প্রাকৃতিকভাবে পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ এক অসাধারণ শুকনা ফল কিশমিশ। এটি আবার মুনাক্কা নামেরও পরিচিত। শুধু স্বাদেই অনন্য নয়, বরং স্বাস্থ্যের জন্যও অত্যন্ত উপকারী কিশমিশ। বিভিন্ন ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি নানা রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিশমিশ সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খেলে এর উপকারিতা বহুগুণ বেড়ে যায়। আসুন, জেনে নেওয়া যাক কিশমিশের কিছু অলৌকিক উপকারিতা।
ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর
কিশমিশে উপস্থিত ভিটামিন সি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। এটি ক্ষতিকর ফ্রি-র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করে, যা কোষের ক্ষতি করে এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
নিয়মিত কিশমিশ খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং ক্যান্সারের মতো জটিল রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়।
আরো পড়ুন
স্তন্যদানকারী মায়েদের রোজায় করণীয়
হৃদযন্ত্রের সুরক্ষায় সহায়ক
কিশমিশ হৃদরোগ প্রতিরোধেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এতে থাকা উচ্চমাত্রার পটাশিয়াম, ফাইবার ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এটি রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে, যা হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।
রক্তাল্পতা প্রতিরোধে সহায়ক
আয়রন, ফোলেট ও ভিটামিন বি সমৃদ্ধ কিশমিশ রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়া প্রতিরোধে অত্যন্ত উপকারী। এটি রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়িয়ে শরীরকে শক্তিশালী ও কর্মক্ষম রাখে। বিশেষত নারীদের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি খাদ্য উপাদান, কারণ এটি ঋতুস্রাবজনিত রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে সহায়তা করে।
আরো পড়ুন
হার্ট ভালো রাখবে অর্জুনের ছাল, কিভাবে খাবেন
হজম ক্ষমতা উন্নত করে
ফাইবার সমৃদ্ধ কিশমিশ হজম প্রক্রিয়া সক্রিয় রাখে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে। সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খেলে এটি গ্যাস, এসিডিটি ও বদহজমের মতো সমস্যা দূর করতে বিশেষ কার্যকর।
যারা নিয়মিত পেটের সমস্যায় ভোগেন, তাদের জন্য কিশমিশ এক প্রাকৃতিক সমাধান হতে পারে।
চোখের সুস্থতা রক্ষায় সহায়ক
কিশমিশে থাকা ভিটামিন এ, ভিটামিন সি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট চোখের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে সহায়ক। এটি চোখের কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে এবং ম্যাকুলার ডিজেনারেশন প্রতিরোধে সাহায্য করে। নিয়মিত কিশমিশ খেলে চোখের বিভিন্ন রোগ যেমন শুষ্কতা ও দৃষ্টিক্ষীণতার সমস্যাও কমে যেতে পারে।
আরো পড়ুন
ভিডিও কলিংয়ে নতুন ফিচার নিয়ে আসছে হোয়াটসঅ্যাপ
ওজন নিয়ন্ত্রণ
উচ্চ চিনির উপাদান থাকা সত্ত্বেও কিশমিশ ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। কিশমিশের খাদ্যতালিকাগত ফাইবার আপনাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য ক্ষুধা থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে, সামগ্রিক ক্যালরি গ্রহণ হ্রাস করে। তা ছাড়া এগুলোতে কোনো চর্বি নেই এবং ওজন কমানোর ডায়েটে স্বাস্থ্যকর সংযোজন হতে পারে।
ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে
কিশমিশ ভিটামিন সি সমৃদ্ধ, যা কোলাজেন উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোলাজেন একটি প্রোটিন যা ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা এবং তারুণ্য বজায় রাখে। এ ছাড়া এটি ত্বকের প্রদাহ কমায় এবং ত্বককে হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুন
টুথব্রাশ বাথরুমে রাখবেন না যেসব কারণে
সূত্র : মেডিকভার হসপিটাল