উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই আরও একটি আলোচিত ঘটনা ঘটলো। একদিকে বর্তমান ভিসি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের দাবিতে যখন সাধারণ শিক্ষার্থীরা এক দফার আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন তেমনি
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) আওয়ামী লীগ আমলের ভিসি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীরসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় বিগত আট বছর আগের একটি নির্যাতনের ঘটনা তুলে ধরা হয়।
কুয়েটের লালন শাহ হলে ২০১৭ সালের পয়লা মে রাতে দুজন ছাত্রকে নির্যাতনের ফলে একজনের কিডনি নষ্ট হয় এবং অপরজনের চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
আদালতে মামলা দুটি দায়েরের পর খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের খানজাহান আলী থানায় রেকর্ড করা হয়েছে বলে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কবির হোসেন নিশ্চিত করেছেন।
ওসি বলেন, কুয়েটের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন, প্রো-ভিসি ড. সোবহান মিয়া, কুয়েট ছাত্রলীগের (বর্তমানে নিষিদ্ধ ঘোষিত) সাবেক সভাপতি সাফায়াত হোসেন নয়নসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। গত সোমবার (১৪ এপ্রিল) খানজাহান আলী থানায় মামলা দুটি নথিভুক্ত করা হয় বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
মামলা দুটির বাদী কুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থী লুৎফর রহমান ও মাহদী হাসান।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) মামলার নথিপত্র আদালতে পাঠানো হয়। মামলার এজহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১৭ সালের পয়লা মে রাতে কুয়েটের লালন শাহ হলের গেস্ট রুমে লুৎফর রহমান নামের এক শিক্ষার্থীকে রাতভর মারপিট করা হয়। এতে ওই শিক্ষার্থীর দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে যায়। একই রাতে মাহদী হাসান নামের ওপর শিক্ষার্থীকে মারপিট করা হয়। এতে তার চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
আরো পড়ুন
ভিসির পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, পাল্টা অবস্থানে শিক্ষকরা
এ ঘটনার দীর্ঘ আট বছর পর চলতি বছর ১৬ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগীরা খুলনা মহানগর হাকিমের আদালতে মামলার আবেদন করেন। আদালত থানাকে মামলাটি গ্রহণের নির্দেশ দিলে সোমবার (১৪ এপ্রিল) মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়।
লুৎফর রহমানের মামলায় সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন, প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. সোবহান মিয়া, সাবেক রেজিস্ট্রার জি এম শহিদুল ইসলাম, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাফায়েত হোসেন নয়ন, সাধারণ সম্পাদক আলী ইমতিয়াজ সোহান, ছাত্রলীগ কর্মী মো. আসাদুজ্জামান, লালন শাহ্ হলের তৎকালীন ছাত্রলীগ কর্মী ও পরবর্তী কুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি রুদ্রনীল সিংহ শুভ, ছাত্রলীগ নেতা এইচ এম তানভীর রেজওয়ান সিদ্দিক, আল ইশমাম, রেশাদ রহমান, তারিকুল তিলক, পরিমল কুমার রায়, আলী ইবনুল সানি, তারিক আহমেদ শ্রাবন ও দৌলতপুর থানার তৎকালীন অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেনকে আসামি করা হয়।
আরো পড়ুন
বিদেশে বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ ৪ নেতার বৈঠক, যা বলছেন দল দুটির নেতারা
এছাড়া মাহদী হাসানের মামলায়ও তৎকালীন ভিসি, প্রো-ভিসি, রেজিস্ট্রার, ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতা আলী ইবনুল সানি, কুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান, বঙ্গবন্ধু হলের (বর্তমান নাম শহীদ স্মৃতি হল) ছাত্রলীগ কর্মী আবির স্বপ্নিল, তাশরিফ সালেহ রাহুল, ফয়সাল, মশারুর আলম কৌশিক, আসাদুজ্জামান রিয়ান, পরিমল কুমার রায়, তারিক আম্মেদ শ্রাবন, দৌলতপুর থানা শাখার সাবেক সভাপতি এস এম আনোয়ার হোসেনকে আসামি করা হয়।
মামলা দুটি রেকর্ড হওয়ার পর আদালতে কাগজপত্র পাঠানোর পর বিষয়টি প্রকাশ পায়। এখন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও ওসি জানান।