আকাশে মেঘ জমছে প্রতিদিন, মাঠ-বিল জুড়ে রয়েছে নয়নাভিরাম পাকা ধান। চলতি বোরো মৌসুমে বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু সেই ফলন এখন বাড়িতে আনা দায়। খালে কচুরিপানা থাকার কারণে ধান বাড়িতে আনা যাচ্ছে না।
মাঠের ধান আনতে কচুরিপানার বাধা
চিতলমারী-কচুয়া (বাগেরহাট) প্রতিনিধি

মাঠে পাকা ধান কাটার চাপ এবং কচুরিপানায় খাল আটকে থাকায় ধান নৌকায় চড়িয়ে বাড়ি আনতে না পারার দুশ্চিন্তা রয়েছেন কৃষকরা। এ ছাড়া ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কায় তো আছেই।

টেম্পো মালিক সমিতির নির্বাচনে ব্যালট পেপার ছিনতাই-আগুন
পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ উপজেলা প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করে ভুক্তভোগীরা বলেন, ‘বৃষ্টির আগে মাঠের ধান কেটে বাড়িতে আনতে না পারলে মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে।
কচুরিপানা অপসারণে সরকারের জরুরি সাহায্য দাবি করে রায়গ্রাম এলাকার কৃষক নূর মোহাম্মদ শেখ, দীনেশ রায়, বিকাশ হালদারসহ অনেকে বলেন, ‘ধান পেকে গেলেও খালে কচুরিপানার কারণে নৌকা দিয়ে ধান আনতে পারছি না। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন, বৃষ্টি নামলে মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যাবে। আমাদের মেম্বার মোস্তফা তালুকদার ভাই বাঁশতলা খালের কিছু কচুরিপানা অপসারণ করেছেন।

চিকিৎসকের কথা শুনেই অসুস্থ হয়ে গিয়েছিলেন সাইফ!
নুর মোহাম্মদ শেখ তার ধানি ক্ষেত ও বাঁশতলা খালের মাঝখানে আলে (রাস্তা) বসে বলেন, ‘কিভাবে যে ঘরে ধান নেব মাথায় কোনো কাজ করছে না। এই খালে কয়েক শ নৌকায় কচুরিপানা আটকে আছে।
জরুরিভাবে সরকারি বরাদ্দ দরকার বলে জানিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোস্তফা তালুকদার বলেন, ‘কৃষকরা তাদের পাকা ধান যাতে সহজে ঘরে নিতে পারেন সে জন্য ইতোমধ্যে বাঁশতলা খালের কিছুটা জনগণ নিয়ে পরিষ্কার করেছি। একটা মেশিন স্থানীয়ভাবে তৈরির কাজ চলছে। যা দিয়ে কচুরিপানা দ্রুত অপসারণ করা যাবে। কিন্তু আর্থিক সংকটে বাঁশতলা, গাবতলাসহ অন্য অন্য খালের কচুরিপানা অপসারণ করা সম্ভব হচ্ছে না।’

আদানির বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ, লোডশেডিং সাড়ে ৪০০ মেগাওয়াট
চিতলমারী সদর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ নিজাম উদ্দিন বলেন, কৃষকর জরুরি সংকটের কথা মোস্তফা মেম্বারে কাছ থেকে শুনেই আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বাঁশতলা, গাবতলা, ডোবাখালী, নারায়ণ খালীসহ কয়েকটি খালের কচুরিপানা জরুরিভাবে অপসারণে জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড ও চিতলমারী উপজেলার প্রশাসনে আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন।'
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সিফাত আল মারুফ মোবাইলে জানান, অন্য অন্য বছর কৃষকরা স্লুইসগেট হতে লবণ পানি ঢুকিয়ে খালের কচুরিপানা মারতো তাতে উপকারে থেকে বেশি ক্ষতি হতো। এবার কৃষকেরা লবণ পানি না ঢুকানো বেশি লাভবান হয়েছে। কৃষক যাতে তাদের পাকা ধান ভালোভাবে ঘরে তুলতে পারে, তার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। এ বছর ১২ হাজার ১২৩ হেক্টর জমিতে ধান হয়েছে।

ফিলিস্তিনের শান্তি কামনায় শেষ হলো ‘মার্চ ফর গাজা’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাপস পাল জানান, দেশের অর্থনীতিতে চিতলমারী কৃষক ধান, সবজি ও মাছ চাষে ব্যাপক অবদান রাখছেন। চলতি মৌসুমে ধান যাতে কৃষক ঝড়বৃষ্টির মৌসুমের আগে ঘরে তুলতে পারে সেই জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। খালগুলো কচুরিপানা জরুরভাবে অপসারণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সম্পর্কিত খবর

হাওরে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে প্রাণ গেল দুজনের
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার শিবপাশা গ্রামের গুইরালী হাওরে ধান কাটার সময় দুই দাওয়াল (ধান কাটা শ্রমিক) নিহত হয়েছেন।এতে আহত হয়েছেন আরো তিনজন। বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত দাওয়ালরা হলেন চাপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মহববাগ গ্রামের কাছিম মণ্ডলের ছেলে কাফি মণ্ডল (২৪) ও ভাদু ঘোষের ছেলে মনিরুল ঘোষ (২২)।
আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিবিড় রঞ্জন তালুকদার জানান, বুধবার বিকেলে বজ্রসহ বৃষ্টি হলে বজ্রপাতে ৫ জন আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়।
ইউএনও জানান, সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতদের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

রাজারহাটে কালের সাক্ষী ‘অচিনগাছ’
রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

কুড়িগ্রামে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে একটি পরিচয়হীন গাছ। ডাল পাতায় ঘেরা বিশাল আকৃতির গাছটি বেড়ে উঠছে। অথচ গাছটির নাম পরিচয় কেউ জানে না। এমন গাছের দেখা মিলেছে রাজারহাট উপজেলায় উমর মজিদ ইউনিয়নের জয়দেব হায়াত গ্রামের দর্পণ নারায়নের বাড়িতে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে কখনো গাছটির ডাল ভেঙে পড়ার কথা এলাকার লোকজন জানেন না। গাছটিতে পাইকোর ফলের মতো গোটা গোটা ফল ধরে এবং এসব ফল পশু-পাখি খায়। এ গাছ থেকে ফল মাটিতে পড়লেও কোনো ফল থেকে নতুন গাছ জন্মায় না। অনেক আগে গাছটিতে বিশাল আকৃতির বিষাক্ত সাপ বসবাস করতো।
গাছটিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির। প্রতি সন্ধ্যায় পাশের ও দূরদূরান্তের সনাতন ধর্মের লোকজন আসেন। তারা মানত করে গাছের গোড়ায় পূজা-অর্চনা করেন এবং দান বাক্সে দক্ষিণা দেন।
বর্তমানে গাছটি অযত্ন, অবহেলা ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে চারদিক জঙ্গলে পরিপূর্ণ হয়েছে। গাছটির পাতা সবুজ। তবে পাতাগুলো ডুমুর পাতার মতো হলেও খসখসে নয়, মসৃণ। সারা বছর গাছে পাতা দেখতে পাওয়া যায়।
স্থানীয়রা জানায়, প্রায় ১৫ থেকে ১৬ বছর আগে রাজারহাট উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গাছটির গোঁড়া পাকা করে দেওয়ার পর কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন থেকে ২০১৬ সালে গাছটির চারপাশ সৌন্দর্য বর্ধন করে। কিন্তু আধুনিকভাবে সংস্কার না করা আর যত্নের অভাবে সেগুলো নষ্ট হওয়ার পথে। রূপকথার মতো গাছটিকে ঘিরে স্থানীয়দের লোকমুখে নানা গল্পকথা শোনা যায়।
অনেকের ধারণা, বর্তমান ভারতের আসাম রাজ্যের কামরূপ-কামাখ্যা থেকে আগত একদল জাদুকর গাছটি চোখের পলকে উড়িয়ে এনে বর্তমান স্থানে লাগিয়ে দেন। গাছটির নাম কেউ জানতেন না। তখন থেকেই গাছটি ‘অচিনগাছ’ নামে পরিচিত। অপর এক পৌরাণিক কাহিনি থেকে জানা যায়, কোনো এক অজানা পীর সুদূর পশ্চিম দিক থেকে গাছটির চারা এনে এখানে রোপণ করেছিলেন। সে কারণেই গাছটি কেউ চিনছেন না। তবে গাছটির যে একটি ঐতিহাসিক রহস্য রয়েছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মীর্জা মো. নাসির উদ্দিন বলেন, অচিনগাছটির নাম শুরুতে সবার কাছে অজানা ছিল। আমি গত ৫-৭ বছর ধরে গাছটির নাম অনুসন্ধান করার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে নিশ্চিত হই গাছটির নাম রয়েছে। গাছটি মরীচি পরিবারের ফিকাস গণভুক্ত একটি গাছ। গাছটির বৈজ্ঞানিক নাম ফিকাস ল্যাকর বুক-হাম।
রাজারহাট উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আল ইমরান বলেন, গাছটি দৃষ্টি ও সৌন্দর্য বর্ধন। এটি সংরক্ষণে যা যা করা সম্ভব উপজেলা প্রশাসন সব প্রয়োগ করবে।

চট্টগ্রাম জেলা রেজিস্ট্রার অফিসে দুদকের অভিযান
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম জেলা রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে দলিল রেজিস্ট্রেশন, নকল উত্তোলনসহ অন্যান্য কাজে সেবা প্রার্থীদের হয়রানি এবং ঘুষ দাবিসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুদক জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১এর কর্মকর্তারা এই অভিযান পরিচালন করেন।
অভিযান পরিচালনা শেষে দুদক জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১এর সহকারী পরিচালক সায়েদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখানে জেলা রেজিস্ট্রার হিসেবে মিশন চাকমা নামে একজন ছিলেন। ওনার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল।
তিনি আরো বলেন, ‘এখানকার কিছু কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল। তাদের ব্যক্তিগত নথি তলব করেছি।
রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা টাকা দাবি করেন এই প্রশ্নের জবাবে দুদক কর্মকর্তা বলেন, ‘এই অভিযোগ আমরাও শুনেছি। সরেজমিনে অভিযানে এলে সবাই সতর্ক হয়ে যায়। গোপনে আসলে কিছুটা অভিযোগ পেয়ে থাকি। আমরা এগুলো নিয়ে কাজ করছি। মানুষের মধ্যে সচেতনতা করার চেষ্টা করছি। যেন ঘুষ চাইলে ঘুষ না দেওয়া হয়।’

পার্বতীপুর পাথরখনিতে পরে শ্রমিকের মৃত্যু
দিনাজপুর প্রতিনিধি

দিনাজপুরের পার্বতীপুরে মধ্যপাড়া পাথরখনির ভূগর্ভে কর্মরত অবস্থায় সোহাগ বাবুল (৪৩) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় মধ্যপাড়া পাথর খনির ভূগর্ভে কাজ করার সময় ভেন্টিলেশন লেভেল থেকে পরে গিয়ে ওই শ্রমিকের মৃত্যু হয়।
নিহত শ্রমিক সোহাগ বাবুল রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার বড়বারা ইউনিয়নের ঘিয়াইল মালতলা গ্রামের বাসিন্দা।
জিটিসি কর্তৃপক্ষ জানান, শ্রমিক সোহাগ বাবুল কর্মরত অবস্থায় অসাবধানতা বসত ভেন্টিলেশন লেভেল থেকে পড়ে যায়।
এদিকে শ্রমিকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সোহাগ বাবুল সকাল সাড়ে দশটায় ভেন্টিলেশন লেভেল থেকে পড়ে যায়।
পার্বতীপুর মধ্যপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির তদন্তকারী কর্মকর্তা হারুণ অর রশিদ খনিতে শ্রমিক মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।