করোনাকালে মাস্ক হয়েছে আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। জীবন বাঁচানোর জন্য এখন মাস্কের বিকল্প নেই। তবে সঠিক মাস্ক পরছেন কি-না বা সঠিক নিয়মে মাস্ক পরছেন কি-না সে বিষয়ে সতর্ক হতে হবে। সেই সাথে মাস্ক সংরক্ষণ, পরিষ্কার করা সব বিষয়ে সমান গুরুত্ব দেওয়া জরুরি।
করোনা থেকে বাঁচতে কোন ধরনের মাস্ক কিভাবে পরবেন?
অনলাইন ডেস্ক

মাস্কের কার্যকারিতা বাড়ানো
মাস্ক শুধু পরলেই হবে না ঠিকমতো সংরক্ষণ করতে হবে, ফিতা ধরে মাস্ক খুলতে হবে এ রকম আরো কিছু নিয়ম মানতে হবে।
মাস্ক পরার আগে ও পরে হাত ধোয়া
মাস্ক পরার আগে অবশ্যই হাত স্যানিটাইজ করতে হবে। মাস্ক পরাকালীন যদি কখনো মাস্কে হাত দিয়ে থাকেন তবে তার আগে মনে করে হাত স্যানিটাইজ করে নিন।
নিয়ম মেনে মাস্ক পরা
মাস্ক পরার পর নাক, মুখ, থুতনি যেন পুরোপুরি ঢাকা থাকে সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।
মাস্ক সংরক্ষণ করুন
মাস্ক পরার পর তা পরিষ্কার প্লাস্টিকের ব্যাগে সংরক্ষণ করুন। কাপড়ের মাস্ক ব্যবহার করলে প্রতিবার ব্যবহারের পর ধুয়ে নিন। সার্জিকাল মাস্ক ব্যবহার করলে একবার ব্যবহারের পর ফেলে দিন।
যেসব মাস্ক ব্যবহার করা যাবে না
ঢিলা মাস্ক যা মুখের সাথে ঠিকমতো খাপ খায় না, আবার কাপড়ের তৈরি একেবারে পাতলা মাস্ক এগুলো ব্যবহার করা যাবে না। কারণ এ ধরনের মাস্কগুলো করোনা ঠেকাতে পারে না।
সঠিক মাস্ক
কাপড়ের মাস্ক ব্যবহার করলে কয়েকটি লেয়ারের এমন মাস্ক ব্যবহার করুন। আর ভালোভাবে নিঃশ্বাস নেওয়া যায় এমন মাস্ক নির্বাচন করুন।
এন নাইন্টি ফাইভ মাস্ক
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর অকুপেশনাল সেফটি অ্যান্ড হেলথের মতে, এন নাইন্টি মাস্ক হলো সবচেয়ে ভালো।
সূত্র : দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া

শিশুদের মধ্যে বাত বাড়ছে,চিনে নেওয়া যায় যেসব লক্ষণ থেকে
অনলাইন ডেস্ক

অনেকেই মনে করেন বাতজনিত রোগ শুধু প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রেই হয়। কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক রোগীদের ক্ষেত্রে বাতরোগের যে লক্ষণগুলো দেখা যায়, সেগুলো শিশুদের মধ্যেও দেখা যেতে পারে। একে জুভেনাইল ইডিওপ্যাথিক আর্থাইটিস (জেআইএ) বলে।
জ্বর, সারা গায়ে র্যাশ দিয়ে শুরু।
ঘন ঘন জ্বর আসত শিশুটির। বয়স তখন ৮-৯ মাস। সারা শরীরে র্যাশ, হাত ও পায়ের পাতা লাল হয়ে ফুলে উঠেছে।
সাত বছরের মেয়ে।
কভিড চলাকালীন সিউড়ি জেলা হাসপাতালের ঘটনা। আট থেকে ৯ বছরের কয়েকজন ছেলেমেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। বেশির ভাগই কভিডে আক্রান্ত। পরীক্ষা করে ধরা পড়ে, তারা অনেকেই অটোইমিউন স্পেকট্রাম ডিজ অর্ডারে ভুগছে। পরে ধরা পড়ে আরএইচ ফ্যাক্টর পজিটিভ। অর্থাৎ, তারা আর্থ্রাইটিসের শিকার।
একটা সময় মনে করা হতো, বাত বা আর্থ্রাইটিস কেবল প্রাপ্ত বয়স্কদেরই হয়। কিন্তু তা নয়। বাতজনিত অসুখে ভোগে শিশুরাও। তবে প্রাপ্তবয়স্কদের বাত আর শিশুদের বাতের মধ্যে অনেকটাই পার্থক্য রয়েছে।
শিশুদের থেকে বাতের বিষয়টি বেশ জটিল। অস্থিসন্ধিতে ব্যথা, বা হাত-পায়ে যন্ত্রণা মানেই বাত নয়। শিশুদের বৃদ্ধির সময়ে হাড়ের বৃদ্ধির ব্যথা বা ‘গ্রোথ পেন’ খুব ভোগায়। তার সঙ্গে আর্থ্রাইটিসকে গুলিয়ে ফেললে চলবে না। বলা ভালো, শিশুদের বাত কিন্তু বিরল রোগের মধ্যেই পড়ে। সারানোর পদ্ধতিও সহজ নয়। এই নিয়ে বিশদ জানিয়েছেন রাজ্যের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
নিজের শরীরই যখন শত্রু
১৬ বছরের নিচে শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের যে আর্থ্রাইটিস হয়, তাকে ‘জুভেনাইল ইডিওপ্যাথিক আর্থ্রাইটিস’ বলা হয়। আগে বলা হতো ‘জুভেনাইল রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস’। ‘ইডিওপ্যাথিক’ কথাটির মানে হলো ‘অজানা’। শিশুদের বাত কেন হয়, তার সঠিক কারণ আজও জানা যায়নি। মূলত এটি এক প্রকার অটোইমিউন ডিজঅর্ডার। সহজ করে বললেন, যখন নিজের শরীরই শত্রু হয়ে যায়। শরীরের রোগ প্রতিরোধী কোষগুলো (ইমিউন কোষ) অন্যান্য সুস্থ কোষের ওপর হামলা চালাতে থাকে। এই পরিস্থিতিতে ইমিউন সিস্টেম কিছু অ্যান্টিবডি (প্রোটিন) তৈরি করে, যা দেহের সুস্থ কোষগুলোকে নষ্ট করতে থাকে। তখন প্রদাহ বাড়ে এবং পেশিতে ও অস্থিসন্ধিতে যন্ত্রণা শুরু হয়।
এটা হলো কারণ, আর রোগের প্রকাশটা হয় অন্যভাবে। আচমকাই জ্বর, গায়ে ব্যথা, আর তার পরেই ধরা পড়ে আর্থ্রাইটিস। অনেকের আবার কাওয়াসাকি রোগও হয়, আর তা থেকেই আর্থ্রাইটিসের সূত্রপাত হয়। এমনটাই জানিয়েছেন ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেল্থের শিশুরোগ চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পাল।
তিনি বলেন, ‘ভ্যাস্কুলাইটিস বা কাওয়াসাকি দিয়ে শুরুটা হয় অনেক শিশুর। এই অসুখের শুরুতে ১০২ ডিগ্রি বা তারও বেশি জ্বর হয়। তিন দিন বা তারও বেশি সময় ধরে জ্বর চলতে থাকে। ঠোঁট ও চোখ লাল হয়ে যায়। শরীরের গ্রন্থিগুলো ফুলে উঠে। মাল্টিপল সিস্টেম ইনফ্ল্যামেটরি সিনড্রোম দেখা দেয়। যার থেকে শরীরের নানা অঙ্গের ক্ষতি হতে থাকে। হার্টের পেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে মায়োকার্ডাইটিস হতে পারে এবং এর থেকে পরবর্তীকালে আর্থ্রাইটিসও হয়।’
আরো একটি অসুখ হয়, যার নাম ‘সিস্টেমিক লুপাস এরিথেম্যাটোসাস’ (এসএলই)। এটিও অটোইমিউন ডিজঅর্ডার। শরীরে অস্বাভাবিক প্রোটিন তৈরি হয়, যা সুস্থ কোষগুলোর ক্ষতি করতে থাকে। এই এসএলই রোগটিও কিন্তু জুভেনাইল আর্থ্রাইটিসের অন্যতম কারণ। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, শিশুদের বাত আরো নানা রোগের সংমিশ্রণে ঘটে। আর তা নির্ণয় করা এবং সারানোও খুব কঠিন।
বাতের কারণ যখন ব্যাক্টেরিয়া
জুভেনাইল আর্থ্রাইটিসের ক্ষেত্রে সাইনোভিয়াল তরলের ক্ষরণ বেশি হতে থাকে। শরীরের প্রতিটি অস্থিসন্ধি বা জয়েন্টে আছে এই সাইনোভিয়াল ফ্লুইড। এর কাজ হলো অস্থিসন্ধির প্রধান উপাদান কার্টিলেজের পুষ্টি জোগানো। এই তরলের ক্ষরণে যখন তারতম্য হয়, তখন অস্থিসন্ধিতে প্রদাহ শুরু হয়। সাইনোভিয়াল ফ্লুইডের তারতম্য নানা কারণে হতে পারে, যার মধ্যে একটি কারণ হলো ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ। এই ব্যাপারে আলোকপাত করেছেন অস্থিরোগ চিকিৎসক বুদ্ধদেব চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “স্ট্যাফাইলোকক্কাস অরিয়াস নামে এক ধরনের ব্যাক্টেরিয়া অস্থিসন্ধিতে সংক্রমণ ঘটায়। এর থেকে ‘সেপটিক আর্থ্রাইটিস’ হতে পারে। অস্থিসন্ধি লাল হয়ে ফুলে ওঠে। তখন উঠতে, বসতে, হাঁটাচলা করতে সমস্যা হয়। হাত-পায়ে যন্ত্রণা হতে থাকে।”
বাতের লক্ষণগুলো ঠিক কী রকম?
আর্থ্রাইটিসের অনেক ধরণ আছে এবং তাদের উপসর্গগুলোও আলাদা, যেমন—
অলিগোআর্থ্রাইটিসের ক্ষেত্রে হাঁটু, কনুই, পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা হয়। এই বিষয়ে সিউড়ি জেলা হাসপাতালের অস্থিরোগ চিকিৎসক সুব্রত গড়াই বলেন, ‘শরীরে সি-রিঅ্যাকটিভ প্রোটিনের পরিমাণ বেড়ে যায়, রক্তচাপ বাড়ে, ফলে সারা শরীরে ব্যথা হতে থাকে। চোখে তীব্র প্রদাহ হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে এই ধরনের আর্থ্রাইটিসই বেশি দেখা যায়।’
পলিআর্থ্রাইটিস আরো এক রকমের বাত, যাতে চোয়াল ও গালে ব্যথা হয়। তখন খাবার চিবোতে, গিলতে সমস্যা হতে পারে। ছেলেদের থেকে মেয়েদের এই রোগ বেশি হয়।
বাতের ব্যথার পাশাপাশি ত্বকে আঁশের মতো র্যাশ বা সোরিয়াসিস দেখা দেয়। অস্থিসন্ধিতে দগদগে ঘা হতে পারে, চামড়া উঠতে শুরু করে। একে বলে সোরিয়াটিক আর্থ্রাইটিস।
আরো একটি প্রকার হলো স্পন্ডিলোআর্থ্রোপ্যাথি (এসপিএ)। এই ধরনের বাতে শিরদাঁড়া, নিতম্ব, টেন্ডন ও লিগামেন্ট যেখানে হাড়ের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে, সেখানে ব্যথা হতে থাকে। সাত বছরের পর থেকে এই ধরনের বাতের ব্যথা হতে পারে।
১০ থেকে ২০ শতাংশ শিশুর সিস্টেমিক আর্থ্রাইটিস হতে দেখা যায়। সারা শরীরেই ব্যথা হয়। হাত, পা, কনুইতে বেশি যন্ত্রণা হয়। ঘন ঘন জ্বর আসতে থাকে। হার্ট, লিভার, কিডনিরও ক্ষতি হতে পারে।
বাতই হচ্ছে কি না, তা বোঝার উপায় কী?
রক্তের কিছু পরীক্ষা আছে যাতে জুভেনাইল আর্থ্রাইটিস ধরা পড়ে। যেমন—
১. ‘এরিথ্রোসাইট সেডিমেন্টেশন রেট’ (ইএসআর) এবং ‘সি-রিঅ্যাকটিভ প্রোটিন টেস্ট’।
২. ‘অ্যান্টিনিউক্লিয়ার অ্যান্টিবডি টেস্ট’-এ যে কোনো রকম আর্থ্রাইটিসের পরীক্ষা করা হয়।
শিশুদের আর্থ্রাইটিস বিরল রোগ, ইমিউন ডিজঅর্ডার থেকে সূত্রপাত হয়।
৩. স্পন্ডিলোআর্থ্রোপ্যাথি হয়েছে কি না জানতে ‘এইচএলএ-বি২৭ টাইপিং জিন টেস্ট’ করা হয়।
৪. ‘রিউম্যাটয়েড ফ্যাক্টর টেস্ট’ করালেও অনেক সময় ধরা পড়ে শিশুদের বাত হচ্ছে কি না।
৫. কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট (সিবিসি) টেস্ট করিয়ে নিতে বলেন চিকিৎসকরা। এতেও রোগ হচ্ছে কি না, তা প্রাথমিকভাবে বোঝা সম্ভব।
চিকিৎসা কী?
আর্থ্রাইটিস সারানো খুব জটিল ব্যাপার। তবে ব্যথা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কিছু ওষুধ ও ইনজেকশন দেওয়া হয়। শিশুদের স্টেরয়েড ছাড়াই ওষুধ দেন চিকিৎসকরা। প্রচণ্ড প্রদাহ বা চলাফেরায় সমস্যা হলে ইনজেকশন দেওয়া হয়।
ফিটনেস প্রশিক্ষক অনুপ আচার্যের কথায়, ঠান্ডা ও গরম সেঁক দিলেও ব্যথা কমে অনেক সময়ে। তা ছাড়া, চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ফিজিওথেরাপিও করানো হয়।
শিশু যদি একই ভঙ্গিতে দীর্ঘ সময়ে বসে বা দাঁড়িয়ে থাকে, তাহলে ব্যথা বাড়তে পারে। তাই সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। রাতে টানা ৮ ঘণ্টা ঘুম জরুরি। ব্যথা বাড়লে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
পুষ্টিকর খাবার খুব জরুরি। বাইরের খাবার, ভাজাভুজি বেশি খেলেই শরীরে প্রদাহ বাড়বে। মাছ, ফল, সবুজ সব্জি, দানাশস্য ডায়েটে রাখতেই হবে। প্যাকেটজাত খাবার বা ঠান্ডা পানীয় একেবারেই বাদ দিতে হবে।
হালকা শরীরচর্চা করা যেতে পারে। এই বিষয়ে ফিটনেস প্রশিক্ষক অনুপ আচার্যের পরামর্শ, ‘আগেকার দিনে শিশুদের খুব ভালো করে তেল মালিশ করিয়ে রোদে শুইয়ে রাখা হতো। এটা খুবই দরকার। ছোট থেকে এই তেল মালিশ সঠিকভাবে করতে পারলে শিশুদের পেশি ও হাড়ের গঠন মজবুত হবে। এতে বাত হওয়ার আশঙ্কা অনেক কমবে।’ আর ব্যায়ামের মধ্যে অল্প হাঁটা, সাইকেল চালানো বা সূর্য নমস্কার করানো যেতে পারে। তবে আর্থ্রাইটিস ধরা পড়লে খুব ভারী ব্যায়াম না করাই ভালো।

গরমে গলা-বুক ভরে যাচ্ছে ব্রণ-র্যাশে? জেনে নিন সমাধানের উপায়
অনলাইন ডেস্ক

ব্রণ নিয়ে কমবেশি দুশ্চিন্তায় থাকেন সবাই। কারণ ব্রণ ত্বকের সৌন্দর্য নষ্ট করে। অনেক সময় শরীরের বিভিন্ন স্থানেও ব্রণ দেখা যায়। বিশেষ করে গরমের দিনে ব্রণ, ঘামাচির সমস্যা বাড়ে।
গরমের সময়ে মুখে তো বটেই গলা, বুকেও ব্রণর সমস্যা ভোগায়। বিশেষ করে দীর্ঘ সময় অন্তর্বাস পরে থাকলে, তা থেকে ঘষা লেগে ও ঘাম জমে লালচে র্যাশও হয় অনেকের।
‘ক্লিনিকাল বায়োকেমিস্ট্রি’ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, শরীরের সিবেসিয়াস গ্রন্থি থেকে যদি অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ হয়, তাহলে ব্রণের সমস্যা বাড়তে পারে। আর যাদের ঘাম বেশি হয়, তাদের ব্রণ-র্যাশের সমস্যা বেশি ভোগায়। খুব বেশি আঁটসাঁট পোশাক, সিন্থেটিক পোশাক পরলে তার থেকেও ত্বকের সংক্রমণ হতে পারে। ঘাম জমে ত্বকের রোমকূপের মুখ বন্ধ করে দেয়। ওই অংশে ধুলাবালি জমে ব্রণের সমস্যা আরো বাড়ে।
কীভাবে গলা-বুকের ব্রণ দূর হবে?
ঘরোয়া উপায়েই ব্রণের সমস্যা দূর হতে পারে। এর জন্য নামী দামি ব্র্যান্ডের প্রসাধনীর প্রয়োজন নেই। কী কী ব্যবহার করলে সমস্যা দূর হতে পারে জেনে নিন।
অ্যাপল সাইডার ভিনিগার টোনার : সমপরিমাণে পানি ও ভিনিগার মিশিয়ে নিতে হবে। যদি দুই চামচ পানি নেন, তাহলে ভিনিগারও দুই চামচ দিতে হবে। সরাসরি অ্যাপল সাইডার ভিনিগার ত্বকে মাখা যাবে না। মিশ্রণ থেকে তুলায় করে অল্প পরিমাণে নিয়ে ব্রণ, র্যাশের জায়গায় লাগিয়ে রাখতে হবে ১৫-২০ মিনিট। তার পর ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে নিতে হবে।
টি ট্রি অয়েল মাস্ক : টি ট্রি অয়েলের অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল গুণ আছে। এই তেল প্রদাহনাশকও। ‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এজেন্টস’ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, ত্বকের যেকোনো সংক্রমণ দূর করতে পারে টি ট্রি অয়েল। তবে এটি অন্য কোনো তেলের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করতে হবে। নারকেল তেলের সঙ্গে টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে নিতে হবে ১:৯ অনুপাতে। এই মিশ্রণ ব্রণের জায়গায় লাগিয়ে রাখলেই ব্যথা, চুলকানি কমে যাবে।
মধু-দারচিনির মাস্ক : মধু ও দারচিনি দুয়েরই অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল গুণ আছে। ১ চা চামচ মধুর সঙ্গে আধা চামচের মতো দারচিনি মিশিয়ে সেই মিশ্রণ ব্রণ, র্যাশের জায়গায় ২০ মিনিটের মতো লাগিয়ে রাখতে হবে। পরে পানিতে ধুয়ে নিতে হবে। নিয়মিত এই মাস্ক মাখলে, ব্রণের সমস্যা দূর হবে। গরমে ঘামাচি হলেও তার থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।

ঘন ঘন ওয়েট টিস্যু ব্যবহারে কী ক্ষতি
জীবনযাপন ডেস্ক

তীব্র গরম থেকে স্বস্তি পেতে অনেকেই ঘন ঘন ওয়েট টিস্যু ব্যবহার করেন। তবে এটি সাময়িক স্বস্তি দিলেও এর প্রভাব কিন্তু মোটেই ভালো নয়। এই ওয়েট টিস্যু বেশি ব্যবহার করা অনুচিত। এতে উপকারের থেকে বেশি অপকার হতে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্য়ালয়ের গবেষক জন কুক মিলস তার গবেষণায় জানিয়েছেন, ওয়েট টিস্যুতে রয়েছে সোডিয়াম লরিল সালফেট, যা কিনা স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
এ ছাড়া ওয়েট টিস্যুর মধ্যে থাকা আর রাসায়নিক মিথাইল ক্লোরিসেথিয়া জোলাইন বড়দের ত্বকের জন্যও ক্ষতিকর। গবেষকদের মতে, ঘন ঘন ওয়েট ওয়াইপস ব্যবহার করলে এর প্লাস্টিক ও রাসায়নিক ধীরে ধীরে শরীরের নানা কোষে জমতে থাকে। ফলে ক্যানসারের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে এই টিস্যু।
অধিকাংশ ওয়াইপসে রয়েছে প্লাস্টিকের তন্তু, যা প্রাকৃতিকভাবে পচনশীল নয় এমন পদার্থ রয়েছে। এ ছাড়া এটি পরিবেশের জন্যও ক্ষতিকারক। এই ওয়েট টিস্যু মাটিতে মিলিয়ে না যাওয়ার ফলে পরিবেশও দূষিত হয়।
সূত্র : টিভি নাইন বাংলা

চুলে সরিষার তেল ব্যবহারে কী হয়
জীবনযাপন ডেস্ক

সরিষার তেল বহু শতাব্দী ধরে বিভিন্ন সংস্কৃতিতে অসংখ্য স্বাস্থ্য সুবিধার জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে। চুলের যত্নে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য দেখা যায় এই তেল ব্যবহারে। পূর্বে এই তেল বহু ব্যবহার হলেও বর্তমানে এর ব্যবহার অনেকাংশে কমে গেছে। তার পরিবর্তে আমরা অন্যান্য তেল ব্যবহার করা শুরু করেছি।
পূর্বে মা-দাদিরা শিশুদের গোসল করিয়ে মাথা ও শরীরে সরিষার তেল মেখে দিতেন। কিন্তু বর্তমানে এই তেল ব্যবহার একদমই কমে গেছে। আজ আমরা চুলের জন্য সরিষার তেলের উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করব। এ ছাড়া কিভাবে এটি আপনার চুলের যত্নের কার্যকর হতে পারে, তা জানাব।
কেন সরিষার তেল বেছে নেবেন
পুষ্টিতে সমৃদ্ধ
সরিষার তেলে রয়েছে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান, যা চুলের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এর উচ্চ মাত্রা রয়েছে ওমেগা-থ্রি এবং ওমেগা-সিক্স ফ্যাটি এসিড, ভিটামিন ই এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা স্বাস্থ্যকর চুল বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই পুষ্টির উপস্থিতি মাথার ত্বকে পুষ্টি জোগাতে, চুল পড়া কমাতে এবং চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য
চুলের জন্য সরিষার তেলের একটি উল্লেখযোগ্য সুবিধা হলো এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য। তেলটিতে অ্যালিল আইসোথিওসায়ানেট রয়েছে। এটি এমন একটি যৌগ, যা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে এবং মাথার ত্বকের সমস্যা, যেমন খুশকি ও চুলকানি প্রতিরোধ করতে পারে। সরিষার তেলের নিয়মিত প্রয়োগ মাথার ত্বককে পরিষ্কার ও সংক্রমণ থেকে মুক্ত রাখতে পারে। এ ছাড়া এটি চুলের বৃদ্ধির জন্য একটি স্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি করে।
চুলের বৃদ্ধির জন্য সরিষার তেল
রক্ত সঞ্চালন উদ্দীপিত করে
মাথার ত্বকে সরিষার তেল মালিশ করলে রক্ত সঞ্চালন উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়। চুলের ফলিকলগুলোতে উন্নত রক্ত প্রবাহ নিশ্চিত করে যে তারা পর্যাপ্ত পুষ্টি ও অক্সিজেন পাচ্ছে, যা চুলের বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য। এই উন্নত সঞ্চালনের ফলে চুল ঘন, মজবুত ও স্বাস্থ্যকর হতে পারে।
প্রাকৃতিক চুল বৃদ্ধির বুস্টার
সরিষার তেল প্রাকৃতিকভাবে চুল বৃদ্ধির ক্ষমতার জন্য পরিচিত। সরিষার তেলে বিটা-ক্যারোটিনের উচ্চ ঘনত্ব শরীরে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়, যা চুলের বৃদ্ধির জন্য অত্যাবশ্যক। ভিটামিন এ সিবাম উৎপাদনে সাহায্য করে। সিবাম হচ্ছে একটি তৈলাক্ত পদার্থ, যা মাথার ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে এবং চুলকে সুস্থ রাখে। উপরন্তু, সরিষার তেলে প্রচুর ভিটামিন ও খনিজ উপাদান রয়েছে। এগুলো চুলের ফলিকলকে পুনরুজ্জীবিত করতে এবং চুলের বৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করতে সহায়তা করে।
চুল পড়া রোধ করে
চুল পড়া একটি বিরক্তিকর সমস্যা। কিন্তু এর জন্য সরিষার তেল একটি কার্যকর সমাধান হতে পারে। তেলের সমৃদ্ধ পুষ্টির প্রোফাইল চুলের স্ট্র্যান্ডকে মজবুত করে, ভাঙার প্রবণতা কমিয়ে দেয়। তদুপরি, সরিষার তেলের নিয়মিত ব্যবহার মাথার ত্বক ও চুলের গোড়াকে পুষ্টি দিয়ে চুল পড়া কমাতে পারে, এইভাবে চুল পড়া রোধ করে এবং নতুন চুলের বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করে।
সরিষার তেলের উপকারিতা
হাইড্রেট ও কন্ডিশন চুল
শুষ্ক ও ভঙ্গুর চুলের জন্য সরিষার তেল প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে। এটি চুলে গভীর হাইড্রেশন প্রদান করে। এর ইমোলিয়েন্ট বৈশিষ্ট্যগুলো আর্দ্রতা লক করতে, চুলকে নরম, চকচকে এবং আরো পরিচালনাযোগ্য করতে সাহায্য করে। সরিষার তেল নিয়মিত ব্যবহার করলে শুষ্কতা প্রতিরোধ করা যায় এবং চুল ভালো রাখতে পারে।
খুশকির বিরুদ্ধে লড়াই করে
খুশকি মাথার ত্বকের সাধারণ একটি সমস্যা। যা কার্যকরভাবে সরিষার তেল দিয়ে চিকিৎসা করা যেতে পারে। তেলের অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য খুশকি-সৃষ্টিকারী ছত্রাক দূর করতে সাহায্য করে, যখন এর ময়েশ্চারাইজিং বৈশিষ্ট্য মাথার ত্বককে হাইড্রেটেড রাখে। মাথার ত্বকে সরিষার তেল লাগালে এবং ধোয়ার আগে কয়েক ঘণ্টা রেখে দিলে তা উল্লেখযোগ্যভাবে খুশকি কমাতে পারে এবং এর পুনরাবৃত্তি রোধ করতে পারে।
চুলকে শক্তিশালী করে
সরিষার তেল অপরিহার্য ফ্যাটি এসিড, ভিটামিন ও খনিজের একটি পাওয়ার হাউস। যা চুলকে গোড়া থেকে শক্তিশালী করে। তেল মাথার ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে চুলের ফলিকলকে পুষ্টি জোগায় এবং শক্তিশালী ও স্বাস্থ্যকর চুলের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। সরিষার তেলের নিয়মিত ব্যবহার চুলের ভাঙ্গা, বিভক্ত হওয়া রোধ এবং সামগ্রিকভাবে মজবুত চুলের দিকে পরিচালিত করতে পারে।
কিভাবে ব্যবহার করবেন
গরম তেল চিকিৎসা
সরিষার তেল দিয়ে গরম তেলের চিকিৎসা আপনার চুলের জন্য বিস্ময়করভাবে কাজ করতে পারে। এখানে অনুসরণ করার জন্য একটি সহজ পদ্ধতি আছে—
অল্প পরিমাণে সরিষার তেল গরম করুন, কিন্তু খুব বেশি গরম না। এবার আপনার মাথার ত্বকে গোল করে হালকা গরম তেল ম্যাসাজ করুন। গোড়া থেকে চুলের ডগায় তেল সমানভাবে দেওয়া হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করুন। এবার চুলকে শাওয়ার ক্যাপ বা গরম তোয়ালে দিয়ে ঢেকে রাখুন, যাতে তেল গভীরভাবে প্রবেশ করতে পারে। ভালো ফলাফলের জন্য কমপক্ষে এক ঘণ্টা বা পুরো রাত রেখে দিন। তেল অপসারণের জন্য হালকা শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
সরিষার তেলের চুলের মাস্ক
সরিষার তেল দিয়ে হেয়ার মাস্ক তৈরি করলে এর উপকারিতা বাড়তে পারে। এখানে একটি সহজ রেসিপি—
সরিষার তেল, দই ও মধু নিন। ২ টেবিল চামচ সরিষার তেলের সঙ্গে ১ টেবিল চামচ দই ও ১ টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে নিন। এবার আপনার মাথার ত্বক ও চুলে মিশ্রণটি প্রয়োগ করুন। সব জায়গায় যাবে সমানভাবে তেল পড়ে তা নিশ্চিত করুন। এই মাস্কটি ৩০-৪৫ মিনিটের জন্য রেখে দিন। এরপর হালকা গরম পানি ও শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।
সতর্কতা
যদিও সরিষার তেল চুলের জন্য অনেক উপকার দেয়, তবে কোনো প্রতিকূল প্রভাব এড়াতে এটি সঠিকভাবে ব্যবহার করা অপরিহার্য। মনে রাখার জন্য এখানে কিছু সতর্কতা রয়েছে—
- আপনার মাথার ত্বকে সরিষার তেল প্রয়োগ করার আগে একটি প্যাচ পরীক্ষা করুন, যাতে আপনার অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া আছে কি না বোঝা যায়।
- সংবেদনশীল ত্বক থাকলে নারকেল বা অলিভ অয়েলের মতো ক্যারিয়ার তেলের সঙ্গে সরিষার তেল পাতলা করুন।
- মাথার ত্বকে অতিরিক্ত তেল জমা হওয়া এড়াতে সপ্তাহে ১-২ বার সরিষার তেল ব্যবহার করুন।
সরিষার তেল চুলের বিভিন্ন সমস্যার জন্য একটি বহুমুখী ও শক্তিশালী প্রাকৃতিক প্রতিকার। চুলের বৃদ্ধি থেকে শুরু করে খুশকির বিরুদ্ধে লড়াই করা এবং চুল মজবুত, সবকিছুই করে এই তেল। যেকোনো প্রাকৃতিক প্রতিকারের মতোই নিয়মিত ব্যবহারে চুলের জন্য সরিষার তেল উল্লেখযোগ্য।
সূত্র : মেডিকভার হসপিটাল