ঢাকা-৫ আসনের উপনির্বাচনে ৯৫ ভাগ কেন্দ্র থেকে বিএনপির এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করে বিএনপির প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহম্মেদ বলেছেন, এখানে ভোটারবিহীন নির্বাচন হচ্ছে। আমাদের পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়া হচ্ছে। এটা প্রহসনের নির্বাচন। তারপরও নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত দেখতে চাই।
পুনরায় নির্বাচনের দাবি বিএনপি প্রার্থী সালাহউদ্দিনের
অনলাইন ডেস্ক

আজ শনিবার বিকেলে ভোট চলাকালে তিনি এই দাবি জানান। এ সময় তিনি পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানান।
সালাহউদ্দিন বলেন, ১৪ ওয়ার্ডের অধিকাংশ ভোটকেন্দ্র থেকে ধানের শীষের এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠুভাবে আজ পর্যন্ত কোনো নির্বাচন করতে পারেনি। তাই আজকের নির্বাচনও সুষ্ঠু হবে না বলেই আমি মনে করি। বেশিরভাগ কেন্দ্র থেকে আমাদের এজেন্টদের বের করে দিয়েছে।
শনিবার সকাল ৯টায় এ আসনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতাধীন ১৪টি ওয়ার্ড এবং ডেমরা, যাত্রাবাড়ী এবং কদমতলী থানার কিছু অংশ নিয়ে এ আসন বিস্তৃত। এসব এলাকার ১৮৭টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলছে।

নতুন শুল্ক স্থগিত : ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
অনলাইন ডেস্ক

আগামী ৯০ দিনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত নতুন শুল্ক স্থগিত করায় দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (৯ এপ্রিল) দিবাগত রাতে প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলা হয়, ‘আমাদের অনুরোধে ৯০ দিনের জন্য নতুন শুল্ক স্থগিত করার সিদ্ধান্তে সম্মতি জানানোর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ, মি. প্রেসিডেন্ট (ডোনাল্ড ট্রাম্প)। আমরা আপনার বাণিজ্যনীতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত রাখব।
এর আগে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর নতুন করে ৩৭ শতাংশ রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ বা পাল্টা শুল্ক আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। নতুন শুল্কের কারণে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের বড় বাজারটিতে পণ্য রপ্তানি, বিশেষ করে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বড় ধাক্কার আশঙ্কাও করেন রপ্তানিকারকরা।
এতদিন বাংলাদেশের মোট পণ্য রপ্তানির ১৮ শতাংশের গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক ছিল।

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার দায়িত্বও পেলেন খলিলুর রহমান
অনলাইন ডেস্ক

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গাবিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমানকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পদেও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৯ এপ্রিল) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে খলিলুর রহমানকে এই নতুন দায়িত্ব দেওয়ার কথা জানানো হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এই প্রজ্ঞাপনে সই করেছেন মন্ত্রিপরিষদসচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) জাহেদা পারভীন।
এখন থেকে খলিলুর রহমানের পদবি হবে ‘জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং রোহিঙ্গা সমস্যা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটি’।
২০২৪ সালের ১৯ নভেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে নিয়োগ পান খলিলুর রহমান।
ড. খলিলুর রহমান ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (পররাষ্ট্র) কাডারে যোগদান করেন। ১৯৮৩-৮৫ সময়কালে তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া বিভাগে এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৮৫ সালে তাকে নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে বদলি করা হয়। সেখানে তিনি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অর্থনৈতিক ও আর্থিক কমিটিতে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) মুখপাত্র হিসেবে এ কমিটি ও জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদে দায়িত্ব পালন করেন।
খলিলুর রহমান ১৯৯১ সালে জেনেভায় জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সম্মেলনে (আংকটাড) বিশেষ উপদেষ্টা হিসেবে জাতিসংঘ সচিবালয়ে যোগ দেন। জাতিসংঘে পরবর্তী ২৫ বছরে তিনি নিউইয়র্ক ও জেনেভায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত ছিলেন।
২০০১ সালে খলিলুর রহমান তৃতীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি লতিফুর রহমানের একান্ত সচিব হিসেবে কাজ করেন। তিনি ঢাকায় অবস্থিত ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।

সৌদির বিদায়ি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সৌজন্য সাক্ষাৎ
অনলাইন ডেস্ক

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)-এর সঙ্গে সৌদি আরবের বিদায়ি রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ বিন আলদুহাইলানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় বাংলাদেশ থেকে আরো বেশি জনশক্তি নিতে সৌদি রাষ্ট্রদূতকে আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
বুধবার (৯ এপ্রিল) সকালে সচিবালয়ে এ আহ্বান জানানো হয়।
বৈঠকে সৌদি আরবে বসবাসরত বৈধ পাসপোর্টবিহীন ৬৯ হাজার বাংলাদেশি নাগরিকদের অনুকূলে পাসপোর্ট ইস্যু/রি-ইস্যুসংক্রান্ত বিষয়াদিসহ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
বৈঠকের শুরুতে উপদেষ্টা বলেন, সৌদি আরব বাংলাদেশের উন্নয়নে অন্যতম বৃহৎ অংশীদার। একক দেশ হিসেবে সৌদি আরবে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি কাজ করছে। বর্তমানে সৌদি আরবে ৩.২ মিলিয়ন বাংলাদেশি বিভিন্ন সেক্টরে কর্মরত রয়েছে। এটিকে চার মিলিয়নে উন্নীত করতে তিনি রাষ্ট্রদূতের সহযোগিতা কামনা করেন।
বাংলাদেশের উন্নয়নে সৌদি আরবের সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে উল্লেখ করে সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, জনশক্তি রপ্তানির পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, পর্যটন ও সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন খাতে প্রভূত সহায়তা বিদ্যমান। তিনি বলেন, সৌদি আরব সব সময় বাংলাদেশের পাশে ছিল, অদূর ভবিষ্যতেও থাকবে।
রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, রাজকীয় সৌদি সরকারের গৃহীত নীতি অনুযায়ী সে দেশে বসবাস ও চাকরি করাসহ আইনগত সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার জন্য বৈধ পাসপোর্ট থাকা আবশ্যক। সৌদি সরকারের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন সময় বাংলাদেশি পাসপোর্ট/ট্রাভেল ডকুমেন্ট নিয়ে সে দেশে প্রবেশ করেছেন কিন্তু বর্তমানে কোনো বৈধ পাসপোর্ট নেই—এমন লোকের সংখ্যা আনুমানিক ৬৯ হাজার।
উপদেষ্টা বলেন, এ বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে একটি প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়েছিল এবং এতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

মার্চে রাজনৈতিক সহিংসতায় ২৩ জন নিহত, ১৮ জনই বিএনপির
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে গত মার্চ মাসে ৯৭টি রাজনৈতিক সহিংসতায় ২৩ জন নিহত হয়েছেন। নিহতের এ সংখ্যা গত ফেব্রুয়ারি মাসের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। এর মধ্যে সহিংসতার ৮৮টি ঘটনা ঘটেছে বিএনপির অন্তঃকোন্দলে। বিএনপির সঙ্গে অন্যান্য দলের সহিংসতায় নিহতদের মধ্যে ১৮ জন বিএনপি নেতা, কর্মী ও সমর্থক।
মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থা হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির (এইচআরএসএস) মাসিক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। বুধবার সংস্থাটি এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
এক মাসের মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্চ মাসেও মানবাধিকার পরিস্থিতির প্রকৃত অবস্থা ছিল হতাশাজনক। পবিত্র মাহে রমজান মাসে বিগত বছরগুলোর তুলনায় দ্রব্যমূল্য ও ঈদযাত্রা কিছুটা স্বস্তিদায়ক হলেও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির আশানুরূপ উন্নতি হয়নি।
মার্চে ৯৭টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় অন্তত ২৩ জন নিহত হয়েছে জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, এ সময়ে আহত হয়েছে কমপক্ষে ৭৩৩ জন। আধিপত্য বিস্তার, রাজনৈতিক প্রতিশোধপরায়ণতা, চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন স্থাপনা দখলকেন্দ্রিক অধিকাংশ সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। নিহত ২৩ জনের মধ্যে বিএনপির ১৮ জন, আওয়ামী লীগের ৩ জন এবং ইউপিডিএফের ২ জন রয়েছে।
৯৭টি সহিংসতার ঘটনার ৮৮টিই ঘটেছে বিএনপির অন্তঃকোন্দলে ও বিএনপির সাথে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মধ্যে হয়েছে জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্চ মাসে সহিংসতার ৯৭টি ঘটনার মধ্যে বিএনপির অন্তঃকোন্দলে ৬৪টি ঘটনায় ১৭ জন নিহত ও আহত হয়েছে ৫০২ জন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্চ মাসে রাজনৈতিক সহিংসতার সংখ্যা ফেব্রুয়ারি মাসের তুলনায় কিছুটা কমলেও নিহতের সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে ১০৪টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় ৯ জন নিহত ও ৭৫৫ জন আহত হয়েছিল।
এতে বলা হয়, মার্চে রাজনৈতিক মামলায় কমপক্ষে ১ হাজার ৬৬৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যেখানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী অন্তত ১ হাজার ৬৪৪ জন। ওই সময় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর কমপক্ষে ৩টি হামলার ঘটনায় ২ জন আহত এবং ২টি প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে।
কমপক্ষে ২৮৪ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছে কমপক্ষে ১৩৩ জন, যাদের মধ্যে ৩০ জন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছে ২ জন। যৌন নির্যাতনের শিকার ১৩৩ জনের মধ্যে ৮৩ জন ১৮ বছরের কমবয়সী শিশু। প্রতিবেদনে মাগুরায় ৮ বছরের এক শিশুকে তার বোনের শ্বশুর কর্তৃক ধর্ষণ এবং শিশুটি ৮ দিন পর চিকিত্সাধীন অবস্থায় মৃত্যুর ঘটনাটি উল্লেখ করা হয়।
এইচআরএসএসের তথ্য অনুযায়ী, গেল মাসে অন্তত ২৯টি ঘটনায় কমপক্ষে ৪১ জন সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্ততপক্ষে ২৩ জন সাংবাদিক। এ ছাড়া ৩টি মামলায় ৭ জন সাংবাদিককে অভিযুক্ত করা হয়েছে। মার্চে গণপিটুনির অন্তত ৪০টি ঘটনায় ১২ জন নিহত ও ৪৪ জন আহত হয়েছে।
একই সময়ে ২১টি শ্রমিক নির্যাতনের ঘটনায় ৭ জন নিহতের তথ্য জানানো হয়। এর মধ্যে ১ জন শিশু গৃহকর্মী মালিকের নির্যাতনে নিহত হয়। এ ছাড়া মার্চ মাসে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ৬টি হামলার ঘটনায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে ২ জন বাংলাদেশি নিহতের তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে এইচআরএসএসের নির্বাহী পরিচালক ইজাজুল ইসলাম বলেন, মার্চে রাজনৈতিক সহিংসতায় মৃত্যুর ঘটনা উদ্বেগজনক। নারী ও শিশুদের ওপর নির্যাতন, সাংবাদিক নিপীড়নও তুলনামূলক বেড়েছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে জনগণের মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। ব্যত্যয় হলে দেশের সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাবে।