‘আমাকে নিয়া যাও, এখানে ভালো লাগছে না’

নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর
নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর
শেয়ার
‘আমাকে নিয়া যাও, এখানে ভালো লাগছে না’
আবুল কাশেমে (ইনসেটে)

‘আমাকে নিয়া যাও, এখানে ভালো লাগছে না’ এটাই ছিল গাজীপুর মহানগরীর ধীরাশ্রমের দাখিনখান এলাকায় সাবেক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত আবুল কাশেমের শেষ কথা। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) দেখতে গেলে চাচাতো ভগ্নিপতি সজিব আহমেদ শাহীনকে ওই কথা বলেছিলেন কাশেম (১৬)।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় কাশেমের গাজীপুর মহানগরীর বোর্ডবাজারের দক্ষিণ কলমেশ্বর এলাকার বাসায় গেলে শাহীন বলেন, শুক্রবার রাতে হামলার স্বীকার হয়ে গুরুতর আহত হয় কাশেম। অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাকে ঢাকা মেডিক্যালে নেওয়া হয়।

তারপর থেকে তিনিই প্রতিদিন তার খোঁজ-খবর নিতে হাসপাতালে দৌড়ঝাঁপ করেছেন। কাছে থেকেছেন। হাসপাতালে তার চিকিৎসায় কোনো ঘাটতি ছিল না। যন্ত্রণায় ছটফট করলেও কিন্তু মৃত্যুর আগে জুটেনি আপনজনদের স্নেহের পরশ বা ভালোবাসা।
এটি খুব বেদানাদায়ক বলেই চোখের পানি মুছেন তিনি। 

‘ভেবেছিলাম সুস্থ কাশেমকে নিয়ে ঘরে ফিরব। অথচ আনতে হচ্ছে তার লাশ। শেষ ইচ্ছাটাও পূরণ করতে পাললাম না’ বলেন শাহীন।

ফুফু নাসিমা আক্তার আক্ষেপ করে বলেন, বহুত আক্ষেপ নিয়ে ছেলেটা বিদায় নিল। কাশেমের বাবা হাজী জামাল চিশতির দুই স্ত্রী ছিল। বড় স্ত্রী দুই ছেলে এবং ছোট স্ত্রীর ২ ছেলে এক মেয়ে। কাশেমের বয়স যখন ৪ কি ৫, তখন নিরুদ্দেশ হন তার মা রেখা আক্তার। অনাদর-অবহেলায় দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে হয়েছে তাকে।

তারপর থেকে দাদি আলেকজানের কাছে কাশেম ও তার অন্য দুই ভাইবোন বড় হয়েছে। ৪ বছর আগে দাদি এবং দুই বছর আগে বাবা হাসেম চিশতি মারা গেলে তিন ভাইবোন এতিম হয়ে পড়ে। ৫ আগস্ট হাসিনার পতনের দিন আত্মহত্যা করে মারা যায় বড় ভাই হাসেম (২৫)। কিছুদিন পর হাসেমের স্ত্রীও চলে যায় বাপের বাড়ি। তার পর থেকেই ছোট বোন সুরভি (১৩) সৎ বড় ভাইদের সংসারে থাকেন। দাদির রেখে যাওয়া বাড়িতে থাকতেন কাশেম। নিজেই রান্না করে খেতেন। একের পর এক স্বজনদের মৃত্যুর কারণে ঠিকমতো লেখাপড়া করতে পারেন না সে। তারপরও হাল ছাড়েননি। স্থানীয় অনুশীলন একাডেমিতে ৮ম শ্রেণিতে পড়াখেলার পাশাপাশি কাজ করে খাবারের টাকা যোগাড় করতেন। শুরু থেকেই ছিলেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে। নানা কারণে সৎ বড় দুই ভাই এবং ছোট বোনের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো ছিল না। ৫ দিন ধরে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়লেও তারা কেউ হাসপাতালে তাকে দেখতে যাননি। তিনি মঙ্গলবার বিকেলে হাসপাতালে গেলেও সংজ্ঞাহীন অবস্থায় আইসিওতে থাকায় ভাইপোর সঙ্গে কথা হয়নি। এমনকি একটু ছুয়েও দেখতে পারেননি। আঘাতের যন্ত্রণা এবং অনাদর-অবহেলার যন্ত্রণায় ভাইপোকে বিদায় নিতে হলো।’   

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

বেতনের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ

নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর
নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর
শেয়ার
বেতনের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ
সংগৃহীত ছবি

গাজীপুরে বেতনের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেছেন লুমেন টেক্সটাইল কারখানার শ্রমিকরা। রবিবার (১৬ মার্চ) মহানগরীর তেলিপাড়া এলাকায় এই কর্মসূচি পালন করেন তারা। 

শ্রমিকরা জানান, কর্তৃপক্ষ প্রতিমাসেই বেতন দিতে দেরি করে। রমজান মাস উপলক্ষে আগে বেতন দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছিল।

আজ বেতন দেওয়ার কথা ছিল। দুপুরের পর কর্তৃপক্ষ জানায় বেতন হচ্ছে না। এ মাসের অর্ধেকের বেশি চলে গেছে। এখনো গত মাসের বেতন পাইনি।
রমজান মাস বেতন ছাড়া সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

একাধিক শ্রমিক বলেন, ‘কারখানায় রাত ১১টা-১২টা পর্যন্ত ডিউটি করায় কিন্তু কোনো নাইট বিল দেয় না। ইনক্রিমেন্ট নেই। ডিসেম্বর থেকে ছুটি বন্ধ।

মাসের ১৫-২০ তারিখ বেতন দেয়। রমজান মাসের কারণে আগে বেতন চেয়েছি, ম্যানেজমেন্ট কোনো গুরুত্ব দেয়নি।’

লুমেন টেক্সটাইল কারখানার ভেতরে গিয়ে কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল কাউকে পাওয়া যায়নি।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কায়সার আহমেদ বলেন, শ্রমিকদের অবরোধের কারণে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

মন্তব্য

হবিগঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ বন্ধের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ

শায়েস্তাগঞ্জ (হবিগঞ্জ) সংবাদদাতা
শায়েস্তাগঞ্জ (হবিগঞ্জ) সংবাদদাতা
শেয়ার
হবিগঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ বন্ধের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ
ছবি: কালের কণ্ঠ

হবিগঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ বন্ধের চক্রান্তের প্রতিবাদে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন করা হয়েছে। সম্মিলিত নাগরিক সমাজ হবিগঞ্জের ব্যানারে রোববার (১৬ মার্চ) বেলা ১১টায় জেলার শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রিজ গোল চত্বরে সমাবেশ করা হয়।

পরে হবিগঞ্জবাসী জাগ্রত হোন, মেডিক্যাল কলেজ রক্ষা করুন স্লোগান নিয়ে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লোকজন মহাসড়কে মানববন্ধন করেন। এ সময় শত শত লোক সড়কের ওপরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করলে ঢাকা ও সিলেটের উভয় দিক থেকে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।


নাগরিক সমাজ হবিগঞ্জের আহ্বায়ক অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. ইকরামুল ওয়াদুদ সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মো. সামছুল হুদার পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন- সিনিয়র সাংবাদিক মনসুর উদ্দিন আহমেদ ইকবাল, জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মুখলিছুর রহমান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ লিয়াকত হাসান, সাবেক মেয়র ফরিদ আহমেদ অলি, হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শোয়েব চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান আউয়াল, প্রভাষক আব্দুল করিম প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, জেলার ২৫ লাখ মানুষের দাবি উপেক্ষা করে হবিগঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ বন্ধের যে পাঁয়তারা চলছে, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না। জনস্বার্থবিরোধী এই চক্রান্ত থেকে সরে আসার জন্য ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে, অনেক আন্দোলন হয়েছে। তারপরও মেডিক্যাল কলেজ বন্ধের দিকে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।

তারা আরো বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সাইদুর রহমানের একরোখা সিদ্ধান্তের কারণে হবিগঞ্জবাসী মেডিক্যাল কলেজ হারাতে বসেছে। এ রকম সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে মহাসড়ক ও রেলপথ বন্ধ করে দিয়ে সিলেট বিভাগকে দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে।

হবিগঞ্জ মেডিক্যাল কলেজসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন ছাত্র-জনতা , বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সহস্রাধিক লোক নিজেদের ব্যানার নিয়ে মহাসড়ক অবরোধ ও মানববন্ধনে অংশগ্রহন করেন।

দুপুর ১টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ ছিল।

মহাসড়কের উভয়পাশে শতশত যাত্রী ও যানবাহন আটকা ছিলো।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

রাঙামাটিতে দুর্বৃত্তের গুলিতে ইউপিডিএফকর্মী নিহত

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
রাঙামাটিতে দুর্বৃত্তের গুলিতে ইউপিডিএফকর্মী নিহত

রাঙামাটিতে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) নির্মল খীসা নামের এক কর্মীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। রবিবার (১৬ মার্চ) সকালে সদর উপজেলার সাপছড়ি ইউনিয়নের খামারপাড়ার তৈ মেদুং গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত নির্মল খীসা নানিয়ারচর উপজেলার নানিয়াচর ইউনিয়নের ইউনিয়নের তৈ-চাকমা গ্রামের সুনীল বিহারী খীসার ছেলে।

স্থানীয়রা জানায়, সকালে তৈ মেদুং গ্রামে একদল সশস্ত্র দুর্বৃত্ত নির্মলকে গুলি করে।

এ সময় ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এদিকে এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতিকে (পিসিজেএসএস) দায়ী করেছে ইউপিডিএফ।

ইউপিডিএফের রাঙামাটি জেলা সংগঠক সচল চাকমা বলেন, ‘নির্মল খামারপাড়া এলাকায় তার নিয়মিত সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাচ্ছিলেন। সেখানে আগে থেকে লুকিয়ে থাকা পিসিজেএসএসের ৮-১০ জন সশস্ত্র সদস্য নির্মলকে গুলি করে হত্যা করেছে।

পিসিজেএসএস রাঙামাটি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নগেন্দ্র চাকমা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি রাঙামাটি শহরে নেই, তাই ঘটনাটি আমার অজানা। তবে আমাদের কেউ এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়নি। কারণ ওই এলাকায় আমাদের কোনো কার্যক্রমই নেই।’

রাঙামাটির কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাহেদ উদ্দিন বলেন, ‘সাপছড়িতে নিহত ইউপিডিএফকর্মী নির্মলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

ময়নাতদন্তের জন্য তা রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে এখনো কেউ আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ দায়ের করেনি।’

মন্তব্য

হত্যা মামলা থেকে খালাস পেলেন সাংবাদিকসহ ১০ জন

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
শেয়ার
হত্যা মামলা থেকে খালাস পেলেন সাংবাদিকসহ ১০ জন
ছবি : কালের কণ্ঠ

দীর্ঘ ১৫ বছর আইনি লড়াই শেষে ঝিনাইদহের শফিকুল ইসলাম সান্টু হত্যা মামলা থেকে বেকসুর খালাস পেয়েছেন সাংবাদিকসহ ১০ জন। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন বিবাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আমিনুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘গত ৪ মার্চ ঝিনাইদহের অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মুহাম্মদ মাহবুব আলম সাংবাদিক এস এম রবিসহ মামলার ১০ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় এ রায় প্রদান করেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘আসামিদের বিরুদ্ধে যথাযথ সাক্ষ্য-প্রমাণ না থাকায় বিজ্ঞ আদালত তাদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন।

এ মামলায় বিবাদীদের হয়রানির উদ্দেশ্যে জড়ানো হয়েছিল। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি।’

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ৫ এপ্রিল রাতে ঝিনাইদহ শহরের নতুন হাটখোলা এলাকায় শফিকুল ইসলাম সান্টুকে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সান্টুকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওই দিন রাতেই সান্টুর বাবা রেজাউল ইসলাম সাংবাদিক রবিসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ