<p>২০২২ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জেতার পর দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক ম্যাচের বাইরে ছিলেন বাংলাদেশের মেয়েরা। দীর্ঘদিনের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন দলের হাল ছাড়েন। খেলাই ছেড়ে দেন কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার। তাতে দলের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ মনোভাবও হারিয়ে যায়। এ বছর পিটার বাটলার দায়িত্ব নিয়ে সেই প্রতিদ্বন্দ্বিতার আবহ ফেরানোতেই জোর দেন। সিনিয়রদের সঙ্গে একঝাঁক নতুনকে সুযোগ দিতে থাকেন। আর তার সুফলই বুধবার ভারতকে ৩-১ গোলে হারিয়ে পেয়েছে বাংলাদেশ, দশরথ স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলনে এসে জানান বাটলার।</p> <p>‘একটা দলের মধ্যে কখনো কখনো এমন বোঝাপড়ার দরকার হয়, যা দুই বছর ধরে দলের মধ্যে ছিল না। ছয় মাস ধরে চায়নিজ তাইপে ও ভুটানের বিপক্ষে ম্যাচের পর আমরা সেই বোঝাপড়া দলে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছি। আমি মনে করি, মাসুরা ও মারিয়া সেই খেলাটাই খেলেছে, যেটা তারা একসময় শীর্ষ পর্যায়ে খেলত,’ বলেছেন বাটলার।</p> <p>দলের মধ্যে যে ভাঙনের সুর বইছিল, তা দূর করতে কয়েক দফা মিটিং করেছেন বাটলার। মেয়েরাও কোচের কথা রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মাঠে অনবদ্য নৈপুণ্য দেখিয়েছেন। এতেই ভারতবধ সম্ভব হয়েছে। সেই ঘটনা বাটলার বলেছেন এভাবে, ‘আপনারা জানেন, আজ (বুধবার) সকালে ব্রেকফাস্টে গিয়ে মেয়েদের বলেছিলাম, গুড মর্নিং সিনিয়রস, গুড মর্নিং জুনিয়রস। গুড মর্নিং ফিল্ম স্টারস। সিনিয়র ও জুনিয়র—এগুলো আমার কাছে কিছু নয়। কেননা আমি জানি, ওদের কাছ থেকে আমি কী বের করে আনতে পারি। আমি একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আবহ আনার চেষ্টা করেছি। এ কারণেই মেয়েরা আজ (বুধবার) দুর্দান্ত ভালো খেলেছে।’</p> <p>সিনিয়রদের পছন্দ করেন না—এমন অভিযোগের পর বুধবার বাটলার একাদশে সুযোগ দেন মিডফিল্ডার মারিয়া মান্দা ও ডিফেন্ডার মাসুরা পারভিনকে। দুজনই আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন। জয়ের পর ডাগ আউটের সামনে উচ্ছ্বাসের সময় মাসুরা তার এক সতীর্থকে তো বলেই ফেললেন, ‘আমাকে কেন সুযোগ দেয় না? এতটাও খারাপ খেলি না তো।!’ বাটলারও প্রশংসা করেছেন তাদের, ‘মাসুরা ও মারিয়া অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। স্বপ্না ভালো করেছে। আমি মনে করি, মারিয়াও ভালো খেলেছে। আমরা মারিয়াকে যেভাবে জানি, আজ সে সেভাবে খেলেছে এবং মাসুরাও। দীর্ঘদিন পর মাসুরা এমন খেলেছে, যেভাবে আমরা ওকে চিনতাম।’</p> <p>শঙ্কা দূর করে বাংলাদেশ এখন সেমিফাইনালে। যেখানে প্রতিপক্ষ হতে পারে নেপাল কিংবা ভুটান। সেমিতে উঠলেও এখনই আত্মতুষ্টিতে ভুগতে চান না বাটলার। আরো অনেক কাজ বাকি আছে বলছেন ব্রিটিশ এই কোচ, ‘অবশ্যই আমি একটা খুশি দলের কোচ; তবে আমি বাস্তববাদী। আমি উচ্ছ্বাসে ভেসেও যাই না, আবার ভেঙেও পড়ি না। বিষয়গুলো প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে দেখুন, আমি মেয়েদের নিয়ে আসলেই ভীষণ ভীষণ গর্বিত। তবে আমরা সবেমাত্র সেমিফাইনালে উঠলাম। আমি জানি, আরেকটি ম্যাচ আসবে, সেটা কঠিন কাজ হবে।’ দুই বছর আগে নেপালের এই দশরথ স্টেডিয়ামেই শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশ। এবারও সাফল্য পেতে হলে বাকি পথটুকুও এমন প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঝাঁজ দেখাতে হবে সাবিনা-তহুরাদের।</p>