<p>অতিবৃষ্টি ও উজানের ঢলে উত্তরের জেলা রংপুর, লালমনিরহাট ও নীলফামারীতে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার বাড়িঘর ও রাস্তাঘাটে পানি ঢুকে পড়েছে, ডুবে গেছে অনেক ফসলের ক্ষেত। গতকাল শনিবার বিকেলে লালমনিরহাটে তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে নদীটির পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছিল। কালের কণ্ঠের সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর : </p> <p><strong>লালমনিরহাট :</strong> তিস্তা নদীর পানি বেড়ে গতকাল দুপুর থেকে লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় পানি ঢুকতে শুরু করে। জেলার আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়নের গোবর্ধন, বারঘরিয়া, বাহাদুরপাড়াসহ নদীতীরবর্তী কয়েকটি নিম্নাঞ্চলের কিছু বাড়িঘর পানিবন্দি হয়ে পড়ে। জলমগ্ন হয়েছে ওই সব এলাকার কয়েকটি রাস্তাঘাটও। অন্তত তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠ পানিতে ডুবে গেছে। এ ছাড়া পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার ডাউয়াবাড়ী, সিন্দুর্ণা, গড্ডিমারী ও পাটিকাপাড়া ইউনিয়নের চরাঞ্চলের কিছু কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এসব এলাকার উঠতি আমন ধানক্ষেতসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেতও ডুবে গেছে। </p> <p>হাতীবান্ধার ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান জানান, তাঁর ইউনিয়নের ছয়টি ওয়ার্ডের প্রায় দুই হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। </p> <p><strong>নীলফামারী : </strong>তিস্তার পানি বাড়ার ফলে জেলার ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই, পূর্ব ছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী, খগাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি ইউনিয়নের ১৫ গ্রামের নিম্নাঞ্চলে পানি ঢোকে। এসব গ্রামের পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষ বন্যার শঙ্কায় রয়েছে।</p> <p>জেলার ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান বলেন, ‘পানি বাড়ার সঙ্গে আমার ইউনিয়নের পূর্ব ছাতনাই ও ঝাড়সিংহেশ্বর মৌজার নিম্নাঞ্চলে পানি ঢোকে। এতে ওই দুই মৌজার এক হাজার ২০০ পরিবার বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। আরো পানি বাড়ার আশঙ্কায় এসব পরিবার নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাচ্ছে।’ </p> <p><strong>রংপুর : </strong>রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে আগাম শীতকালীন শাক-সবজি, বীজতলা ও আমন ধানক্ষেত। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রেখেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষ। </p> <p>পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, গতকাল শনিবার বিকেল ৩টায় তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে নদীটির পানি বিপত্সীমার পাঁচ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত আগের দিনের তুলনায় কমেছে। তবে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত পানি বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। এরপর ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাবে।</p>