<p>সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের এক মাস পূর্তি হলো আজ বৃহস্পতিবার। দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে আজ ‘শহীদি মার্চ’ কর্মসূচি পালন করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। গতকাল বুধবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) এক সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।</p> <p>এক মাস পূর্তি উপলক্ষে আজ রাজধানীসহ দেশব্যাপী বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে শহীদদের স্মৃতি ধারণ করে এবং আহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ‘শহীদি মার্চ’ কর্মসূচি পালন করা হবে।</p> <p>কর্মসূচি ঘোষণা করে সারজিস আলম বলেন, ‘বৃহস্পতিবার ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে শহীদি মার্চ করতে চাই। সারা দেশে ইউনিয়ন থেকে মহানগর—সব পর্যায়ে শহীদদের স্মৃতি ধারণ করে, আহত ভাই-বোন যারা হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে, যে ভাই-বোনেরা হাত-পা-চোখ হারিয়েছে, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এ কর্মসূচি পালন করা হবে।’</p> <p>সারজিস বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় ঢাকায় শহীদি মার্চ শুরু হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে। এরপর নীলক্ষেত, নিউ মার্কেট, কলাবাগান, মিরপুর রোড ধরে মানিক মিয়া এভিনিউ ও সংসদ ভবনের সামনে দিয়ে ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ ও রাজু ভাস্কর্য হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে কর্মসূচি শেষ হবে।’</p> <p>তিনি বলেন, ‘রক্তের দাগ এখনো শুকায়নি। এখনো আমাদের ভাইয়েরা ক্ষতচিহ্ন নিয়ে কাতরাচ্ছে। গণমাধ্যমের কাছে অনুরোধ, কিভাবে আমাদের ভাইদের হত্যা করা হয়েছে তার ডকুমেন্টেশন করতে হবে। অনেকে আমাদের বিজয় মিছিল করতে বলছে। কিন্তু যত দিন না নতুন বাংলাদেশ হচ্ছে, মানুষ অধিকার পাচ্ছে, তত দিন বিজয় মিছিল করা সম্ভব নয়।’</p> <p>আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আপনারা বুদ্ধিবৃত্তিক মহলে যাঁরা ফ্যাসিবাদের রাজনীতি পুনর্বহাল করতে চান, আপনারা ফেল মেরেছেন অনেক আগেই। এই ছাত্র-নাগরিক, যাঁদের আপনারা অগণিত সময়ের জন্য মানসিক ট্রমার মধ্যে ফেলে দিয়েছেন, তাঁদের রাজনৈতিক চিন্তাধারা বিকশিত হওয়ার পথটাকে আপনারা রুদ্ধ করে দিয়েছেন। সেটির দায়ভার আপনাদের নিতে হবে। সেটির দায়ভার আপনারা না নিয়ে আবার যদি রাজনীতি করার, পুনর্বাসন করার চিন্তা করেন, তাহলে সে ক্ষেত্রে এই ছাত্র-নাগরিক যাঁরা শহীদ হয়েছেন, আমরা অনুভব করি তাঁদের কাছে আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে, আমাদের জবাবদিহি রয়েছে।’</p> <p>সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ‘৬ সেপ্টেম্বর থেকে সবাইকে সংগঠিত করার জন্য বিভাগীয় ও জেলা শহর সফর শুরু করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। আমরা জনগণের সঙ্গে কথা বলব, তারা কী চায় সেটা জানব, আমরাও কিছু পরামর্শ দেব। এরপর মানুষ যা চায় আমরা তা বাস্তবায়ন করব।’</p> <p>আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নতুন প্রজন্ম যে বাংলাদেশে চায় সবাইকে সেই বাংলাদেশকে স্বাগত জানাতে হবে। তাই আপনারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশাসনকে সহায়তা করুন। আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। কারো অপরাধ খুঁজে পেলে তাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর হাতে তুলে দেবেন। আমরা একটি আইনের শাসনের দেশ চাই। যারাই জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।’</p>