<p>গ্রামের ৯০ শতাংশ সংখ্যালঘু, নারী, যুব ও প্রতিবন্ধীরা সরকারি সেবাগুলো যথাযথভাবে পাচ্ছে না। বরং ওই সব সেবাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে তাদের নানা হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। তবে শহরের পরিস্থিতি তুলনামূলক ভালো হলেও যথাযথ সরকারি সেবা পাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা ও চট্টগ্রামের ৭০ শতাংশ প্রান্তিক মানুষ। রিসার্চ ইনিশিয়েটিভস বাংলাদেশ (রিইব) পরিচালিত একটি গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।</p> <p>মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) রাজধানীর আলোকি কনভেনশন সেন্টারে এক মতবিনিময়সভায় এ তথ্য তুলে ধরা হয়। সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিস (সিপিজে)-এর তত্ত্বাবধানে রিইব পরিচালিত ‘ক্লোজিং গ্যাপ : সংখ্যালঘু, নারী, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও যুবদের সরকারি সেবায় প্রবেশাধিকার মূল্যায়ন : প্রতিবন্ধকতা এবং ভবিষ্যৎ নির্দেশনা’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনের ফলাফল উপস্থাপন করেন রিইবের সহকারী পরিচালক রুহি নাজ। রিইবের পরিচালনা পরিষদের সদস্য অধ্যাপক রওনক জাহানের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সমাজকল্যাণ এবং নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন মুরশিদ। </p> <p>সভায় উপদেষ্টা শারমিন মুরশিদ বলেন, ‘আমরা কেউ প্রথাগত রাজনৈতিক নই, প্রথাগত রাজনীতির হাত ধরে আসিনি। আমরা একটি সামাজিক রাজনীতির পরিবর্তনের দাবিতে এসেছি। নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছি। এখন সিস্টেম পরিবর্তনের চেষ্টা চলছে, প্রজেক্ট ইভালুয়েশনের কাজ শুরু করেছি।’</p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সাধারণ নাগরিকদের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। বিশেষ করে নতুনদের চিন্তা করতে হবে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে এই কাজে সম্পৃক্ত করতে হবে। সরকার সেই কাজটি করছে। নতুন বাংলাদেশ গড়ার কাজে বেসরকারি সংস্থাগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।’</p> <p>ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিসের নির্বাহী পরিচালক মনজুর হাসান বলেন, ‘সরকারি সেবা নিশ্চিত করতে সরকারের পাশাপাশি কমিউনিটি পর্যায়ের সংগঠনগুলোকে কাজ করতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে সরকারের সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ। নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীের কাছে সরকারি সেবা পৌঁছাতে হবে। এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর প্রতি গুরুত্বারোপ করছি।’</p> <p>জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সচিব সেবাস্টিন রেমা বলেন, অবকাঠামোগত উন্নয়নের সঙ্গে মানবিক উন্নয়ন না হলে প্রকৃত উন্নয়ন বলা যায় না। মানবিক উন্নয়ন নিয়ে নানা গবেষণা হলেও গবেষণার সুপারিশ বাস্তবায়ন খুবই কম হয়। তাই সুপারিশ বাস্তবায়নে উদ্যোগ নিতে হবে। নীতি গ্রহণের ক্ষেত্রে এসংক্রান্ত সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। </p> <p>অ্যাকশনএইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, সমাজে নারীরা এখনো নির্যাতিত। ৭১ শতাংশ মেয়ে এখনো বাল্যবিয়ের শিকার। প্রতিবন্ধীসহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এখনো অধিকার থেকে বঞ্চিত। নীতি গ্রহণের পাশাপাশি তা বাস্তবায়ন অংশগ্রহণমূলক করতে হবে। বর্তমান সরকারের কিছু সেফগার্ড তৈরি করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলো থেকে এই সেফগার্ড আলাদা করতে হবে। দুর্গত এলাকাগুলোতে খাদ্য নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে।<br />  <br /> সভায় জানানো হয়, অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের সহযোগিতায় ও ইউরোপীয় কমিশনের সহায়তায় ওই গবেষণাটি পরিচালিত হয়। গবেষণাটি চারটি জনগোষ্ঠীর সংখ্যালঘু, নারী, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এবং যুবকদের সরকারি সেবা, বিশেষ করে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাসস্থান, সামাজিক সুরক্ষা এবং কর্মসংস্থানে অ্যাক্সেসিবিলিটি, প্রাপ্যতা, মান এবং প্রতিক্রিয়াশীলতার দিকগুলো আলোচনায় তুলে ধরা হয়েছে।</p>