দুদকের অভিযান
সদরপুর-চরভদ্রাসন (ফরিদপুর) প্রতিনিধি

দলিল রেজিস্ট্রেশন, তল্লাশি, নকল উত্তোলনসহ অন্যান্য কাজে সেবা প্রার্থীদের হয়রানি এবং ঘুষ দাবিসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে ফরিদপুর জেলার চরভদ্রাসন উপজেলা সাবরেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে সাবরেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করেন দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় ফরিদপুরের উপসহকারী পরিচালক মো. কামরুল হাসানের নেতৃত্বে একটি দল।
অভিযানকালে সিটিজেন চার্টার না থাকাসহ নানা অনিয়ম পরিলক্ষিত হওয়ায় কিছু রেকর্ডপত্র জব্দ করা হয়। সেগুলো পর্যালোচনা করে তদন্ত প্রতিবেদন কমিশন বরাবর পাঠানো হবে বলে জানান দুদক কর্মকর্তা।
দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ফরিদপুরের উপসহকারী পরিচালক মো. কামরুল হাসান জানান, দুদকের প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক চরভদ্রাসন উপজেলা সাবরেজিস্ট্রি অফিসে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে সিটিজেন চার্টার পাওয়া যায়নি। এছাড়া অনিয়মের কিছু রেকর্ডপত্র জব্দ করা হয়েছে। সেগুলো পর্যালোচনা করে তদন্ত প্রতিবেদন কমিশন বরাবর পাঠানো হবে।

তদন্ত প্রতিবেদন
ফরিদপুরে বাস দুর্ঘটনার ৫ কারণ
ফরিদপুর প্রতিনিধি

ফরিদপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফারাবি এক্সপ্রেস নামের একটি বাস দুর্ঘটনায় বাবা-ছেলেসহ ৭ জন নিহতের ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদনে চালকের বেপরোয়া গতিতে নিয়ন্ত্রণহীন গাড়ি চালানোসহ দুর্ঘটনার ৫ কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি আগামীতে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ১৪টি সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মিন্টু বিশ্বাস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে মঙ্গলবার রাতে জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্লার কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন তিনি।
জানা যায়, গত ৮ এপ্রিল সকাল ১১ টার দিকে ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কে ফরিদপুর সদরের বাখুন্ডা এলাকার শরিফ জুটমিলের সামনে মুকসুদপুর থেকে ফরিদপুরগামী ফারাবি এক্সপ্রেস নামের বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে গেলে বাবা-ছেলেসহ ৭ জন নিহত ও ২৮ জন আহত হয়। ঘটনার পরে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মিন্টু বিশ্বাসকে প্রধান করে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন জেলা প্রশাসন এবং তিন কার্যদিবসের মধ্যে জমা দেওয়ার কথা বলা হয়।
এ কমিটিতে ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আজমীর হোসেন, হাইওয়ে পুলিশের মাদারীপুর রিজিয়নের সহকারী পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খালিদ সাইফুল্লাহ, বুয়েটের এআরআই বিভাগের প্রভাষক ড. নাজমুল হক, ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান ও বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন।
তদন্ত প্রতিবেদনে দুর্ঘটনার সম্ভাব্য পাঁচটি কারণ উল্লেখ করা হয়।
তদন্ত কমিটি দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের পাশাপাশি দুর্ঘটনার নিরসনে ১৪টি সুপারিশ করেছে। এ সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে- মহাসড়কে ফিটনেস ছাড়া গাড়ি চলাচল না করা, রুটপারমিট ব্যতীতে কোনো গাড়ি চলাচল না করা, বিকল্প চালক রেখে টানা ৫ ঘণ্টার বেশি গাড়ি না চালানো, প্রতিটি গাড়িতে অগ্নিনির্বাপকের ব্যবস্থা রাখা, বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি না চালানো, থ্রি-হুইলার এবং ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চলাচল নিষিদ্ধ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা, দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় রাস্তার পাশে ট্রাফিক সাইন প্রদর্শন, পর্যাপ্ত সিগন্যাল, সিসি ক্যামেরা স্থাপন, সকল যানবাহনে গতি নিয়ন্ত্রক যন্ত্র বসানো, ঝুঁকিপূর্ণ সোল্ড্রার ড্রপ মেরামত, অনুমোদনহীন পার্শ্বরাস্তা সংযোগ না দেয়া এবং রাইট অফ ওয়ের বাইরে বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপন করা।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্লা বলেন, বিগত দিনের দুর্ঘটনায় তদন্ত কমিটির সুপারিশ এবং এ ঘটনায় পাওয়া সুপারিশগুলো নিয়ে বাস মালিক, শ্রমিক, সড়ক বিভাগ, বিআরটিএসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে দ্রুত সভা করা হবে। সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের জন্য সভায় প্রত্যেক বিভাগকে আলাদা করে দায়িত্ব বণ্টন করে দেওয়া হবে। এছাড়া জাতীয় পর্যায়ের সুপারিশগুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।
অপরদিকে এ ঘটনায় সড়ক পরিবহন আইনে মামলা হলে বাস চালক সুমন গাজীকে গ্রেপ্তার করে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে গত মঙ্গলবার দুপুরে আদারতে সোপর্দ করা হয়।
মামলার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মামুন জানান, আদালত পরে রিমান্ডের শুনানির তারিখ ঠিক করা হবে জানিয়ে সুমন গাজীকে জেলহাজতে পাঠিয়ে দেন।
বিআরটিএ’র ফরিদপুর কার্যালয় জানায়, চলতি বছর ১ জানুয়ারি থেকে গতকাল ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত জেলায় ২৮১ টি ডিজেল গাড়ি ফিটনেস নবায়নকালে গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য স্পিড গভর্নর শিল্ড করা হয় ।
বিআরটিএর সহকারী পরিচালক মো. নাসীর উদ্দীন বলেন, দুর্ঘটনা কবলিত বাসটিতে ডিজেল দ্বারা চালিত এবং স্পিড গভর্নর শিল্ড করা পাওয়া যায়নি। এছাড়া বাসটি ফিটনেস বিহীন ছিল। বর্তমানে বাসটি বিআরটিএ থেকে সাসপেন্ড করা আছে।