প্রেমের অভিনয় করে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে আব্দুল্লাহ আল কাফি নামে এক যুবকের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া ও প্রতিনিয়িত ব্ল্যাকমেইল করার অভিযোগে সানজিদা তাবাসুম স্বর্ণা (২৬) নামের এক তরুণীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরের দিকে বরগুনার পাথরঘাটা থানা এলাকা থেকে র্যাবের সহায়তায় স্থানীয় থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। এর আগে ১০ এপ্রিল কাফি ওই তরুণীর প্রতারণার দায়ে নারায়ণগঞ্জের সিদ্বিরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।
বর্তমানে গ্রেপ্তার তরুণী পাথরঘাটা থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে এবং সিদ্বিরগঞ্জ থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান থানার এসআই মো. ওসমান।
আরো পড়ুন
সরিষাবাড়ীতে সাবরেজিস্ট্রি অফিসে দুদকের অভিযান
তিনি জানান, সিদ্বিরগঞ্জ থানার এক মামলায় তাকে র্যাবের সহায়তায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসলে তার কাছে হস্তান্তর করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, স্বর্ণা রাজধানীর একটি ডেন্টাল কলেজে পড়াশোনা করেছেন। বর্তমানে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন।
তবে চাকরির আড়ালে বিত্তবানদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল ও অর্থ আত্মসাতের মতো প্রতারণা করছেন তিনি।
মামলার বাদী ও এজাহার সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃত তরুণী স্বর্ণার বাড়ি বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায়। তিনি রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় বসবাস করেন। অন্যদিকে, বাদী কাফি একজন চাকরিজীবী।
ফেসবুকে পরিচয়ের এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
প্রেমের সম্পর্কে জড়ানোর পর স্বর্ণার কথামতো কাফি তাকে নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যেতেন। সে সময় কৌশলে স্বর্ণা তাদের দুজনের ঘনিষ্ঠ মুহুর্তের ছবি তুলে রাখতেন। এক পর্যায়ে বিভিন্ন অজুহাতে কাফির কাছে স্বর্ণা ধারের কথা বলে টাকা চাইতেন এবং কাফি সরল বিশ্বাসে টাকা দিতেন।
মামলার বাদী কাফি জানান, বিভিন্ন সময় স্বর্ণাকে দেওয়া টাকা একটা সময় ফেরত চাইতে গেলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে উল্টো তাকে নগদ ২০ লাখ টাকা না দিলে তার কাছে ধারণকৃত ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেবেন বলে হুমকি দেন।
তখন, কাফি আত্মসম্মানের ভয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে বিভিন্ন সময় ১০ লাখ দেন। তারপর গত ২২ মার্চ সকালে সিদ্বিরগঞ্জ মৌচাক বাস স্টেশনে এসে আবার স্বর্ণা টাকা চান এবং টাকা না দিলে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার হুমকি দেন।
কাফি কালের কণ্ঠকে বলেন, স্বর্ণা একজন ঠক ও প্রতারক। তিনি শুধু আমার সঙ্গে নয়, আরো বিভিন্ন পেশার ছেলেদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রতারণার মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তার সাথে প্রতারণার কাজে আরো দুই-তিনজন জড়িত। তার মা নিজেও বিষয়টি জানেন এবং তার বিকাশ নম্বরেই যেত প্রতারণার টাকা। ভুক্তভোগী নানা ভয়ে মুখ খুলতে পারছেন না। আমিও বর্তমানে তার (স্বর্ণা) হুমকির কারণে নিরাপত্তাহীনতায় আছি। শুনেছি পুলিশ ও র্যাব তাকে গ্রেপ্তার করেছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অনুরোধ তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিদ্বিরগঞ্জ থানার ওসি শাহিনূর আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘একটি মামলায় তরুণী স্বর্ণাকে পাথরঘাটা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেখান থেকে তাকে আনার প্রক্রিয়া চলছে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরণের প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। আরো বিস্তারিত গ্রেপ্তারকৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তদন্ত সাপেক্ষ জানা যাবে।’