আগামীকাল ২৫ আগস্ট। মিয়ানমারের রাখাইনে ওই দেশের সেনাবাহিনীর হাতে গণহত্যা ও নির্যাতনের শিকার হয়ে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পালিয়ে আসার পাঁচ বছর পূর্ণ হলেও শুরু হয়নি প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া। কূটনৈতিক জটিলতায় আটকে আছে রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসন। ফলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে বাড়ছে নানা ধরনের অপরাধপ্রবণতা।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ৫ বছর
বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার

তবে রোহিঙ্গারা বলছে, তারা স্বেচ্ছায় ফিরে যেতে চায় তাদের ফেলে আসা বাপ-দাদার ভিটায়।
উখিয়ার মধুরছড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ই-ব্লকের কলিম উল্লাহর ভাষ্যমতে, ‘দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে অনেকটা বন্দি জীবন পার করছি। তবে বুক ভরা আশা নিয়ে স্বদেশে ফেরার প্রহর গুনছি। আন্তর্জাতিকভাবে মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারলে প্রত্যাবাসন সহসাই হবে।
উখিয়ার বালুখালী ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতা মো. আলম মাঝি বলেন, ‘আজ পাঁচ বছর কেটে যাচ্ছে, আমাদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন দেখছি না। তবে আমরা বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। বাংলাদেশে আমাদের জায়গা না দিলে আমরা কোথায় যেতাম?’
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর তল্লাশিচৌকিতে হামলার অভিযোগ এনে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইনের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর শুরু করে গণহত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ। তাদের বর্বর অত্যাচার-নির্যাতনের মুখে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে ৩৪টি আশ্রয়শিবিরে ১১ লাখ ১৮ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয়।
শুরু থেকে বাংলাদেশ সরকার এবং ‘ইউএনএইচসিআর’-এর তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এসব রোহিঙ্গাকে খাদ্য, চিকিৎসাসহ বিভিন্ন সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন অফিস ৩৪টি শরণার্থী শিবিরে প্রশাসনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। প্রায় এক মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের পর বাংলাদেশ সরকার প্রথমে মিয়ানমারের সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেয়। কিন্তু কূটনৈতিক নানা কারণে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু করা যায়নি।
সম্পর্কিত খবর

সিংগাইরে বাবা-ছেলের ধর্ষণে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী তরুণী
সিংগাইর, হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি

মানিকগঞ্জের সিংগাইরে বাবা ও ছেলের বিরুদ্ধে এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় বুধবার (৯ এপ্রিল) থানায় পৃথক দুটি মামলা করেছেন ভুক্তভোগী তরুণীর মা। মামলার আসামিরা হলেন- উপজেলার জামির্ত্তা ইউনিয়নের বিন্নাডাঙ্গী গ্রামের তারা মিয়া (৫৮) ও তার ছেলে আলামিন (৩৫)।
মামলার এজাহার ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২৮ বছর বয়সী ভুক্তভোগী বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী তরুণীকে নিয়ে তার মা উপজেলার জামির্ত্তা ইউনিয়নের বিন্নাডাঙ্গী গ্রামে ভাড়া বাড়িতে থাকেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত তারা মিয়া ও তার ছেলে আলামিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু না পাওয়ায় তাদের মতামত জানা যায়নি।
সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জেওএম তৌফিক আজম বলেন, এ ঘটনায় অভিযুক্ত তারা মিয়া ও ছেলে আলামীনকে আসামি করে থানায় পৃথক দুটি মামলা করেছেন ভুক্তভোগী তরুণীর মা। মামলা নথিভুক্ত হওয়ার পর ২২ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য ভুক্তভোগী তরুণীকে আদালতে প্রেরণ করা হয়।

বরিশালে বিএনপির কর্মিসভায় চেয়ারে বসা নিয়ে মারামারি
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বরিশাল মহানগর বিএনপির কর্মিসভায় দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। একইসঙ্গে দুই পক্ষের মধ্যে চেয়ার ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটেছে। ওই কর্মিসভায় চেয়ারে বসা নিয়ে এই মারামারিতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
বুধবার (৯ এপ্রিল) বিকেলে নগরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের একটি রেস্তোরাঁয় মহানগর বিএনপি এই কর্মিসভার আয়োজন করে।
দলের জ্যেষ্ঠ নেতা ও অতিথিদের সামনে মারামারি ও হট্টগোলে সভার কার্যক্রম ব্যাহত হয়। এ সময় কর্মিসভায় আসা নারীসহ অনেক কর্মী বেরিয়ে যান।
প্রত্যক্ষদশীরা বলছেন, বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ১০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল ইসলামের অনুসারীরা মিছিল নিয়ে সভাস্থলে প্রবেশ করে স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় একটি পক্ষ তাদের বাধা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়।
তারা অতিথিদের উপস্থিতিতেই একে অপরকে কিল-ঘুষি মারেন এবং চেয়ার ছোড়াছুড়ি করেন। এতে সভা কার্যক্রম থমকে যায়।
ওয়ার্ড বিএনপির সদ্য সাবেক সদস্য সচিব দুলাল হোসেন বলেন, মিছিল নিয়ে এসে আমরা সভাস্থলে বসে অতিথিদের কথা শুনছিলাম। হঠাৎ চেয়ারে বসা নিয়ে কেডিসি ও ভাটার খাল এলাকার যুবকদের মধ্যে বিরোধ বাধে।
এ সময় মারামারিতে আমার সমর্থক মিজানসহ কয়েকজন আহত হন। মারামারির কারণে অনেকে সভাস্থল থেকে বেরিয়ে যান। বিশেষ করে, নারী কর্মীরা সভায় ছিলেন না।
একই ওয়ার্ড বিএনপির সদ্যসাবেক আহ্বায়ক তোতা মিয়া বলেন, চেয়ারে বসা নিয়ে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ঝামেলা হয়। কর্মীরা একে অপরকে কিল-ঘুষি দিতে থাকেন। কারা করেছেন, তা শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। তাদের এই কাণ্ডে আমাদের সারা দিনের কষ্ট ব্যর্থ হয়ে যায়।
বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জসিম উদ্দিন বলেন, কর্মিসভায় আসা একজনকে তাদের প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দেয়। এ নিয়ে হট্টগোল বাধে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে সভা শেষ করেছি। এ ঘটনায় কারা জড়িত, তা খতিয়ে দেখে দায়ীদের বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মহানগর বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন বলেন, আমাদের টিমপ্রধান বলেছেন, ১১ এপ্রিল বসে ওয়ার্ড কমিটি গঠনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। তারপরও আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব সভা করে যাচ্ছেন। এতে বিভিন্ন স্থানে বিশৃঙ্খলা ঘটছে। হাতাহাতি ও মারামারি ঘটেই যাচ্ছে। তবুও তাঁরা পকেট কমিটি করতে চাচ্ছেন।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুকের মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে তিনি তা ধরেননি।

সাভারে চাঁদা না দেওয়ায় গুলি ও মাঝিদের মারধর, দুই নৌকা লুট
সাভার (ঢাকা) সংবাদদাতা

সাভারে দাবিকৃত ৫ লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় প্রকাশ্যে গুলি করে দুটি ইঞ্জিন চালিত নৌকা লুট করে নিয়ে গেছে একদল দুর্বৃত্ত। বুধবার (৯ এপ্রিল) বিকেলে সাভারের কাতলাপুর বংশী নদীর মিলনঘাট এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।
এ ঘটনায় ঘাটের ইজারাদার কামরুল ইসলাম বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী হেদায়েত উল্লাহ জানান, কয়েকদিন আগে একদল সন্ত্রাসী ঘাট ব্যবসায়ী কামরুল ইসলামের কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
লিখিত অভিযোগের বাদী ঘাট ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম জানান, বেশকিছুদিন ধরে পার্শ্ববর্তী ফুডনগর মোল্লাপাড়া এলাকায় অন্তর খান (২৬), মাহাবুল্লাহ খানের ছেলে মোর্শেদ খান (২৫), মোশারফ খান (২৮), হৃদয় (২৫) ও রনি খান (৪২) আমার কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। তাদের দাবিকৃত চাঁদা না দেওয়ায় বিকেলে আরো ১০-১২ জন অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসী পিস্তল, ধারাল চাপাতি, রামদা, ছোরা, চাকু, লোহার রড, লোহার পাইপ নিয়ে হামলা চালিয়ে কাতলাপুর কর্ণপাড়া মিলনঘাটে এসে আমাকে এলোপাতাড়িভাবে মারধর করে।
জানতে চাইলে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুয়েল মিঞা জানান, গুলি করে ট্রলার লুটের ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় সাভার মডেল থানা হতে লুট হওয়া ১২টি অস্ত্র এখনো উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।

ঝিনাইদহে বিএনপিকর্মীকে কুপিয়ে হাত বিচ্ছিন্ন করল প্রতিপক্ষরা
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঝিনাইদহ

ঝিনাইদহ সদরে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে রিপন মোল্লা নামের এক বিএনপিকর্মীকে কুপিয়ে হাত বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে প্রতিপক্ষরা।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাতে উপজেলার রাজাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরণ করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।
আহত রিপন মোল্লা সদর উপজেলার রাজাপুর গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাক মোল্লার ছেলে।
এ ঘটনায় আহতের মা নূরজাহান বেগম বাদী হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
আহতের স্ত্রী ইসমতারা বলেন, গ্রামে বিএনপির গ্রুপ পরিবর্তন নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে আমার স্বামীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় রাজাপুর গ্রামের হুমায়ুন, আব্দুল করিম, মিঠুন ও বাড়িবাথান হারুন।
এ ব্যাপারে সদর থানার ওসি আবদুল্লাহ আল মামুন কালের কণ্ঠকে বলেন, এ ঘটনায় আহত রিপনের মা থানায় মামলা দায়ের করেছে। হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।