দেশে এক কোটি মানুষ হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাসে আক্রান্ত। এর মধ্যে ৮৫ লাখ মানুষ হেপাটাইটিস বি ও ১৫ লাখ মানুষ হেপাটাইটিস সি ভাইরাসে আক্রান্ত। আর ৯০ শতাংশ মানুষই জানে না যে সে এই ভাইরাসে আক্রান্ত। ফলে ভেতরে ভেতরে রোগটি গাঢ় হচ্ছে।
হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব, নিন কার্যকর পদক্ষেপ

যখন অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যায়, তখন রোগটি ধরা পড়ে। এই অবস্থায় চিকিৎসকদেরও বিশেষ কিছু করার থাকে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য থেকে জানা যায়, বাংলাদেশে প্রতিবছর ২০ হাজার মানুষ হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাসজনিত লিভার রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। অথচ টিকা নেওয়া থাকলে কিংবা সঠিক সময়ে চিকিত্সা করানো গেলে এই মৃত্যুর একটি বড় অংশই রোধ করা যেত।
হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাসের কারণে মানুষের লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পৃথিবীজুড়েই লিভার ক্যান্সারেরও প্রধান কারণ এই ভাইরাস। খুব ধীরে হলেও রোগটি সম্পর্কে মানুষের সচেতনতা বাড়ছে। পাঁচ দশক আগের তুলনায় এখন আক্রান্ত মানুষের হার অনেক কমেছে।
১৯৮৩ সালে দেশব্যাপী ১০ শতাংশ মানুষ হেপাটাইটিসে আক্রান্ত ছিল, বর্তমানে এই হার ৫ শতাংশের কাছাকাছি। ইপিআই কর্মসূচির আওতায় শিশুদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। প্রায় ৯৫ শতাংশ শিশুকে টিকার আওতায় আনা গেছে। আশা করা যায়, নিকট ভবিষ্যতে অবস্থার আরো উন্নতি হবে। কিন্তু প্রাপ্ত পরিসংখ্যানে জানা যায়, ২০১৪ সালের পর থেকে এ ক্ষেত্রে অগ্রগতি প্রায় থমকে আছে।
এমন পরিস্থিতিতে গতকাল রবিবার পালিত হয়েছে বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল ‘এখনই সময় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার’। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ জন্য প্রয়োজন রোগ সম্পর্কে ব্যাপক সচেতনতা তৈরি করার। কারণ, গ্রামের অনেক মানুষ এখনো জন্ডিস হলে ঝাড়ফুঁক করায়। সঠিক চিকিত্সা পেতে দেরি হয়ে যায়। মানুষকে উত্সাহিত করতে হবে, যাতে কেউ এ ভাইরাসে আক্রান্ত কি না তা পরীক্ষা করে জেনে নেয়। পাশাপাশি সরকারি পর্যায়ে পরীক্ষার সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে। লিভার সংযোজনসহ চিকিত্সার সুবিধাও বাড়াতে হবে। ওষুধ সহজলভ্য করতে হবে।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) একটি অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে ২০৩০ সালের মধ্যে হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাসের সংক্রমণ নির্মূল করা। আমরা আশা করি, বাংলাদেশ সেই লক্ষ্য সামনে রেখে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। এ জন্য রোগটি সম্পর্কে সঠিক পরিসংখ্যানের ব্যবস্থা করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে রোগ নির্মূলের জন্য সঠিক গাইডলাইন তৈরি করতে হবে এবং তার ভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
সম্পর্কিত খবর

নিয়মিত ইনস্ট্যান্ট নুডলস খাচ্ছেন? জানুন কী হতে পারে
অনলাইন ডেস্ক

ক্ষুধা পেলেই অনেকের প্রথম পছন্দ নুডলস। ঘরে হোক বা বাইরে, ইনস্ট্যান্ট নুডলস যেন হাতের নাগালে এক সমাধান। সুস্বাদু এ খাবার তৈরি করতে সময় কম লাগে বলে এর জনপ্রিয়তা আকাশছোঁয়া। বিশেষ করে ছোটদের কাছে তো নুডলস যেন প্রিয় বন্ধু।
কোথায় বেশি জনপ্রিয় এই খাবার?
জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, মেক্সিকো—এই দেশগুলোতে ইনস্ট্যান্ট নুডলস খুব জনপ্রিয়। আমাদের দেশেও এর কদর বাড়ছে তরুণ ও শিশুদের মধ্যে।
কী বলছে গবেষণা?
গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত ইনস্ট্যান্ট নুডলস খান, তাদের মেটাবলিক সিনড্রোম হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
নিয়মিত খেলে কী কী সমস্যা হতে পারে?
১। গ্যাস ও অ্যাসিডিটি: এই নুডলস হজমে সমস্যা করে, কোষ্ঠকাঠিন্য ও গ্যাসের সমস্যাও বাড়ে।
২।
৩। ওজন বৃদ্ধি: বেশি খেলে বাড়ে শরীরের ওজন। কারণ এতে ক্যালোরি অনেক কিন্তু পুষ্টিগুণ কম।
৪।
৫। মহিলাদের হরমোন ভারসাম্য নষ্ট হয় ইনস্ট্যান্ট নুডলস বেশি খেলে। পিরিয়ড সংক্রান্ত সমস্যা ও পেটব্যথার সম্ভাবনাও বাড়ে। গর্ভাবস্থায় ইনস্ট্যান্ট নুডলস খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। এতে ব্যবহৃত রাসায়নিক ও সংরক্ষক উপাদান গর্ভস্থ শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
স্বাস্থ্যকর বিকল্প কী?
ইনস্ট্যান্ট নুডলস খেতে ইচ্ছে হলে বাড়িতে নিজে তৈরি করুন। গম বা আটার নুডলস বেছে নিন। সঙ্গে দিন নানা ধরনের সবজি। রেডিমেড মসলার বদলে ব্যবহার করুন ঘরোয়া মসলা।
সূত্র : ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা

নিত্যদিনের যেসব অভ্যাসে এড়াতে পারেন হৃদরোগের ঝুঁকি
অনলাইন ডেস্ক

জীবনযাত্রা যদি সঠিক হয় তবেই কমবে হৃদরোগের ঝুঁকি। তবে আধুনিক যুগে কাজের ব্যস্ততার কারণে আমরা সঠিক সময় খাওয়াদাওয়া করি না। এ ছাড়া সময়ের কাজ সময়ে করি না। এমন অনিয়মিত জীবনযাত্রার কারণে অনেক সময় হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
দিন দিন হৃদরোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এর মধ্যে এসব রোগী আবার উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও স্থূলতার রোগেও ভুগছেন। চিকিৎসকরা জানান, ২০৩৫ সালের মধ্যে হার্টের রোগীর সংখ্যা অকল্পনীয়ভাবে বাড়বে।
এমন রোগ থেকে বাঁচতে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনতে হবে।
কী কী পরিবর্তন করবেন
আপনি যদি হার্টের রোগ কমাতে চান, তাহলে আপনার জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আবশ্যক। নিত্যদিন যদি এই জীবনধারার পরিবর্তন আনতে পারেন, তাহলে আপনার হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমবে।
ডায়েট খাবার খাবেন
হার্ট ভালো রাখতে ডায়েট করে খাবার খান। প্রচুর পরিমাণে খাওয়াদাওয়া করা এড়িয়ে চলুন। নিত্যদিনের খাদ্য তালিকায় ফলমূল, সবজি, গোটা শস্য, চর্বিবিহীন প্রোটিন রাখুন, অর্থাৎ সুষম খাদ্যের দিকে বিশেষ নজর দিন।
ট্র্যান্স ফ্যাট জাতীয় খাবার
ট্র্যান্স ফ্যাট জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন। জলপাইয়ের তেল, অ্যাভোকাডো, বাদাম ইত্যাদি খাওয়ার চেষ্টা করুন।
ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড
শরীরে যাতে কোলেস্টেরলের মাত্রা না বেড়ে যায় সেই ক্ষেত্রে চর্বিবিহীন মাছ, তিসির বীজ, আখরোট ইত্যাদি খান । ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি এসিড যুক্ত খাবার খাদ্য তালিকায় রাখুন। এতে আপনার শরীর ভালো থাকবে।
ব্যায়াম
শরীরকে সক্রিয় রাখুন অর্থাৎ নিত্যদিন ব্যায়াম করুন কিংবা সকালবেলা উঠে হাঁটুন। এতে আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি কিছুটা হলেও কমবে। সপ্তাহে ১৫০ মিটার ব্যায়াম করুন। না হলে হাঁটুন, না হলে সাইকেল চালান। এতে আপনার ওজন বাড়বে না। এ ছাড়া শরীরে বাড়তি ফ্যাটও কমতে থাকবে।
জাংক ফুড
অনেকেই বর্তমান সময় বাইরের জাংক ফুড খেয়ে তাদের ওজন বাড়িয়ে ফেলেন। ওজনকে কখনোই বাড়তে দেবেন না। এতে রক্তচাপ, ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়তে থাকবে। আর এর থেকেই হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। তাই বাইরের খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
খাবার হজম
খাওয়াদাওয়া যাতে ভালোভাবে হজম হয়, সেদিকে নজর রাখুন। শরীরকে হাইড্রেট রাখুন। প্রচুর পরিমাণে পানি খান। নিত্যদিন সাত থেকে আট গ্লাস পানি খাওয়ার চেষ্টা করুন।
ধূমপান
ধূমপান ও অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকুন। আপনি যদি ধূমপানে আসক্ত থাকেন, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে দ্রুতই ধূমপান ত্যাগ করুন। নারী-পুরুষ কারোরই ধূমপান করা উচিত নয়। এতে হার্টের রোগ বাড়ে।
মানসিক চাপ
মানসিক চাপ নেওয়া এড়িয়ে চলুন। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে ধ্যান করুন। গভীরভাবে শ্বাস নিন। যোগ ব্যায়াম করুন। এতে আপনার মানসিক চাপ কমবে। শরীর সুস্থ থাকবে। প্রায় সময় রক্তচাপ, কোলেস্টেরল ও সুগার পরীক্ষা করুন।
চিকিৎসকের পরামর্শ
আপনার যদি শরীর কখনো খারাপ লাগে কিংবা বুকে ব্যথা হয়, তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। হার্টের রোগ ধরা পড়লে দ্রুতই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খান। তাহলে দ্রুত সুস্থ হবেন।
সূত্র : ওয়ানইন্ডিয়া

অস্টিওপোরেসিস কেন হয়? জেনে নিন কারণ
অনলাইন প্রতিবেদক

অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন অনেক জটিল রোগের জন্ম দিচ্ছে, যার মধ্যে অস্টিওপোরোসিস অন্যতম। এই রোগে হাড় দুর্বল ও ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। প্রাথমিকভাবে কব্জি, নিতম্ব বা মেরুদণ্ডে হঠাৎ ফ্র্যাকচার হয়ে যেতে পারে। হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়ায় এটি ঘটে।
চিকিৎসকদের মতে, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা ও শরীরে গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টির ঘাটতির কারণে এ রোগ হয়। বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে এই রোগের প্রকোপ বেশি।
অস্টিওপোরোসিসের কারণ
অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞদের মতে, মেনোপজ-পরবর্তী সময়ে নারীদের মধ্যে হরমোন ইস্ট্রোজেনের পরিমাণ কমে যায়। এই হরমোন হাড়কে রক্ষা করে, তাই এর ঘাটতি অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি বাড়ায়।
প্রতিরোধের উপায়
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে,
প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটুন,
১৫-২০ মিনিট রোদে থাকুন যাতে শরীরে ভিটামিন ডি তৈরি হয়,
দিনে অন্তত ৪৫ মিনিট হালকা ব্যায়াম করুন,
প্রয়োজনে ফিজিওথেরাপি নিন।
খাদ্যাভ্যাসে যা রাখতে পারেন
ক্যালসিয়াম ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার,
ডাল, ভুট্টা, মটরশুটি খাদ্যতালিকায় রাখু্ন,
দুধ, দই, পনিরের মতো দুগ্ধজাত পণ্য গ্রহণ করুন,
মৌসুমি ফল ও সবুজ শাকসবজি বেশি করে খাওয়া ভালো,
অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধে নিয়মিত ব্যায়াম ও পুষ্টিকর খাবারই সবচেয়ে কার্যকর উপায়। হাড়ের যত্ন নিন, সুস্থ থাকুন।
সূত্র : নিউজ ১৮ বাংলা

সুইসাইড ডিজিজ কী, এর ফলে কী হয়
অনলাইন ডেস্ক

সুইসাইড ডিজিজ। নাম শুনলে মনে হতে পারে হয়তো কোনো মানসিক রোগ। মানসিক অবসাদের ফলে বারবার আত্মহত্যা করার চেষ্টা করার মতো। তবে বিষয়টা মোটেও তেমন নয়।
এই রোগে আক্রান্ত হলে মুখের এক পাশে শুরু হয় তীব্র ব্যথা। যা কখনো কখনো রীতিমতো অসহনীয় হয়ে ওঠে।
প্রতিদিনের স্বাভাবিক কাজের সময়ই ব্যথা শুরু হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
কী হয় এই রোগের প্রভাবে
মুখের স্বাভাবিকতার জন্য যেসব স্নায়ু কাজ করে, তারই একটি হলো ট্রাইজেমিনাল স্নায়ু। কোনো কারণে এই স্নায়ুর ওপর চাপ সৃষ্টি হলে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। হয়তো একটি ধমনি ওই স্নায়ুকে বেশ চেপে রাখে।
কেন এই স্নায়ুর ওপর অস্বাভাবিক চাপ সৃষ্টি হয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে তার কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। নির্দিষ্ট কোনো জীবনপদ্ধতি এর জন্য দায়ী নয়। যে কেউ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। তবে এ রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা খুব একটা বেশি নয়।
কী করবেন
ঘরোয়া চিকিৎসায় এই ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না। এর জন্য প্রয়োজন বিশেষ ধরনের ওষুধ। জীবনধারায় কোনো পরিবর্তন এনে রোগের তীব্রতা কমানো সম্ভব হয় না। সুস্থ থাকতে তাই ওষুধ সেবন ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই। মনে রাখবেন এটা এক ধরনের স্নায়ু জনিত রোগ। তাই ফেলে না রেখে অবিলম্বে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
সূত্র : টিভি নাইন বাংলা