<p>ফরিদপুরের মধুখালীতে সাংবাদিক সৌগত বসু নামে এক সাংবাদিকের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্যামলেন্দু বসু (৬৮) ও মা কাকলী বুস (৬০) দুর্বৃত্তদের ধারাল অস্ত্রের আঘাতে আহতের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তাদের গৃহপরিচিকা প্রীতি মালো (১৫) নামে এক তরুণীও গুরুতর আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। সৌগত বসু আজকের পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকায় কর্মরত রয়েছেন।</p> <p>শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের ডুমাইন গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার সময় আহতদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।</p> <p>আহতদের উদ্ধার করে মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে সেখানে তাদের অবস্থা অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।</p> <p>এলাকা সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে একদল দুর্বৃত্ত চুরি বা ডাকাতির উদ্দেশ্যে সাংবাদিক স্বাগত বসুর গ্রামের বাড়ি মধুখালী উপজেলার ডুমাইনের বাড়িতে প্রবেশ করে। দুর্বৃত্তদের উপস্থিতি টের পেয়ে শ্যামলেন্দু ও তার স্ত্রী কাকলী বুস চিৎকার দিলে দুর্বৃত্তরা তাদের কুপিয়ে-পিটিয়ে রেখে পালিয়ে যায়। আহতদের উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।</p> <p>ডুমাইন ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জীবন কুমার মন্ডল জানান, রাতে হঠাৎ আহতদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে দেখে শ্যামলন্দ ও তার স্ত্রীকে কুপিয়ে এবং কাজের মেয়েটিকে মাথায় ও শরীরে আঘাত করা হয়েছে। তারা এসময় অজ্ঞান হয়ে পড়ে। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মনে হচ্ছে চুরি করতে ঢুকেছিল দুর্বৃত্তরা। </p> <p>সাংবাদিক সৌগত বসু বলেন, আমার বাবা-মা ছাড়া কেউ বাড়িতে থাকে না। আমার অসুস্থ মাকে দেখাশোনা করত প্রীতি নামের একটি মেয়ে। তারা এখন গুরুতর অসুস্থ, পুরো ঘটনা এখনো বলতে পারছি না। তবে তাদের কারো সঙ্গে গ্রামে ঝামেলা নেই বলে জানান।</p> <p>ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সার্জারী বিভাগের চিকিৎসক অর্ণব জানান, শ্যামলেন্দু বসুর মাথায় গুরুতর আঘাত রয়েছে। তাঁর মাথার হাড় ভেঙে গিয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার জন্য পরিবারকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অন্যদের তেমন সমস্যা হয়নি।</p> <p>এদিকে খবর পেয়ে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসার খোঁজ-খবর নিয়েছেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) শৈলেন চাকমাসহ পুলিশের কর্মকর্তারা।</p> <p>শৈলেন চাকমা বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে চুরি করতে গিয়ে ঘটনাটি ঘটেছে। ১৪-১৫ বছরের এক কিশোর ওই বাড়িতে অবস্থান নেয়। বিষয়টি দেখতে পেয়ে বাড়ির মালিক ধাওয়া দিলে তাকে এবং অন্যদের সোল দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।</p> <p>ফরিদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) মোহম্মাদ ইমরুল হাসান জানান, এটা আসলে ডাকাতির ঘটনা নয়। মূলত একটি চুরির ঘটনা। চোর চুরি করতে আসলে গৃহকর্তা তাদের দেখে ফেললে চিৎকার দেয়। এসময় চোররা ওই পরিবারের লোকজনের ওপর হামলা করে পালিয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ কাজ করছে।</p>