<p>রাজধানীর পল্লবী থানায় তদন্তাধীন একটি মামলায় বাদী নিজে ছাড়াও দুজনকে সাক্ষী করা হয়। সে সাক্ষীরা মামলার ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে জানান। এর মধ্যে তানভীর শেখ নামে এক সাক্ষী মামলার বাদীর বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।</p> <p>সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) দেওয়া অভিযোগে ‘না জানিয়ে সাক্ষী হিসেবে নাম দেওয়ার কারণে বাদীর নামে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। এর আগে গত ৩০ অক্টোবর রাজধানীর মিরপুর বাংলা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তফা কামাল খোশনবীশের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন প্রতিষ্ঠানটির সাগরিকা বেগম মনি (৩৫) নামে এক সাবেক আয়া। </p> <p>মামলার সাক্ষী ও প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারী তানভীর শেখ বলেন, ‘এই মামলার ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। আমাকে না জানিয়ে কেন সাক্ষী বানানো হলো। তিনি তো (মনি) ২০২২ সালে চাকরি থেকে পদত্যাগ করে চলে গেছেন, এরপর কোনোদিন তাকে দেখিনি। আমাকে সাক্ষী দেওয়ায় বাদীর বিরুদ্ধে আইনগত বিচার চাই।’</p> <p>মামলার ২নং সাক্ষী লতিফ মোল্লাও মামলার উল্লেখিত ঘটনার বিষয়ে জানেন না জানিয়েছেন। তিনি বলেন, যে বিষয়ে মামলা করছে এর আগে-পেছনে কিছুই জানি না। আমাকে কীভাবে সাক্ষী হিসেবে রাখে?  </p> <p>এদিকে মামলার বাদী অভিযোগে জানিয়েছেন, অধ্যক্ষ মোস্তফা কামাল জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের দৃশ্য গোপনে ধারণ করে সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। </p> <p>সাক্ষীর অভিযোগের বিষয়ে পল্লবী থানার ওসি মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মামলার তদন্তে সাক্ষী না পাওয়া গেলে সেভাবেই তদন্ত প্রতিবেদন দেব, সাক্ষী পাওয়া যায়নি। সাক্ষীতো আমরা বানাতে পারব না।’</p> <p>বাদী উল্লেখ করেছেন, সুযোগ পেলেই কাজের ফাঁকে মোস্তফা কামালের স্ত্রী অসুস্থ অজুহাতে আয়াকে দিয়ে নিজের ঘরের কাজ করাতেন। এ অবস্থায় ১৭ জুলাই মোস্তফা কামালের স্ত্রী ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমানো অবস্থায় আয়াকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন।</p> <p>বাদী উল্লেখ করেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের লিটন নামে এক পিওন ভুক্তভোগী ওই আয়ার বিষয়টি জেনে ফেলায় মোস্তফা কামালের অত্যাচারে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়।</p> <p>ওদিকে মৃত পিওন লিটনের স্ত্রী সীমা মঙ্গলবার কালের কণ্ঠকে বলেন, আমার স্বামী লিটনের সঙ্গে সাগরিকা মনির পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। সে আমার স্বামী আত্মহত্যার পেছনে একমাত্র প্ররোচনাকারী। স্বামীকে প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে দামি মোবাইলসহ টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিয়ে ধোঁকা দেয়। তা সহ্য করতে না পেরে আমার স্বামী আত্মহত্যা করে। </p> <p>এসব বিষয়ে মঙ্গলবার সাগরিকা বেগম মনির সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মোবাইলে এসব বিষয়ে কেন কথা বলব? সরাসরি দেখা করে যোগাযোগ করলে কথা বলবেন বলে লাইন কেটে দেন।’</p> <p>সার্বিক বিষয়ে অধ্যক্ষ মোস্তফা কামাল খোশনবীশ বলেন, ২০২২ সালের ১২ জুলাই ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সমস্যা দেখিয়ে সাগরিকা বেগম মনি চাকরি থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর সে কোনোদিন প্রতিষ্ঠানে আসেনি। কিন্তু ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে সে বিভিন্ন মাধ্যমে ৭ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে। এর মধ্যে মিজানুর রহমান মোল্লা নামের এক সাংবাদিকের মাধ্যমেও চাকরি ছাড়ার পর ক্ষতিপূরণ বাবদ ৭ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। একই সময়ে কলেজের একটি চক্র আমার চেয়ার দখল করতে না পেরে মনিকে ব্যবহার করে মিথ্যা মামলা দেবে বলে হুমকি দেওয়ায়। যার কিছু অডিও রেকর্ড আছে। সে প্রেক্ষিতে আমি গত ২৪ সেপ্টেম্বর থানায় একটি জিডি করি।</p> <p>তিনি আরো বলেন, ৭ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে আমি জিডি করার এক মাস পর মিথ্যা মামলা করেছেন আমার নামে। আমি এর সুষ্ঠু তদন্ত চাই।</p>