চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ২১ পদের বিপরীতে ২১ জন মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। তারা প্রত্যেকে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত প্যানেল ঐক্য পরিষদের আইনজীবী। আওয়ামীপন্থী আইনজীবীদের অভিযোগ, বাধার মুখে তারা মনোনয়ন নিতে পারেননি।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ২১টি পদের জন্য বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীরা ‘ভাগাভাগি’ করে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
তাদের সবার মনোয়ন বৈধ হয়েছে বলে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে। আগামী ১৬ এপ্রিল সমিতির নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় তাদের আজ শনিবার বিজয়ী ঘোষণা করা হবে। সবকটি পদেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন বিএনপি ও জামায়াতপন্থী আইনজীবীরা।
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির মুখ্য নির্বাচনী কর্মকর্তা তারিক আহমদ বলেন, ‘সভাপতি ও সম্পাদকসহ ২১ পদের বিপরীতে ২১ জন মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। যাচাই-বাছাই শেষে ২১ জনের মনোনয়ন বৈধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। তাদের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। আনুষ্ঠানিকভাবে শনিবার তাদের বিজয়ী ঘোষণা করা হবে।
’
আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সভাপতি আবদুস সাত্তার, সাধারণ সম্পাদক হাসান আলী চৌধুরীসহ ১৪ জন বিএনপি সমর্থিত। আর সহসভাপতি আলমগীর মোহাম্মদ ইউনুসসহ সাতটি পদ জামায়াত সমর্থিত।
এদিকে বৃহস্পতিবার জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আওয়ামীপন্থী আইনজীবীদের মনোনয়ন নিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেছেন। এই বিষয়ে চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। আওয়ামীপন্থী আইনজীবী সভাপতি প্রার্থী আবদুর রশিদ, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ফখরুদ্দিন চৌধুরীসহ চারজন প্রার্থীর সই করা লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়।
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামীপন্থী আইনজীবীদের সমন্বয়কারী এএইচএম জিয়া উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর ও বিকেলে আমরা বেশ কয়েকবার সমিতির লাইব্রেরি থেকে মনোনয়ন ফরম কিনতে গিয়েও বিএনপি ও জামায়াতপন্থী আইনজীবীদের বাধার কারণে মনোনয়ন নিতে পারি নাই। নির্বাচন কমিশনকে ফোন দিয়েছি, রিসিভ করেননি। চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির ইতিহাসে এই ঘটনা আর ঘটেনি।
উল্লেখ্য, গত ১০ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। ভোটের মাত্র ৬ দিন আগে ৪ ফেব্রুয়ারি সেই সময়ের নির্বাচন কমিশনের ৫ সদস্য পদত্যাগ করেছিলেন। তখনো আওয়ামীপন্থী আইনজীবী ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তখন তারা পদত্যাগ করেন। এরপর গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সমিতির সাধারণ সভায় ৫ সদস্যের একটি অ্যাডহক কমিটি গঠন করা হয়। পরদিন ১৭ ফেব্রুয়ারি অ্যাডহক কমিটিকে দায়িত্ব হস্তান্তর করা হয়। চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির বিধান অনুসারে ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। নির্বাচন উপলক্ষে গত ১৮ মার্চ নির্বাচন কমিশন গঠন করে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটি।