আখেরি মুনাজাতের মাধ্যমে সমাপ্ত হলো ঐতিহাসিক চরমোনাই মাদরাসা ময়দানে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ফাল্গুনের মাহফিল। আজ শনিবার সকালে সমাপনী অধিবেশন ও আখেরি মুনাজাতের মাধ্যমে সমাপ্ত হয় লাখ লাখ মুসল্লির আধ্যাত্মিক এ মিলনমেলা।
এর আগে গত বুধবার বাদ জোহর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাইয়ের উদ্বোধনী বয়ানের মাধ্যমে মাহফিল শুরু হয়। মাহফিলে আসা মুসল্লিদের মধ্যে ১০ জন বার্ধক্যজনিত ও হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
আরো পড়ুন
নাজিরপুরে জনতার হাতে ভুয়া পুলিশ আটক
সমাপনী অধিবেশনের বয়ানে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ‘মানুষ আজ আল্লাহকে ভুলে নাফরমানি করছে অহরহ। অথচ একজন মানুষ কবরে গিয়ে মাফ না পাওয়া পর্যন্ত নিজেকে নিকৃষ্ট পশুর মতো মনে করতে হবে। সুতরাং তাক্বওয়া বা আল্লাহর ভয় অর্জনের মাধ্যমে মহান রবের সন্তুষ্টি নিয়ে কবরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে। আল্লাহর ভয় যার অন্তরে নেই, ওই মানুষ, এমনকি আলেম, মুফতী ও পীরের কোনো মূল্য নেই।
'
চরমোনাই পীর আরো বলেন, ‘নিজেকে নিজে ছোট মনে করতে হবে। আমিত্ব ভাব ও তাকাব্বুরি পরিত্যাগ করতে হবে। হিংসা-বিদ্বেষ পরিত্যাগ করতে হবে। ঘোড়ার মুখে যেভাবে লাগাম থাকে, সেভাবে রাগের মুখে লাগাম লাগাতে হবে।
সকাল-সন্ধ্যা জিকিরের মাধ্যমে ক্বলব পরিশুদ্ধ করতে হবে। গিবতের মতো গুনাহ থেকে বেঁচে থাকতে হবে।'
আরো পড়ুন
কুয়েট উপাচার্যকে লাঞ্ছিত করায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের নিন্দা
সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম আরো বলেন, ‘পরিবারের সবাইকে দ্বীন শিক্ষা দিয়ে দ্বীনের পাবন্দি করতে হবে। পরিবারে খাছ পর্দা জারি করতে হবে। সকল প্রকার নেশাজাত দ্রব্য থেকে বেঁচে থাকতে হবে।
আল্লাহওয়ালাদের কিতাব পড়তে হবে। সাপ্তাহিক হালকায়ে জিকির ও তালীমে নিয়মিত অংশ নিতে হবে। সহিহশুদ্ধভাবে কোরআন তিলাওয়াত করতে হবে।'
সমাপনী অধিবেশনের বয়ানে পীর সাহেব চরমোনাই মাহফিল বাস্তবায়নে সম্পৃক্ত সবার প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। আখেরি মুনাজাতে অংশ নেওয়া প্রশাসনিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, সম্মানিত ওলামায়ে কেরাম এবং গণমাধ্যমকর্মীদের মোবারকবাদ জানান তিনি।
আরো পড়ুন
বৈষম্যবিরোধীদের নতুন ছাত্রসংগঠনের আত্মপ্রকাশ আজ
আখেরি বয়ানের পর পীর সাহেব চরমোনাই বিভিন্ন লিখিত প্রশ্নের উত্তর দেন। এ সময় তিনি মুরিদানদের সঠিক পথে পরিচালিত হওয়ার বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করেন। তিনি তাওবা করে গুনাহ থেকে বাঁচার শপথ করান।
আখেরি মুনাজাতে পীর সাহেব চরমোনাই ফিলিস্তিন, ভারত, কাশ্মীর, মায়ানমার, সিরিয়াসহ বিশ্বের নির্যাতিত মুসলমানদের নিরাপত্তা ও সমগ্র মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা করেন।
আরো পড়ুন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক তানজিম বহিষ্কার
এ বছর মাহফিলে মূল সাতটি বয়ানের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ বয়ান পেশ করেন বাংলাদেশসহ সৌদি আরব, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, মিসর, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও তুরস্কের বিশিষ্ট ওলামায়ে কেরাম।