দুই যুগেরও বেশি সময়ের ক্যারিয়ার। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেকে ভেঙে প্রতিবারই গড়ছেন নতুন করে। যার দরুন এখনো তিনি সবার কাছে প্রিয়, একই সঙ্গে ভীষণ জনপ্রিয়; বলছি আব্দুন নূর সজলের কথা। নাটক ছেড়ে সিনেমায় থিতু হয়ে কুড়াচ্ছেন প্রশংসা।
ওটিটিতে ‘দ্য সাইলেন্স’ ও ‘রুমি’র পর বড় পর্দায় ‘জ্বীন’ এবং ‘১৯৭১ : সেইসব দিনগুলি’ দিয়ে হন প্রশংসিত। সেই ধারাবাহিকতায় আসন্ন ঈদে মুক্তি পাচ্ছে তার অভিনীত ‘জ্বীন’-এর তৃতীয় সিক্যুয়াল ‘জ্বীন ৩’।
‘জ্বীন’-এ কাজ করেছিলেন। এর পরের সিক্যুয়ালে আপনাকে দেখা যায়নি।
এখন তার পরের কিস্তিতে থাকছেন আপনি। এবারের সিক্যুয়ালের রহস্যটা কী?
রহস্য তো অবশ্যই কিছু একটা আছে। যেটা দর্শকেরা অনুমানও করতে পারবেন না। এই ছবিটাতে এত পরিমাণ টুইস্ট রয়েছে, যা দেখে দর্শকরাও অবাক হবেন।
এখন সেই টুইস্টটা কী জানতে হলে সিনেমা দেখতে হবে।
‘জ্বীন ৩’ সিনেমাটি থেকে আপনার প্রাপ্তি কী, কেমন ছিল এই ছবিটিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা?
সিনেমাটির আগের দুই কিস্তি দর্শকদের কাছ থেকে অভাবনীয় ভালোবাসা পেয়েছে, যে কারণে ‘জ্বীন ৩’ নিয়ে আসা। প্রাপ্তি আসলে অনেক কিছু। সবাই চায়, একটা সুন্দর গল্পে কাজ করা। চমৎকার একটা গল্প পেয়েছি।
তা ছাড়া এখানে আমার সঙ্গে সহশিল্পী হিসেবে যুক্ত হয়েছে ফারিয়া (নুসরাত ফারিয়া)। ভীষণ মিষ্টি একটা মেয়ে। কাজ করেও ভালো লেগেছে।
অভিজ্ঞতার কথা যদি বলি, এবারের গল্পটা যেহেতু একটু আলাদা, তাই পরিশ্রমের মাত্রাটাও ছিল অতিরিক্ত। প্রত্যেকটা শিল্পী অনেক এফোর্ট দিয়ে কাজটি করেছেন। কোনো ঘুম নেই, বিরতি নেই। সবাই যথেষ্ট পরিশ্রম করেছেন কাজটার জন্য। অবশেষে কাজটা যখন সামনে আসছে তখন সত্যি ভালো লাগছে, যখন দর্শকরা প্রকাশ্যে আসা কনটেন্টগুলো দেখে প্রশংসা করছেন তখন মনে হচ্ছে যে, কষ্ট কিছুটা হলেও কাজে দিয়েছে।

এখানে আপনার জন্য চ্যালেঞ্জ কী ছিল?
এবারের গল্পটাতে পরিশ্রমী দৃশ্য বেশি ছিল। গল্প রিভিল হয়ে যাবে দেখে এখন কিছু বলতে পারছি না। এতটুকু বলতে পারি, যে যে দৃশ্য দর্শকদের সামনে আসবে মনে দাগ কাটবে।
অনেকটা হুট করেই সিনেমাটির ঘোষণা দেওয়া, এরপর দ্রুত শুটিং শেষ করে সেটাকে প্রেক্ষাগৃহে নিয়ে আসছেন। এতে করে কাজের মান কতটা বজায় থাকছে বলে মনে করেন?
হুট করে ঘোষণা দেওয়া বলতে পারেন। কিন্তু এটা নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা চলছিল মাস কয়েক আগে থেকেই। আমরা সেভাবে প্রস্তুতি নিয়েই আগাচ্ছিলাম। এক মাসের মতো রিহার্সেলও করেছি। তারপরে শুটিংয়ে গিয়েছি। সে জন্য খুব একটা সমস্যা হয়নি। কাজের মানের ক্ষেত্রেও কোনো কম্প্রোমাইজ ছিল না। তবে এটা সত্যি, যেহেতু ছবিটা ঈদের জন্য তাই আমাদের হাতে সময়টা কম ছিল।
.jpeg)
সদ্যই উন্মুক্ত হয়েছে সিনেমাটির প্রথম গান ‘কন্যা’। কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
অভাবনীয় সাড়া পাচ্ছি। গানটি রিলিজ হয়েছে মাত্র এক দিন হলো, অথচ ফেসবুকে ঢুকলেই দেখছি ফেসবুক পুরো কন্যাময়। সাধারণ দর্শক থেকে শুরু করে আমার সহকর্মীরাও গানটি শেয়ার দিয়েছেন। পাশাপাশি ফোনে, মেসেজে তাদের ভালো লাগার কথা জানাচ্ছেন। গানটি সবাই পছন্দ করবেন, এমন একটা ধারণা ছিল কিন্তু এত বেশি পছন্দ করবেন বুঝতে পারিনি।
গানটির শুটিং করেছিলাম ৫ দিন। বাগেরহাট ও খুলনায় শুটিং করেছি। গানটার শুট করার আগে আমি বেশ অসুস্থ ছিলাম। ভোকাল কর্ডে ইনফেকশন হয়েছিল, সেখান থেকে জ্বর এসেছিল। শরীরও নড়াতে পারছিলাম না। জ্বর প্রায় প্রতিদিন ১০৩ থেকে ১০৪ ডিগ্রি ছিল। যেহেতু গানের ডেট আগে থেকে দেওয়া ছিল সে জন্য কাজটি করা ছাড়া কোনো অপশন ছিল না। ডাক্তার একদম কথা বলতে নিষেধ করেছিলেন, এক সপ্তাহ সম্পূর্ণ বেড রেস্টে থাকতে বলেছিলেন। ওই অবস্থাতেই শুটিংয়ে যাই এবং ১০৩ ডিগ্রি জ্বর নিয়েই গানে পারফরম করেছিলাম এবং আমি রোজা ছিলাম। অসুস্থ হলেও রোজা ভাঙিনি। পুরো টিম অনেক বেশি সাপোর্টিভ ছিল, প্রতি মুহূর্তই পাশে ছিল, যার কারণে জ্বরের মধ্যেও যে কাজ করেছি সেটা বুঝতে পারিনি।
এবার ঈদে আপনার সিনেমা ছাড়া আরো অনেকেরই সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে। আপনি কোনো চাপ অনুভব করছেন কি?
অনেকগুলো ভালো ছবি আসছে এবারের ঈদে। আফরান নিশো, সিয়াম আহমেদ এবং শাকিব ভাই (শাকিব খান) প্রত্যেকেই আমার ভীষণ প্রিয়। তাদের ছবির টিজারগুলো দেখেছি, আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। সব মিলিয়ে আমার কাছে মনে হয়েছে, একটা জমজমাট ঈদ। আমি তাদের তিনটা ছবিই দেখতে যাব।
আমাদের ‘জ্বীন ৩’-এর কনটেন্ট এখন পর্যন্ত যা এসেছে, দর্শকদের রেসপন্সে আমি অনেক খুশি। আমরা সবাই চাই যেন আমাদের সবার কাজগুলো ভালো যাক। এখানে তো দোষের কিছু নেই। প্রত্যেকের কাজের পেছনেই কিন্তু একটা এফোর্ট থাকে। সেই জায়গা থেকে চেষ্টা, সবার প্রজেক্ট আসুক এবং সেগুলো ভালো চলুক। দর্শকরা ঘুরেফিরে সবগুলো ছবি দেখুক, এটাই চাই।