ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। গত এক সপ্তাহ ধরে বহির্বিভাগে কোনো চিকিৎসক নেই। একজন ভেষজ ও মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট দিয়ে সাময়িক চিকিৎসা চললেও দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগীদের দুর্ভোগ বাড়ছে। অনেকেই বিনা চিকিৎসায় বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অবস্থান করে দেখা যায়, রোগীরা চিকিৎসকের খোঁজে বিভিন্ন কক্ষে ছোটাছুটি করছেন। রাহেলা বেগম (৫০) পেটের ব্যথা নিয়ে এসেছেন, কিন্তু চিকিৎসক না পেয়ে একজন ইন্টার্নের কাছ থেকে ওষুধ নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। আবু মিয়া (৬০) বলেন, দুই দিন ধরে আসছি, চিকিৎসক পাচ্ছি না। এখন আমরা কোথায় যাব?
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০টি কনসালটেন্ট পদ থাকলেও মাত্র দুজন চিকিৎসক সপ্তাহে এক-দুই দিন আসেন।
বাকিরা ফাউন্ডেশন ট্রেনিংয়ে রয়েছেন। অর্থোপেডিক বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট প্রেষণে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সংযুক্ত হওয়ায় এই বিভাগের চিকিৎসাও বন্ধ। মেডিসিন ও শিশু বিভাগেও চিকিৎসক নেই।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন গড়ে ৪০০ রোগী বহির্বিভাগে এবং ২০০ রোগী জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসেন।
কিন্তু চিকিৎসক না থাকায় রোগীদের ভোগান্তি বাড়ছে। অন্তবিভাগে ৫০ শয্যার বিপরীতে অনেক বেশি রোগী ভর্তি রয়েছেন। বারান্দায় বিছানা পেতে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শামীমা সুলতানা চিকিৎসক সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, চিকিৎসক দিলেও অনেকেই যোগ দিচ্ছেন না। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।
গত বছর ২৪ অক্টোবর পাঠানো একটি চিঠিতে জানা যায়, নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৭টি জুনিয়র কনসালটেন্ট ও ১৩টি মেডিকেল অফিসারের পদ শূন্য রয়েছে। চিকিৎসক সংকট দূর করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
এই পরিস্থিতিতে স্থানীয়রা দ্রুত চিকিৎসক নিয়োগ ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। রোগীদের ভোগান্তি কমাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া এখন সময়ের দাবি।